প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

রাষ্ট্রপতির অভিভাষনের উপর রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ প্রস্তাবে বক্তব্য পেশ

Posted On: 08 FEB 2022 4:12PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের উপর রাজ্যসভায় ধন্যবাদ প্রস্তাবে বক্তব্য পেশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপন করার সময় দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে হবে এবং কিভাবে দেশ এগিয়ে যাবে, তা ভাবার এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়”। তিনি দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে জানান যে, এর জন্য সংকল্প পূরণ করতে সকলের যৌথ অংশীদারিত্ব এবং অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব এখন কোভিড-১৯ এর সঙ্গে লড়াই করছে। মানব সভ্যতা গত ১০০ বছরে এরকম সমস্যার মুখোমুখী হয়নি। দেশের মানুষ টিকা নিয়েছেন এবং তাঁরা শুধু নিজেদের রক্ষা করার জন্যই নয়, অন্যদের রক্ষা করার জন্যও এই টিকা নিয়েছেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে টিকা গ্রহণের হার যথেষ্ট প্রশংসনীয় বলে জানান তিনি।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ এই মহামারীর সময় দেশের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু, দেশে ৮০ কোটি নাগরিককে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হয়েছে। দরিদ্রদের জন্য রেকর্ড সংখ্যক বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এই বাড়িগুলিতে জল সংযোগও দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারীর সময় সরকার ৫ কোটি মানুষকে নল বাহিত জল সরবরাহ করেছে। এ এক রেকর্ড। দেশের কৃষকরা মহামারী পরিস্থিতিতেও অধিক ফসল উৎপাদন করেছেন। এমনকি, এই মহামারী পরিস্থিতির মধ্যেও একাধিক পরিকাঠামো সম্পর্কিত প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, এ ধরনের সমস্যার সময়েও চাকরি নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, মহামারী পরিস্থিতিতে দেশের যুবকরা খেলাধূলায় প্রভূত অগ্রগতি লাভ করেছেন এবং দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। ভারতীয় যুবকরা স্টার্টআপ – এর মাধ্যমে দেশকে বিশ্বে শীর্ষ তিনটি স্টার্টআপ গন্তব্যকারী দেশে পরিণত করেছে বলে তিনি জানান। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মহামারীর সময় কপ-২৬ বা জি-২০ সম্পর্কিত বিষয় অথবা ১৫০টিরও বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় – সবক্ষেত্রেই ভারত নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছে। সমগ্র বিশ্ব এই বিষয়টি নিয়ে এখন আলোচনা চালাচ্ছে। মহামারী পরিস্থিতির মধ্যেও অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ সংস্থা এবং কৃষি ক্ষেত্রে সরকার বিশেষ জোর দিয়েছে।
 
কর্মসংস্থানের তথ্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০২১ সালে ইপিএফও – এর বেতনের তথ্যানুযায়ী দেখা গেছে যে, প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ নতুন মানুষ ইপিএফও পোর্টালে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। এগুলি সবই আনুষ্ঠানিক চাকরি। এর মধ্যে ৬০-৬৫ লক্ষেরও বেশি ১৮-২৫ বছর বয়সীরা রয়েছেন। মুদ্রাস্ফীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকার মুদ্রাস্ফীতি রোধে যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে। এখন ভারত বৃহত্তর অর্থনীতির দেশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার মানুষের জন্য কাজ করতে বদ্ধপরিকর। বিরোধী দলে থাকা মানেই সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজ বন্ধ করে দেওয়া এই মানসিকতা ভুল। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন, যখন কিছু সম্মানিত সদস্য বলেছিলেন, ভারতের টিকাকরণ অভিযান কোনও বড় বিষয় নয়। তিনি বলেন, মহামারী শুরু থেকে সরকার দেশ ও বিশ্বে উপস্থিত প্রতিটি সম্পদকে একত্রিত করার জন্য সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়েছে। তিনি সকলকে আশ্বস্ত করেছেন যে, যতদিন মহামারী থাকবে, সরকার দেশের দরিদ্রদের রক্ষা করবে।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই একটি শক্তিশালী ও সৌহার্দ্যপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত। এ বিষয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ২৩টি বৈঠকের কথা তুলে ধরেন। কোভিড-১৯ প্রসঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দিতে বিরোধী দলগুলির বয়কট প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
 
শ্রী মোদী বলেন, আজ আয়ুষ্মান ভারতের আওতায় ৮০ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র কাজ করছে। এই কেন্দ্রগুলি গ্রাম ও বাড়ির কাছেকাছি অবস্থিত। এখানে বিনামূল্যে পরীক্ষা সহ উন্নত প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবার সুবিধা রয়েছে।
 
গণতন্ত্রের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, যাঁরা ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছিল, তাঁদের কাছ থেকে সরকার কখনই গণতন্ত্রের শিক্ষা নেবে না। দেশের গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হ’ল বংশপরম্পরায় চলা দলগুলি। যখন একটি রাজনৈতিক দলে একটি পরিবারই বেশি প্রাধান্য পেয়ে থাকে, তখন রাজনৈতিক প্রতিভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কিছু সদস্য জিজ্ঞেস করেছিলেন – কংগ্রেস না থাকলে কি হ’ত”। তিনি বলেন, “আমি বলতে চাই, কংগ্রেস না থাকলে জরুরি অবস্থা হ’ত না, কোনও জাতপাতের রাজনীতি থাকতো না, শিখদের কখনই গণহত্যা করা হ’ত না, কাশ্মীরী পণ্ডিতদের সমস্যা হ’ত না”। 
 
প্রধানমন্ত্রী পুনরায় জানিয়েছেন, সরকার জাতীয় অগ্রগতি ও আঞ্চলিক আকাঙ্খা পূরণের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব রাখেনি। দেশের অগ্রগতি আরও শক্তিশালী হবে যখন দেশের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে আঞ্চলিক আকাঙ্খাগুলিকে পূরণ করা হয়। তিনি বলেন, রাজ্য যখন উন্নতিলাভ করে তখন দেশ এগিয়ে যায়।
 
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের শেষে জানান, বৈষম্যের ঐতিহ্যের অবসান ঘটাতে হবে। তিনি বলেন, এই সময় হ’ল একসঙ্গে পথ চলা। এটি সুবর্ণ সময়। সমগ্র বিশ্ব একটি আশা নিয়ে ভারতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তাই, আমাদের কখনই এই সুযোগ হারানো উচিৎ নয়। 
 
CG/SS/SB


(Release ID: 1796693) Visitor Counter : 146