প্রতিরক্ষামন্ত্রক

ভারতের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের প্রস্তুতিপর্ব

ঐতিহাসিক লালকেল্লার প্রাকার থেকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী


আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথিরূপে উপস্থিত থাকবেন সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রায় ১,৮০০ প্রতিনিধি

Posted On: 13 AUG 2023 11:01AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৩ আগস্ট ২০২৩

 

সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রায় ১,৮০০ মানুষের উপস্থিতিতে আগামী ১৫ আগস্ট, মঙ্গলবার, দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লা থেকে ভারতের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আমন্ত্রিত অতিথিরা ঐ অনুষ্ঠান সেখানে উপস্থিত থেকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাবেন। 

শ্রী মোদী প্রথমে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর ঐতিহাসিক লালকেল্লার প্রাকার থেকে জাতির উদ্দেশে তাঁর প্রথাগত ভাষণ দেবেন। এবারের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের উল্লেখযোগ্য দিকটি হল, উদযাপনের এই উদ্যোগ-আয়োজন স্বাধীনতার ‘অমৃত মহোৎসব’ উদযাপনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ২০২১-এর ১২ মার্চ গুজরাটের আমেদাবাদে সবরমতী আশ্রম থেকে এই অমৃত মহোৎসবের সূচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। মঙ্গলবার তাই স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকালে দেশবাসী আরও একবার শ্রী নরেন্দ্র মোদীর আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারত গঠনের স্বপ্নকে সফল করার বিশেষ ‘অমৃত’ সময়কালটির অভিজ্ঞতার শরিক হবেন। দেশে ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য এ বছর বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এ বছরের অনুষ্ঠানগুলিতে আমন্ত্রিত অতিথির সংখ্যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। 

আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি রূপে যে ১,৮০০ মানুষ সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ব করবেন তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন তাঁদের পত্নীরাও। জন-অংশীদারিত্বের চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গীকে অনুসরণ করে এই বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। 

এই বিশেষ অতিথিদের মধ্যে থাকছেন দেশের ৬৬০টিরও বেশি গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান, কৃষি উৎপাদক সংস্থা ও সংগঠনের ২৫০ জন কৃষক প্রতিনিধি এবং ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি কর্মসূচি’ তথা ‘প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা’র ৫০ জন অংশগ্রহণকারী। নতুন সংসদ ভবন সহ কেন্দ্রীয় বড় বড় প্রকল্প রূপায়ণের সঙ্গে যুক্ত ৫০ জন শ্রমজীবীও উপস্থিত থাকবেন আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি রূপে। উপস্থিত থাকবেন, ৫০ জন করে খাদি কর্মী এবং সীমান্ত সড়ক নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মীরাও। এঁদের মধ্যে অনেকেই ‘অমৃত সরোবর’ এবং ‘হর ঘর জল যোজনা’র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির ৫০ জন শিক্ষক ও সেবাকর্মী এবং মৎস্যজীবীদের ৫০ জন করে প্রতিনিধিও আমন্ত্রিত অতিথির আসন অলঙ্কৃত করবেন এদিনের অনুষ্ঠানগুলিতে। বিশেষ অতিথিদের কয়েকজন আবার জাতীয় যুদ্ধ স্মারক পরিদর্শনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রী অজয় ভাটের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মিলিত হবেন।

লালকেল্লার ঐ অনুষ্ঠা্ন প্রত্যক্ষ করার জন্য প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে ৭৫ জন করে দম্পতিকে তাঁদের প্রথাগত তথা ঐতিহ্যমণ্ডিত পোশাকে সজ্জিত হয়ে অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

জাতীয় যুদ্ধ স্মারক, ইন্ডিয়া গেট, বিজয় চক, নয়াদিল্লি রেল স্টেশন, প্রগতি ময়দান, রাজঘাট, জামা মসজিদ মেট্রো স্টেশন, রাজীব চক মেট্রো স্টেশন, দিল্লি গেট মেট্রো স্টেশন, আইটিও মেট্রো গেট, নওবতখানা এবং শীষগঞ্জ গুরুদ্বার সহ ১২টি বিভিন্ন স্থানে সেলফি পয়েন্টেরও ব্যবস্থা থাকছে। এই সেলফি পয়েন্টগুলি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও কর্মসূচির আদলে স্থাপন করা হয়েছে।

এই উদ্যোগ ও কর্মসূচিগুলির মধ্যে রয়েছে বিশ্বের আশা-আকাঙ্ক্ষা, যোগ ও প্রতিষেধক, উজ্জ্বলা যোজনা, মহাকাশ শক্তি, ডিজিটাল ভারত, দক্ষ ভারত, স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া, স্বচ্ছ ভারত, সশক্ত ভারত, নতুন ভারত, ভারতের ক্ষমতায়ন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং জল জীবন মিশনের মতো সরকারি কর্মসূচিগুলি।

স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক MyGov পোর্টালটিতে একটি অনলাইন সেলফি প্রতিযোগিতারও আয়োজন করেছে। এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে ১৫ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত। যে ১২টি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে এই সেলফি পয়েন্টগুলি স্থাপিত হয়েছে, তার একটি অথবা অনেকগুলিতে গিয়ে সাধারণ মানুষ সেলফি তোলার সুযোগ পাবেন। পরে সেগুলি MyGov পোর্টালটিতে আপলোডের মাধ্যমে এই সেলফি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করবেন। স্থাপিত প্রতিটি সেলফি কেন্দ্র থেকে একজন করে মোট ১২ জন প্রতিযোগীকে নির্বাচিত করে তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে। 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও অতিথিবর্গকে ‘aamantran’ পোর্টাল (www.aamantran.mod.gov.in)-এর মাধ্যমে আমন্ত্রণলিপি পাঠানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর লালকেল্লায় আগমনের মুহূর্তে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং, প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রী অজয় ভাট এবং প্রতিরক্ষা সচিব শ্রী গিরিধর আরামেন। এরপর, প্রতিরক্ষা সচিব দিল্লি অঞ্চলের জেনারেল অফিসার কম্যান্ডিং (জিওসি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ধীরাজ শেঠকে পরিচয় করিয়ে দেবেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। এরপর লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভাট প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাবেন অভিবাদন গ্রহণ মঞ্চে। সেখানে ভারতের তিন বাহিনী এবং দিল্লি পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানানো হবে। প্রধানমন্ত্রী এরপর পরিদর্শন করবেন গার্ড অফ অনার।

প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অফ অনার জানানোর জন্য যে টিম গঠন করা হয়েছে তাতে থাকবেন দেশের সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও দিল্লি পুলিশের একজন করে অফিসার এবং ২৫ জন করে সেনা-কর্মী। অন্যদিকে, ভারতীয় নৌ-বাহিনীর পক্ষ থেকে একজন আধিকারিক ও ২৪ জন সেনা-কর্মী থাকবেন ঐ বিশেষ টিমটিতে। প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানানোর সমগ্র প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করবে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সমগ্র গার্ড অফ অনার অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন মেজর বিকাশ সাঙ্গোয়ান। ভারতীয় সেনা, বিমান ও নৌ-বাহিনীর পক্ষ থেকে আবার পৃথক পৃথকভাবে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলির পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন যথাক্রমে মেজর ইন্দ্রজিৎ সচিন, এম ভি রাহুল রমন এবং স্কোয়াড্রন লিডার আকাশ গঙ্ঘাস। অন্যদিকে, অভিবাদনে অংশগ্রহণকারী দিল্লি পুলিশ বাহিনীর নেতৃত্ব তথা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডিশনাল ডিসিপি সন্ধ্যা স্বামী।

গার্ড অফ অনার পরিদর্শনের পর প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লার প্রাকারের দিকে এগিয়ে যাবেন। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং, প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রী অজয় ভাট, প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান, ভারতীয় স্থলসেনা প্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডে, নৌ-সেনা প্রধান অ্যাডমিরাল আর হরিকুমার এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল ভি আর চৌধুরি। প্রধানমন্ত্রীকে লালকেল্লার প্রাকারের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবেন দিল্লি অঞ্চলের জিওসি। এরপর লালকেল্লার প্রাকার থেকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন প্রধানমন্ত্রী। 

পতাকা উত্তোলনের পর ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকাটিকে রাষ্ট্রীয় অভিবাদন তথা সম্মান প্রদর্শন করা হবে। জাতীয় পতাকা উত্তোলনকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে একজন জেসিও এবং ২০ জন অন্যান্য পদমর্যাদার সেনাকর্মী ব্যান্ডের মাধ্যমে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। জাতীয় পতাকাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানানোর সময় সমগ্র ব্যান্ডটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন নায়েব সুবেদার যতিন্দর সিং।

জাতীয় পতাকা উত্তোলনকালে প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করবেন মেজর নিকিতা নায়ার এবং মেজর জেসমিন কাউর। সে সময় ২১টি গান স্যালুটও দেওয়া হবে। এটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল বিকাশ কুমার এবং গান পজিশন অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন নায়েব সুবেদার (এআইজি) অনুপ সিং।

প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলনকালে রাষ্ট্রীয়ভাবে পতাকাকে সম্মান ও অভিবাদন প্রদর্শনের জন্য ভারতীয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী এবং দিল্লি পুলিশের পাঁচজন আধিকারিক এবং ১২৮ জন অন্যান্য পদমর্যাদার কর্মী অংশগ্রহণ করবেন। তিন বাহিনী এবং দিল্লি পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন মেজর অভিনব ডেথা।

জাতীয় পতাকাকে সম্মান ও অভিবাদন প্রদর্শনকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেবেন মেজর মুকেশ কুমার সিং। আবার, নৌ-বাহিনীর পক্ষ থেকে পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন লেফটেন্যান্ট কম্যান্ডার হরপ্রীত মান এবং বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে স্কোয়াড্রন লিডার শ্রেয় চৌধুরি। অ্যাডিশনাল ডিসিপি শশাঙ্ক জয়সওয়াল পরিচালনা করবেন এই পর্বে অংশগ্রহণকারী দিল্লি পুলিশের প্রতিনিধিদের। 

জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পরপরই অনুষ্ঠানস্থলে পুষ্পবৃষ্টি করা হবে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে। এজন্য বাহিনীর দুটি উন্নতমানের লাইট হেলিকপ্টার মার্ক-III ‘ধ্রুব’কে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই হেলিকপ্টারগুলিতে ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করবেন উইং কম্যান্ডার অম্বর আগরওয়াল এবং স্কোয়াড্রন লিডার হিমাংশু শর্মা। 

পুষ্পবৃষ্টির পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণ শেষ হলে জাতীয় সমর শিক্ষার্থী বাহিনী (এনসিসি)-র পক্ষ থেকে জাতীয় সঙ্গীত উপস্থাপনা করা হবে। দেশের বিভিন্ন স্কুলের ১,১০০ জন ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে গঠিত এনসিসি প্রতিনিধিদল জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনকালে অংশগ্রহণ করবেন। জাতীয় মর্যাদার এই অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে জ্ঞান পথ-এ তাঁদের বসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সেখানে এনসিসি প্রতিনিধিরা তাঁদের ইউনিফর্মে সজ্জিত থেকে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। 

লালকেল্লায় ফুল দিয়ে তৈরি একটি জি-২০-র লোগো সমগ্র অনুষ্ঠানটির শ্রীবৃদ্ধি করবে।


AC/SKD/DM/…



(Release ID: 1948274) Visitor Counter : 281