প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রথম অডিট দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 16 NOV 2021 1:40PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৬ নভেম্বর, ২০২১

 

আজকের কর্মসূচিতে আমাদের সঙ্গে উপস্থিত দেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) শ্রী জি সি মুর্মুজি, ডেপুটি সিএজি শ্রীমতী পরভিন মেহতাজি, এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের সেবায় সমর্পিত সমস্ত সদস্যগণ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ! আপনাদের সবাইকে অডিট দিবস উপলক্ষে আন্তরিক শুভকামনা জানাই।

একটি প্রতিষ্ঠান রূপে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) শুধু দেশের অ্যাকাউন্টগুলির হিসাবনিকাশ পরীক্ষা করে না, প্রোডাক্টিভিটি বা উৎপাদনশীলতা এবং দক্ষতার মূল্য সংযোজনও করে। সেজন্য অডিট ডে এবং এর সঙ্গে যুক্ত কর্মসূচি এই উপলক্ষে আমাদের আলাপ-আলোচনা, আমাদের ইমপ্রুভমেন্ট এবং ইমপ্রোভাইজেশন-এরই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমি আপনাদের সবাইকে, আপনাদের নিষ্ঠার জন্য সিএজি-র প্রাসঙ্গিকতা এবং গরিমাকে ক্রমাগত নতুন দিশা প্রদানের জন্য অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুগণ,

অনেক কম প্রতিষ্ঠান এমন থাকে, যেগুলি সময়ের সঙ্গে আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে, আরও বেশি পরিণত ও পরিপক্ক হয়ে ওঠে এবং আরও বেশি উপযোগী হয়ে ওঠে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান জন্ম নেয়, তিন দশক, চার দশক, পাঁচ দশকের মধ্যেই পরিস্থিতি এমন বদলে যায় যে ওই প্রতিষ্ঠান কখনও কখনও নিজস্ব গুরুত্বই হারিয়ে ফেলে। কিন্তু সিএজি সম্পর্কে আমরা বলতে পারি যে এত বছর পরেও এই প্রতিষ্ঠান নিজেই নিজের একটি বড় ঐতিহ্য হয়ে উঠেছে, অনেক বড় সম্পদ হয়ে উঠেছে আর প্রত্যেক প্রজন্মকে সামলানো, তাকে সঞ্চালনা করা, তাকে সাজানো এবং আগামী প্রজন্মগুলির জন্য আরও বেশি উপযুক্ত করে তুলে সেগুলিকে সংক্রমিত করা, তাকে পরিবহণযোগ্য করে তোলা - আমি মনে করি এটি একটি অনেক বড় দায়িত্বও।

বন্ধুগণ,

গতবার যখন আমি এখানে এসেছিলাম, আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল তখন আমরা মহাত্মা গান্ধীজির ১৫০তম জন্মজয়ন্তী পালন করছিলাম। সেই কর্মসূচিতে ‘বাপু’জির মূর্তির আবরণ উন্মোচন করা হয়েছিল আর যখন অডিট দিবসের এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে, তখন দেশ তার স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অমৃত মহোৎসব পালন করছে। আজ আমাদের দেশের অখণ্ডতার নায়ক সর্দার প্যাটেলজির মূর্তির আবরণ উন্মোচনের সৌভাগ্য হয়েছে। গান্ধীজি হোন কিংবা সর্দার প্যাটেল অথবা বাবাসাহেব আম্বেদকর, দেশ গঠনে এঁদের সবার অবদান সিএজি-র জন্য, আমাদের সকলের জন্য, কোটি কোটি দেশবাসীর জন্য আমাদের বড় প্রেরণা। দেশের জন্য কিভাবে বড় লক্ষ্য স্থির করা হয়, কিভাবে সেই লক্ষ্য পূরণ করা হয়, কিভাবে ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হয়, এই মহান ব্যক্তিত্বদের জীবনগাথা থেকে আমরা অনেক কিছুই শিখি।

বন্ধুগণ,

একটা সময় ছিল যখন দেশে অডিটকে একটি আশঙ্কা, একটি ভয় রূপে দেখা হত। ‘সিএজি বনাম সরকার’। এটা আমাদের ব্যবস্থার একটি সাধারণ মনোভাবে পরিণত হয়েছিল, আর কখনও কখনও তো এরকমও বলা হত যে বাবুরা এরকমই করে। বাবুদের মনে হত সিএজিওয়ালারাও এরকমই আর প্রত্যেক পদক্ষেপে খুঁত খুঁজে বের করা তাঁদের অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। উভয় পক্ষের নিজস্ব বক্তব্য ছিল, কিন্তু আজ এই মানসিকতাকে বদলে দেওয়া হয়েছে। আজ অডিটকে মূল্য সংযোজনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

সরকারের কাজকর্ম বিশ্লেষণ করার সময় সিএজি-র কাছে আউটসাইডার ভিউ পয়েন্টের অ্যাডভান্টেজ থাকে। আপনারা আমাদের যা কিছু বলেন তাতে আমরা সিস্টেমেটিক ইমপ্রুভমেন্ট আনি, একে আমরা নিজেদের জন্য একটি সহযোগিতা রূপে দেখি।

অনেক বছর ধরে আমার সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। যখন আমি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখনও আমার আধিকারিকদের বলতাম আর আজও আপনাদের একথাই বলছি, সিএজি থেকে যত ডকুমেন্ট এবং ডেটা চাওয়া হয় তা আপনারা অবশ্যই দেবেন। আপনাদের কাজ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ফাইলও অবশ্যই দেবেন। এতে আমাদের জন্য আরও উন্নত কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়। আমাদের সেলফ অ্যাসেসমেন্টের কাজ সহজ হয়।

বন্ধুগণ,

পবিত্রতা এবং স্বচ্ছতা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে হোক কিংবা সরকারে, এটা প্রত্যেকের জন্য সব থেকে বড় মরাল বুস্টার হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, আগে দেশে ব্যাঙ্কিং সেক্টরে স্বচ্ছতার অভাবে নানারকম দুর্নীতি চলত। পরিণামস্বরূপ, ব্যাঙ্কগুলির এনপিএ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এনপিএ-গুলিকে কার্পেটের নিচে ঢেকে রাখার যে কাজ আগের জমানায় করা হয়েছিল তা সম্পর্কে আপনারা আমার থেকে অনেক বেশি জানেন। কিন্তু আমরা সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে বিগত সরকারগুলির স্বত্ত্ব, যেরকম পরিস্থিতি ছিল, হুবহু সেটাই দেশের সামনে উন্মুক্ত করে রেখেছি,খুলে দিয়েছি। আমরা সমস্যাগুলিকে চিহ্নিত করব। তবেই তো সমাধান খুঁজে বের করতে পারব।

এভাবে আপনাদের পক্ষ থেকে ফিসক্যাল ডিপোজিট নিয়ে, সরকারি খরচ নিয়ে ক্রমাগত সচেতন করা হয়। আমরা আপনাদের ভাবনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণ করি, এই প্রক্রিয়ায় আমরা অব্যবহৃত এবং প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প ব্যবহৃত সম্পত্তিকে মনিটাইজ করার সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজ এই ধরণের সিদ্ধান্তগুলির পরিণামে দেশের অর্থনীতি আবার আগের গতিতে ফিরে আসার প্রবণতা দেখাচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে সারা পৃথিবীতে আলোচনা হচ্ছে, একে স্বাগত জানানো হচ্ছে, সম্মান জানানো হচ্ছে। সিএজি-তে যখন আপনারা এর ব্যাপক বিশ্লেষণ করবেন, তখন আমার মনে হয় এই সিদ্ধান্তগুলির বেশ কিছু এমন দিক সামনে উঠে আসবে যা কখনও কখনও বিশেষজ্ঞদেরও চোখ এড়িয়ে যায়।

বন্ধুগণ,

আজ আমরা এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলছি যাতে যত পুরনো ভাবনা রয়েছে, ‘সরকার সর্বম, সরকার জানম, সরকার গ্রহণম’ – এই পুরনো ভাবনাকে আমরা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর এর পরিণামে সব ক্ষেত্রে সরকারের নাক গ্লানো, সরকারের দখলদারি ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে আর আপনাদের কাজও সহজ হচ্ছে। ‘মিনিমাম গভর্নমেন্ট, ম্যাক্সিমাম গভর্ন্যান্স’, ‘কন্ট্যাক্ট লেস কাস্টমস’, ‘অটোমেটিক রিনিউয়ালস’, ‘ফেসলেস অ্যাসেসমেন্ট’, ‘সার্ভিস ডেলিভারি’র জন্য অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনস – এই সমস্ত সংস্কার সরকারের অপ্রয়োজনীয় দখলদারি সমাপ্ত করেছে।

ব্যবস্থায় যখন এই স্বচ্ছতা আসে, তখন এর ফলও আমরা স্পষ্ট দেখতে শুরু করি। আজ ভারত গোটা বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট-আপ ইকো-সিস্টেমে পরিণত হয়েছে। আজ ৫০টিরও বেশি আমাদের ভারতীয় ইউনিকর্ন ভালোভাবে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের আইআইটি-গুলি আজ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ইউনিকর্ন প্রোডিউসার হিসেবে উঠে এসেছে। ‘মিনিমাম গভর্নমেন্ট, ম্যাক্সিমাম গভর্ন্যান্স’-এর এই অভিযান আপনাদের সবাইকে, দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে অংশীদার করে তুলবে। আপনাদের ওনারশিপ বা দায়িত্ব নিতে হবে, কো-ট্র্যাভেলার বা সহযাত্রী রূপে চলতে হবে। এটাই আমাদের প্রত্যেক সাংবিধানিক সংস্থার জন্য এই অমৃতকালের একটি সঙ্কল্প, ২০৪৭ সালে যখন ভারত তার স্বাধীনতার শতাব্দী বর্ষ পালন করবে, তখন এই সংকল্প বাস্তবায়ন দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার শক্তি রূপে কাজে লাগবে।

বন্ধুগণ,

দশকের পর দশক ধরে আমাদের দেশে সিএজি-র পরিচয় সরকারি ফাইলগুলি এবং অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে মাথা খুঁড়ে মরা সংস্থার মতো হয়ে উঠেছিল। সিএজি-র সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরও এরকম ইমেজ তৈরি হয়েছিল, আর এর উল্লেখ আমি ২০১৯-এও যখন আপনাদের মধ্যে এসেছিলাম, আমি পরিবর্তনের উপদেশ দিয়েছিলাম। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আপনারা দ্রুতগতিতে পরিবর্তন আনছেন, প্রক্রিয়াগুলিকেও আধুনিক করে তুলছেন। আজ আপনারা অ্যাডভান্সড অ্যানালিটিক্স টুলস ব্যবহার করছেন, জিও-স্পেশিয়াল ডেটা এবং স্যাটেলাইট ইমেজারি ব্যবহার করছেন। এহেন উদ্ভাবন আমাদের সম্পদসৃষ্টি ও আহরণের মধ্যেও হওয়া উচিৎ আর আমাদের কর্মশৈলীর মধ্যেও হওয়া উচিৎ।

আমাকে বলা হয়েছে যে আপনারা সম্প্রতি প্রিলিমিনারি ফাইন্ডিংন্সগুলিকে ফিল্ড অডিটের আগেই ডিপার্টমেন্টগুলির সঙ্গে শেয়ার করা শুরু করেছেন। এটা একটা অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়া। যখন আপনারা এই প্রিলিমিনারি ফাইন্ডিংন্সগুলিকে নিজেদের ফিল্ড স্টাডির সঙ্গে জুড়বেন, কম্বাইন করবেন, তখন এর পরিণাম আরও ভালো হবে। এভাবে আমি আপনাদের পরামর্শ দিয়েছিলাম যে আপনারা অফিস থেকে বেরিয়ে অডিটিজ আর স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে মিলিত হন। আপনারা আমার এই পরামর্শগুলিকে গ্রহণ করেছিলেন। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সিএজি-র সিনিয়র অফিসার্স আর বিভিন্ন মন্ত্রকের সচিবরা মিলেমিশে একটি সেমিনারও করেছিলেন। আমি এই সকল প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করতে চাই। আমি আশা করি যে এসব প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতা সেমিনারগুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি সিএজি এবং বিভাগগুলির মধ্যে অংশীদারীত্ব গড়ে তোলা, পার্টনারশিপে প্রোগ্রেস করার মাধ্যম হয়ে উঠবে। যখন আমি এটা শুনি যে একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধানকে আপনারা এই প্রক্রিয়ায় সামিল করেছেন, তখন আমাদের প্রত্যেকের জন্য এটা গর্বের বিষয় হয়ে ওঠে যে আজ আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলি এই ধরনের উন্মুক্ত আবহে মাটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে তৃণমূল স্তরে নেমে এসে কাজ করছে। এই বিবর্তন, এই অভিজ্ঞতা সিএজি-কে এবং এর পাশাপাশি আমাদের অডিটিং মেকানিজমকে একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে বলে আমার বিশ্বাস। যত শক্তিশালী এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আমাদের অডিটিং হবে, ততটাই আমাদের ব্যবস্থাগুলি স্বচ্ছ এবং শক্তিশালী হবে।

বন্ধুগণ,

করোনার কঠিন সময়েও সিএজি কতটা দক্ষ ও নিবিড়ভাবে কাজ করেছে এর তথ্যাবলী আমার কাছে নিয়মিত পৌঁছেছে আর একটু আগে কিছু কথা মুর্মুজির কাছ থেকেও শুনতে পেলাম। বিশ্বের অন্যান্য বড় বড় দেশ থেকে আমাদের দেশে করোনার ঢেউ এসে পৌঁছেছিল। এত বড় জনসংখ্যার দেশে এই করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে ছিল। আমাদের স্বাস্থ্যবিভাগ, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর সীমিত সম্পদের চাপ ছিল। কিন্তু দেশ চিকিৎসা থেকে শুরু করে প্রতিরোধের প্রতিটি ক্ষেত্রে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করেছে। বড় বড় দেশগুলির কাছে ব্যাপক সম্পদের আনুকূল্য ছিল, কিন্তু আমাদের কাছে ছিল অতুলনীয় সামাজিক শক্তির আনুকূল্য।

আমাকে বলা হয়েছে যে, সিএজি-ও নিজেদের কাজের বাইরে, নিজেদের দায়িত্ব থেকে এগিয়ে গিয়ে সাধারণ মানুষের টিকাকরণের ক্ষেত্রেও অনেক সাহায্য করেছে। এই সংকটকালে এমন স্পিরিট নিয়েই দেশের প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান, প্রতিটি সংস্থা, প্রত্যেক দেশবাসী নিজের কর্তব্য পালনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। আমরা কেউই দেখিনি যে আমাদের কাজের এক্তিয়ার কতটা, আমরা এটা দেখেছি যে আমরা আর কী করতে পারি! সেজন্য শতাব্দীর সর্ববৃহৎ মহামারী যতটা সমস্যাসঙ্কুল ছিল, ততটাই এর বিরুদ্ধে দেশের অসম সাহসী লড়াই ছিল।

আজ আমরা বিশ্বের সর্ববৃহৎ করোনা টিকাকরণ অভিযানকে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। কয়েক সপ্তাহ আগেই দেশ ১০০ কোটি টিকার ডোজ দেওয়ার মাইলফলক অতিক্রম করেছে। আমি চাইব যে আপনারা নিজেদের নৈমিত্তিক কাজকর্মের পাশাপাশি মহামারীর বিরুদ্ধে দেশের এই লড়াইয়ের সময় যত ভালো প্র্যাক্টিসেস ডেভেলপ হয়েছে, যেগুলি সুফলদায়ক হয়েছে, সেগুলি নিয়ে গবেষণা করুন। দেশ এ থেকে যা কিছু নতুন শিখেছে, নতুন নতুন বিষয় রপ্ত করেছে, যে সিস্টেমেটিক লার্নিং হয়েছে, তা ভবিষ্যতে ‘গ্লোবাল গুড প্র্যাক্টিসেস’ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রেও সাহায্য করবে। বিশ্বকে ভবিষ্যৎ মহামারীগুলির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করবে, শক্তি যোগাবে।

বন্ধুগণ,

আগেকার দিনে ইনফরমেশন বা তথ্য গল্পের মাধ্যমেই প্রচারিত হত, সম্প্রচারিত হত। গল্পের মাধ্যমেই ইতিহাস লেখা হত। কিন্তু আজ একবিংশ শতাব্দীতে ডেটাই ইনফরমেশন হয়ে উঠেছে আর আগামীদিনে আমাদের ইতিহাসকেও ডেটার মাধ্যমেই দেখা এবং বোঝা হবে। ভবিষ্যতে ডেটাই ইতিহাসকে সঞ্চালনা করবে আর যখন ডেটা নিয়ে কথা হচ্ছে, তখন তার অ্যাসেসমেন্টও হওয়া উচিৎ আর এক্ষেত্রে আপনাদের চাইতে বড় মাস্টার আর কে হতে পারে? সেজন্য আজ স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে দেশ যত উদ্যোগ নিচ্ছে, যত চেষ্টা করছে, যে লক্ষ্যগুলি নিয়ে এগিয়ে চলেছে, ভবিষ্যতে যখন দেশের এই প্রচেষ্টাগুলির, এই কালখণ্ডের বিশ্লেষণ করা হবে, তখন আপনাদের কাজ, আপনাদের দলিল-দস্তাবেজই তার একটি প্রামাণিক ভিত্তি হয়ে উঠবে। যেভাবে আজ আমরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ইতিহাসকে দেখি, সেই ইতিহাস থেকে প্রেরণা গ্রহণ করি, তেমনই যখন দেশ স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্ণ করবে, তখন আপনাদের আজকের স্টাডি রিপোর্টস সেই সময় ভারতের জন্য নিজেদের ইতিহাসে উঁকি মারার, তা থেকে শিক্ষা গ্রহণের উপায় হয়ে উঠতে পারে।

বন্ধুগণ,

আজ দেশ এরকম কত অসংখ্য কাজ করছে, যেগুলিকে অপ্রত্যাশিত বলা যায়, আর অভূতপূর্বও। একটু আগেই আমি যখন উদাহরণস্বরূপ বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকাকরণ অভিযানের কথা উল্লেখ করছিলাম, তেমনভাবেই আপনারা অসংখ্য সঙ্কল্প নিয়ে কাজ করে যাওয়া দেশবাসীর অসংখ্য প্রচেষ্টাকে দেখতে পারেন। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত আমরা সরকারি অ্যাকাউন্টগুলিতে লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি টাকার হিসাব অবশ্যই রাখতাম, কিন্তু সত্য এটাই ছিল যে দেশের কোটি কোটি নাগরিকের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পর্যন্ত ছিল না। কত না পরিবার এরকম ছিল, যাঁদের থাকার জন্য নিজস্ব বাড়ি ছিল না, মাথার ওপর পাকা ছাদ ছিল না, বাড়িতে পানীয় জলের সুবিধা ছিল না, বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না, বাড়িতে শৌচালয় ছিল না, দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম ব্যক্তির চিকিৎসার সুবিধা ছিল না। আমাদের দেশের কোটি কোটি মানুষের জন্য এই বুনিয়াদি প্রয়োজনগুলি লাক্সারি হিসেবে বিবেচনা করা হত। কিন্তু আজ এই পরিস্থিতি বদলেছে, আরও দ্রুতগতিতে বদলাচ্ছে। দেশ এই জায়গায় যে পৌঁছেছে, তার পেছনে কত না দেশবাসীর দিন-রাতের পরিশ্রম রয়েছে! কত অসংখ্য মানুষের পরিশ্রমের ফলে এই সাফল্য এসেছে। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মী ও সংশ্লিষ্ট সকলে, ব্যাঙ্কিং সেক্টরের মানুষেরা, সরকারি বিভাগগুলি এবং প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকে, এমনকি আমাদের বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত প্রত্যেক মানুষ একটি অভূতপূর্ব সামঞ্জস্য রেখে অসাধারণ স্তরে কাজ করেছেন। তবেই গরীবের চৌকাঠ পর্যন্ত তাঁদের অধিকারগুলিকে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তবেই দেশের উন্নয়নকে এভাবে গতি প্রদান করা গেছে।

বন্ধুগণ,

সমাজে এই সিদ্ধান্তগুলির প্রভাব এতটাই ব্যাপক হয় যে এগুলি আমরা তখনই বুঝতে পারি, যখন এই লক্ষ্যে ‘ফোকাস স্টাডিজ’ করা হয়। সিএজি-রও উচিৎ, দেশের এই প্রচেষ্টাগুলিকে, এই পরিণামগুলিকে বিশ্লেষণ করা । এই বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমেই দেশের সামগ্রিক প্রচেষ্টাগুলিকে ভালোভাবে বোঝা যাবে। দেশের সামর্থ্য এবং তার আত্মবিশ্বাসের একটি জলজ্যান্ত ডকুমেন্ট বা নথি তৈরি হবে। পাশাপাশি, এ থেকে আগামী সরকারগুলির কাজের ক্ষেত্রেও আরও উন্নত পদ্ধতি খুঁজতে আপনাদের এই দলিল-দস্তাবেজগুলি কাজে লাগবে।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে দেশের জন্য আপনাদের অবদান অনবরত জারি থাকবে। দেশের উন্নয়নকে নতুন গতি প্রদান করতে থাকবে।

এই বিশ্বাস নিয়ে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ! আর আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা।

 

CG/SB/DM/



(Release ID: 1772507) Visitor Counter : 163