প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

ভারত –লুক্সেমবুর্গ ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে যৌথ বিবৃতি

Posted On: 19 NOV 2020 8:24PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১৯শে নভেম্বর, ২০২০

 

১ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গ্র্যান্ড ডাচি অফ লুক্সেমবুর্গের প্রধানমন্ত্রী মিষ্টার হ্যাভিয়ের বেট্টেল-এর মধ্যে ১৯শে নভেম্বর ভারত ও লুক্সেমবুর্গের মধ্যে প্রথম শীর্ষ সম্মেলন ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

২ উভয় প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের পারস্পরিক মূল্যবোধ, স্বাধীনতা, আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষার উপর ভিত্তি করে ভারত এবং লুক্সেমবুর্গের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্কের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন।

 

৩ দুই নেতাই ১৯৪৮ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর দীর্ঘ সাত দশক ধরে দুটি দেশের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এই সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যথেষ্ট দৃঢ় হয়েছে, কিন্তু তাঁরা মনে করেন পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই, ব্যবসা-বাণিজ্য, আর্থনীতি, ইস্পাত, মহাকাশ, আইসিটি, উদ্ভাবন, উৎপাদন ক্ষেত্র, গাড়ি নির্মাণ শিল্প এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে এই সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে যেসব সুযোগগুলি কাজে লাগানো হয়নি সেগুলিকে কাজে লাগাতে হবে।

 

৪ ভারত ও লুক্সেমবুর্গের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে গ্র্যান্ড ডিউক-এর এবছরের গোড়ায় ভারত সফর বাতিল হয়েছে। পারস্পরিক সুবিধেজনক সময়ে মহামারীর পরিস্থিতি দূর হলে এই সফর পরবর্তীতে করা হবে।

 

৫ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত ও লুক্সেমবুর্গের মধ্যে অভিন্ন চিন্তাধারার বিষয়ে উভয় নেতা সহমত পোষণ করেছেন। দুটি দেশের মধ্যে সহযোগিতা এবং বোঝাপড়া আরও দৃঢ় করার বিষয়ে তাঁরা অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। ভারতের বিদেশমন্ত্রক এবং লুক্সেমবুর্গের বিদেশ ও ইউরোপীয় বিষয়ক মন্ত্রকের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক আলোচনার উদ্যোগকে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন।

 

অর্থনৈতিক সম্পর্ক

৬ ভারত এবং লুক্সেমবুর্গ দুটি দেশে পারস্পরিক উপস্থিতি বাড়ানোয় এবং উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতাকে দুই প্রধানমন্ত্রীই স্বাগত জানিয়েছেন। বাণিজ্যিক সহযোগিতার নতুন নতুন সুযোগ খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা একমত হয়েছেন। ভারতীয় এবং লুক্সেমবুর্গের কোম্পানীগুলির মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ইনভেস্ট ইন্ডিয়া ও লুকসিমনোভিশনের মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ায় উভয় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

 

৭ ভারত এবং লুক্সেমবুর্গের মধ্যে ইস্পাত ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদী সহযোগিতার বিষয়টির কথা উল্লেখ করে উভয় নেতা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ এবং নতুন উদ্যোগকে আর্থিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নতুন নতুন সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন। লুক্সেমবুর্গের কোম্পানীগুলি ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন পরিবেশ, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, স্থিতিশীল প্রযুক্তি ও পরিচ্ছন্ন গঙ্গা মিশনের মতো প্রকল্পে উৎসাহ তৈরি হওয়ার বিষয়টিকেও তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন।

 

৮ সপ্তদশ যৌথ আর্থিক কমিশনে ভারত এবং বেলজিয়াম –লুক্সেমবুর্গ আর্থিক ইউনিয়নের মধ্যে অর্থনৈতিক ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কের পর্যালোচনার বিষয়ে উভয় নেতা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

 

৯ সরবরাহ শৃঙ্খলকে আরও প্রাণবন্ত, বৈচিত্র্যময়, দায়িত্বশীল ও স্থিতিশীল করে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়ে উভয় নেতা মত বিনিময় করেছেন। তাঁরা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যবসাবাণিজ্য ও পারস্পরিক নির্ভরতা এবং নানা ক্ষেত্রে জটিলতার ফলে সরবরাহ শৃঙ্খলে গত এক দশক ধরে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করে পারস্পরিক নির্ভরতা ও প্রাণবন্ত সম্পর্ককে নিশ্চিত করে ভবিষ্যতে সরবরাহ শৃঙ্খলের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর উপরও সহমত পোষণ করেছেন।

 

আর্থিক বিষয়

১০ পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তার গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে লুক্সেমবুর্গ স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ্ ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হওয়াকে উভয় নেতা স্বাগত জানিয়েছেন। কমিশন দ্য সারভেইল্যান্স দ্যু সেক্তুর ফিনারসিয়ের (সিএসএসএফ) এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি)-র মধ্যে চুক্তির বিষয়ে উভয় নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এর ফলে আর্থিক ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। এই প্রসঙ্গে আর্থিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার বিষয়ে উভয় প্রধানমন্ত্রীই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বেট্টেল বলেছেন, লুক্সেমবুর্গ হলো ইউরোপে আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। লুক্সেমবুর্গ ভারতের আর্থিক পরিষেবা শিল্পকে আন্তর্জাতিক বাজারে এবং সমৃদ্ধশালী ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে।

 

১১ উভয় নেতা আন্তর্জাতিক পরিবর্তনে আর্থিক শিল্পের সহযোগিতার বিষয়টিকে স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং স্থিতিশীল ও পরিবেশবান্ধব অর্থনীতি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তাঁরা স্থিতিশীল আর্থিক ব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করে যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপর একমত হয়েছেন। আর্থিক ক্ষেত্রের উদ্ভাবন, ডিজিটাইজেশনের গুরুত্বের বিষয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীই সহমত পোষণ করেছেন। তাঁরা আর্থিক প্রযুক্তি ও নতুন নতুন উদ্যোগের সম্ভাবনার দিকগুলিকে চিহ্নিত করে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন।

 

মহাকাশ ও ডিজিটাল সহযোগিতা

১২ মহাকাশ ক্ষেত্রে ভারত এবং লুক্সেমবুর্গের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়টিকে ইতিবাচক বলে দুই নেতাই মনে করেন। কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে বেতার ও টেলিভিশনের অনুষ্ঠানের সম্প্রচার এবং লুক্সেমবুর্গ ভিত্তিক মহাকাশ সংস্থাগুলির ভারতে তাদের কৃত্রিম উপগ্রহগুলিকে উৎক্ষেপণের বিষয়ে সহযোগিতায় উভয় নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ইসরো, ৭ই নভেম্বর পিএসএলভি-সি৪৯ মিশনে লুক্সেমবুর্গের যে চারটি কৃত্রিম উপগ্রহকে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে উভয় নেতা সেই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। ভবিষ্যতে বহির্বিশ্বে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে এই সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং দুটি দেশের সরকারের মধ্যে এনিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে।

 

১৩ কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার দ্রুত গতিতে ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিতে উভয় নেতা ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন। ডিজিটাল ইন্ডিয়া এবং ডিজিটাল লুক্সেমবুর্গ কর্মসূচীর মাধ্যমে ডিজিটালাইজেশনের প্রক্রিয়াকে দুটি দেশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, এক্ষেত্রে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয়টিকে উভয় নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

 

উচ্চ শিক্ষা এবং গবেষণা

 

১৪) স্নায়ুরোগের চিকিৎসার জন্য ভারতের ন্যাশনাল ব্রেন রিসার্চ সেন্টার এবং লুক্সেমবুর্গের দুটি সংস্থা - লুক্সেমবুর্গ ইন্সটিটিউট অফ হেল্থ ও লুক্সেমবুর্গ সেন্টার ফর সিস্টেম বায়ো-মেডিসিনের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে দুই নেতাই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। দুটি দেশের উচ্চশিক্ষায় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে তাঁরা সহমত পোষণ করেছেন এবং বম্বে, কানপুর ও ম্যাড্রাস আইআইটি এবং ন্যাশনাল ল-স্কুল অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে লুক্সেমবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতা আরও বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন।

সাংস্কৃতিক এবং জনসাধারণের মধ্যে যোগাযোগ

১৫) উভয় নেতা বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিবেশে ভারত ও লুক্সেমবুর্গ যে অহিংস নীতিকে অনুসরণ করে সে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। মহাত্মা গান্ধীর ১৫০ তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ২০১৯ সালে লুক্সেমবুর্গ যে স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করেছে শ্রী মোদী তাতে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বেট্টেল বলেছেন, এই স্মারক ডাক টিকিটে লুক্সেমবুর্গ শহরের পৌর উদ্যানে মহাত্মা গান্ধীর ব্রোঞ্জের মূর্তির ছবি রয়েছে। ভারতীয় শিল্পী অমর নাথ সেহগল, যিনি ভারত ও লুক্সেমবুর্গে দু-দশক যাওয়া-আসা করেছেন তিনিই ওই ব্রঞ্জের মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন।

১৬) দুই প্রধানমন্ত্রীই দুটি দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে দৃঢ় করার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। এর জন্য জনসাধারণের মধ্যে যোগোযোগ বাড়াতে হবে। লুক্সেমবুর্গে বসবাসরত ভারতীয়দের ইতিবাচক অবদানের কথা তাঁরা স্বীকার করেছেন। লুক্সেমবুর্গে ভারতীয়দের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুটি দেশের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে অভিবাসন ও যোগাযোগ সংক্রান্ত চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করা এবং ভারত ও বেনেলুক্সের মধ্যে কূটনৈতিক ও আধিকারিকদের ভিসার ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় সংক্রান্ত চুক্তিটিও দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারী

৭) কোভিড-১৯ মহামারীতে স্বাস্থ্য এবং আর্থ-সামাজিক বিষয়ে যে প্রভাব পড়েছে তা নিয়ে উভয় নেতা আলোচনা করেছেন। তাঁরা এই মহামারীর মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে জোট বাঁধার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। কোভিড পরবর্তী সময়ে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা আনতে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আর্থিক ক্ষেত্রে প্রাণবন্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে তাঁরা রাজি হয়েছেন। ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়ন অংশীদারিত্বের কাঠামোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি, মুক্ত, স্বচ্ছ ও দ্রুত তথ্যের আদান-প্রদানের ওপর তাঁরা জোর দিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রাসঙ্গিকতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ভারত সম্পর্ক

১৮) গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, স্বাধীনতা, আইনের শাসন, মানবাধিকারকে সম্মান, নিরাপদ, পরিবেশ বান্ধব ও স্থিতিশীল পৃথিবীর জন্য ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যে কৌশলগত অংশীদারিত্বে বিশ্বাস করে উভয় নেতা তাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তাঁরা ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ১৫ই জুলাই ভার্চুয়ালি যে সফল শীর্ষ বৈঠক হয়েছিল তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অভিন্ন স্বার্থ, সর্বাঙ্গীন স্থিতিশীল ও আইন অনুসারে যোগাযোগ বাড়াতে উভয় নেতা ঐক্যমত্যে পৌঁছেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে লুক্সেমবুর্গের ভারত ও ইইউ-এর মধ্যে সম্পর্ককে মজবুত করতে গঠনমূলক ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বেট্টেল ভারত ও ইউউ-এর মধ্যে সম্পর্ককে আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ ও দৃঢ় করার ওপর জোর দিয়েছেন এবং একে অন্যের নিরাপত্তা, সমৃদ্ধ ও স্থিতিশীল উন্নয়নে অংশীদার হওয়ার বিষয়ে অভিন্ন স্বার্থ মেনে চলে বলে জানিয়েছেন।

১৯) ভারত ও ইইউ-এর মধ্যে আর্থিক সম্পর্কের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে দুই নেতা বলেছেন কোভিড পরবর্তী সময়ে আর্থিক উন্নয়নের নিরিখে এই সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা সুসমভাবে উচ্চাকাঙ্খী একটি পারস্পরিক সুবিধাযুক্ত মুক্ত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তির লক্ষ্যে কাজ করার বিষয়ে ঐক্যমতে পৌচেছেন।

বহুস্তরীয় সহযোগিতা

২০) ফলপ্রসু ও সংস্কারমুখী বহুস্তরীয়বাদ এবং রাষ্ট্রসংঘ ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম মেনে দুটি দেশই চলবে বলে উভয় নেতা জানিয়েছেন। স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিবেশ রক্ষা করে জলবায়ু পরিবর্তন আটকাতে তাঁরা তাঁদের সহযোগিতার অঙ্গীকার পুর্নব্যক্ত করেছেন।

২১) এই প্রসঙ্গে প্যারিস চুক্তি রূপায়িত করার বিষয়ে তাঁরা তাঁদের প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছেন। এই চুক্তি অনুসারে দুটি দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অঙ্গীকার অনুযায়ী কাজ করবে। পরিবেশ বান্ধব ক্ষেত্রে বেসরকারী বিনিয়োগ বাড়াতে ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যাটফর্ম অন সাসটেইনেবল ফিনান্স এবং আর্ন্তজাতিক সৌরজোটে দুটি দেশ একযোগে কাজ করবে। আন্তর্জাতিক সৌরজোটে লুক্সেমবুর্গ যোগ দেবে বলে প্রধানমন্ত্রী বিট্টেল ঘোষণা করেছেন।

২২) সেন্ডাই ফ্রেমওয়ার্ক ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য দুটি দেশই সহযোগিতার কথা জানিয়েছে। এরফলে বিপর্যয়ের সময় ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যাবে। কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাসট্রাকচার-এ ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর বিষয়ে দুই নেতা সহমত পোষণ করেছেন।

২৩) রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ২০২১-২২ সালে অস্থায়ী সদস্য হিসেবে ভারতের নির্বাচিত হওয়াকে প্রধানমন্ত্রী বেট্টেল স্বাগত জানিয়েছেন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী ও অস্থায়ী সদস্যের সংখ্যা বৃদ্ধি সহ এর সংস্কারে লুক্সেমবুর্গের সমর্থনের কথা তিনি পুর্নব্যক্ত করেছেন। আন্তঃসরকারি আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়নে উভয় নেতা একমত হয়েছেন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্য হওয়ার বিষয়টিকে প্রধানমন্ত্রী বেট্টেল তাঁর দেশের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। মিশাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম, নিউক্লিয়ার সাপ্লাইয়ার্স গ্রুপে ভারতের অন্তর্ভুক্তিকে লুক্সেমবুর্গ সমর্থন করে। রাষ্ট্রসংঘের লুক্সেমবুর্গের সদস্য হওয়ার বিষয়ে এবং রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদে ২০২২-২৪ সালে লুক্সেমবুর্গের প্রার্থীপদকে ভারত সমর্থন জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেট্টেল এরজন্য ভারতের প্রশংসা করেছেন।

২৪) আন্তর্জাতিক জঙ্গীবাদ এবং সীমান্তের অন্য প্রান্ত থেকে সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়ার মতো উদ্বেগজনক বিষয়ে উভয় নেতা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। যেকোন রকমের জঙ্গীবাদের তাঁরা বিরোধীতা করেন। রাষ্ট্রসংঘে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উদ্যোগ সহ ফিনানসিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় ভারত এবং লুক্সেমবুর্গ সহযোগিতা বজায় রাখবে বলে জানিয়েছে।

পরিসমাপ্তি

২৫) ভারত এবং লুক্সেমবুর্গের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে তৈরি হয়েছে বলে দুই নেতা জানিয়েছেন। এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও প্রসারিত ও দৃঢ় করার জন্য তাঁরা তাঁদের অঙ্গীকার ব্যাক্ত করেছেন এবং আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বেট্টেল প্রধানমন্ত্রী মোদীকে লুক্সেমবুর্গ সফরে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

 

***

 

 

CG/CB/NS/SKD



(Release ID: 1674324) Visitor Counter : 220