অর্থমন্ত্রক

প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা (পিএমজেডিওয়াই) – আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য জাতীয় মিশন – এর সফল রূপায়ণের এক দশক

পিএমজেডিওয়াই – এর আওতায় এ পর্যন্ত ৫৩.১৪ কোটিরও বেশি সুবিধাপ্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট
পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টে মোট ২,৩১,২৩৬ কোটি টাকা জমা পড়েছে


পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টের সংখ্যা মার্চ, ২০১৫’র ১৫.৬৭ কোটি থেকে ৩.৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১৪ অগাস্ট, ২০২৪ পর্যন্ত ৫৩.১৪ কোটিতে পৌঁছেছে


জন ধন অ্যাকাউন্টে প্রায় ৫৫.৬ শতাংশ মহিলাদের এবং প্রায় ৬৬.৬ শতাংশ অ্যাকাউন্ট গ্রাম ও মফস্বল এলাকার


পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারীদের ৩৬.১৪ কোটি রুপে কার্ড প্রদান

Posted On: 28 AUG 2024 7:45AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৮ অগাস্ট, ২০২৪ 

 

২০১৪ সালের ২৮ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর চালু করা প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা (পিএমজেডিওয়াই) সাফল্যের সঙ্গে এক দশক পূর্ণ করেছে। 
বিশ্বের বৃহত্তম আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রকল্প পিএমজেডিওয়াই – এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক ধারাবাহিকভাবে প্রান্তিক ও আর্থিকভাবে দুর্বলতর শ্রেণীকে সহায়তা করার প্রয়াস চালিয়ে গেছে। 


এই উপলক্ষে কেন্দ্রীয় অর্থ ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারমন এক বার্তায় বলেছেন, “আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং ক্ষমতায়নের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সাধারণ ব্যাঙ্কিং পরিষেবাকে সর্বজনীন ও সহজলভ্য করা একান্ত আবশ্যক। এটি গরীবদের অর্থনীতির মূলস্রোতে নিয়ে আসে এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়ের উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।"


“আগে যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল না, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ক্ষুদ্র সঞ্চয়, বিমা ও ঋণদানের মাধ্যমে সর্বজনীন, সহজলভ্য এবং স্বাভাবিক আর্থিক পরিষেবা প্রদানের মাধ্যমে পিএম জন ধন যোজনা গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের ব্যাঙ্কিং এবং আর্থিক ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে দিয়েছে”, বলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। 


“জন ধন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৫৩ কোটি মানুষকে স্বাভাবিক ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার আওতায় আনার উদ্যোগ থেকেই এর সাফল্য প্রতিফলিত হচ্ছে। এইসব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ব্যাঙ্কে ২.৩ লক্ষ কোটি টাকা জমা পড়েছে, ৩৬ কোটিরও বেশি নিখরচায় রুপে কার্ড প্রদান করা হয়েছে, যা ২ লক্ষ টাকার দুর্ঘটনা বিমারও সুবিধা দিচ্ছে। উল্লেখযোগ্য হ’ল, অ্যাকাউন্ট খোলা বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনও অর্থ লাগে না এবং ন্যূনতম অর্থ রাখারও কোনও প্রয়োজন হয় না”, বলেন শ্রীমতী সীতারমন। 


কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, “এটি অত্যন্ত আনন্দের যে, এইসব অ্যাকাউন্টের ৬৭ শতাংশই গ্রামাঞ্চল বা মফস্বল এলাকার এবং ৫৫ শতাংশ অ্যাকাউন্ট মহিলাদের।"

শ্রীমতী সীতারমন বলেন, “আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থায় জন ধন-মোবাইল-আধারের সংযুক্তি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হয়ে উঠেছে। এর ফলে, সুবিধাপ্রাপকদের কাছে সরকারি কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির সুবিধা দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে পৌঁছয় এবং ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার বিকাশ ঘটে।"

এই উপলক্ষে এক বার্তায় কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী শ্রী পঙ্কজ চৌধারী বলেন, “পিএমজেডিওয়াই শুধুমাত্র একটি প্রকল্প নয়, একটি রূপান্তরমূলক আন্দোলন, যা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টহীন বহু মানুষকে আর্থিক স্বাধীনতা এবং আর্থিক নিরাপত্তার অনুভূতি এনে দিয়েছে।"

শ্রী চৌধারী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালে তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রত্যেক বাড়িতে একজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের বিমা ও পেনশনের আওতায় আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন। ধারাবাহিক প্রয়াসের ফলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা এখন প্রায় স্থিতাবস্থার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। দেশে বিমা ও পেনশনের আওতায় আসা মানুষের সংখ্যা ক্রামগত বেড়ে চলেছে।"


“সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ, ব্যাঙ্ক, বিমা সংস্থা ও রাজ্য সরকারগুলির সহায়তার মাধ্যমে আমরা আরও আর্থিকভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের দিকে এগোচ্ছি এবং দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে পিএমজেডিওয়াই সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা শুধুমাত্র প্রশাসনিক লক্ষ্য পূরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত নয়, সেইসঙ্গে মানুষের কল্যাণসাধনে সরকারি অঙ্গীকারের বার্তাবাহকও বটে”, বলেন শ্রী চৌধারী। 


পিএমজেডিওয়াই – এর মাধ্যমে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকা মানুষকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের আওতায় আনা হয়েছে। এই অ্যাকাউন্টে কোনও ন্যূনতম অর্থ জমা রাখার প্রয়োজন হয় না এবং এই অ্যাকাউন্টে কোনও জরিমানাও ধার্য করা হয় না। ২ লক্ষ টাকার দুর্ঘটনা বিমা সহ নিখরচায় রুপে ডেবিট কার্ডও প্রদান করা হয়। পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারীরা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ওভারড্রাফটও পেতে পারেন।


গত এক দশকের বেশি সময় ধরে পিএমজেডিওয়াই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। এর ফলে, ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাগুলির পরিমণ্ডল বদলে গিয়েছে এবং সমাজের দরিদ্রদের মধ্যে দরিদ্রতম মানুষের কাছে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে যাচ্ছে। 
পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে শুধুমাত্র প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হচ্ছে না, সেইসঙ্গে কোনও রকম মধ্যস্বত্ত্বভোগী ছাড়াই নির্ঝঞ্ঝাটে সুবিধাপ্রাপকদের কাছে সরকারি ভর্তুকি/অর্থ পৌঁছে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে, জনসুরক্ষা প্রকল্প (ক্ষুদ্র বিমা প্রকল্প) - এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক জীবন ও দুর্ঘটনা বিমার সুবিধা পাচ্ছেন। 


ভর্তুকি প্রদান প্রক্রিয়ায় পিএমজেডিওয়াই – এর অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে কাজ করছে জন ধন – আধার এবং মোবাইল (জ্যাম) ত্রয়ী। জ্যাম – এর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সরকার সাফল্যের সঙ্গে ভর্তুকি এবং অন্যান্য সামাজিক সুবিধা অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষের অ্যাকাউন্টে সরাসরি পৌঁছে দিয়েছে। 


গত ১০ বছরে পিএমজেডিওয়াই – এর সফল রূপায়ণের ফলে বহু উল্লেখযোগ্য মাইলফলক অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। পিএমজেডিওয়াই – এর সাফল্য এবং প্রধান প্রধান দিকগুলি নীচে তুলে ধরা হ’ল: 


ক) পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্ট: ৫৩.১৩ কোটি (১৪ অগাস্ট, ২০২৪ পর্যন্ত)
১৪ অগাস্ট, ২০২৪ পর্যন্ত মোট পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্ট: ৫৩.১৩ কোটি; ৫৫.৬ শতাংশ (২৯.৫৬ কোটি) জন ধন অ্যাকাউন্ট মহিলাদের এবং ৬৬.৬ শতাংশ (৩৫.৩৭ কোটি) জন ধন অ্যাকাউন্ট গ্রামাঞ্চল ও মফস্বল এলাকার। 


খ) পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টে জমা অর্থ – ২.৩১ লক্ষ কোটি (১৪ অগাস্ট, ২০২৪ পর্যন্ত)
পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টে জমা পড়া মোট অর্থের পরিমাণ ২,৩১,২৩৬ কোটি টাকা। অ্যাকাউন্টের সংখ্যা (অগাস্ট’ ২৪/অগাস্ট’ ১৫) ৩.৬ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জমা টাকার পরিমাণ বেড়েছে ১৫ গুণ। 

 

গ) পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্ট পিছু জমা পড়া গড় অর্থের পরিমাণ - ৪,৩৫২ টাকা (১৪ অগাস্ট, ২০২৪ পর্যন্ত) 
১৪ অগাস্ট, ২০২৪ পর্যন্ত অ্যাকাউন্ট পিছু জমা পড়া গড় অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ৩৫২ টাকা। ১৫ অগাস্টের পর অ্যাকাউন্ট পিছু জমা পড়া অর্থের পরিমাণ ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অ্যাকাউন্টে জমা পড়া টাকার পরিমাণ বৃদ্ধির অর্থ হ’ল, অ্যাকাউন্টের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং মানুষের সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে ওঠা। 

ঘ) পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারীদের রুপে কার্ড প্রদান: ৩৬.১৪ কোটি (১৪ অগাস্ট, ২০২৪ পর্যন্ত) 
পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারীদের ৩৬.১৪ কোটি রুপে কার্ড প্রদান করা হয়েছে। সময়ের সঙ্গে রুপে কার্ডের সংখ্যা এবং ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। 


পিএমজেডিওয়াই – এর আওতায় ৩৬.০৬ কোটি রুপে ডেবিট কার্ড প্রদান করা হয়েছে, ৮৯.৬৭ লক্ষ পিওএস/এমপিওএস যন্ত্র বসানো হয়েছে এবং ইউপিআই – এর মতো মোবাইল-ভিত্তিক লেনদেন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের ২,৩৩৮ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ১৬,৪৪৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ইউপিআই আর্থিক লেনদেন ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের ৫৩৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ১৩ হাজার ১৩১ কোটিতে পৌঁছেছে। একইভাবে, পিওএস এবং ই-বাণিজ্যে রুপে কার্ডে লেনদেন ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ৬৭ কোটি টাকা বেড়ে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ৯৬.৭৮ কোটিতে পৌঁছেছে। 


পিএমজেডিওয়াই – এর মাধ্যমে ঋণ প্রদানেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। অ্যাকাউন্টধারীরা ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক সংস্থাগুলি থেকে ঋণ পেতে থাকেন। ২০১৯ থেকে ২০২৪ অর্থবর্ষ পর্যন্ত – এই পাঁচ বছরে বার্ষিক ৯.৮ শতাংশ চক্রবৃদ্ধি হারে দেও মুদ্রা ঋণের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। 
পিএমজেডিওয়াই হ’ল – বিশ্বের বৃহত্তম আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রকপ্প, যা ভারতে পরিবর্তন এনেছে এবং ডিজিটাল উদ্ভাবন আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে বিপ্লব এনেছে।

 

PG/MP/SB



(Release ID: 2049238) Visitor Counter : 309