প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী আজ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা – গ্রামীণ (পিএমএওয়াই-জি) প্রকল্পের আওতাভুক্ত ত্রিপুরার ১.৪৭ লক্ষ সুবিধাভোগীকে প্রথম কিস্তির টাকা হস্তান্তর করেছেন

Posted On: 14 NOV 2021 2:21PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৪ নভেম্বর,  ২০২১
 
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা – গ্রামীণ (পিএমএওয়াই-জি) প্রকল্পের আওতাভুক্ত ত্রিপুরার ১.৪৭ লক্ষ সুবিধাভোগীকে প্রথম কিস্তির টাকা হস্তান্তর করেছেন। এর ফলে, সুবিধাভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি প্রায় ৭০০ কোটি টাকা জমা হয়েছে। ত্রিপুরার অন্যন্য ভৌগোলিক, জলবায়ু পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ‘কাঁচা বাড়ি’তে বসবাসকারীদের ওপর বিশেষভাবে নজর দিয়েছেন। সুবিধাভোগীদের ‘পাকা বাড়ি’ নির্মাণে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এদিন সুবিধাভোগীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন।
 
প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরার ধলাই অঞ্চলের অনিতা কুকি দেববর্মার সঙ্গে আলাপচারিতায় তাঁর জীবন-জীবিকা সম্পর্কে জানতে চান। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে জানান যে, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দরিদ্র ও আদিবাসীদের কল্যাণে সর্বতো প্রয়াস চালিয়েছে। একলব্য বিদ্যালয়, বনজ উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রির জন্য প্রকল্প গ্রহণ এবং তা তৃণমূল স্তরে বাস্তবায়ন করার মতো একাধিক বিষয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে জানান।
 
প্রধানমন্ত্রী সিপাহীজলা থেকে শ্রীমতী সোমা মজুমদারের সঙ্গে আলাপচারিতায় পিএমএওয়াই-জি প্রকল্প থেকে লাভবান হওয়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চান। নতুন পাকা বাড়ি পাবার পর তাঁর জীবনে কি পরিবর্তন এসেছে, সে সম্পর্কে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। শ্রীমতী মজুমদার জানান, একটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করা তাঁর স্বপ্ন ছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এমনকি, বর্ষাকালের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারের লক্ষ্যই হ’ল সুবিধাভোগীরা যাতে প্রকল্পের সবরকম সুবিধা পান, তা সুনিশ্চিত করা এবং মধ্যস্থতাকারীদের ক্ষমতা খর্ব করা। 
 
প্রধানমন্ত্রী উত্তর ত্রিপুরার শ্রী সমীরণ নাথের সঙ্গে আলাপচারিতায় তাঁর বাড়ি নির্মাণের জন্য  পিএমএওয়াই-জি – এর আওতায় কিস্তির অর্থ এবং সুবিধাগুলি যাতে ঠিকমতো পান, সে সম্পর্কে সচেতন করে দেন। এই প্রকল্পে সুবিধা পাওয়ার সময় কোনও সমস্যার সম্মুখীণ হতে হয়েছে কিনা অথবা তিনি ঘুষের আশ্রয় নিয়েছেন কিনা – তাও জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, আগের ব্যবস্থাপনায় সুবিধাভোগীদের কোনও সুবিধা পেতে হলে ঘুষ দিতে হ’ত। কিন্তু, বর্তমান সরকার সেই ব্যবস্থাপনা দূর করেছে। সুবিধাভোগীরা যাতে নির্ঝঞ্ঝাটে সুবিধা পান, তার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
 
দক্ষিণ ত্রিপুরার শ্রীমতী কাদার বিয়া’র সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধাগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকা বাড়ি তাঁদের জীবনে সুখ বয়ে নিয়ে আসবে। তিনি আরও জানান, শ্রীমতী বিয়ার মতো সুবিধাভোগীরা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, সরকার কোনও বৈষম্য ও মধ্যস্থতাভোগী ছাড়াও সুবিধাদান নিশ্চিত করেছে। শ্রী মোদী বলেন, সরকার নাগরিকদের সুবিধা দেওয়ার মনোভাব নিয়ে কাজ করে চলেছে। পিএমএওয়াই-এর আওতায় নির্মিত বাড়ি মহিলাদের নামে দেওয়া হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
 
অনুষ্ঠানের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বিপ্লব দেবজীর সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার যৌথভাবে কাজ করছে। তাই, রাজ্যের অগ্রগতি অবসম্ভাবী। শ্রীমতী বলেন, “আজ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় দেওয়া প্রথম কিস্তি ত্রিপুরার স্বপ্ন নতুন প্রেরণা দিয়েছে। আমি ত্রিপুরার সমস্ত মানুষ, প্রায় দেড় লক্ষ পরিবারকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাই। যাঁরা আজ প্রথম কিস্তির অর্থ পেয়েছেন”। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকের চিন্তাধারা ছিল ত্রিপুরাকে গরিব রাজ্য হিসাবে রেখে দেওয়া এবং ত্রিপুরার মানুষকে সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা। আজ ত্রিপুরায় তাঁদের কোনও স্থান নেই। এখন ডবল ইঞ্জিন সরকার পূর্ণ শক্তি ও আন্তরিকতার সঙ্গে দেশের উন্নয়নযজ্ঞে সামিল হয়েছে।
 
এই অঞ্চলের দীর্ঘদিনের অবহেলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,আগে নদীগুলি দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে পূর্ব দিকে বয়ে আসতো। কিন্তু, উন্নয়নের গঙ্গা এখানে পৌঁছনোর আগেই থেমে যেত। তিনি বলেন, “দেশের সার্বিক উন্নয়নকে খাটো করে রাজনৈতিক লেন্স দিয়ে দেখা হয়েছিল। অতএব, আমাদের উত্তর-পূর্ব অবহেলিত ছিল। কিন্তু, আজ দেশের উন্নয়নকে ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখা হয়েছে। উন্নয়ন এখন দেশের ঐক্য ও অখন্ডতার সমার্থক হিসাবে বিবেচিত হয়”। 
 
প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে পূর্ণ অবদানের জন্য আত্মবিশ্বাসী নারী প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। এই নারী শক্তির প্রধান প্রতীক হিসাবে দেশে মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে জন ধন অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এই ধরনের গোষ্ঠীগুলির জন্য বন্ধক বিহীন ঋণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে ২০ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। 
 
জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান স্বাচ্ছন্দ্যের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, আগে সাধারণ মানুষকে প্রতিটি কাজে সরকারি অফিসে ঘুরতে দেখা যেত। কিন্তু, এখন সরকার জনগণের কাছে আসে – সব ধরনের সেবা ও সুযোগ-সুবিধা দিতে। তিনি বলেন, “আগে সরকারি কর্মচারীরা সময় মতো বেতন পাওয়ার বিষয়ে চিন্তা করতেন। কিন্তু, এখন সপ্তম বেতন কমিশনের সুবিধা পাচ্ছেন তাঁরা”। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাসে উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের উপজাতি স্বাধীনতা সংগ্রামীরা  ভারতমাতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। এই ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে এবং তাঁদের ঐতিহ্য উত্তরাধিকারীদের কাছে পৌঁছে দিতে দেশ নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। এরই অঙ্গ হিসাবে অমৃত মহোৎসব উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দেশ এখন প্রতি বছর ১৫ নভেম্বর দিনটি বিরসা মুন্ডা জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে। দিনটি আদিবাসীদের কাছে গৌরবের দিন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঠিক একইভাবে দোসরা অক্টোবর, জাতির জনকের জন্মদিন, ৩১ অক্টোবর একতা দিবস, ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবস, রাম নবমী, কৃষ্ণ অষ্টমী ইত্যাদি উদযাপন করা হয়। 
 
প্রধানমন্ত্রী জানান, আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলে এই অঞ্চলে বিপুল উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী দিনে এই অঞ্চল দেশকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি। 
 
 
CG/SS/SB


(Release ID: 1771701) Visitor Counter : 188