প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

ইন্ডিয়া আইডিয়াজ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণ


দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ক্ষমতার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির স্থিতাবস্থা অর্জন করা সম্ভব : প্রধানমন্ত্রী

সমৃদ্ধ ও আত্মনির্ভর বিশ্ব গড়ার উদ্দেশে ভারত 'আত্মনির্ভর ভারত' গড়ার ডাক দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

ভারতে বিনিয়োগের জন্য এর আগে এত ভালো সময় আসে নিঃ প্রধানমন্ত্রী

সম্ভাবনার ক্ষেত্র হিসেবে ভারত আজ আবির্ভুতঃ প্রধানমন্ত্রী

মহামারীর পরে ভারত-মার্কিন অংশীদারীত্ব বিশ্বকে দ্রুত আগের ছন্দে ফিরে আসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সহায়কের ভূমিকা পালন করবেঃ প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 22 JUL 2020 9:25PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২২ জুলাই, ২০২০

 



প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ইন্ডিয়া আইডিয়াজ সম্মেলনে মুল ভাষণ দিয়েছেন। ইউএস-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিল (ইউএসআইবিসি) এই সম্মেলনের আয়োজক। এ বছরের সম্মেলনের বিষয় ছিল ‘উন্নত ভবিষ্যৎ গড়া’।

ইউএসআইবিসি-র বর্তমান বছরে ৪৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী এই সংস্থাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ভারত-মার্কিন বাণিজ্য অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ইউএসআইবিসি নেতৃত্বের অঙ্গীকারকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ক্ষমতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির স্থিতাবস্থা :

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের উন্নয়নের মুল লক্ষ্য হবেন দরিদ্র এবং সমাজের পেছনের সারিতে থাকা মানুষরা। সহজ জীবনশৈলীর ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি মনে করেন সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করার মতোই এটি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন, বিশ্ব জুড়ে মহামারী আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির বাইরে থেকে আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা কতটা দৃঢ় হওয়া প্রয়োজন, যা আসলে দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ক্ষমতার মাধ্যমে অর্জিত হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, সমৃদ্ধ ও আত্মনির্ভর বিশ্ব গড়ার জন্যই ভারত,  ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ার ডাক দিয়েছে। 

ভারত অবাধ সুযোগ এবং বেছে নেওয়ার অধিকার সবাইকে দিয়েছেঃ-

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্ব জুড়ে ভারতের প্রতি একটি আকর্ষণ তৈরি হয়েছে যার মূল কারণ এ দেশ অবাধ সুযোগ এবং বিভিন্ন পছন্দের মধ্য থেকে বাছাই করার অধিকার সকলকে দিয়েছে। তিনি বলেছেন, গত ছ’বছর ধরে আমাদের অর্থনীতিকে আরও মুক্ত ও সংস্কারমুখী করে তোলার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, সংস্কার প্রতিযোগিতাকে নিশ্চিত করে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, ডিজিটাইজেশনের প্রক্রিয়ার সম্প্রসারণ, উদ্ভাবনী শক্তিকে শক্তিশালী করা এবং নীতির স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করা। 

সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে ভারতে শহরাঞ্চলের থেকে গ্রামে বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করা হচ্ছে। ভারতকে সম্ভাবনার একটি নতুন জায়গা বলে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে দেশে ৫০ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। শীঘ্রই আরও ৫০ কোটি মানুষ ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছেন। শ্রী মোদী বলেছেন, এর ফলে ফাইভ-জি, বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, ব্লক চেন এবং ইন্টারনেট অফ থিঙ্গস-এর মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের বিপুল সুযোগ

প্রধানমন্ত্রী ভারতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের বিপুল সুযোগের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কৃষিক্ষেত্রে সম্প্রতি যে ঐতিহাসিক সংস্কার হাতে নেওয়া হয়েছে তার ফলে কৃষিজ যন্ত্রপাতি, কৃষিক্ষেত্রের সাপ্লাই চেন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, মৎস্যসম্পদ ও অর্গ্যানিক কৃষিকাজে বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ তৈরি হয়েছে। প্রতি বছর ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে ২২ শতাংশের বেশি বৃদ্ধির ফলে ভারতীয় সংস্থাগুলি চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রযুক্তি, টেলি-মেডিসিন এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি উৎপাদনের কাজে যুক্ত হয়েছে। ভারতের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিনিয়োগের এটিই সবথেকে ভালো সময় বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ ক্ষেত্র, পরিকাঠামো ক্ষেত্র – এর মধ্যে রয়েছে আবাসন, সড়ক, মহাসড়ক ও বন্দর, অসামরিক বিমান চলাচলের মতো ক্ষেত্রগুলির কথা উল্লেখ করে জানান, এখানে বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ তৈরি হয়েছে। আগামী দশকে ভারতের সর্ববৃহৎ বেসরকারি বিমান সংস্থাটি প্রায় এক হাজারের মতো বিমান তাদের সংস্থায় যুক্ত করতে চলেছে। এর ফলে, বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়েছে। মূলত উৎপাদন, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামতি ও পরিচালন ব্যবস্থায় প্রচুর বিনিয়োগ করা যেতে পারে। তিনি এই প্রসঙ্গে জানান, ভারতে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা বাড়িয়ে ৭৪ শতাংশ করা হয়েছে। দুটি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম করিডর তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির সংস্থাগুলি এখানে গড়ে উঠতে পারবে। দেশী এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন উৎসাহসূচক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি মহাকাশ ক্ষেত্রেও যুগান্তকারী সংস্কারের কথা উল্লেখ করেছেন।

আর্থিক ও বীমাক্ষেত্রে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতে বর্তমানে বীমাক্ষেত্রে ৪৯ শতাংশ  প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী বীমা ব্যবস্থায় যার পরিমাণ ১০০ শতাংশ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জীবন বীমায় বিনিয়োগের যে বিপুল সুযোগ এখনও ব্যবহৃত হয়নি তিনি সেগুলি সদ্ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন।

ভারতে বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি :

বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহজে ব্যবসা করার সূচকে ভারতের এগিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গটি প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। তিনি এই প্রসঙ্গে প্রতি বছর ভারতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ৭,৪০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে - আগের বছরের তুলনায় যা ২০ শতাংশ বেশি। তিনি জানিয়েছেন, মহামারীর সময়েও অর্থাৎ, এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে ২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ ভারত নিশ্চিত করেছে।

ভারতে বিনিয়োগের সবথেকে ভালো সময়

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আন্তর্জাতিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের যে শক্তি থাকার প্রয়োজন, ভারতের তা রয়েছে। তিনি বলেছেন, ভারতের উত্থানের অর্থ হল সেই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগের উত্থান౼ যাকে বিশ্বাস করা যায়, মুক্ত বাজারের সঙ্গে যেখানে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমন্বয় ঘটানো যায়, বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ানো যায়, বিনিয়োগের থেকে লভ্যাংশ বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত হয় এবং দক্ষ মানবসম্পদ যে দেশে সহজেই পাওয়া যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতকে স্বাভাবিক সহযোগী বলে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, মহামারীর পরে বিশ্বকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতে এই অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মার্কিন বিনিয়োগকারীদের তিনি জানিয়েছেন, ভারতে বিনিয়োগ করার এত ভালো সময় এর আগে কখনও আসেনি। 

 

 


CG/CB/DM


(Release ID: 1640620) Visitor Counter : 283