প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

গুজরাটের জামনগরে ১,৪৫০ কোটি টাকারও বেশি একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গীকরণ প্রধানমন্ত্রীর

“৯ / ১১ বা হিরোশিমা স্মারকের থেকে ‘স্মৃতি বন’-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়”

“পোল্যান্ডের সাহায্য পাওয়া মহারাজা দিগ্বিজয় সিং-এর ঔদার্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত”

“জনশক্তি, জ্ঞানশক্তি, জলশক্তি, জ্বালানিশক্তি এবং প্রতিরক্ষা শক্তি – এই পাঁচটি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে গুজরাট আজ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে”

“সাওনি প্রকল্পের মাধ্যমে মা নর্মদা রাজ্যের প্রত্যেক প্রান্তে পৌঁছেছেন”

“মহামারীর সঙ্কটের সময়ে ৮০ কোটির বেশি মানুষ বিনামূল্যে রেশন পেয়েছেন”

“জামনগর বিভিন্ন সামগ্রীর উৎপাদন কেন্দ্র এবং উপকূল-ভিত্তিক উন্নয়নের উদাহরণ হয়ে উঠেছে”

“প্রায় ৩৩ হাজার বিধি-নিষেধ ও নিয়মাবলী বাতিল করা হয়েছে”

Posted On: 10 OCT 2022 8:32PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১০ অক্টোবর ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের জামনগরে আজ সেচ, বিদ্যুৎ, জল সরবরাহ এবং শহরের পরিকাঠামো সংক্রান্ত প্রায় ১,৪৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করেছেন। যে প্রকল্পগুলির তিনি শিলান্যাস করেছেন তার মধ্যে রয়েছে – কালাবড় / জামনগর তালুকে মোরবী-মালিয়া-জোড়িয়া অঞ্চলে জল সরবরাহের ক্ষমতা বৃদ্ধি, লালপুর বাইপাস জংশনে উড়ালপুল, হাপা মার্কেট ইয়ার্ড রেল ক্রসিং এবং পয়ঃনিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার। শ্রী মোদী যে প্রকল্পগুলি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন তার মধ্যে রয়েছে – উন্দ জলাধার থেকে সোনমাটি জলাধারের মধ্যে সৌরাষ্ট্র অবতরণ সেচ প্রকল্পের (সাওনি) তৃতীয় পর্যায়ের সপ্তম প্যাকেজ, উন্দ-১ জলাধার থেকে সানি জলাধার পর্যন্ত সাওনি প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের পঞ্চম প্যাকেজ এবং হরিপারে ৪০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষম প্রকল্প।

এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রথমেই এলাকার মানুষ যেভাবে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আশীর্বাদ করেছেন, তার জন্য  তাঁদের ধন্যবাদ জানান। তিনি জল, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা সংক্রান্ত আটটি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাসের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান। এই অঞ্চলে বাল্মিকী সম্প্রদায়ের জন্য একটি কমিউনিটি হল গড়ে তোলা হবে। এর ফলে এখানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ অন্যান্য কর্মসূচি পালনে সুবিধা হবে।

প্রধানমন্ত্রী দু’দশক আগে এই অঞ্চলে যে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছিল সেই প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন। ভূমিকম্পের ভয়াবহতা এবং ধ্বংসাত্মক কারণে রাজ্যজুড়ে হতাশার সৃষ্টি হয়। কিন্তু, গুজরাটবাসীর আত্মপ্রত্যয় এবং কঠোর পরিশ্রমী মনোভাবের জন্য সব ধরনের হতাশা এবং ধ্বংসাত্মক পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসে রাজ্য আজ দেশে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। কচ্ছ অঞ্চলের ভূমিকম্পে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তিনি জামনগরের বাসিন্দাদের ‘স্মৃতি বন’ পরিদর্শন করতে বলেন। এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। ৯ / ১১ বা হিরোশিমা স্মারকের থেকে স্মৃতি বন-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয় বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী জামসাহেবের মহারাজা দিগ্বিজয় সিং-কে শ্রদ্ধা জানান এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন পোল্যান্ডের নাগরিকদের উদ্দেশে মহারাজ যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেই বিষয়টি স্মরণ করেন। এর ফলে পোল্যান্ডের জনসাধারণের সঙ্গে ভারতের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফলস্বরূপ, ইউক্রেনের বর্তমান সঙ্কটকালে আটকে থাকা ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনতে পোল্যান্ড সাহায্য করেছিল। “পোল্যান্ডের সাহায্য পাওয়া মহারাজা দিগ্বিজয় সিং-এর ঔদার্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত।” শ্রী মোদী বলেন, জামসাহেবের শহরকে নতুন উচ্চতা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা উদ্যোগী হয়েছি। জামনগর ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সৌরাষ্ট্রের ক্রিকেট দল ২০২০ সালে রনজি ট্রফি জিতেছিল। এর ফলে এই অঞ্চলের প্রত্যেকে গর্ব অনুভব করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাট উন্নয়ন পাঁচটি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে। সেগুলি হল - জনশক্তি, জ্ঞানশক্তি, জলশক্তি, বিদ্যুৎশক্তি এবং প্রতিরক্ষা শক্তি। “এই পাঁচটি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে গুজরাট এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।”

শ্রী মোদী বলেন, বর্তমান প্রজন্মের যুব সম্প্রদায় অনেক ভাগ্যবান কারণ আজ থেকে ২০-২৫ বছর আগে এখানকার মানুষ যে সমস্যাগুলির সম্মুখীন হতেন, এখন আর তাঁদের সেগুলির মুখোমুখি হতে হয় না। আগে কোনো মুখ্যমন্ত্রী এই অঞ্চলে শুধু একটি জলাধার উদ্বোধনের জন্য আসতেন আর আজ অপেক্ষাকৃত বেশি ব্যয়ে রূপায়িত বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনের জন্য বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এসেছেন। এখন সাওনি প্রকল্পের মাধ্যমে মা নর্মদা রাজ্যের প্রত্যেক প্রান্তে পৌঁছেছেন। একইভাবে, ‘জল জীবন মিশন’-এর মাধ্যমে প্রত্যেক বাড়িতে নলবাহিত জল সরবরাহ হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিষ্ঠার সঙ্গে বাস্তবায়িত করছেন, তার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গরীব মানুষের কল্যাণকেই তাঁর সরকার অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। অতিমারীর সময় কোনো পরিবার যাতে অভুক্ত না থাকে, সেটাই ছিল তাঁর প্রথম চিন্তা। সঙ্কটের সেই সময়ে মানুষের দুর্দশা লাঘব করতে বিনামূল্যে রেশন সরবরাহ শুরু হয়। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনা’র সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ৮০ কোটি মানুষ এর সুবিধা পাচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’-এর সুবিধার কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে আসা মানুষ জামনগরেও এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।

জামনগরের তেল শোধনাগার এবং তেল অর্থনীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এখানে অশোধিত তেল শোধন করা হয়। এর জন্য সকলের গর্ববোধ করা উচিৎ। রাজ্যের শিল্প ও পরিকাঠামো উন্নয়নে কেন্দ্র ও রাজ্যের ডবল ইঞ্জিন সরকার একযোগে কাজ করছে। অতীতে এ শহরে যানজট ছিল বড় একটি সমস্যা। আজ রাস্তা, উড়ালপুল এবং ভূগর্ভস্থ পথ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হবে। অমৃতসর-ভাতিন্ডা-জামনগর করিডর নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। একাজে ব্যয় হবে ২৬ হাজার কোটি টাকা। জামনগর বিভিন্ন সামগ্রীর উৎপাদন কেন্দ্র এবং উপকূল-ভিত্তিক উন্নয়নের উদাহরণ হয়ে উঠেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রচলিত ওষুধের আন্তর্জাতিক কেন্দ্র জামনগরে গড়ে তোলা হয়েছে। আজ জামনগর আয়ুর্বেদিক বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেয়েছে। বালা, সিঁদুর, বাঁধনির মতো পবিত্র উপাদানগুলির সঙ্গেও এ শহর যুক্ত। তাই, এটি ‘সৌভাগ্য নগর’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে।

মানুষ যাতে সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেন তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজের অঙ্গীকার আবারও ব্যক্ত করেন। বর্তমানে বিভিন্ন নিয়মের বেড়াজালকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। প্রায় ৩৩ হাজার বিধি-নিষেধ ও নিয়মাবলী বাতিল করা হয়েছে। একইভাবে কোম্পানি আইনের ফৌজদারি অপরাধ সংক্রান্ত অংশটি বাদ দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা উপকৃত হচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচকে ভারতের উত্থানের প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেন। ২০১৪ সালে ভারতীয় অর্থনীতির স্থান ছিল দশম যা আজ পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করার ক্ষেত্রেও ২০২০ সালে ভারত বেশ কয়েক ধাপ উঠে এসে ৬৩তম স্থানে পৌঁছেছে। রাজ্যের সরকার একটি প্রগতিশীল শিল্পনীতি রূপায়ণ করায় তিনি প্রশংসা করেন। গুজরাটের উপকূলবর্তী অঞ্চলে জবরদখল সরিয়ে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলকে পরিচ্ছন্ন করার যে উদ্যোগ রাজ্য সরকার নিয়েছে তিনি তারও প্রশংসা করেন। এর ফলে জামনগর সমুদ্র সৈকতে পরিবেশ পর্যটনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যও রক্ষা করা যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাটে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথেষ্ট ভালো। ডবল ইঞ্জিন নরেন্দ্র–ভূপেন্দ্র সরকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়িত করছে।

অনুষ্ঠানে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, সাংসদ শ্রী সি আর পাটিল এবং শ্রীমতী পুনমবেন উপস্থিত ছিলেন।

প্রেক্ষাপট

জামনগরে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে একগুচ্ছ প্রকল্প উৎসর্গ করেছেন। এছাড়াও বেশি কিছু প্রকল্পের শিলান্যাসও করেন তিনি। সেচ, বিদ্যুৎ, জল সরবরাহ এবং শহরাঞ্চলের পরিকাঠামো সংক্রান্ত প্রকল্পগুলির জন্য মোট ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ ১,৪৫০ কোটি টাকা।

শ্রী মোদী যে প্রকল্পগুলি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন তার মধ্যে রয়েছে – উন্দ জলাধার থেকে সোনমাটি জলাধারের মধ্যে সৌরাষ্ট্র অবতরণ সেচ প্রকল্পের (সাওনি) তৃতীয় পর্যায়ের সপ্তম প্যাকেজ, উন্দ-১ জলাধার থেকে সানি জলাধার পর্যন্ত সাওনি প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের পঞ্চম প্যাকেজ এবং হরিপারে ৪০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষম প্রকল্প।

যে প্রকল্পগুলির শ্রী মোদী শিলান্যাস করেছেন তার মধ্যে রয়েছে – কালাবড় / জামনগর তালুকে মোরবী-মালিয়া-জোড়িয়া অঞ্চলে জল সরবরাহের ক্ষমতা বৃদ্ধি, লালপুর বাইপাস জংশনে উড়ালপুল, হাপা মার্কেট ইয়ার্ড রেল ক্রসিং এবং পয়ঃনিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার।

PG/CB/DM



(Release ID: 1866892) Visitor Counter : 154