প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

যৌথ বিবৃতি : ভারত-অস্ট্রেলিয়া ভার্চ্যুয়াল শীর্ষ বৈঠক

Posted On: 21 MAR 2022 7:00PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২১ মার্চ, ২০২২

 

১) ২১শে মার্চ, ২০২২-এ আয়োজিত ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অস্ট্রেলিয়ার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী স্কট মরিসন এমপি-র মধ্যে ভার্চ্যুয়াল বা প্রযুক্তির মাধ্যমে শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

২) দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ‘কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ’ বা ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রতি উভয়ের দায়বদ্ধতা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ক্ষেত্র, সাইবার ক্ষেত্র, প্রযুক্তি ক্ষেত্র এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিবিড় করার বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আস্থা, বোঝাপড়া, অভিন্ন স্বার্থ এবং গণতন্ত্রের মূল্যবোধ ভাগ করে নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন এবং আইনের শাসনের শক্তিশালী ভিত্তির ওপর এই মূল্যবোধকে সমৃদ্ধ করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁরা ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার জন্য প্রতি বছর বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন।

৩) উভয় নেতা ২০২৩-এ জি-২০ বৈঠকে ভারতের সভাপতিত্বের অপেক্ষায় থাকার কথা ব্যক্ত করেন এবং বিশ্বব্যাপী স্বার্থ ও উদ্বেগের অর্থনৈতিক বিষয়গুলিতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা

৪) অস্ট্রেলিয়া-ইন্ডিয়া বিজনেস এক্সচেঞ্জ সহ কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপের অধীনে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করার ক্ষেত্রে উভয় নেতা তাঁদের প্রতিশ্রুতির কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী মরিসন অস্ট্রেলিয়া-ইন্ডিয়া ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফোরামের সূচনা করেন এবং বেঙ্গালুরুতে একটি নতুন কনস্যুলেট জেনারেল খুলতে অস্ট্রেলিয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ করেন। মান ও ভবিষ্যৎ দক্ষতা নিয়ে সহযোগিতা সহ দ্বিমুখী বাণিজ্য ও উদ্ভাবনের জন্য নতুন উদ্যোগ ঘোষণা করার কথা উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনন্দ ব্যক্ত করেন। তিনি একটি নতুন অস্ট্রেলিয়া-ইন্ডিয়া ইনোভেশন নেটওয়ার্কের প্রয়োজনীয়তার কথাও ব্যক্ত করেন।

৫) উভয় নেতা ‘কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট’ বা ব্যাপক অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি সম্পর্কিত আলোচনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হওয়ায় সেটিকে স্বাগত জানান। তাছাড়া যে সমস্ত বিষয় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তার অগ্রগতি নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীই সন্তোষ প্রকাশ করেন। উভয় নেতা শীঘ্রই একটি অন্তর্বর্তীকালীন কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট চূড়ান্ত করার জন্য পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বৃদ্ধি করার জন্য এবং কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপকে আরও নিবিড় করতে এ বছরের শেষ দিকে কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট সম্পূর্ণ করার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন। উভয় প্রধানমন্ত্রীই পর্যটন সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারত-অস্ট্রেলিয়া মেমোরেন্ডাম বা সমঝোতা স্মারক পুনর্নবীকরণকেও স্বাগত জানিয়েছেন।

৬) উভয় নেতা ইন্ডিয়া-অস্ট্রেলিয়া ডাবল ট্যাক্সেশন অ্যাভয়ডেন্স এগ্রিমেন্ট বা ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে দ্বৈত কর পরিহার চুক্তির অধীনে ভারতীয় সংস্থাগুলির অফশোর আয়ের ওপর কর ধার্য করার বিষয়টি নিয়ে উদ্ভূত সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধানের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।

৭) উভয় প্রধানমন্ত্রীই একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নিয়ম-ভিত্তিক বাণিজ্য পরিবেশ গড়ে তোলার প্রতি তাঁদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তাঁরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সঙ্গে নিয়ম-ভিত্তিক, বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে তার মূল অংশে সমানভাবে উন্নত ও শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। আগামী জুন মাসে ‘এমসি১২’ আয়োজনের ক্ষেত্রে উভয় নেতাই সম্মত হয়েছেন এবং তাঁরা সেটিকে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন বলে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। দুই প্রধানমন্ত্রীই দু’দেশের মধ্যে সরবরাহ শৃঙ্খল তৈরি করা এবং সেটিকে শক্তিশালী ও বৈচিত্র্যময় করে তোলার কথা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি, এই সরবরাহ শৃঙ্খলের প্রক্রিয়ায় সব ধরনের বাধা-বিপত্তি এড়াতে একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন।

জলবায়ু, শক্তি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং গবেষণা সহযোগিতা

৮) উভয় নেতা দু’দেশের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহযোগিতার উল্লেখযোগ্য বিস্তারের কথা স্বীকার করেন। তাঁরা অস্ট্রেলিয়া-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক রিসার্চ ফান্ড বা কৌশলগত গবেষণা তহবিলের সম্প্রসারণকে স্বাগত জানান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দুটোই গবেষণায় সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক একটি স্তম্ভ। পাশাপাশি, ২০২১-এ ইন্ডিয়া-অস্ট্রেলিয়া সার্কুলার ইকনমি হ্যাকাথন আয়োজনের জন্য উভয় নেতাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

৯) উভয় প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন, শক্তি নিরাপত্তা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য, আর কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং কোয়াড, জি-২০, ইউএনএফসিসিসি ও আন্তর্জাতিক সৌর জোটের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে জাতীয় স্তরে উপযুক্ত পদক্ষেপগুলিকে উৎসাহিত করতে, তাঁদের প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন। তাঁরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সুদূরপ্রসারী ব্যবহার এবং উৎপাদন আর ‘রিসোর্স এফিশিয়েন্ট’ সম্পদের দক্ষ পরিচালনার ক্ষেত্রে সার্কুলার ইকনমির অবদান উল্লেখ করেন। এই প্রেক্ষিতে উভয় নেতা ‘মাইন্ডফুল কনজাম্পশন’ বা সম্পদের সংবেদনশীল ব্যবহার, অধিক ‘সাসটেনেবল লাইফস্টাইল’ বা টেকসই জীবনশৈলী এবং পরিবেশ থেকে বর্জ্য পদার্থ হ্রাস করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী টেকসই জীবনশৈলীর জন্য বিশ্বব্যাপী গণ-আন্দোলনের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বলেন এই গণ-আন্দোলন সচেতনভাবে বর্জ্য হ্রাস করবে ও সংবেদনশীল ব্যবহারকে উৎসাহিত করবে।

১০) উভয় নেতা ২০২২-এর ১৫ই ফেব্রুয়ারি দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ে আয়োজিত চতুর্থ ভারত-অস্ট্রেলিয়া এনার্জি ডায়ালগ-এ ভারতের মন্ত্রী শ্রী রাজকুমার সিং এবং অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে সে দেশের মন্ত্রী শ্রী টেলর-এর শক্তি বিষয়ক সংলাপকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বিস্তারিতভাবে শক্তি ও সম্পদের ক্ষেত্রে সমর্থন করেছেন। তাঁরা নতুন এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বিষয়ক প্রযুক্তিতে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে লেটার অফ ইন্টেনশন বা অভিপ্রায়পত্রকে স্বাগত জানান যার লক্ষ্য ছিল কম এবং শূন্য কার্বন উৎসারণযোগ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে খরচ কমিয়ে উচ্চ নিঃসরণকারী বিকল্পগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক হয়ে ওঠা, আর তাঁরা নির্মল প্রযুক্তি বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। প্রয়োজনীয় অগ্রগতির জন্য এবং ‘মিশন ইনোভেশন’ নামক ফোরামের মতো সংস্থার মাধ্যমে গবেষণা ও উন্নয়ন সুনিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। ২০২২ সালের ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) বা আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আগে নেতারা আরও বহুপাক্ষিক শক্তি সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন যার মধ্যে আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার ক্লিন এনার্জি ট্রান্সমিশন প্রোগ্রামে অস্ট্রেলিয়ার ২ মিলিয়ন ডলারের তহবিল অবদান রয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থায় ভারতের ক্রমবর্ধমান ক্রিয়াকলাপগুলিকে সমর্থন করা হয়েছে, যাতে ভারতের জন্য এই আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার সদস্য পদ লাভের পথ প্রশস্ত হয়। উভয় প্রধানমন্ত্রী ২০২২ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত হতে চলা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে পরিচ্ছন্ন শক্তি ব্যবহারের শৃঙ্খলে সিডনি এনার্জি ফোরামে ভারতের অংশগ্রহণের জন্য অপেক্ষার কথা ব্যক্ত করেন।

১১) উভয় প্রধানমন্ত্রী তাঁদের যৌথ বিবৃতিতে বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণ রূপান্তরণের জন্য নির্মল প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশ এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদগুলির ন্যায়সঙ্গত ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। উভয় নেতা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিটিক্যাল মিনারেলস ফেসিলিটেশন অফিস নিয়ে সহযোগিতা এবং নিরাপদ, স্থিতিস্থাপক ও টেকসই ‘ক্রিটিক্যাল মিনারেল সাপ্লাই চেন’ নির্মাণের জন্য তাঁদের উভয়ের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তাঁরা ভারত-অস্ট্রেলিয়া যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের দ্বারা বাস্তবায়ন পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সন্তোষ প্রকাশ করেন, যার মধ্যে রয়েছে গবেষণা ও বৈজ্ঞানিক সংস্থাগুলির মধ্যে প্রযুক্তিগত আদান-প্রদান, আর একটি দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা নিয়ে বিনিয়োগ গোল-টেবিলের আয়োজন। গুরুত্বপূর্ণ খনিজ প্রকল্পে যৌথ সহযোগিতার জন্য ভারতের ‘খনিজ বিদেশ লিমিটেড’ বা কাবিল এবং অস্ট্রেলিয়ার ‘ক্রিটিক্যাল মিনারেল ফেসিলিটেশন অফিস’-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরকে উভয়েই স্বাগত জানান।

১২) উভয় প্রধানমন্ত্রী ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০২২-এ  উভয় দেশের বিদেশ মন্ত্রী শ্রী পেইন এবং শ্রী জয়শঙ্করের মধ্যে অনুষ্ঠিত ভারত অস্ট্রেলিয়া সাইবার ফ্রেমওয়ার্ক সংক্রান্ত উদ্বোধনী বার্তালাপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা সাইবার গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা বৃদ্ধি, সাইবার সক্ষমতা বৃদ্ধি, সাইবার অপরাধ দমন, ডিজিটাল অর্থনীতি এবং নানা জটিল ও উদীয়মান প্রযুক্তির বিষয়ে সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা উভয় দেশের মধ্যে ভাগ করা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ডিজাইন করা প্রযুক্তির বিকাশ পরিচালনা এবং ব্যবহারের ওপর জোর দেন। তাঁরা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা একটি উন্মুক্ত, নিরাপদ, মুক্ত, ব্যবহারযোগ্য, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ এবং আন্তঃপরিচালনাযোগ্য সাইবার স্পেস ও প্রযুক্তির প্রতি তাঁদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত  করেন। আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে যেভাবে সাইবার স্পেস এবং সাইবার-সক্ষম প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, তাঁরা সেই প্রচেষ্টার প্রভূত নিন্দা করেন। তাঁরা সাইবার স্পেসের জন্য আন্তর্জাতিক মান, নিয়ম ও পরিকাঠামো উন্নয়নে রাষ্ট্রসঙ্ঘ সহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ফোরামে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করতে সহযোগিতামূলক কর্মপদ্ধতি সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে দায়বদ্ধতার কথা উল্লেখ করেন।

১৩) উভয় নেতা জটিল এবং উদীয়মান প্রযুক্তি আর বৈচিত্র্যময় ও বিশ্বস্ত প্রযুক্তি সরবরাহ শৃঙ্খল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার গুরুত্ব স্বীকার করেছেন। তাঁরা বেঙ্গালুরুতে ভারত-অস্ট্রেলিয়া সেন্টার অফ এক্সেলেন্স ফর ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড এমার্জিং টেকনলজি পলিসি’ রচনার চুক্তিকে স্বাগত জানান।

১৪) উভয় প্রধানমন্ত্রী ভারতের ‘গগনযান’ স্পেস প্রোগ্রামে অস্ট্রেলিয়ার নিয়মিত সমর্থন সহ ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মহাকাশ সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। উভয় নেতা ভারতের মহাকাশ ক্ষেত্রের সংস্কার থেকে উদ্ভূত দ্বিপাক্ষিক মহাকাশ সহযোগিতার বিষয়গুলির সম্প্রসারণকে উৎসাহ যুগিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মরিসন অস্ট্রেলিয়ান স্পেস এজেন্সির ইন্টারন্যাশনাল স্পেস ইনভেস্টমেন্ট বা আন্তর্জাতিক মহাকাশ বিনিয়োগ উদ্যোগের একটি ‘ডেডিকেটেড ইন্ডিয়া স্ট্রিম’ ঘোষণা করে তাঁর আনন্দ প্রকাশ করেন।

উভয় দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধন

১৫) উভয় নেতা ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার জনগণের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধনের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। প্রধানমন্ত্রী মরিসন নতুন ‘মৈত্রী স্কলারশিপ প্রোগ্রাম’, ‘মৈত্রী গ্র্যান্টস’ আর ‘ফেলোশিপ প্রোগ্রাম’ ও অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যে মৈত্রী সাংস্কৃতিক অংশীদারিত্ব ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া-ভিত্তিক সেন্টার ফর অস্ট্রেলিয়া-ইন্ডিয়া রিলেশন্স প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন। উভয় নেতা অভিভাসন এবং যাতায়াত নিয়ে স্বাক্ষরিত ‘লেটার অফ ইন্টেন্ট’ বা অভিপ্রায় পত্রকে স্বাগত জানান আর একটি অভিভাসন ও যাতায়াত নিয়ে অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান যা উভয় দেশের ছাত্রছাত্রী এবং পেশাদারদের যাতায়াতের উন্নত ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করবে। ভারত থেকে চুরি যাওয়া ২৯টি প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব-সম্পন্ন  বস্তু অস্ট্রেলিয়া সরকার যেভাবে ফিরিয়ে দিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার এই সদ্ভাবকে প্রধানমন্ত্রী মোদী স্বাগত জানিয়েছেন। উভয় প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রসার ভারতী এবং অস্ট্রেলিয়ার এসবিএস-এর মধ্যে সম্প্রচারে সাহায্য ও সহযোগিতা সম্পর্কিত ‘মেমোরান্ডাম’ বা সমঝোতা স্মারককে স্বাগত জানিয়েছেন।

১৬) উভয় প্রধানমন্ত্রী দুই দেশে লিঙ্গ সমতার সপক্ষে যে পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়েছে সেগুলিকে স্বীকৃতি দেন এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত শাখায় লিঙ্গ বৈষম্য মোকাবিলার মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়নকে এগিয়ে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মতির কথা ব্যক্ত করেন।

১৭) সুদূরপ্রসারী ও দীর্ঘস্থায়ী ভারত-অস্ট্রেলিয়া শিক্ষা এবং দক্ষতা বিষয়ক সম্পর্কের সম্প্রসারণ ও অধিক উপযোগের লক্ষ্যসাধনে আর শিক্ষাগত যোগ্যতার স্বীকৃতির জন্য দু’দেশের নানা ব্যবস্থাকে স্বীকৃতি দিতে একটি টাস্ক ফোর্স প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াকে দুই প্রধানমন্ত্রীই স্বাগত জানিয়েছেন। এই টাস্ক ফোর্স তার প্রতিষ্ঠার ছয় মাসের মধ্যে উচ্চশিক্ষায় প্রবেশের জন্য এবং কর্মসংস্থানের সুযোগগুলিকে সমর্থন করার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতার স্বীকৃতি প্রদান করবে। বিভিন্ন ডেলিভারি মোডের মাধ্যমে অর্জিত স্বীকৃতির প্রক্রিয়া উন্নত করতে একটি সমবায় প্রক্রিয়া গড়ে তুলতে দুই নেতাই সম্মত হয়েছে।

কোভিড-১৯ সহযোগিতা

১৮) উভয় নেতা ভ্যাক্সিনেশন সার্টিফিকেট বা টিকাকরণের শংসাপত্র স্বীকৃতি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক আন্তঃব্যবহারের গুরুত্বের ওপর একমত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মরিসন ভারতের টিকা মৈত্রী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আর বিশ্বব্যাপী টিকাকরণ প্রচেষ্টায় ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।

১৯) কোয়াড এবং কোভ্যাক্স-এর মাধ্যমে তাদের দৃঢ় সহযোগিতার স্বীকৃতি জানিয়ে উভয় নেতা বিশ্বব্যাপী উচ্চমানের, নিরাপদ, কার্যকর এবং সুলভ মূল্যের কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন চিকিৎসা পদ্ধতি এবং জটিল চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের ন্যায্য, সময়োপযোগী ও ন্যায়সঙ্গত ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করার জন্য তাঁদের সঙ্কল্প পুনর্ব্যক্ত করেন। তাঁরা ইন্দো-প্যাসিফিক এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছে উচ্চমানের ভ্যাক্সিন সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে তাদের বর্তমান সহযোগিতার ওপর জোর দেন।

নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা

২০) উভয় প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নানা হুমকি ও সমস্যার মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও নিবিড় করতে সম্মত হয়েছেন। ভারতের জেনারেল রাওয়াতের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ইয়ং ডিফেন্স অফিসারের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম নিয়ে যে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে তাকে উভয় প্রধানমন্ত্রী

স্বাগত জানিয়েছেন। উভয় নেতা ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপথে যাতায়াতের তথ্য আদানপ্রদান এবং মেরিটাইম ডোমেইন সচেতনতাকে স্বাগত জানান। তাঁরা ইন্দো-প্যাসিফিক জুড়ে আরও ঘনিষ্ঠ সমন্বয় তৈরি করার জন্য প্রতিরক্ষা তথ্য শেয়ার করার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে উভয়ের দায়বদ্ধতাকে ব্যক্ত করেন। এ বছরের শেষের দিকে অস্ট্রেলিয়ায় ইন্দো-প্যাসিফিক এনডেভার অনুশীলনে ভারতের অংশগ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী।

২১) উভয় নেতা ‘ডিপার অপারেশনাল ডিফেন্স কো-অপারেশন’ বা নিবিড় প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সুবিধার্থে ‘রেসিপ্রোকাল অ্যাক্সেস অ্যারেঞ্জমেন্ট’ বা পরস্পরের ব্যবস্থা ব্যবহারের সুবিধার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন, আর ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ক্রিটিক্যাল রিজিওনাল মেরিটাইম করিডরের প্রতি এই সহযোগিতার ওপর জোর দেন। উভয় প্রধানমন্ত্রী পারস্পরিক স্বার্থের ক্ষেত্রগুলিতে আরও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সুযোগ অনুসরণ করা নিয়ে নিজেদের উদ্যোগের কথা আবার সুনিশ্চিত করেন।

২২) ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যেকার সমুদ্র অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ যে একটি হুমকি তা স্বীকার করে নিয়ে উভয় নেতাই সন্ত্রাসবাদের সকল প্রকার ও প্রকাশ এবং আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের জন্য সন্ত্রাসবাদীদের ছদ্মযুদ্ধের প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে নিন্দা করেন। তাঁরা তাঁদের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনও অঞ্চল যাতে সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য ব্যবহার না করা হয়, তা সুনিশ্চিত করতে, এবং এই ধরনের হামলার অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে, অবিলম্বে টেকসই, যাচাইযোগ্য এবং অপরিবর্তনীয় পদক্ষেপ নিতে সমস্ত দেশের উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। উভয় দেশের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান অব্যাহত রাখতে, এবং দ্বিপাক্ষিকভাবে সন্ত্রাস বিরোধী উদ্যোগ আর কোয়াড পরামর্শে ও বহুপাক্ষিক ফোরামে সমন্বয় করতে উভয়েই সম্মত হন।

আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতা

২৩) উভয় নেতা ইউক্রেনের চলমান সংঘাত ও মানবিক সঙ্কট নিয়ে তাঁদের গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁরা অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধের প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তাঁরা সমসাময়িক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা, রাষ্ট্রসঙ্ঘের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা ও দেশগুলির আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখার ওপর জোর দেন। উভয় প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে আর ইন্দো-প্যাসিফিকের ওপর এর বৃহত্তর প্রভাব নিয়ে ঘনিষ্ঠভাবে পরস্পরের পাশে থাকার সম্মতির কথা ব্যক্ত করেন।

২৪) উভয় প্রধানমন্ত্রী একটি ফ্রি ওপেন এবং রুল-বেসড ইন্দো-প্যাসিফিক-এর প্রতি তাঁদের শেয়ার করা অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন যা একটি শক্তিশালী রিজিওনাল আর্কিটেকচার দ্বারা সমর্থিত আর যার কেন্দ্রে রয়েছে আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি। তারা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমৃদ্ধ অঞ্চল গড়ে তোলার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন যেখানে সমস্ত দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করা হবে আর দেশগুলি সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বল প্রয়োগ থেকে মুক্ত থাকবে।

২৫) উভয় নেতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি উন্নত করার জন্য কোয়াড-এর ইতিবাচক এবং উচ্চাভিলাষী এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতার প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতার ওপর জোর দেন। তাঁরা ২০২২ সালের মার্চ মাসে কোয়াড নেতৃবৃন্দের ভার্চ্যুয়াল বৈঠককে স্বাগত জানান এবং আগামী মাসগুলিতে ব্যক্তিগতভাবে নেতাদের মধ্যে পরবর্তী বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানান। তাঁরা ইন্দো-প্যাসিফিক মহাসাগর উদ্যোগে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতাকেও স্বাগত জানান।

২৬) অস্ট্রেলিয়া, ইউনাইটেড কিংডম-ইউনাইটেড স্টেটস (এইউকেইউএস) অংশীদারিত্ব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মরিসনের ব্রিফিং-এর প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। উভয় নেতা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করা এবং অবিস্তারের সর্বোচ্চ মান বজায় রাখার জন্য অস্ট্রেলিয়ার দায়বদ্ধতাকে স্বীকৃতি দেন।

২৭) উভয় নেতা ভারত মহাসাগর অঞ্চলে এবং ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলির সঙ্গে ভারত মহাসাগরীয় রিম অ্যাসোসিয়েশনের জন্য তাঁদের সমর্থন সহ সহযোগিতা আরও জোরদার করার দায়বদ্ধতা সুনিশ্চিত করেছেন। সামুদ্রিক ও বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ভারত মহাসাগরে অস্ট্রেলিয়ার ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

২৮) উভয় নেতা ইন্দো-প্যাসিফিকের স্থিতিস্থাপকতা এবং পুনরুদ্ধারকে সমর্থন করতে তাঁদের বর্তমান সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী মরিসন হাঙ্গা টোঙ্গা হুঙ্গা হাপাই আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত এবং সুনামির পরিপ্রেক্ষিতে টোঙ্গায় আর কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের প্রতিক্রিয়া হিসেবে কিরিবাতিতে ভারতের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রশান্ত মহাসাগরী অংশীদারদের কাছে ভারতীয় এইচএডিআর সরবরাহে সহযোগিতা করার জন্য অস্ট্রেলিয়ার ভূমিকাকে স্বীকার করে নেন।

২৯) উভয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সমস্ত সাগর ও মহাসাগরে অধিকার এবং স্বাধীনতা প্রয়োগ করতে সক্ষম হওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, বিশেষ করে সামুদ্রিক আইন সংক্রান্ত রাষ্ট্রসঙ্ঘের কনভেনশন (ইউএন ক্লজ), নৌ চলাচলে স্বাধীনতা এবং ওই এলাকার ওপর দিয়ে বিমান চলাচলের স্বাধীনতার ওপর জোর দেন এবং এ সংক্রান্ত নানা বিরোধিতার সমাধান যে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে শান্তিপূর্ণ উপায়ে করা উচিৎ এ বিষয়ে দৃঢ় মত ব্যক্ত করেন। কোনরকম হুমকি বা শক্তির ব্যবহার বা একতরফাভাবে স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের কোনও প্রচেষ্টা ছাড়াই সমস্যাগুলি জটিল হয়ে উঠতে পারে। তাঁরা যৌথভাবে ওই দেশগুলিকে এমন কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আত্মসংযম ব্যবহার করার আহ্বান জানান। তাঁদের মতে আত্মসংযম  না করলে সমস্যাগুলি জটিল হয়ে উঠতে পারে বা বাড়তে পারে। তাঁদের মতে বিরোধ সব সময়ই শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করে। দক্ষিণ চিন সাগর সহ সামুদ্রিক নিয়ম-ভিত্তিক আদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উভয় নেতা আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি আনুগত্যের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন। বিশেষ করে, সাগরের আইন সংক্রান্ত রাষ্ট্রসঙ্ঘের কনভেনশনে বা ইউএন ক্লজ-এ যেটা প্রতিফলিত হয়েছে উভয় প্রধানমন্ত্রী তা মেনে চলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তাঁরা দক্ষিণ চিন সাগরে যে কোনও আচরণবিধি কার্যকর করতে মূল এবং স্থানীয় আইনের সঙ্গে সম্পূর্ণ রূপে সামঞ্জস্য রাখার আহ্বান জানান। আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে এই আলোচনার পক্ষ নয়, এমন কোনও জাতির বৈধ অধিকার ও স্বার্থের প্রতি কুসংস্কার না করে আঞ্চলিক স্থাপত্যের বর্তমান অন্তর্ভুক্তিকে সমর্থন করে।

৩০) উভয় প্রধানমন্ত্রী মায়ানমারে অসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে হিংসাকে অবিলম্বে বন্ধ করা, বিদেশি সহ নির্বিচারে আটক সকলের মুক্তি এবং মানবিক প্রবেশাধিকারের বাধাহীনতার আহ্বান জানান। তাঁরা আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির পাঁচ দফা ঐক্যমত্য বাস্তবায়নের জন্য মায়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান, এবং হিংস্রতা বন্ধে সমর্থন জানাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার উৎসাহ প্রদান করার কথা ঘোষণা করেন।

৩১) উভয় নেতা আফগানিস্তানে মানবিক পরিস্থিতির ক্রমাবনতির পরিপ্রেক্ষিতে তাদেরকে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য দৃঢ় দায়বদ্ধতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আফগানিস্তান জুড়ে ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের ইউএনএসসিআর ২৫৯৩ অনুযায়ী সন্ত্রাসবাদের দায়বদ্ধতা এবং মানবাধিকার মেনে চলার আহ্বান জানান। তাঁরা নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং জনজীবনে তাঁদের পূর্ণ অংশগ্রহণের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। তাঁরা আফগানিস্তানে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও স্থিতিশীলতা স্থাপনের জন্য একটি ব্যাপক জনভিত্তিসম্পন্ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যক্ত করেন।

৩২) এই বৈঠকটি ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে উষ্ণ ঘনিষ্ঠ বন্ধনকে শক্তিশালী করেছে এবং উভয় নেতা ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

 

CG/SB/DM/



(Release ID: 1809446) Visitor Counter : 178