প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

জম্মু ও কাশ্মীরে নওশেরায় দীপাবলী উপলক্ষে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়ের মূল অংশ

Posted On: 04 NOV 2021 3:41PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ০৪ নভেম্বর, ২০২১
 
 
ভারতমাতা কি জয়!
ভারতমাতা কি জয়!
ভারতমাতা কি জয়!
 
আজ পবিত্র দীপাবলী উৎসব এবং প্রত্যেকেই চান, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীপাবলী উদযাপন করতে। আমিও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীপাবলী উৎসবে সামিল হওয়ার প্রত্যাশা করি এবং এই কারণেই আমি প্রত্যেকবারের মতো এবারও আমার পরিবারের সঙ্গে দীপাবলী উদযাপন করতে এখানে এসেছি। আসলে আপনারাই আমার পরিবার। আমি আপনাদের পরিবারের একজন। আমি এখানে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আসিনি। আমি পরিবারের একজন সদস্য হিসাবে এসেছি। আমি যখন আপনাদের মধ্যে উপস্থিত হই এবং আমি যখন পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাই – আমার একই অনুভূতি হয়। সাংবিধানিক পদে থাকার সময় দু’দশকেরও বেশি অতিক্রান্ত হয়েছে এবং দেশবাসী আমাকে দীর্ঘ সময় ধরে সেবার সুযোগ করে দিয়েছেন। আগে গুজরাটের মানুষ, এখন দেশের মানুষ আমাকে এই সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি প্রতি বছর দীপাবলী আপনাদের সঙ্গে এবং সীমান্তে প্রহরারত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটাই। আজ আমি আরও একবার আপনাদের মধ্যে উপস্থিত হয়েছি। আমি নতুন প্রাণশক্তি, উৎসাহ ও বিশ্বাস নিয়ে আপনাদের এখান থেকে ফিরে যাব। কিন্তু, আমি এখানে একা আসিনি। আমি ১৩০ কোটি দেশবাসীর শুভেচ্ছা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি। অনেক শুভেচ্ছা নিয়ে এসেছি। আজ দীপাবলীতে প্রত্যেকটি প্রদীপ আপনাদের সাহসিকতা, শৌর্য, আত্মত্যাগ ও মহানুভবতার পরিচয় বহন করবে। প্রত্যেক দেশবাসীর প্রজ্জ্বলিত প্রদীপে আপনাদের শুভকামনা জড়িয়ে থাকবে। তাই, আজ আপনারা যখন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলবেন বা কোনও ফটো পাঠাবেন, তখন আপনারা এটা বলবেন যে, এবারের দীপাবলী সত্যিই সতন্ত্র-বিশেষ। এ ব্যাপারে আপনারা কি বলেন? শান্ত হন, আপনাদের কেউ দেখছেন না। তাই, ভয়ের কিছু নেই। ঠিক আছে, আপনারা এটাও পরিবারের সদস্যদের জানাবেন যে, আজ আপনারা অনেক মিষ্টান্ন খেয়েছেন। 
 
বন্ধুগণ,
 
আজ দেশের সাহসী সৈনিক ও কন্যারা ভারতমাতার যে সেবা করছেন, তা সকলের সৌভাগ্য হয় না। কিছু মানুষ এই সৌভাগ্য পান। ঠিক যেমন আপনারা পেয়েছেন। আমি আপনাদের মধ্যে এক অদম্য অভিব্যক্তি প্রত্যক্ষ করছি। আপনারা অত্যন্ত দৃঢ় প্রত্যয়ী এবং ভারতমাতার সুরক্ষাকবচ। হিমালয়ই হোক বা মরুভূমি, তুষারাবৃত পর্বত শৃঙ্গই হোক বা গভীর সমুদ্র – আপনারা যেখানেই দায়িত্বে থাকেন, সেখানেই দৃঢ় সংকল্প নিয়ে কাজ করেন। আপনাদের মধ্যে যে প্যাসন বা ইচ্ছা রয়েছে, তা ১৩০ কোটি দেশবাসীকে আস্থা যোগায়। আর এই কারণেই তাঁরা শান্তিতে ঘুমোতে পারেন। আপনাদের জন্যই শান্তি, নিরাপত্তা ও আস্থার পরিবেশ দেশবাসী উপলব্ধি করেন। দীপাবলীর পর গোবরধন পুজো, ভাইফোঁটা ও ছট উৎসব রয়েছে। নওশেরার ঐতিহাসিক এই স্থান আপনাদের সঙ্গে আমিও দেশবাসীকে এই উৎসবগুলির জন্য শুভেচ্ছা জানাই। দেশের অনেক জায়গায় মানুষ দীপাবলীর পরদিন নতুন বছরকে স্বাগত জানান। দীপাবলীর দিন হিসেব-নিকেশ শেষ হচ্ছে। কারণ, পরদিন থেকেই নতুন বছরের শুরু। বিশেষ করে, গুজরাটে আগামীকাল নববর্ষ। তাই, আমি গুজরাটবাসীকে অনেক শুভেচ্ছা জানাই। 
 
বন্ধুগণ,
 
আমি যখন নওশেরার এই পবিত্র মাটিতে অবতরণ করি, এখানকার মাটি স্পর্শ করি, তখন আমার মনে এক পৃথক অনুভূতির উদয় হয়। মনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ঐতিহাসিক এই ভূমি ভারতীয় সেনার বীরত্বকে অভিবাদন জানায় এবং তা এখানকার প্রতিটি পর্বতচূড়া থেকেও শোনা যায়। আপনাদের মতো সাহসী সেনানীদের বীরত্বকেই এই নওশেরা প্রতিফলিত করে। আর আমি আমার চোখের সামনে এই বীরত্বের প্রমাণ দেখতে পাচ্ছি। নওশেরা কাশ্মীরের প্রহরী হিসাবে কাজ করেছে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি লড়াই, ছায়াযুদ্ধ ও ষড়যন্ত্রে নওশেরা যথোচিত জবাব দিয়েছে। স্বাধীনতার পর শত্রুদের নজর পড়েছিল নওশেরার ওপর। নওশেরা আক্রমণ করা হয়েছিল এবং শত্রুপক্ষ নওশেরা দখলের জন্য পর্বতচূড়ায় অবস্থান করছিল। কিন্তু, আমি খুশি যে, নওশেরার সাহসী মানুষ যাবতীয় ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন।
 
বন্ধুগণ,
 
শত্রুপক্ষ ভারতীয় সেনার সক্ষমতা এর আগেও উপলব্ধি করেছে। আমি নওশেরার সিংহ হিসাবে পরিচিত ব্রিগেডিয়ার মহম্মদ উসমান এবং নায়েক যদুনাথ সিং, যাঁরা দেশের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন, তাঁদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। ভারতীয় সেনাবাহিনীর জয়ের পথ যিনি মসৃণ করে দিয়েছিলেন, সেই লেঃ আর আর রাণেকে আমি অভিবাদন জানাই। এমন অনেক বীর রয়েছেন, যাঁরা তাঁদের রক্ত, বীরত্ব, আন্তরিকতা ও দৃঢ় সংকল্পের মধ্য দিয়ে নিজেদের কাহিনী লিখে গেছেন। দেশের জন্য তাঁরা এই নওশেরার পবিত্র ভূমিতে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন। পবিত্র দীপাবলী উৎসবে এরকম দু’জন মহান ব্যক্তির কাছ থেকে আশীর্বাদ পেয়ে আমি নিজেকে সোউভাগ্যবান মনে করছি। শ্রী বলদেব সিংজী ও শ্রী বসন্ত সিংজী, যাঁরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভারতমাতার সুরক্ষায় শৈশাবস্থাতেই এগিয়ে এসেছিলেন, আমি তাঁদের আশীর্বাদ পেয়েছি। তাই, তাঁদের কথা আমি যখন শুনি, তাঁদের মধ্যেও একই মানসিকতা লক্ষ্য করি। এদের কথা শুনে মনে হয় যে, তাঁরা আজই যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে ফিরেছেন। স্বাধীনোত্তর সময়ে বহু লড়াইয়ে এরকম অনেক স্থানীয় যুবক ব্রিগেডিয়ার মহম্মদ উসমানের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। নিজেদের জীবনের কথা না ভেবে তাঁরা সেনার সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। অল্প বয়সেই সেনাকে সাহায্য করতে এসেছেন। নওশেরার এই বীরত্ব তখন থেকে আজও একইভাবে চলে আসছে। সার্জিকাল স্ট্রাইকের সময় ব্রিগেডিয়ার যে ভূমিকা পালন করেছিলেন, তা প্রতিটি দেশবাসীকে গর্বিত করেছে। আমার সেদিনের কথা এখনও মনে পড়ে। আমি তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, যাতে প্রত্যেক সেনাজওয়ান ভোর হওয়ার আগেই দেশের মাটিতে ফিরে আসেন। আমি ফোনের পাশে অপেক্ষায় বসেছিলাম, আমাদের সাহসী সেনা জওয়ানদের নিরাপদে ঘরে ফিরে আসার খবরের জন্য। এখানে অশান্তি ছড়ানোর একাধিক অপচেষ্টা হয়েছে। এমনকি, সার্জিকাল স্ট্রাইকের পর আজও হচ্ছে। কিন্তু, প্রত্যেকবার সন্ত্রাসকে সমুচিত জবাব দেওয়া হয়েছে। এখানে আপনাদের মনের মধ্যে যে প্রাণশক্তি রয়েছে, আমি তার সঙ্গে নিজের যোগসূত্র অনুভব করছি।
 
বন্ধুগণ,
 
বর্তমানে দেশ স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন করছে। দাসত্বের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর অগণিত আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাই, স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই। স্বাধীনতার অমৃতকালে আমাদের নতুন লক্ষ্য, নতুন সংকল্প ও নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি। তাই, এরকম গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আজকের ভারত তার সক্ষমতা ও সম্পদ সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেনাবাহিনীকে বিদেশ থেকে সম্পদ আনার জন্য আগে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। এমনকি, যে আধিকারিকরা এসব সম্পদ আনার জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন, ফাইল তৈরি করেছিলেন, তাঁদের অবসর গ্রহণের পরও সেই সম্পদ দেশে এসে পৌঁছয়নি। আমাদের সেনাবাহিনীকে এরকম একটা সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর জন্য তাড়াহুড়ো করে বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে আসতে হয়েছে। তখন যন্ত্রাংশের জন্যও আমাদের অন্য দেশের উপর নির্ভর করতে হয়েছে। 
 
বন্ধুগণ,
 
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা পুরনো রীতি-নীতি পাল্টে ফেলার লক্ষ্যে এক দৃঢ় সংকল্প। প্রতিরক্ষা বাজেটের প্রায় ৬৫ শতাংশই দেশে খরচ করা হচ্ছে, যাতে স্বদেশি জিনিসপত্র সংগ্রহ করা যায়। এক অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ হিসাবে ভারত এখন ২০০টিরও বেশি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম দেশ থেকেই সংগ্রহ করার নীতি নিয়েছে। আর এটাই আত্মনির্ভর ভারতের দৃঢ় সংকল্প। প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের এই তালিকায় আরও সংযোজন হতে চলেছে। আগামী কয়েক মাসে এই উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর ফলে, দেশকে আরও স্বনির্ভর করে তোলা সম্ভব হবে। আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার নীতি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নতুন অস্ত্রশস্ত্র ও সরঞ্জাম নির্মাণে বিনিয়োগ বাড়বে। 
 
বন্ধুগণ,
 
আজ অর্জুন ট্যাঙ্ক ও অত্যাধুনিক তেজসের মতো যুদ্ধ বিমান দেশেই তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নতুন ৭টি সংস্থা বিজয়া দশমীর দিন দেশের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলি এখন বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রের জন্য আধুনিক প্রতিরক্ষা সামগ্রী উৎপাদন করবে। আজ বেসরকারি ক্ষেত্রেও দেশের সুরক্ষায় আমাদের এই সংকল্পে অংশীদার হয়েছে। আমাদের অনেক নতুন প্রতিরক্ষা স্টার্টআপ সংস্থা উৎকর্ষতার ক্ষেত্রে নিজেদের ছাপ ফেলছে। আমাদের ২০-২২-২৫ বছরের যুবক-যুবতীরা সৃজনশীলতা নিয়ে উঠে আসছেন। এটা সত্যি গর্বের বিষয়। 
 
বন্ধুগণ,
 
উত্তর প্রদেশ ও তামিলনাডুতে নির্মীয়মান প্রতিরক্ষা করিডর প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আরও গতি সঞ্চার করবে। আজ যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা ভারতের সক্ষমতাকে বাড়াবে এবং প্রতিরক্ষা রপ্তানিকারক দেশ হিসাবে পরিচিতি দেবে। 
 
বন্ধুগণ,
 
যিনি সক্ষম তাঁর কাছে ওভারবার্ডেন বা অতিরিক্ত বোঝা নতুন কোনও বিষয় নয়। তিনি সহজেই তাঁর দৃঢ় সংকল্পগুলিকে উপলব্ধি করতে পারেন। তাই, পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমাদের সামরিক ক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। একই সঙ্গে, যুদ্ধের পরিবর্তিত গতি-প্রকৃতিকেও মাথায় রাখতে হবে। সারা বিশ্ব জুড়ে দ্রুতগতিতে যে পরিবর্তন হচ্ছে, সেইভাবে আমাদের নিজেদেরকেও প্রস্তুত হতে হবে। একটা সময় ছিল, যখন যুদ্ধে হাতি-ঘোড়া ব্যবহার হ’ত। কিন্তু, এখন কেউ একথা কল্পনাই করতে পারেন না। আগে যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি পাল্টাতে দশকের পর দশক, হয়তো বা কয়েক শতক সময় লেগে যেত। কিন্তু, আজ প্রযুক্তির দৌলতে সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যেই যুদ্ধের পদ্ধতি পাল্টে যাচ্ছে। এখন যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি কেবল মোডাস অপারেন্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। আজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নত সমন্বয়, প্রযুক্তির ব্যবহার ও হাইব্রীড ট্যাকটিক যুদ্ধে বিরাট পরিবর্তন এনেছে। তাই, প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্বদান ও আরও বেশি সমন্বয় অনেক বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে। এই লক্ষ্যে গত কয়েক বছরে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের প্রায় প্রতিটি স্তরে লাগাতার সংস্কারমূলক উদ্যোগ চলছে। চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ পদে নিয়োগ থেকে সামরিক বিষয়ক দপ্তর গঠন – প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
 
বন্ধুগণ,
 
সীমান্ত অঞ্চলে আধুনিক পরিকাঠামো আমাদের সামরিক শক্তিকে আরও মজবুত করবে। এখন আধুনিক সড়ক, বৃহদায়তন সূড়ঙ্গ, সেতু ও অপ্টিকাল ফাইবার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশ, জয়সলমের থেকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপ পর্যন্ত আমাদের সীমান্ত এলাকায় নতুন পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। এর ফলে, সেনা জওয়ান মোতায়েনের ক্ষেত্রেই কেবল সুবিধা হয়নি, সেনা জওয়ানরাও যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে উপকৃত হচ্ছেন।
 
বন্ধুগণ,
 
মহিলাদের ক্ষমতায়নও গত ৭ বছরে প্রতিটি ক্ষেত্রে আন্তরিক প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে এক নতুন ও সক্ষম ভারত গড়ে তোলা যায়। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের কন্যাদের অংশগ্রহণ নতুন মাত্রায় পৌঁছচ্ছে। নৌ ও বিমান বাহিনীতে অগ্রবর্তী ক্ষেত্রে মোতায়েনের পর সেনাবাহিনীতেও মহিলাদের ভূমিকা বাড়ানো হচ্ছে। আমাদের কন্যাদের জন্য সামরিক পুলিশের দরজা খুলে দেওয়ার পর মহিলা আধিকারিকদের এখন স্থায়ী কমিশন দেওয়া হচ্ছে। এখন দেশের অগ্রণী সামরিক প্রতিষ্ঠান যেমন – ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমী, জাতীয় মিলিটারি স্কুল, জাতীয় মিলিটারি কলেজ মহিলাদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এ বছরের ১৫ অগাস্ট লালকেল্লা থেকে আমি ঘোষণা করেছিলাম যে, আমাদের কন্যারা এবার থেকে দেশের সৈনিক বিদ্যালয়গুলিতে পড়াশুনোর সুযোগ পাবে। ইতিমধ্যেই এই লক্ষ্যে প্রয়াস শুরু হয়েছে।
 
বন্ধুগণ,
 
আপনাদের মতো দেশের প্রহরীদের ঊর্দিতে আমি কেবল অসীম ক্ষমতাই উপলব্ধি করি না, আমি যখন আপনাদের দিকে তাকাই, তখন আপনাদের মধ্যে অদম্য সেবার মনোভাব, অবিচল সংকল্প ও অতুলনীয় সহানুভূতি উপলব্ধি করি। আর এই কারণেই বিশ্বের অন্যান্য দেশের সেনাবাহিনীর তুলনায় ভারতীয় সেনারা পৃথক। বিশ্বের অগ্রণী সেনাবাহিনীগুলির মতো আপনারাও সমান পেশাদার। কিন্তু, আপনাদের মানবিক মূল্যবোধ ও আপনাদের মধ্যে ভারতীয় সংস্কৃতি আপনাদের প্রত্যেককে ব্যক্তিত্ব ও চারিত্রিক দিক থেকে সতন্ত্র করে তুলেছে। সেনাবাহিনীতে যোগদান কেবল প্রতিমাসের প্রথম দিন বেতন পাওয়ার মতো নয়, বরং সেনাবাহিনীতে যোগদান আপনাদের কাছে সাধনার মতো। আপনারা ভারতমাতার প্রতি নিজেদের উৎসর্গ করে জীবনকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, যেখানে ১৩০ কোটি দেশবাসী আপনাদের জন্য নিশ্চিন্তে রয়েছেন। 
 
ইতিহাস রচিত হয় আবার তা ধ্বংসও হয়। ক্ষমতা আসে, ক্ষমতা যায়। সাম্রাজ্য মাথাচাড়া দেয়, আবার ধ্বংস হয়। কিন্তু, ভারত হাজার বছর ধরে চিরন্তন। ভারত আজও শ্বাশ্বত এবং হাজার বছর পরও অবিনশ্বর থাকবে। আমরা দেশকে কেবল ক্ষমতা, শাসন ও সাম্রাজ্য হিসাবে দেখি না। আমাদের কাছে দেশ হ’ল জীবন্ত আত্মা। তাই, দেশের সুরক্ষা কেবল ভৌগোলিক সীমানা সুনিশ্চিত করাতেই সীমাবদ্ধ নেই, দেশের সুরক্ষার মানে আমাদের কাছে জাতীয় একতা, জাতীয় অখন্ডতা ও জাতীয় অভিন্ন স্বার্থ নিশ্চিত করা। আমাদের সেনাবাহিনীর মধ্যে শৌর্য ও বীরত্ব যেমন রয়েছে, তেমনই সেনা জওয়ানদের মনে মানবতা ও করুণাও রয়েছে। আর এই কারণেই আমাদের সেনানীরা কেবল সীমান্তেই নিজেদের বীরত্ব প্রদর্শন করেন না। দেশে বিপর্যয়, দুর্যোগ ও মহামারীর মতো সময়ে তাঁরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। দেশের মানুষের সেনাবাহিনীর প্রতি এই অবিচল আস্থা রয়েছে যে, যেখানে কেউ পৌঁছতে পারেন না, সেখানে আমাদের সেনা জওয়ানরা পৌঁছে যান। প্রত্যেক ভারতীয়র মনে এই সহজাত অনুভূতি রয়েছে যে, তাঁরা যখনই ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দেখেন, তখন মনের মধ্যে ভয় নয়, বরং দেশাত্মবোধ জেগে ওঠে। আর এটা অন্য কোনও বিষয়ের মতো সরল নয়। আপনারা দেশের একতা ও অখন্ডতার অতন্দ্র প্রহরী। আপনারা এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত সংকল্পের অন্যতম কান্ডারী। আমি নিশ্চিত যে, আপনারাদের সাহসিকতা থেকে প্রেরণা নিয়ে আমরা দেশকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারবো। 
 
বন্ধুগণ,
 
আপনাদের সকলকে দীপাবলীর শুভেচ্ছা। আপনাদের পরিবারের প্রতি শুভকামনা এবং সেই মায়েদের বিনম্র শ্রদ্ধা, যাঁরা আপনাদের মতো সাহসী পুত্র-কন্যার জন্ম দিয়েছেন। আমি আরও একবার আপনাদের দীপাবলীর শুভেচ্ছা জানাই। সকলে আমার সঙ্গে উচ্চস্বরে বলুন – ভারতমাতা কি জয়! ভারতমাতা কি জয়! ভারতমাতা কি জয়!
 
ধন্যবাদ!
 
বিঃদ্রঃ : এটি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আক্ষরিক অনুবাদ নয়, মূল ভাষণ তিনি হিন্দিতে দিয়েছিলেন।
 
 
CG/BD/SB

(Release ID: 1769643) Visitor Counter : 187