প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রদেশের আনন্দপুর ধামে জনসভায় ভাষণ দিলেন

प्रविष्टि तिथि: 11 APR 2025 6:04PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১১ এপ্রিল ২০২৫

 

ভারতের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী আজ মধ্যপ্রদেশের অশোকনগর জেলার ঈসাগড় তহসিলের আনন্দপুর ধাম পরিদর্শন করেন। তিনি গুরুজি মহারাজ মন্দির দর্শন ও পূজা করেন এবং আনন্দপুর ধামের মন্দির প্রাঙ্গণও ঘুরে দেখেন। সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থীদের স্বাগত জানান। তিনি শ্রী আনন্দপুর ধামের দর্শন করে নিজের আনন্দ প্রকাশ করেন এবং গুরুজি মহারাজের মন্দিরে পূজা-অর্চনা করার অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেন।

শ্রী মোদী সন্ন্যাসীদের তপোভূমির পবিত্রতা এবং এর বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, এখানে পরোপকার এক পরম্পরা হয়ে উঠেছে এবং সেবার সংকল্প মানবতার কল্যাণের পথ প্রশস্ত করে চলেছে। তিনি সন্ন্যাসীদের উদ্ধৃত করে বলেন “দুঃখ অশোকনগরে প্রবেশ করতে ভয় পায়।” তিনি বৈশাখী ও শ্রী গুরু মহারাজ জী'র জন্মজয়ন্তী উৎসবে অংশ নিতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করার পাশাপাশি প্রথম পদশাহী শ্রীশ্রী ১০৮ শ্রী স্বামী অদ্বৈত আনন্দ জী মহারাজ এবং অন্যান্য পদশাহী সন্ন্যাসীদের প্রণাম জানান। তিনি এই দিনের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা স্মরণ করেন। ১৯৩৬ সালের এই দিনে শ্রী দ্বিতীয় পদশাহী জীর মহাসমাধি হয়েছিল এবং ১৯৬৪ সালে শ্রী তৃতীয় পদশাহী জী তাঁর মূল রূপের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী এই পূজ্য গুরুদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং মা জাগেশ্বরী দেবী, মা বিজাসন ও মা জানকি করিলা মাতাধামকে প্রণাম করেন। তিনি বৈশাখী ও শ্রী গুরু মহারাজ জীর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সকলকে শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ভারত ঋষি, মনীষী ও সন্তদের ভূমি, যারা কঠিন সময়ে সমাজকে দিকনির্দেশ দিয়েছেন।” তিনি বলেন পূজ্য স্বামী অদ্বৈত আনন্দ জী মহারাজের জীবন এই ঐতিহ্যের উদাহরণ। তিনি সেই যুগের কথা স্মরণ করিয়ে দেন যখন আদি শংকরাচার্য প্রভৃতি আচার্য অদ্বৈত দর্শনের গভীর জ্ঞান ব্যাখ্যা করেছিলেন। তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক যুগে সমাজ এই জ্ঞান থেকে বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করেছিল। তবে সেই সময়ে অদ্বৈতের মূলনীতির মাধ্যমে জাতির আত্মাকে জাগিয়ে তুলতে ঋষিদের আবির্ভাব ঘটেছিল।

তিনি জোর দিয়ে বলেন যে পূজ্য অদ্বৈত আনন্দ জী মহারাজ অদ্বৈতের জ্ঞানকে সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য ও সরল করে তুলেছিলেন, যাতে তা জনে-জনে পৌঁছাতে পারে। আন্তর্জাতিক অশান্তি, যুদ্ধ, সংঘাত ও মানবিক মূল্যবোধ ক্ষয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে, শ্রী মোদী বলেন, এসব চ্যালেঞ্জের মূল কারণ হল বিভাজনের মানসিকতা – “আমি আর তুমি”– যা মানুষকে আলাদা করে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এসব সমস্যার সমাধান নিহিত আছে অদ্বৈত দর্শনে, যা দ্বৈতের ধারণা মেনে নেয় না।”

তিনি ব্যাখ্যা করেন যে অদ্বৈত প্রতিটি জীবের মধ্যে ঈশ্বরকে দেখার শিক্ষা দেয় এবং সমগ্র সৃষ্টিকে ঈশ্বরের প্রকাশ রূপে উপলব্ধি করায়। তিনি পরমহংস দয়াল মহারাজকে উদ্ধৃত করেন, যিনি এই তত্ত্বকে সহজভাবে বলেছেন: “আপনি যা, আমিও তাই।” এই ধারণা “আমি আর তুমি”-র বিভাজন মুছে দেয় এবং সর্বজনীনভাবে গ্রহণ করলে তা সব সংঘাত মিটিয়ে দিতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী ষষ্ঠ পদশাহী স্বামী শ্রী বিবেকপূর্ণ আনন্দ জী মহারাজের সঙ্গে তাঁর পূর্ববর্তী আলোচনা স্মরণ করেন , যিনি প্রথম পদশাহী পরমহংস দয়াল মহারাজ জীর শিক্ষা ও আনন্দপুর ধামের সেবা কার্যক্রমের কথা বলেছিলেন। তিনি আনন্দপুর ধামে প্রতিষ্ঠিত ধ্যানের পাঁচটি মূলনীতির কথা বলেন, যার মধ্যে অন্যতম, নি:স্বার্থ সেবা। তিনি ব্যাখ্যা করেন, নি:স্বার্থভাবে বঞ্চিতদের সেবা করা আসলে ঈশ্বরের সেবা করা, যা ভারতীয় সংস্কৃতির মূলে রয়েছে।

তিনি আনন্দ প্রকাশ করেন যে আনন্দপুর ট্রাস্ট সেবার এই সংস্কৃতিকে নিষ্ঠার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ট্রাস্ট হাসপাতাল পরিচালনা করছে যেখানে হাজার হাজার রোগীর চিকিৎসা হয়, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করছে, গরুর কল্যাণে আধুনিক গোশালা চালাচ্ছে এবং নতুন প্রজন্মের শিক্ষার জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা করছে। তিনি পরিবেশ সংরক্ষণে আনন্দপুর ধামের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের প্রশংসা করেন এবং উল্লেখ করেন আশ্রমের ভক্তরা কীভাবে হাজার হাজার একর অনুর্বর জমি সবুজে পরিণত করেছেন।

শ্রী মোদী বলেন, সরকারের প্রতিটি উদ্যোগের মূলেই সেবার ভাবনা নিহিত। তিনি আরও বলেন প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় প্রতিটি  মানুষ খাদ্য নিয়ে নিশ্চিন্ত, আয়ুষ্মান ভারত যোজনা গরিব ও প্রবীণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে, আর পিএম আবাস যোজনা বঞ্চিতদের নিরাপদ বাসস্থান দিচ্ছে। জল জীবন মিশন গ্রামে পানীয় জলের সমস্যা সমাধান করেছে এবং নতুন এমস, আইআইটি ও আইআইএম প্রতিষ্ঠার ফলে গরিব পরিবারের ছেলেমেয়েরাও স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পাচ্ছে।

তিনি “মায়ের নামে একটি গাছ ” অভিযানের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন, যার মাধ্যমে সারা দেশে কোটি কোটি গাছ রোপণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই লক্ষ্য অর্জনের মূল অনুপ্রেরণা সেবার ভাবনা। তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ”-এর মন্ত্র দ্বারা পরিচালিত হয়ে সরকার গরিব ও প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেবার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করলে শুধু অন্যের উপকার হয় না, বরং মানুষের চরিত্র গঠিত হয়, দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত হয় এবং সমাজ, জাতি ও মানবতার বৃহত্তর উদ্দেশ্যের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়। তিনি সেবাকে এক আধ্যাত্মিক সাধনার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, এটি গঙ্গার মতো পবিত্র, যাতে প্রত্যেকেরই স্নান করা উচিত।

তিনি অশোকনগর ও আনন্দপুর ধামের উন্নয়নের কথাও উল্লেখ করেন এবং বলেন, এ অঞ্চল শিল্প, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ, যার উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি মধ্যপ্রদেশ ও অশোকনগরের অগ্রগতির বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন, যার মধ্যে অন্যতম চন্দেরি শাড়িকে ভৌগোলিক  স্বীকৃতি (GI) দিয়ে চন্দেরি তন্তুশিল্পকে উৎসাহিত করা এবং প্রানপুরে হস্তশিল্পভিত্তিক পর্যটন গ্রাম প্রতিষ্ঠা, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।তিনি আরও জানান, মধ্যপ্রদেশ সরকার ইতিমধ্যেই উজ্জয়িনী সিংহস্থের প্রস্তুতি শুরু করেছে।

সাম্প্রতিক রামনবমী মহোৎসবের প্রসঙ্গ টেনে এনে শ্রী মোদী বলেন, “রাম বন গমন পথ”-এর উন্নয়ন চলছে, যার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ মধ্যপ্রদেশের মধ্য দিয়ে যাবে।তিনি বলেন, মধ্যপ্রদেশের অনন্য পরিচয়কে আরও সুদৃঢ় করবে এই উদ্যোগ।

প্রধানমন্ত্রী ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারত গড়ার লক্ষ্য পুনর্ব্যক্ত করেন এবং তা অর্জনে আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, উন্নয়নের পথে ভারতকে তার প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে, কারণ বহু দেশ উন্নয়নের খোঁজে নিজেদের সংস্কৃতি হারিয়েছে। তিনি বলেন, “ভারতের সংস্কৃতি কেবল তার পরিচয়ের সঙ্গে নয়, তার সক্ষমতার সঙ্গেও যুক্ত।”

আনন্দপুর ধাম ট্রাস্টের অবদানের প্রশংসা করে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে ট্রাস্টের সেবামূলক কার্যক্রম উন্নত ভারতের লক্ষ্য অর্জনে নতুন শক্তি জোগাবে।

শেষে তিনি বৈশাখী ও শ্রী গুরু মহারাজ জী'র জন্মজয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানিয়ে ভাষণ সমাপ্ত করেন।

মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাই প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মোহন যাদব, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া সহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পটভূমি:
আনন্দপুর ধামের প্রতিষ্ঠা হয়েছে আধ্যাত্মিক ও পরোপকারের উদ্দেশ্যে। ৩১৫ হেক্টর জুড়ে বিস্তৃত এই গ্রামে ৫০০-র বেশি গরু নিয়ে একটি আধুনিক গোশালা রয়েছে। ট্রাস্ট সুখপুর গ্রামে একটি ধর্মার্থ হাসপাতাল, সুখপুর ও আনন্দপুরে বিদ্যালয় এবং দেশজুড়ে একাধিক সৎসঙ্গ কেন্দ্র পরিচালনা করছে।

 

SC/PK...


(रिलीज़ आईडी: 2159583) आगंतुक पटल : 13
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें: Odia , English , Urdu , Marathi , हिन्दी , Manipuri , Assamese , Punjabi , Gujarati , Tamil , Telugu , Kannada , Malayalam