অর্থমন্ত্রক

প্রধানমন্ত্রী জন-ধন যোজনা (পিএমজেডিওয়াই)- আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের জাতীয় প্রকল্প সফল রূপায়ণের ৮ বছর পূর্ণ


পিএমজেডিওয়াই-এর সূচনা থেকে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ৪৬.২৫ কোটির বেশি মানুষ যার পরিমাণ ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন: সমাজের প্রান্তিক শ্রেণীর সার্বিক আর্থিক উন্নয়ন সুনিশ্চিত করতে অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ এক বৃহৎ পদক্ষেপ

সরকারের জন কেন্দ্রিক আর্থিক উদ্যোগের ভিত্তিপ্রস্তর হয়ে দাঁড়িয়েছে পিএমজেডিওয়াই: অর্থ প্রতিমন্ত্রী ডঃ ভগবৎ কারাদ

Posted On: 28 AUG 2022 7:40AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, আগস্ট ২৮, ২০২২


অর্থমন্ত্রক আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণমূলক উদ্ভাবনের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ ঘটাতে এবং প্রান্তিক ও আর্থ-সামাজিকভাবে বঞ্চিত শ্রেণীকে সহায়তা দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের মাধ্যমে আমরা দেশের সুষম এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অর্জন করতে পারবো। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের অর্থ সুলভে সঠিক সময়ে পিছিয়ে পড়া নিম্ন আয়ের গোষ্ঠী এবং দুর্বল শ্রেণীকে যারা ন্যূনতম ব্যাঙ্কিং পরিষেবা থেকে বঞ্চিত তাদের উপযুক্ত আর্থিক পরিষেবা প্রদান।

এটা গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে এর ফলে দরিদ্র মানুষ তাদের সঞ্চয় মূল আর্থিক স্রোতে যুক্ত করার রাস্তা পায়, গ্রামে তাদের পরিবারের কাছে অর্থ পাঠানোর রাস্তা পাওয়ার পাশাপাশি অত্যাচারী ঋণদাতাদের কবল থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারে। এই দায়বদ্ধতার লক্ষ্যে একটি প্রধান উদ্যোগ হল প্রধানমন্ত্রী জন-ধন যোজনা (পিএমজেডিওয়াই) যা বিশ্বে সর্ব বৃহ একটি আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ উদ্যোগ।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৪র ১৫ আগস্ট তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে পিএমজেডিওয়াই-এর সূচনা করেছিলেন। ২৮ আগস্ট ওই কর্মসূচির সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানকে দুষ্টচক্র থেকে গরিব মানুষের মুক্তির উসব বলে বর্ণনা করেন।

পিএমজেডিওয়াই-এর অষ্টম বর্ষপূর্তিতে অর্থমন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারমন কর্মসূচিটির গুরুত্ব পুনরায় উল্লেখ করেছেন। অর্থমন্ত্রী তাঁর বার্তায় বলেছেন, সমাজের প্রান্তিক শ্রেণীর সার্বিক আর্থিক বিকাশ সুনিশ্চিত করতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ এক বৃহৎ পদক্ষেপ। ২০১৪র ২৮ আগস্ট থেকে পিএমজেডিওয়াই-এর সাফল্য পরিলক্ষিত হয় ৪৬ কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার মধ্য দিয়ে যার আমানত ব্যালেন্সের পরিমান ১.৭৪ লক্ষ কোটি টাকাযাতে দেখা যাচ্ছে গ্রামীণ এবং আধা শহর এলাকায় ব্যাঙ্কে সঞ্চয় সূচক বৃদ্ধি পেয়ে ৬৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৫৬ শতাংশই হল মহিলা জনধন ধারক। দেশজুড়ে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রেক্ষাপটে ২০১৮র পরে পিএমজেডিওয়াই চালু রাখায় উদ্ভুত প্রয়োজন এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গীগত গৃহীত ব্যবস্থায় এক লক্ষ্যণীয় পরিবর্তন এসেছে। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক গৃহ’ থেকে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক” দৃষ্টিভঙ্গীর এই পরিবর্তনের ফলে অ্যাকাউন্টেরও বৃদ্ধি হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর (ডিবিটি) এবং রুপে কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্টের পথ প্রশস্ত করতে এইসব অ্যাকাউন্টের গুরুত্ব বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।”

পিএমজেডিওয়াই-এর অন্তর্নিহিত ভিত্তিভূমি অর্থাৎ ব্যাঙ্কহীনদের ব্যাঙ্কিং, অসুরক্ষিতদের জন্য সুরক্ষা এবং অনুদানহীদের অর্থায়ন সম্ভব হয়েছে বহু অংশীদারির সহযোগিতা পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে। এর পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে সুযোগ বর্জিত এবং নিম্ন সুযোগপ্রাপ্ত এলাকাতেও এই সুবিধা সম্প্রসারণ সম্ভব হয়েছে” বলে অর্থমন্ত্রী জানান।

অর্থমন্ত্রী তাঁর বার্তায় আরও বলেন, ধারকদের সম্মতির ভিত্তিতেই জেএএম পাইপলাইন সৃষ্টি করা গেছে যাকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ইকো সিস্টেমে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। এর ফলে বিভিন্ন সরকারি কল্যাণমূলক প্রকল্পের অনুগ্রহপূর্বক অর্থ প্রদান যোগ্য সুবিধাভোগীর কাছে সরাসরি সুবিধা হস্তান্তরের মাধ্যমে অবিলম্বে পৌঁছাতে পারে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক ইকো সিস্টেমের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ মহামারীতে পিএম কিষাণের অধীন কৃষকদের সরাসরি আয় সহায়তা দেওয়া এবং পিএমজিকেপি-এর অধীন পিএমজেডিওয়াই ধারক মহিলাদের সময় বেঁধে নিরবচ্ছিন্নভাবে সহায়তা মূলক অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে এই কৌশলগত সুবিধা দারুনভাবে কাজে লেগেছে।

শ্রীমতী সীতারমন তাঁর বার্তা শেষে বলেছেন আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য উপযুক্ত আর্থিক পণ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং ডেটা পরিকাঠামো সম্বলিত স্থাপত্য কৌশল ভিত্তিক নীতি নির্ভর হস্তক্ষেপের প্রয়োজন। দেশ পিএমজেডিওয়াই-এর সূচনালগ্ন থেকেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে যাতে দেশের মানুষদের জন্য প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট সুবিধাকে সর্বোত্তম করা যায়। পিএমজেডিওয়াই-কে সফল রূপদানের জন্য আমি এই ক্ষেত্রের কর্মীদের তাঁদের নিরলস পরিশ্রমের জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি।

এই উপলক্ষ্যে পিএমজেডিওয়াই সম্পর্কে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ডঃ ভগবৎ কারাদ তাঁর ভাবনা ব্যক্ত করে জানিয়েছেন “প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা (পিএমজেডিওয়াই) আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণে কেবল ভারতেই নয় বিশ্বে এক অন্যতম সুদুরপ্রসারী উদ্যোগ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় অগ্রগণ্য। তার কারণ তা অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধির সহায়ক। দরিদ্রদের তাদের সঞ্চয় প্রথাগত আর্থিক পরিকাঠামোয় নিয়ে আসার সুযোগ করে দেয়। সুদখোর মহাজনদের খপ্পর থেকে রক্ষা করে পরিবারের জন্য অর্থ জমা রাখার সুযোগ এর মাধ্যমে সম্প্রসারিত হয়।” ডাঃ কারাদ বলেন, “পিএমজেডিওয়াই-এর অষ্টম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এই প্রকল্পের গুরুত্বের কথা আলোচিত হয়েছে। সরকারের জন কেন্দ্রিক আর্থিক উদ্যোগে এটা এক ভিত্তিপ্রস্তর স্বরূপ। প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর, কোভিড-১৯ আর্থিক সহায়তা, পিএম কিষাণ, এমজিএনআরইজিএ-তে মজুরি বৃদ্ধি, জীবন ও স্বাস্থ্য বীমার সুযোগ, প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্কের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সুবিধা প্রদানের এটা এক প্রথম পদক্ষেপ। ইতিমধ্যেই যা পিএমজেডিওয়াই প্রায় সম্পূর্ণ করে ফেলেছে।”

ডাঃ কারাদ বলেন, আমি নিশ্চিত যে ব্যাঙ্কগুলি এই জাতীয় উদ্যোগে সর্বতোভাবে সামিল হবে যাতে সরকারের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচিতে প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্কের যোগদান সুনিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

এই কর্মসূচির সফল রূপায়ণের ৮ বছর পূর্তিতে আমরা এই কর্মসূচির মূল বৈশিষ্ট্য এবং সাফল্যের দিকে ফিরে তাকাবো।

প্রেক্ষাপট

প্রধানমন্ত্রী জন-ধন যোজনা (পিএমজেডিওয়াই) আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের জাতীয় প্রকল্প যেখানে সুলভে ব্যাঙ্কিং সেভিংস ও ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট, রেমিট্যান্স, ক্রেডিট, ইনসিওরেন্স, পেনশনের মতো আর্থিক পরিষেবা পাওয়া নিশ্চিত হয়

. উদ্দেশ্য –

সুলভে আর্থিক পণ্য ও পরিষেবার সুবিধা নিশ্চিত করা

ব্যয় হ্রাস এবং আরও বেশি লোকের কাছে পৌঁছে দিতে প্রযুক্তির ব্যবহার

. কর্মসূচির মূল বৈশিষ্ট্য-

যাদের সঙ্গে ব্যাঙ্কের সম্পর্ক ছিল না তাদের ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত করা- ন্যূনতম নথি, কেওয়াইসি ছাড়, -কেওয়াইসি, শিবির করে অ্যাকাউন্ট খোলা, কোনো ব্যালেন্স বা কোনো মাশুল ছাড়াই সেভিংস ব্যাঙ্ক জমা খাতা খোলা।

নিরাপত্তাহীনদের নিরাপত্তা দেওয়া- বিনামূল্যে ২ লক্ষ টাকার দুর্ঘটনা বিমা সহ টাকা জমা এবং তোলার জন্য ডেবিট কার্ড দেওয়া।

যাদের অর্থ নেই তাদের অর্থ দেওয়া- ক্ষুদ্রতম বিমা, উপভোগের জন্য ওভারড্রাফ্ট, ক্ষুদ্রতম অবসরভাতা এবং ক্ষুদ্রতম ঋণের মতো অন্যান্য আর্থিক ব্যবস্থা।

. প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য-

এই কর্মসূচিটি শুরু হয়েছিল নিম্নলিখিত ৬টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে :

  • সকলের জন্য ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সুবিধা

  • প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্কের জন্য ১০ হাজার টাকা ওভারড্রাফ্টের সুবিধা সহ সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট

  • আর্থিক সাক্ষরতা কর্মসূচি- সঞ্চয় সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা, এটিএম-এর ব্যবহার, ঋণের জন্য প্রস্তুত করা, বিমা এবং অবসরভাতা পাওয়া, ব্যাঙ্কিং-এর জন্য মোবাইল ব্যবহার।

  • ক্রেডিট গ্যারান্টি ফান্ড নির্মাণ- অনাদায়ের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলিকে গ্যারান্টি প্রদান।

  • বিমা- ২০১৪র ১৫ আগস্ট থেকে ২০১৫র ৩১ জানুয়ারির মধ্যে খোলা অ্যাকাউন্টগুলির জন্য ১ লক্ষ টাকা দুর্ঘটনা বিমা এবং ৩০ হাজার টাকার জীবন বিমা।

  • অসংগঠিত ক্ষেত্রের জন্য অবসরভাতা কর্মসূচি

. অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পিএমজেডিওয়াই-তে গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

  • পূর্বেকার অফলাইন অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতির বদলে প্রযুক্তির সাহায্যে (যা গ্রাহকের আয়ত্তে থাকবে) ব্যাঙ্কের কোর ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাতে অনলাইন অ্যাকাউন্ট খোলা।

  • রুপে ডেবিট কার্ড অথবা আধারের সাহায্যে পেমেন্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে আন্তঃলেনদেনের সুবিধা।

  • নির্দিষ্ট ব্যবসায়িক কার্যকলাপ

  • সরলীকৃত কেওয়াইসি এবং ই-কেওয়াইসি

. নতুন বৈশিষ্ট্য সহ পিএমজেডিওয়াই-এর প্রসার- সরকার সার্বিক পিএমজেডিওয়াই কর্মসূচি কিছু পরিবর্তন সহ ২৮..২০১৮ পরেও চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

  • প্রত্যেকটি পরিবার’ থেকে নজর সরিয়ে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই তার ওপর নজর দেওয়া।

  • রুপে কার্ড বিমা- ২৮..২০১৮র পরে খোলা পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টের জন্য রুপে কার্ডে বিনামূল্যে দুর্ঘটনা বিমার পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লক্ষ টাকা করা।

  • ওভারড্রাফ্ট সুবিধার বৃদ্ধি-

ওভারড্রাফ্টের সীমা ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা; ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ওভারড্রাফ্ট (কোন শর্ত ব্যতীত)

ওভারড্রাফ্টের জন্য বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ৬০ থেকে ৬৫ বছর করা।

৬. পিএমজেডিওয়াই-এর প্রভাব-

পিএমজেডিওয়াই মানব কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক উদ্যোগের ভিত্তিপ্রস্তর। সে সরাসরি সুবিধা হস্তান্তরই হোক, কোভিড-১৯ বাবদ আর্থিক সহায়তাই হোক, পিএম কিষাণ, এমজিএনআরইজিএ-তে মজুরি বৃদ্ধি, জীবন ও স্বাস্থ্যবীমা, এই সব উদ্যোগের প্রথম পদক্ষেপই হল প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ককে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করে দেওয়া। পিএমজেডিওয়াই-তে যা প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গেছে।

২০১৪র মার্চ থেকে ২০২০র মার্চের মধ্যে খোলা প্রতি দুটি অ্যাকাউন্টের একটি হল পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্ট। দেশজুড়ে লকডাউনের ১০ দিনের মধ্যে ২০ কোটির বেশি মহিলাদের পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টে অনুদান জমা পড়েছিল।

জনধনএর ফলে দরিদ্র মানুষ তাদের সঞ্চয় মূল আর্থিক স্রোতে যুক্ত করার রাস্তা পায়, গ্রামে তাদের পরিবারের কাছে অর্থ পাঠানোর রাস্তা পাওয়ার পাশাপাশি অত্যাচারী ঋণদাতাদের কবল থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারে। পিএমজেডিওয়াই যাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল না তাদের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় নিয়ে এসেছে, ভারতের আর্থিক সৌধের প্রসার ঘটিয়েছে এবং প্রায় প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ককে আর্থিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করেছে।

বর্তমানে কোভিড-১৯এর সময়ে আমরা দেখেছি কি ভাবে সুষ্ঠু ও অবাধে প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর হয়েছে এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণীকে আর্থিক নিরাপত্তা দিয়েছে। পিএম জনধন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ডিবিটি-র একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল যে প্রতিটি টাকা উদ্দিষ্ট সুবিধাপ্রাপকদের কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত হয়েছে এবং অপচয় রোধ করেছে।

. ২০২২এর ১০ আগস্ট পর্যন্ত পিএমজেডিওয়াই-এর সাফল্যের খতিয়ান-

. পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্ট

পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্ট (কোটিতে)

৪৬.২৫

১৭.৯ ২৪.১ ৩০.০৯ ৩২.৫৪ ৩৬.৭৯ ৪০.৪১ ৪৩.০৪

আগস্ট ১৫ আগস্ট ১৬ আগস্ট ১৭ আগস্ট ১৮ আগস্ট ১৯ আগস্ট ২০ আগস্ট ২১ আগস্ট ২২

  • ২০২২এর ১০ আগস্ট পর্যন্ত মোট পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ২৬.২৫ কোটি; ৫৫.৫৯% (২৫.৭২ কোটি) জনধন অ্যাকাউন্টধারী হলেন মহিলা এবং ৬৬.৭৯% (৩০.৮৯ কোটি) জনধন অ্যাকাউন্ট হল গ্রাম অথবা আধা শহর অঞ্চলে।

  • এই কর্মসূচির প্রথম বছরে ১৭.৯০ কোটি পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল।

  • পিএমজেডিওয়াই-তে অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫র মার্চে পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ১৪.৭২ কোটি। সেটি প্রায় ৩ গুণ বেড়ে ১০..২০২২এ হয়েছে ৪৬.২৫ কোটি। নিঃসন্দেহে আর্থিক অর্ন্তভুক্তিকরণ কর্মসূচিতে এটি একটি উল্লেখযোগ্য যাত্রা।

. কার্যকর পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্ট

পিএমজেডিওয়াই কার্যকর অ্যাকাউন্ট (কোটিতে)

২৩.১৫

(৭৬%)

 

আগস্ট ১৭

২৬.৩৪

(৮০.%)

 

আগস্ট ১৮

৩০.১৬

(৮২%)

 

আগস্ট ১৯

৩৪.

(৮৬.%)

 

আগস্ট ২০

৩৬.৮৬

(৮৫.)

 

আগস্ট ২১

৩৭.৫৭

(৮১.%)

 

আগস্ট ২২

  • আরবিআই-এর বিধি অনুযায়ী সেই পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টকে অকার্যকরী ধরা হবে যদি দু বছরের বেশি সময় ধরে কোনো অ্যাকাউন্টে গ্রাহক লেনদেন না করে।

  • ২০২২এ আগস্টে মোট ৪৬.২৫ কোটি পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৩৭.৫৭ কোটি (৮১.%) কার্যকরী।

  • মাত্র ৮.% পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টে কোনো জমা নেই।

. পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্ট জমার খতিয়ান

পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টে জমার পরিমাণ (কোটিতে)

২২৯০১

 

আগস্ট ১৫

৪২৯৪

 

আগস্ট ১৬

৬৫৭৯৯

 

আগস্ট ১৭

৮২৩৯

 

আগস্ট ১৮

১০২৪১৫

 

আগস্ট ১৯

১৩০০৮৬

 

আগস্ট ২০

১৪৬২৩০

 

আগস্ট ২১

১৭৩৯৫৪

 

আগস্ট ২২

  • পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টে মোট জমার পরিমাণ ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা।

  • ২০১৫র আগস্ট থেকে ২০২২এর আগস্ট পর্যন্ত অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ২.৫৮ গুণ। জমার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৭.৬০ গুণ।

. পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্ট প্রতি গড় জমার পরিমাণ

পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্ট প্রতি জমার পরিমাণ (কোটিতে)

১২৭৯

 

আগস্ট ১৫

১৭৪৭

 

আগস্ট ১৬

২১৮৭

 

আগস্ট ১৭

২৫২১

 

আগস্ট ১৮

২৭৮৩

 

আগস্ট ১৯

৩২১৯

 

আগস্ট ২০

৩৩৯৮

 

আগস্ট ২১

৩৭৬১

 

আগস্ট ২২

  • প্রতিটি অ্যাকাউন্টে গড় জমার পরিমাণ ৩ হাজার ৭৬১ টাকা

  • ২০১৫ আগস্ট থেকে অ্যাকাউন্ট প্রতি জমার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ২.৯ গুণ

  • গড় জমার পরিমাণে বৃদ্ধির অর্থ অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অ্যাকাউন্টধারীদের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাস বাড়ছে

. পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারীদের রুপে কার্ড প্রদান

পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টের জন্য প্রদত্ত রূপে কার্ডের সংখ্যা (কোটিতে)

১৫.৭৪

 

আগস্ট ১৫

১৯.০০

 

আগস্ট ১৬

২২.৭৫

 

আগস্ট ১৭

২৪.৫১

 

আগস্ট ১৮

২৯.১৫

 

আগস্ট ১৯

২৯.৭৬

 

আগস্ট ২০

৩১.২৩

 

আগস্ট ২১

৩১.৯৪

 

আগস্ট ২২

  • পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারীদের প্রদত্ত মোট রূপে কার্ডের সংখ্যা ৩১.৯৪ কোটি

  • রুপে কার্ডের সংখ্যা এবং তার ব্যবহার বেড়েছে

. জনধন দর্শক অ্যাপ

একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের সূচনা করা হয়েছে যাতে গ্রাহকরা দেশে ব্যাঙ্কের শাখা, এটিএম, ব্যাঙ্ক মিত্র, ডাকঘর ইত্যাদির খোঁজ পেতে পারেন। ৮ লক্ষের বেশি ব্যাঙ্কিং টাচ পয়েন্ট রাখা হয়েছে জিআইএস অ্যাপে। জনধন দর্শক অ্যাপের সুবিধা পাওয়া যাবে সাধারণ মানুষের প্রয়োজন এবং সুবিধা অনুযায়ী। এই অ্যাপের ওয়েব সংস্করণ পাওয়া যাবে http://findmybank.gov.in এই লিঙ্কে।

এই অ্যাপের সাহায্যে সেইসব গ্রামগুলিও চিহ্নিত করা সম্ভব যেখানে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে ব্যাঙ্কিং টাচ পয়েন্ট নেই। চিহ্নিত গ্রামগুলিতে শাখা খোলার জন্য সংশ্লিষ্ট এসএলবিসি-র দ্বারা বিভিন্ন ব্যাঙ্ককে বরাদ্দ করা হয়। এই উদ্যোগের ফলে এই ধরনের গ্রামের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

জেডিডি অ্যাপে যে সমস্ত গ্রামের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ব্যাঙ্কিং টাচ পয়েন্ট নেই

১১২৭৮

 

অক্টোবর‘১৯

৬৬৯৩

 

জানুয়ারি ‘২০

২৬৭২

 

এপ্রিল ‘২০

১১৯৮

 

জুলাই ‘২০

৮১৪

 

অক্টোবর ‘২০

৮১৭

 

জানুয়ারি ‘২১

৩৫৬

 

এপ্রিল ‘২১

২৫৬

 

জুলাই ‘২১

১৮২

 

অক্টোবর ‘২১

২৭৪

 

জানুয়ারি ‘২২

২১২

 

এপ্রিল ‘২২

১৪৩

 

জুলাই ‘২২

 


. সুষ্ঠু ডিবিটি লেনদেন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে

ব্যাঙ্কগুলির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৫.৪ কোটি পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারী বিভিন্ন কর্মসূচিতে সরকারের কাছ থেকে সরাসরি সুবিধা হস্তান্তরের মাধ্যমে অর্থ পেয়ে থাকেন। ঠিক সময়ে যাতে ডিবিটি তারা পান তা নিশ্চিত করতে দপ্তর ডিবিটি মিশন, এনপিসিআই, ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য মন্ত্রকের সঙ্গে পরামর্শ করে ডিবিটির ব্যর্থতার জন্য যে কারণগুলি বর্তমান তা চিহ্নিত করতে সক্রিয় ভূমিকা নেয়। ব্যাঙ্ক এবং এনপিসিআই-এর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নজরদারি চালিয়ে ডিবিটি-র ব্যর্থতা ২০১৯-২০ অর্থ বছরের ১৩.৫ শতাংশ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯.৭ শতাংশে কমানো গেছে।

১০. ডিজিটাল লেনদেন : পিএমজেডিওয়াই-তে ৩১.৯৪ কোটি রুপে ডেবিট কার্ড দিয়ে, ২০২২এর জুন পর্যন্ত ৬১.৬৯ লক্ষ পিওএস/এমপিওএস বসিয়ে এবং ইউপিআই-এর মধ্যে মোবাইল ভিত্তিক অর্থপ্রদান ব্যবস্থা শুরু করে ডিজিটাল লেনদেনের সংখ্যা ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের ৯৭৮ কোটি থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৭ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ইউপিআই আর্থিক লেনদেনের সংখ্যা ছিল ১.৭৯ কোটি। সেটি ২০২১-২২ অর্থ বছরে বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৫৯৬ কোটি। একই রকমভাবে পিওএস এবং ই-কমার্সে রুপে কার্ডে লেনদেনের সংখ্যা ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ২৮.২৮ কোটি থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থ বছরে হয়েছে ১৫১.৬৪ কোটি।

১১. ভবিষ্য পন্থা

. মাইক্রো ইনসিওরেন্স কর্মসূচির অধীনে পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারীদের আনা নিশ্চিত করা। উপযুক্ত পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারীদের পিএমজেজেবিওয়াই এবং পিএমএসবিওয়াই-এর আওতায় আনা। এ ব্যাপারে ব্যাঙ্কগুলিকে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে।

. সারা দেশে গ্রহণ পরিকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারীদের মধ্যে রুপে ডেবিট কার্ড ব্যবহার সহ ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার ঘটানো।

. পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারীদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ এবং ক্ষুদ্র লগ্নির সুবিধা বৃদ্ধি।

 

PG/AP/AB/NS



(Release ID: 1854913) Visitor Counter : 589