প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর মহাকাল লোক-এর প্রথম পর্বের বিভিন্ন পরিষেবা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন


প্রধানমন্ত্রী মহাকাল-এ পূজা, আরতি ও দর্শন করেন

“আমি বিশ্বাস করি আমাদের জ্যোতির্লিঙ্গগুলির উন্নয়ন দেশের ধর্মীয় ক্ষেত্রে উন্নয়নের পাশাপাশি জ্ঞান ও দর্শনেও বিশেষ আলোকপাত করছে”

“ভারতের সাংস্কৃতিক দর্শন আরও একবার বিশ্বকে পথ প্রদর্শন করতে প্রস্তুত”

“ভারতের ধর্ম মানে হচ্ছে আমাদের কর্তব্যের প্রতি যৌথ দায়িত্ববোধ”

“নতুন ভারত বর্তমানে প্রাচীন মূল্যবোধকে সঙ্গে নিয়ে ঐতিহ্য পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে বিজ্ঞান, গবেষণা ও বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে”

Posted On: 11 OCT 2022 9:25PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১১ অক্টোবর ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এক অনুষ্ঠানে মহাকাল লোক প্রকল্পের প্রথম পর্ব জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। তিনি মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে মহাকাল মন্দিরের গর্ভগৃহে পূজা ও আরতিও করেন। অনুষ্ঠান স্থলে পৌঁছনোর পর প্রধানমন্ত্রীকে সম্বর্ধনা জানানো হয়। প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী শ্রী কৈলাশ খের শ্রীমহাকাল-এর স্তোত্র ও গান পরিবেশন করেন। এরপর একটি শব্দ ও আলোর মাধ্যমে প্রদর্শনী দেখানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী ভগবান মহাকাল-এর স্তুতি করে তাঁর বক্তব্যের সূচনা করেন এবং বলেন, “জয় মহাকাল! উজ্জয়িনীর এই শক্তি তাঁর আশীর্বাদ। মহাকাল-এর ঐশ্বরিক মাহাত্ম্য বিশ্বের কাছে মহাকাল লোক নামে পরিচিত। শঙ্কর ভগবানের মাহাত্ম্য অবিশ্বাস্য।” শ্রী মোদী বলেন, ভগবান মহাকাল-এর আশীর্বাদ পাওয়া যে কারোর জন্যই সৌভাগ্যের বিষয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উজ্জয়িনী কেবলমাত্র ভৌগোলিক দূরত্বের হিসেবেই ভারতের কেন্দ্রে অবস্থিত তা নয়, এটি দেশের আত্মাও। উজ্জয়িনী হল এমন একটি শহর যেখানে ভগবান কৃষ্ণ তাঁর নিজের শিক্ষার জন্য এসেছিলেন। উজ্জয়িনী রাজা বিক্রমাদিত্যের সময় ভারতের সুবর্ণ যুগের সূচনা হয়। উজ্জয়িনীর নিজের ইতিহাস রয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, “সম্পদ, সমৃদ্ধি, জ্ঞান ও মূল্যবোধের ক্ষেত্রে হাজার হাজার বছর ধরে উজ্জয়িনী ভারতকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছে।”

প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিতভাবে বলেন, “সাফল্যের শিখরে পৌঁছতে হলে দেশের সাংস্কৃতিক উন্নয়ন প্রয়োজন।” তিনি বলেন, ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এত বিশাল যে গোটা বিশ্বকে তা অভিভূত করে। ‘আজাদি কা অমৃতকাল’-এ ভারত যে পাঁচটি ‘প্রাণ’ বা প্রতিজ্ঞার কথা উল্লেখ করেছে তার মধ্যে অন্যতম হল ঐতিহ্যের প্রতি গর্ববোধ করা এবং দাসত্বের মানসিকতা থেকে মুক্তি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই লক্ষ্যেই অযোধ্যায় দ্রুতগতিতে রাম মন্দির উন্নয়নের কাজ চলছে। ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী কাশীতে বিশ্বনাথ ধাম ও সোমনাথে মন্দিরের উন্নয়নের কাজও বিশেষ গতিতে এগিয়ে চলেছে। উত্তরাখণ্ডে বাবা কেদার-এর আশীর্বাদে কেদারনাথ-বদ্রীনাথ ধর্মীয় স্থলের উন্নয়নের নতুন গাথা তৈরি হয়েছে। চারধাম এখন সব আবহাওয়ার জন্য উপযুক্ত সড়কের মাধ্যমে যুক্ত হচ্ছে। এবারে এই ধারাবাহিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মহাকাল লোক আমাদের হৃত অতীতকে ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জ্যোতির্লিঙ্গের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। “আমি মনে করি, জ্যোতির্লিঙ্গগুলির উন্নয়ন ভারতের ধর্মীয় ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দেশের যে সাংস্কৃতিক দর্শন রয়েছে তা আরও একবার বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।” শ্রী মোদী বলেন, ভগবান মহাকাল হলেন একমাত্র জ্যোতির্লিঙ্গ যেখানে দক্ষিণমুখী হয়ে আছেন ভগবান শিব। এখানকার আরতি সারা বিশ্বে সমাদৃত।

ভগবান শিব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সোয়াম ভুতিম বিভূষণাহ” – অর্থাৎ, ছাই মেখে সর্বসিদ্ধি লাভ করা যায়।

দেশের উন্নতির জন্য ধর্মীয় চিন্তাভাবনার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, আমাদের নাগরিক জীবনের আত্মবিশ্বাস হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের অবিনশ্বর করে রেখেছে। আমাদের বিশ্বাস আমাদের চেতনাকে জাগ্রত করে। ইতিহাস স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উজ্জয়িনীর শক্তিকে ধ্বংস করার নানান চেষ্টা চলেছে কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বারেবারে। ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’-এর সময় অমর অবন্তিকা ভারতের সাংস্কৃতিক ইতিহাসকে পুনরুজ্জীবিত করছে।

ধর্ম মানে কি? – এই বিষয়ে আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্ম হচ্ছে আমাদের দায়িত্বের প্রতীক। যৌথ কর্তব্যপরায়ণতা। বিশ্বের ও জনগণের সেবায় কাজ করে যাওয়ার লক্ষ্যই হচ্ছে ধর্ম।

প্রধানমন্ত্রী কাশীর মতো ধর্মীয় কেন্দ্রের উল্লেখ করে বলেন, এটি হচ্ছে জ্ঞান, দর্শন ও কলার অন্যতম পীঠস্থান। অন্যদিকে উজ্জয়িনী হচ্ছে জ্যোতির্বিদ্যার কেন্দ্রস্থল। নতুন ভারত বর্তমানে প্রাচীন মূল্যবোধকে সঙ্গে নিয়ে বিজ্ঞান, গবেষণা এবং বিশ্বাসের মাধ্যমে ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। ভারতের মহাকাশ অভিযান ‘চন্দ্রায়ন’ ও ‘গগনযান’-এর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত অন্য দেশের হয়েও মহাকাশে উপগ্রহ পাঠাচ্ছে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও দেশ ক্রমশ আত্মনির্ভর হয়ে উঠছে।

শ্রী মোদী বলেন, উদ্ভাবন থাকলেই সংস্কার হবে। বর্তমানে সমগ্র দেশ মানবতার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। বক্তব্যের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাকাল-এর আশীর্বাদে ভারতে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে। শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে পথ প্রদর্শক হয়ে উঠবে ভারত।

দিনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী উজ্জয়িনীতে জাতির উদ্দেশে মহাকাল লোক প্রকল্পের প্রথম পর্ব উৎসর্গ করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাই প্যাটেল, ছত্তিশগড়ের রাজ্যপাল শ্রী অনুসুইয়া উইকে, ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল শ্রী রমেশ বাইন্স, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, ডঃ বীরেন্দ্র কুমার, শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, শ্রী জি কিষাণ রেড্ডি এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী ফগগন সিং কুলস্তে, শ্রী প্রহ্লাদ প্যাটেল সহ অন্যান্যরা।

 

PG/PM/DM/



(Release ID: 1867065) Visitor Counter : 174