প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রথম ‘অরুণ জেটলি স্মারক বক্তৃতা’য় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

Posted On: 08 JUL 2022 11:24PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৮ জুলাই, ২০২২

নমস্কার,

আজ আমার অত্যন্ত বেদনাদায়ক দিন। আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু শিনজো আবে আর নেই। তিনি শুধু আমারই বন্ধু নন, ভারতেরও বিশ্বস্ত বন্ধু। ভারতের উন্নয়নে আজকে যে গতি, তা সম্পন্ন হচ্ছে জাপানের সহায়তায়, তার জন্য শিনজো আবে আগামী দিনে ভারতের হৃদয়ে থাকবেন। আমি আরও একবার আমার বন্ধুর প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করছি।

বন্ধুগণ,

আজকের অনুষ্ঠানটি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু অরুণ জেটলিজীর প্রতি নিবেদিত। আমি যখন অতীত চারণা করি, তাঁর অনেক কথা অনেক ঘটনা মনে পড়ে। তাঁর বাগ্মীতায় আমরা গভীরভাবে অভিভূত হতাম। তাঁর এক লাইনের মন্তব্যগুলি অনেকক্ষণ ধরে কানে বাজতো। তিনি বৈচিত্র্যে পূর্ণ ছিলেন। স্বভাবও ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ তাঁর বন্ধু ছিলেন। এটা অরুণের বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের বৈশিষ্ট্য ছিল। আমি অরুণ জেটলীজীর প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি।

বন্ধুগণ,

অরুণজীর স্মরণে বক্তৃতার বিষয় হ’ল – ‘গ্রোথ থ্রু ইনক্লুসিভিটি, ইনক্লুসিভিটি থ্রু গ্রোথ’, যা সরকারের উন্নয়ন নীতির মূল মন্ত্র। আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ থার্মান (সন্মুখরত্নম)জীর প্রতি আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করার জন্য। আমি তাঁর কথা অনেকবার শুনেছি। আমি সবসময় তাঁকে অনুসরণ করি। শুধু ভারতেই নয়, তিনি যখন বিশ্বের অন্য দেশেও যান, তিনি প্রচুর গবেষণা করেন এবং তাঁর শিক্ষা বিষয়ক ভাবনা-চিন্তায় একটা স্থানীয় স্পর্শ থাকে। তিনি যেভাবে আজ বিশ্বের পরিস্থিতি এবং তার সঙ্গে আমাদের দেশের শিশুদের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করলেন, তাতে তাঁর দর্শনের সাক্ষী থাকলাম আমরা।

বন্ধুগণ,

আজকের আলোচ্য বিষয়টি নিয়ে যদি সহজ ভাষায় বলতে হয়, তা হলে বলব এটা ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’। তবে, এর সঙ্গে আজকের নীতি-প্রণেতাদের সামনে যে সমস্যা ও দ্বিধা আছে, সেটিও এই বিষয়ের সঙ্গে সংযুক্ত। আমি আপনাদের একটা প্রশ্ন করতে চাই। সবাইকে না সঙ্গে নিয়ে উন্নয়ন কি সম্ভব? আপনি নিজেকে একবার জিজ্ঞেস করুন তো! আমরা কি উন্নয়ন ছাড়া সবাইকে সঙ্গে নেওয়ার কথাও ভাবতে পারি? সরকারের প্রধান হিসাবে ২০ বছরেরও বেশি কাজ করার আমার সুযোগ হয়েছে। আমার অভিজ্ঞতা যদি ছোট করে বলতে হয়, তা হ’ল – সবাইকে সামিল না করলে প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয় এবং সবাইকে সামিল করার লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়, উন্নয়ন ছাড়া। সেজন্য আমরা অন্তর্ভুক্তিকরণের মাধ্যমে উন্নয়নের পথ নিয়েছি, প্রত্যেককে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছি।

গত ৮ বছরে যে গতিতে ভারত কাজ করছে, তা আপনি সারা বিশ্বে দ্বিতীয় উদাহরণ খুঁজে পাবেন না। গত ৮ বছরের ৯ কোটিরও বেশি মহিলাকে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সংযোগ দিয়েছে ভারত। এই সংখ্যা দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও নিউজিল্যান্ডের মিলিত জনসংখ্যারও বেশি। থার্মানজী খুব আন্তরিকভাবে এই সাফল্যের কথা ত্যুলে ধরেছেন। ভারত গত ৮ বছরে ৪৫ কোটিরও বেশি জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছে। তাও জাপান, জার্মানী, ব্রিটেন, ইতালি এবং মেক্সিকোর মিলিত জনসংখ্যার প্রায় সমান। গত ৮ বছরে ভারত গরীব মানুষকে ৩ কোটি পাকা বাড়ি দিয়েছে। আমি একবার সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী এস ঈশ্বরণকে একথা জানাতে তিনি বলেছিলেন, এটা প্রতি মাসে একটা করে নতুন সিঙ্গাপুর গড়ার সমান।

আমি ‘গ্রোথ থ্রু ইনক্লুসিভিটি, ইনক্লুসিভিটি থ্রু গ্রোথ’-এর আরেকটি উদাহরণ দিতে চাই। থার্মানজী যখন বলছিলেন, কয়েক বছর আগে আমরা ভারতে আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচি শুরু করি। তিনি বললেন, অদূর ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য ক্ষেত্র অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়াবে। এই কর্মসূচির আওতায় ৫০ কোটিরও বেশি দরিদ্র মানুষ ভারতের যে কোনও জায়গায় সেরা হাসপাতালে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা পেতে পারেন। গত চার বছরে সাড়ে তিন কোটিরও বেশি মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পেয়েছেন। এই কর্মসূচিতে আমরা অন্তর্ভুক্তিকরণের উপর নজর দিয়েছি। সমাজের শেষ প্রান্তে থাকা দরিদ্রতম মানুষটিকেও সেরা চিকিৎসার সুবিধা দিতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা দেখেছি, অন্তর্ভুক্তিকরণের মাধ্যমেও উন্নয়ন ঘটে। যাঁরা আগে ছিলেন মূলস্রোতের বাইরে, তাঁরাও এখন সামিল হয়েছেন। এর ফলে, চাহিদা বেড়েছে। পাশাপাশি, উন্নয়নের সুযোগও বেড়েছে। ভালো স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে এ যাবৎ বঞ্চিত দেশের এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ, যখন চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন, তখন তার সরাসরি প্রভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থাও শক্তিশালী হচ্ছে।

২০১৪ সালের আগে ১০ বছরে গড়ে প্রায় ৫০টি মেডিকেল কলেজ তৈরি হ’ত। গত ৭-৮ বছরে প্রায় চার গুণ ২০৯টি নতুন মেডিকেল কলেজ তৈরি হয়েছে ভারতে। আর আমি যদি আগামী ১০ বছরের কথা বলি, তা হলে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৪০০। গত ৭-৮ বছরে ভারতে স্নাতক স্তরে মেডিকেল আসন সংখ্যা বেড়েছে ৭৫ শতাংশ। বছরে বর্তমানে আসন সংখ্যা বাড়ছে দ্বিগুণ হারে।

ভারতের ডিজিটাল ইন্ডিয়া অভিযান ইন্টারনেটকে গ্রামের দরিদ্রতম মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ কমন সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে। ভীম, ইউপিআই অ্যাপ গরীব মানুষকে ডিজিটাল পেমেন্টের সুযোগ এনে দিয়েছে। শহরের হকাররা স্বনিধি কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সুযোগ পাচ্ছেন।

প্রত্যাশী জেলা কর্মসূচিও আরও একটি উদ্যোগ, যেখানে ১০০টিরও বেশি জেলার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নীত হচ্ছে।

বন্ধুগণ,

এই কর্মসূচির ইতিবাচক প্রভাব এতই যে, ১০০টি জেলায় উন্নয়নের বিশ্বে সামিল করা হয়েছে। ভারতের জাতীয় শিক্ষা নীতিও আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এতদিন ইংরাজী না জানার ফলে যাঁকে পিছিয়ে পড়তে হ’ত, তিনিও এখন মাতৃ ভাষায় পড়াশোনা করে এগোবার সুযোগ পাবেন।

উড়ান কর্মসূচি দেশের অনেকগুলি এয়ারস্ট্রিপকে পুনরুদ্ধার করেছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর শহরেও নতুন বিমানবন্দর হচ্ছে। আকাশপথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে সংযুক্ত করা হয়েছে। এমনকি, দরিদ্র মানুষও বিমান চড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর ফলে, অন্তর্ভুক্তিকরণ ও বৃদ্ধি দুটিই ঘটছে। বিমান পরিষেবা এতই বেড়েছে যে, ১ হাজারটিরও বেশি নতুন বিমানের বরাত দেওয়া হয়েছে।

জল জীবন মিশনে প্রতিটি বাড়িতে নলবাহিত জল সরবরাহ করা হচ্ছে। আমি এটা নিয়ে কাজ করেছি গুজরাটে। এতে শুধু কল থেকে জল পাওয়া যাচ্ছে তাই নয়, সময় বাঁচছে, মানুষের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হয়েছে। এতে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও সুপ্রভাব পড়েছে। মাত্র ৩ বছরে ৬ কোটিরও বেশি বাড়িতে জল সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

মোটামুটি ভারতে ২৫-২৭ কোটি বাড়ি আছে। এর মধ্যে জল দেওয়া হচ্ছে ৬ কোটি বাড়িতে। এতে দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাপন সহজ হয়েছে এবং তাঁরা এগিয়ে যেতে উৎসাহিত হচ্ছেন।

আমি আরেকটি উদাহরণ দেবো। আপনারাও জানেন, রাষ্ট্রসংঘেও আমি অনেকবার আলোচনা হতে দেখেছি। সেটি হ’ল – সম্পত্তির অধিকার। দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন গরীব মানুষ। তাঁদের কোনও নথি থাকে না। আমার বিশ্বাস যে, বিশ্বের শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদরা ভারতের স্বামিত্ব যোজনা নিয়ে গবেষণা করবেন। এখনও পর্যন্ত ড্রোনের সাহায্যে দেশের দেড় লক্ষ গ্রামের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ৩৭ হাজার বর্গকিলোমিটার জমির মানচিত্র তৈরি করে প্রপার্টি কার্ড তৈরি করা হয়েছে ৮০ লক্ষেরও বেশি মানুষের জন্য। এর ফলে, গ্রামের মানুষের ব্যাঙ্ক ঋণ পাওয়া সহজ হবে। জমি সংক্রান্ত আইনি বিবাদ কমে যাবে।

বন্ধুগণ,

বর্তমানে ভারত আগামী ২৫ বছরে পথ-নির্দেশ তৈরি করছে। স্বাধীনতার ১০০ বছর যখন পূর্ণ হবে, সেই সময়ের দেশকে লক্ষ্য রেখে এই পথ-নির্দেশিকা তৈরি হচ্ছে। আগে সংস্কার ছিল বাধ্যতামূলক। এখন সেটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। অরুণজী আজ যেখানেই থাকুন না কেন, তিনি খুশি হবেন যে, তিনি এক সময় যে কাজের অংশ ছিলেন, সেই কাজ থেকে দেশ আজ উপকৃত হচ্ছে। জিএসটি অথবা আইবিসি নিয়ে বছরের পর বছর আলোচনা হয়েছে। এখন তার সুফল আমাদের সামনে।

বন্ধুগণ,

আমাদের নীতির ভিত্তি মানুষের নারীস্পন্দন। মানুষের চাহিদা ও প্রত্যাশার কথা আমরা শুনি। জনপ্রিয়তার স্বার্থে আমাদের নীতি তৈরী হয় না। কোভিডের সময় ভারত সারা বিশ্বকে দেখিয়েছে, মানুষের কথা ভেবে নেওয়ার সিদ্ধান্ত এবং জনপ্রিয় হওয়ার স্বার্থে নেওয়া সিদ্ধান্তের মধ্যে কি তফাৎ। অতিমারীর সময় চাহিদা-নির্ভর অর্থনীতির জন্য বেল আউট প্যাকেজ ছিল একমাত্রা উপায় সারা বিশ্বে। আমরাও চাপে ছিলাম। সমালোচনাও হচ্ছিল, করছিলাম না বলে। কিন্তু আমরা চাপের কাছে নতিস্বীকার করিনি। আমরা গরীব মানুষকে নিরাপত্তা দিয়েছি। মহিলা, কৃষক এবং এমএসএমই-র উপর নজর দিয়েছি। ধৈর্য্যের সঙ্গে শান্তভাবে পদক্ষেপ নিয়েছি।

বন্ধুগণ,

আমি প্রায়শই বলে থাকি, ‘ন্যূনতম সরকার এবং অধিকতম প্রশাসন’ সম্পর্কে। আমাদের সরকার এমন ১ হাজার ৫০০ আইন বাতিল করেছে, যেগুলি মানুষের জীবনে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ করতো। আমার মনে আছে, ২০১৪’র নির্বাচনের জন্য যখন ২০১৩’য় আমাকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হয়, তখন দিল্লিতে একটি বাণিজ্য সংগঠন একটি অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তারা অনেক প্রশ্ন করেছিল, একটি বিশেষ আইন আমি করবো কি করবো না! আমি তাদের বলেছিলাম, আপনারা আইন চাইছেন কিন্তু আমি নতুন আইনের নিশ্চয়তা দিতে পারবো না। তবে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, আমি প্রতিদিনে একটি করে আইন বাতিল করবো। প্রথম ৫ বছরে আমি ১ হাজার ৫০০টি আইন বাতিল করেছি, যেগুলি জনসাধারণের মাথার উপর বোঝার মতো চেপেছিল।

বন্ধুগণ,

আপনারা জানলে খুশি হবেন যে, সরকার ৩০ হাজারেরও বেশি বিধি বাতিল করেছে। এগুলি থেকে ব্যবসা করার সুবিধা এবং ভালোভাবে জীবনযাপন করার সুবিধা ব্যাহত হত। এই বিধিগুলি বাতিল করার অর্থ মানুষের মধ্যে অভূতপূর্ব আস্থার পরিবেশ তৈরি করা। আমি লালকেল্লার ভাষণেও বলেছিলাম যে, আমি চাই যে, মানুষের জীবন থেকে যতটা সম্ভব সরকারকে দূরে রাখা।

আজ আমি আপনাদের জানাতে পেরে খুশি যে, ন্যূনতম সরকারের পদক্ষেপে অধিকতম ফললাভ হচ্ছে। আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত। এর ফল আজ আপনাদেরই সামনে। কোভিড টিকার কথাই ধরুন। আমাদের দেশে বেসরকারি সংস্থাগুলি দারুন কাজ করেছে। তবে, সরকারও তাদের সঙ্গে ছিল সর্বশক্তি দিয়ে। ভাইরাস চিহ্নিত করা থেকে দ্রুত ট্রায়াল, অর্থের যোগান থেকে টিকা প্রস্তুত – এই সব ক্ষেত্রেই টিকা উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি সরকারের পূর্ণ সমর্থন পেয়েছে।

আমাদের মকাকাশ পরিবেশ আরেকটি উদাহরণ। আজ ভারত সারা বিশ্বে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য, অত্যাধুনিক মহাকাশ পরিষেবা প্রদানকারী। এই ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলিও ভালো কাজ করছে। এক্ষেত্রেও সরকার পুরো শক্তি নিয়ে তাদের পেছনে দাঁড়িয়েছে।

যখন আমরা ভারতের ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার উদাহরণ দিই, আমাদের অত্যাধুনিক অতিসূক্ষ্ম প্রযুক্তির পাশাপাশি, বড় বড় সংস্থা আছে, যারা ডিজিটাল পেমেন্টের সঙ্গে যুক্ত। এখানেও তাঁদের পেছনে আছে জেএএম ট্রিনিটি রূপে ইউপিআই এবং সরকারের সহায়ক নীতির সমর্থন। এখন সময় এসেছে, বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিকে আরও উৎসাহ দেওয়া, যাতে তারা এই অগ্রগতিতে অংশীদার হয় এবং আমরা এই লক্ষ্যে এগিয়ে চলি।

বন্ধুগণ,

সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলায়, দেশের বেসরকারি ও সরকারি দুটির উপরই আস্থা রাখায় আজ অগ্রগতির ক্ষেত্রে ভারত চমকপ্রদ ফল প্রদর্শন করছে। এখন আমাদের রপ্তানী নতুন রেকর্ড তৈরি করছে। পরিষেবা ক্ষেত্রে দ্রুত বৃদ্ধি হচ্ছে। উৎপাদন ক্ষেত্রে পিএলআই কর্মসূচির সুফল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। মোবাইল ফোন সহ সমগ্র ইলেক্ট্রনিক উৎপাদন ক্ষেত্রে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, করোনার সময় আমি যখন খেলনা নিয়ে শিখর সম্মেলন করি, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী কখনও ঝাঁটা নিয়ে, কখনও স্বচ্ছতা নিয়ে, কখনও শৌচাগার নিয়ে কথা বলেন, আর এখন তিনি খেলনা নিয়ে কথা বলছেন। আমার কথা তাঁরা ভালোভাবে নিতে পারেননি। আমি মন দিয়েছিলাম - খেলনা, নির্মাতা, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং আর্থিক দিকগুলি নিয়ে। দু’বছরও কাটেনি দেশবাসী গর্বিত হবেন যে, খেলনার আমদানী অনেক কমেছে। আপনারা পর্যটন নিয়ে বলেন। ভারতের পর্যটন সম্ভাবনা এতটাই বেশি, কিন্তু আমরা এক জায়গাতেই আটকে রয়েছি। আমরা বিশ্বের সামনে সম্পূর্ণ ভারতকে তুলে ধরার মানসিকতাই হারিয়ে ফেলেছি। আমি আমার বিদেশি অতিথিদের সবসময় বলি, ভারতের কিছু কিছু জায়গায় ঘুরে আসার জন্য। এ বছর আমরা ৭৫টি বিশেষ জায়গায় যোগার আয়োজন করেছিলাম, যাতে মানুষ আমাদের পর্যটন-স্থানগুলিকে জানতে পারেন।

বন্ধুগণ,

আমাদের ডিজিটাল অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডিজিটাল পরিকাঠামো ও অন্য পরিকাঠামোয় রেকর্ড পরিমাণ লগ্নী হচ্ছে। উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি ক্ষেত্রই আজ পুরো দমে দৌড়চ্ছে।

বন্ধুগণ,

‘স্বাধীনতার অমৃতকাল’ ভারতের সামনে নতুন নতুন অগণিত সুযোগ নিয়ে আসছে। আমাদের সিদ্ধান্ত দৃঢ় এবং আমাদের উদ্দেশ্য লক্ষ্যচ্যুত হওয়ার নয়। আমি নিশ্চিত, আমরা আমাদের সংকল্প পূরণ করবো এবং একবিংশ শতাব্দীতে ভারতকে পৌঁছে দেব তার উদ্দীষ্ট উচ্চতায়। থার্মানজী যেমন কিছু সমস্যা নিয়ে বলছিলেন। আমি তাঁর সঙ্গে সহমত যে কিছু সমস্যা তো আছেই। কিন্তু, যেখানে সমস্যা আছে, সেখানে ১৩০ কোটি সমাধানও আছে। এটা আমার বিশ্বাস যে, চ্যালেঞ্জকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েই আমাদের এগোনোর সংকল্প নিতে হবে। সেজন্য আমরা অন্তর্ভুক্তিকরণের পথ নিয়েছি এবং আমাদের উদ্দেশ্য সেই পথ দিয়ে আমাদের উন্নয়নকে চালনা করা। অরুণজীকে আরও একবার স্মরণ করে আমি আমার ভাষণ শেষ করছি। বিশেষ ধন্যবাদ জানাই থার্মানজীকে। আপনাদের সকলকে জানাই আমার আন্তরিক ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ।

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে ছিল

PG/AP/SB



(Release ID: 1840777) Visitor Counter : 214