প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
নব রায়পুরে ছত্তিশগড় বিধানসভার নতুন ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
01 NOV 2025 3:22PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১ নভেম্বর, ২০২৫
ছত্তিশগড়ের রাজ্যপাল, রমন ডেকা জি, লোকসভার স্পিকার, ওম বিড়লা জি, ছত্তিশগড় বিধানসভার স্পিকার, আমার বন্ধু রমন সিং জি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিষ্ণু দেও সাই জি, কেন্দ্রীয় সরকারে আমার সহকর্মী, টোখন সাহু জি, উপ-মুখ্যমন্ত্রী, বিজয় শর্মা জি এবং অরুণ সাও জি, রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, চরণ দাস মহন্ত জি, অন্যান্য বিশিষ্ট মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি এবং এখানে উপস্থিত ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ!
আজ ছত্তিশগড়ের উন্নয়ন-যাত্রার একটি সোনালী সূচনা হল। ব্যক্তিগতভাবে, এটি আমার জন্যও একটি বিশেষ এবং আনন্দের দিন। কয়েক দশক ধরে এই ভূমির সঙ্গে আমার গভীর মানসিক বন্ধন রয়েছে। একজন কর্মী হিসেবে, আমি ছত্তিশগড়ে অনেক সময় কাটিয়েছি এবং এই জায়গা থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। ছত্তিশগড়ের মানুষ এবং মাটি আমার জীবনকে অনেক আশীর্বাদ করেছে এবং গঠন করেছে। ছত্তিশগড়ের ধারণা ও ভাবনা থেকে শুরু করে এর গঠনের সংকল্প এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন পর্যন্ত, আমি রাজ্যের রূপান্তরের প্রতিটি পর্যায়ের সাক্ষী ছিলাম। এবং আজ, ছত্তিশগড় তার ২৫ বছরের যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করার সঙ্গে সঙ্গে, আমি আবারও এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের অংশ হতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। এই রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে রাজ্যের জনগণের জন্য এই নতুন বিধানসভা ভবন উদ্বোধন করতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করছি। এই শুভ উপলক্ষে আমি ছত্তিশগড়ের জনগণ এবং রাজ্য সরকারকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
২০২৫ সাল ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের অমৃত বছর হিসেবেও চিহ্নিত। পঁচাত্তর বছর আগে, ভারত তার নাগরিকদের জন্য তার সংবিধান উৎসর্গ করেছিল। এই ঐতিহাসিক উপলক্ষে, আমি এই অঞ্চল থেকে সংবিধান সভার বিশিষ্ট সদস্য, পণ্ডিত রবিশঙ্কর শুক্লা জি, ব্যারিস্টার ঠাকুর চেদিলাল জি, ঘনশ্যাম সিং গুপ্ত জি, কিশোরী মোহন ত্রিপাঠী জি, রামপ্রসাদ পোতাই জি এবং রঘুরাজ সিং জি-কে শ্রদ্ধা জানাই। এই অনুন্নত অঞ্চল থেকে এসে, এই দূরদর্শী ব্যক্তিরা দিল্লিতে পৌঁছেছিলেন এবং ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরের নেতৃত্বে আমাদের সংবিধান গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
বন্ধুগণ,
আজ ছত্তিশগড়ের ইতিহাসে একটি সোনালী অধ্যায় রচিত হয়েছে। এই বিশাল এবং আধুনিক বিধানসভা ভবনের উদ্বোধন কেবল একটি কাঠামোর উৎসর্গ নয়, বরং এটি জনগণের আকাঙ্ক্ষা, সংগ্রাম এবং গর্বের ২৫ বছরের উদযাপন। আজ, ছত্তিশগড় তার স্বপ্নের এক নতুন শিখরে দাঁড়িয়ে আছে। আর এই গর্বের মুহূর্তে, আমি সেই মহান দূরদর্শীকে প্রণাম জানাই যার দূরদর্শিতা এবং করুণার ফলে এই রাজ্য তৈরি হয়েছিল এবং এই মহান রাষ্ট্রনায়ক হলেন ভারতরত্ন, শ্রদ্ধেয় অটল বিহারী বাজপেয়ী জি।
বন্ধুগণ,
২০০০ সালে যখন অটল জি ছত্তিশগড় রাজ্য তৈরি করেছিলেন, তখন তাঁর সিদ্ধান্ত কেবল প্রশাসনিক ছিল না। সেই সিদ্ধান্ত ছিল উন্নয়নের নতুন পথ খুলে দেওয়ার এবং ছত্তিশগড়ের আত্মাকে পরিচয় দেওয়ার জন্য একটি দূরদর্শী পদক্ষেপ। সেই কারণেই আজ, যখন অটল জি-এর মূর্তি উন্মোচনের সাথে সাথে বিশাল নতুন বিধানসভা ভবন উদ্বোধন করা হচ্ছে, তখন আমার হৃদয় আবেগে ভরে উঠেছে। আমার মনে হচ্ছে: অটল জি, আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, দেখুন আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে। আপনি যে ছত্তিশগড় তৈরি করেছিলেন তা আজ আত্মবিশ্বাসে ভরে উঠছে, অগ্রগতির নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
বন্ধুগণ,
ছত্তিশগড় বিধানসভার ইতিহাস নিজেই একটি অনুপ্রেরণা। ২০০০ সালে যখন এই সুন্দর রাজ্যটি গঠিত হয়েছিল, তখন রায়পুরের রাজকুমার কলেজের যশপুর হলে প্রথম বিধানসভা অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই দিনগুলি ছিল সীমিত সম্পদের, কিন্তু সীমাহীন স্বপ্নের। সেই সময় একমাত্র অনুভূতি ছিল যে আমরা আমাদের ভাগ্য গঠন করবো এবং এটিকে দ্রুত উজ্জ্বল করে তুলবো। পরে, যে বিধানসভা ভবনটি নির্মিত হয়েছিল তাও মূলত অন্য একটি বিভাগের প্রাঙ্গণের অংশ ছিল। সেখান থেকে ছত্তিশগড়ের গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরু হয়েছিল, নতুন শক্তিতে উদ্দীপ্ত। এবং আজ, ২৫ বছর পরে, সেই একই গণতন্ত্র এবং সেই একই মানুষ একটি আধুনিক, ডিজিটাল এবং স্বনির্ভর বিধানসভা কমপ্লেক্স উদ্বোধন করছেন।
বন্ধুগণ,
এই ভবনটি গণতন্ত্রের পবিত্র স্থান। এখানকার প্রতিটি স্তম্ভ স্বচ্ছতার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিটি করিডোর আমাদের জবাবদিহিতার কথা মনে করিয়ে দেয়। আর প্রতিটি কক্ষ জনগণের কণ্ঠস্বর প্রতিফলিত করে। এখানে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি আগামী কয়েক দশক ধরে ছত্তিশগড়ের ভাগ্য গঠন করবে। এখানে উচ্চারিত প্রতিটি শব্দ ছত্তিশগড়ের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে। আমি নিশ্চিত যে এই ভবনটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রাজ্যের নীতি, ভাগ্য এবং নীতিনির্ধারকদের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
বন্ধুগণ,
আজ, সমগ্র জাতি ‘বিরাসত’ (ঐতিহ্য) এবং ‘বিকাশ’ (উন্নয়ন) উভয়কেই আলিঙ্গন করে এগিয়ে চলেছে। এবং সরকারের প্রতিটি নীতি এবং সিদ্ধান্তে এই চেতনা অনুভূত হচ্ছে। পবিত্র সেনগোল আমাদের নতুন সংসদকে অনুপ্রাণিত করে। সংসদের নতুন গ্যালারিগুলি সমগ্র বিশ্বকে ভারতীয় গণতন্ত্রের প্রাচীন শিকড়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে। সংসদ কমপ্লেক্সে স্থাপিত মূর্তিগুলি বিশ্বকে মনে করিয়ে দেয় যে ভারতে গণতন্ত্রের শিকড় কতটা গভীরে রয়েছে।
বন্ধুগণ,
আমি আনন্দিত যে ভারতের এই দৃষ্টিভঙ্গি এবং চেতনা ছত্তিশগড়ের নতুন বিধানসভা ভবনেও প্রতিফলিত হয়েছে।
বন্ধুগণ,
ছত্তিশগড়ের নতুন বিধানসভা ভবন চত্বর রাজ্যের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির প্রকৃত প্রতিফলন। এই বিধানসভার প্রতিটি কোণ ছত্তিশগড়ের পবিত্র মাটিতে জন্মগ্রহণকারী মহান ব্যক্তিত্বদের অনুপ্রেরণা বহন করে। বঞ্চিতদের অগ্রাধিকার দিয়ে, 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ' অর্থাৎ,সকলের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নকে উৎসাহিত করাই হল বিজেপি সরকারের অধীনে সুশাসনের বৈশিষ্ট্য, এবং এগুলি জাতির সংবিধানের চেতনারও প্রতিনিধিত্ব করে। এই মূল্যবোধগুলি আমাদের ঋষি, মুনি, মনীষী এবং মহান নেতাদের চিরন্তন শিক্ষা।
বন্ধুগণ,
এই অপূর্ব ভবনটি পর্যবেক্ষণ করার সময়, আমি বস্তার শিল্পের এক অপূর্ব ঝলক দেখতে পেলাম। আমার মনে আছে কয়েক মাস আগে আমি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে বস্তার শিল্পের একটি নিদর্শন উপহার দিয়েছিলাম। বস্তার থেকে প্রাপ্ত এই শিল্প আমাদের সৃজনশীলতা এবং সাংস্কৃতিক শক্তির প্রতীক।
বন্ধুগণ,
এই পরিষদের দেয়ালগুলি বাবা গুরু ঘাসিদাস জী'র "মানিখে-মানিখে এক সমান" অর্থাৎ, প্রত্যেক মানুষ সমান - এই বার্তা বহন করে, যা আমাদের সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা সম্মান বা সকলের জন্য একতা, উন্নয়ন এবং শ্রদ্ধা – এই ভাবনার সারমর্ম শেখায়। এই ভবনের প্রতিটি প্রবেশদ্বার মাতা শবরীর শেখানো উষ্ণতা এবং নম্রতার প্রতীক, যা আমাদের প্রত্যেক অতিথি, প্রত্যেক নাগরিককে স্নেহের সঙ্গে স্বাগত জানানোর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এই পরিষদের প্রতিটি আসন সন্ত কবীরের শেখানো সত্য এবং নির্ভীকতার চেতনা বহন করে। এবং এই ভবনের ভিত্তিপ্রস্তরে মহাপ্রভু বল্লভাচার্য জী'র সংকল্প নিহিত, যা হল 'নর সেবা, নারায়ণ সেবা' অর্থাৎ,মানবতার সেবাই ঈশ্বরের সেবা।
বন্ধুগণ,
ভারত গণতন্ত্রের জননী। আমাদের আদিবাসী সমাজ বংশ পরম্পরায় এই গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যগুলো যাপন এবং অনুশীলন করে আসছে। বাস্তারের ‘আদিম সংসদ’ বা প্রাচীন সংসদ নামে পরিচিত মুরিয়া দরবার এই ঐতিহ্যের একটি জীবন্ত উদাহরণ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে, আমাদের সমাজ এবং প্রশাসন ‘আদিম সংসদ’-এর মাধ্যমে সম্মিলিত সমাধান খুঁজে বের করার জন্য একত্রিত হয়েছে। আমি আনন্দিত যে এই নতুন পরিষদ মুরিয়া দরবারের ঐতিহ্যকে যথাযথ স্থান এবং সম্মান প্রদান করে।
বন্ধুগণ,
একদিকে, এই পরিষদের প্রতিটি কোণ আমাদের মহান ব্যক্তিত্বদের আদর্শকে প্রতিফলিত করে, অন্যদিকে, এই বিধানসভার অধ্যক্ষের চেয়ার রমন সিংজির অভিজ্ঞ নেতৃত্ব দ্বারা শোভিত। রমনজির একজন নিবেদিতপ্রাণ দলীয় কর্মী কীভাবে কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে তার প্রকৃত চেতনায় শক্তিশালী এবং সমুন্নত রাখতে পারেন তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছেন।
বন্ধুগণ,
ক্রিকেটে, আমরা প্রায়ই দেখি যে, যিনি একসময় ক্যাপ্টেন ছিলেন, তিনি পরবর্তীতে দলের সদস্য হিসেবে খেলেন, কিন্তু রাজনীতিতে এমন উদাহরণ খুব কমই দেখা যায়। কিন্তু রমন সিংজি ঠিক এই উদাহরণটি স্থাপন করেছেন। একসময় ক্যাপ্টেন হওয়ার পর, তিনি এখন ছত্তিশগড়ের অগ্রগতির জন্য সত্যিকারের চেতনা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। রাজ্যের সেবায় নিবেদিতপ্রাণ প্রত্যেক কর্মীর জন্য তিনি অনুপ্রেরণা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছেন।
বন্ধুগণ,
রাষ্ট্রকবি নিরালা জি একবার দেবী সরস্বতীর কাছে তাঁর শ্লোকে প্রার্থনা করেছিলেন: ‘প্রিয় স্বতন্ত্র-রব অমৃত-মন্ত্র নব ভারত মেঁ ভর দে’ অর্থাৎ, নতুন ভারতকে প্রিয় স্বাধীনতার মন্ত্রের অমৃত দিয়ে পূর্ণ করো। এগুলি নিছকই কাব্যিক পংক্তি ছিল না, এগুলি ছিল একটি নতুন, মুক্ত ভারত গঠনের মন্ত্র। তিনি একটি নতুন ছন্দ, নতুন গতি এবং নতুন কণ্ঠের কথা বলেছিলেন, অর্থাৎ, ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত ভারতের একটি দৃষ্টিভঙ্গি, তবুও ভবিষ্যতের দিকে পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। আজ, যখন আমরা ছত্তিশগড়ের এই নতুন বিধানসভা ভবনে দাঁড়িয়ে আছি, তখন সেই চেতনা যেন এখানে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। এই ভবনটিও সেই ‘নতুন কণ্ঠস্বরের’ প্রতীক যেখানে পুরনো অভিজ্ঞতার প্রতিধ্বনি নতুন স্বপ্নের শক্তির সঙ্গে মিলিত হয়। এই শক্তি দিয়ে, আমাদের এমন একটি ভারত গড়ে তুলতে হবে এবং এমন একটি ছত্তিশগড়ের ভিত্তি স্থাপন করতে হবে যা তার ‘বিরাসত’ বা ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে, কিন্তু আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ‘বিকাশ’ বা উন্নয়নের এর পথে এগিয়ে যাবে।
বন্ধুগণ,
‘নাগরিক দেবো ভব’ বা ‘নাগরিকরাই ঈশ্বর’ আমাদের সুশাসনের পথপ্রদর্শক মন্ত্র। সেইজন্যই এই বিধানসভায় গৃহীত প্রতিটি সিদ্ধান্ত জনগণের কল্যাণের উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। এখানে, এমন আইন তৈরি করা উচিত যা সংস্কারকে ত্বরান্বিত করে, মানুষের জীবনকে সহজ করে এবং অপ্রয়োজনীয় সরকারি হস্তক্ষেপ কমায়। সরকারের অনুপস্থিতি বা অতিরিক্ততা থাকা উচিত নয়। দ্রুত অগ্রগতির জন্য এটিই একমাত্র প্রকৃত মন্ত্র।
বন্ধুগণ,
আমাদের ছত্তিশগড় হল ভগবান শ্রী রামের মাতৃভূমি। ভগবান রাম এই ভূমির প্রিয় বোনপো বা ভাগ্নে। আর এই নতুন বিধানসভা ভবন চত্বরে ভগবান রামের আদর্শ স্মরণ করার জন্য আজকের চেয়ে শুভ উপলক্ষ আর কী হতে পারে। ভগবান রামের আদর্শ আমাদের সুশাসনের নীতি শেখায়।
বন্ধুগণ,
অযোধ্যায় রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে, আমরা সকলেই "দেব থেকে দেশ" এবং "রাম থেকে রাষ্ট্র" অর্থাৎ, ঈশ্বর থেকে জাতি, আর রাম থেকে প্রজাতন্ত্র – এই মনোভাব থেকে একটি শপথ নিয়েছিলাম। আমাদের মনে রাখতে হবে যে "রাম থেকে রাষ্ট্র" বা "রামরাজ ব্যায়ঠে ত্রিলোকা। হরষিত ভএ গয়ে সব সোকা” অর্থাৎ, সুশাসন এবং জনকল্যাণের রাজত্ব। তার মানে আমাদের সরকারের "সবকা সাথ, সবকা বিকাশ" নীতি দ্বারা পরিচালিত একটি শাসনব্যবস্থা। "রাম থেকে রাষ্ট্র" মানে " নহিঁ দরিদ্র কোউ, দুখী ন দীনা" অর্থাৎ, এমন একটি জাতি যেখানে কেউ দরিদ্র নয়, কেউ দুঃখী নয়; দারিদ্র্যমুক্ত একটি সমৃদ্ধ ভারত। "রাম থেকে রাষ্ট্র" মানে "অল্পমৃত্যু নহিঁ কওয়নিউ পীরা" অর্থাৎ, অকালমৃত্যু নয়, রোগে ভুগবে না; একটি সুস্থ ও সুখী ভারত গঠন করতে হবে। “রাম থেকে রাষ্ট্র” এর মানে “মানউঁ এক ভগতি কর নাতা” অর্থাৎ, সকলের জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সমতার ভিত্তিতে নির্মিত বৈষম্যমুক্ত সমাজব্যবস্থা।
বন্ধুগণ,
“রাম থেকে রাষ্ট্র” এর মানে “নিসিচর হীন করউঁ মহি ভূজ ওঠাড় পন কীন্হ” অর্থাৎ, মানবতাবিরোধী শক্তিকে নির্মূল করা আর সন্ত্রাসবাদের অবসানের শপথ। আর অপারেশন সিন্দুরে আমরা ঠিক এটিই দেখেছি। সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করার অঙ্গীকার নিয়ে, ভারত সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্কগুলির মেরুদণ্ড ভেঙে দিচ্ছে। ভারত এখন নকশালবাদ এবং মাওবাদী সহিংসতা সমাপ্ত করার লক্ষ্যে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে চলেছে। ভারত আজ তার অভূতপূর্ব বিজয়ে গর্বিত, এবং এই গর্বের চেতনা এই নতুন ছত্তিশগড় বিধানসভা কমপ্লেক্স জুড়ে ছড়িয়ে আছে।
বন্ধুগণ,
গত পঁচিশ বছরে ছত্তিশগড় একটি উল্লেখযোগ্য এবং অনুপ্রেরণামূলক রূপান্তর প্রত্যক্ষ করেছে। একসময় নকশালবাদ এবং পশ্চাদপদতার জন্য পরিচিত এই রাজ্যটি আজ সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। বস্তার অলিম্পিক এখন সারা দেশে আলোচিত হচ্ছে। একসময় নকশালবাদ দ্বারা প্রভাবিত অঞ্চলগুলি এখন উন্নয়নের ঢেউ এবং শান্তির হাসি দেখতে পাচ্ছে। এই রূপান্তরের পিছনে রয়েছে ছত্তিশগড়ের জনগণের কঠোর পরিশ্রম এবং বিজেপি সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্ব।
বন্ধুগণ,
ছত্তিশগড়ের রজতজয়ন্তী উদযাপন কেবল একটি মাইলফলক নয়, বরং একটি বৃহত্তর যাত্রার সূচনা। ২০৪৭ সালের মধ্যে, যখন ভারত স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপন করবে, ছত্তিশগড় 'বিকশিত ভারত' বা উন্নত ভারতের স্বপ্ন অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অতএব, আমি এখানে উপস্থিত সকলকে, প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিকে, এমন একটি ব্যবস্থা এবং এমন একটি বিধানসভা গড়ে তোলার আহ্বান জানাই যা প্রতিটি রাজ্যকে'বিকশিত ভারত'-এর নতুন উচ্চতা অর্জনে অনুপ্রাণিত করবে। এই সভায় প্রতিটি বিতর্ক, উত্থাপিত প্রতিটি প্রশ্ন এবং প্রতিটি আলোচনায় উৎকর্ষ থাকুক। আমরা যাই করি না কেন, যেভাবেই করি না কেন, আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত "বিকশিত ছত্তিশগড়, বিকশিত ভারত" বা উন্নত ভারতের জন্য একটি উন্নত ছত্তিশগড়।
বন্ধুগণ,
এই নতুন বিধানসভার প্রকৃত গুরুত্ত্ব এর স্থাপত্য মহিমা দ্বারা সংজ্ঞায়িত হবে না, বরং এখানে গৃহীত কল্যাণমুখী সিদ্ধান্ত দ্বারা সংজ্ঞায়িত হবে। এই পরিষদ জনগণের স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষা কতটা গভীরভাবে বোঝে এবং সেগুলি পূরণে কতটা দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করে তা দ্বারা এটির পরিমাপ করা হবে। এখানকার প্রতিটি সিদ্ধান্ত কৃষকের শ্রমকে সম্মান জানাবে, যুবসমাজের আকাঙ্ক্ষাকে পরিচালিত করবে, ‘নারীশক্তি’ বা নারীর ক্ষমতায়নের নতুন আশা নিয়ে আসবে এবং সমাজের দরিদ্রতমদের উন্নয়ন করবে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে এই পরিষদ কেবল আইন প্রণয়নের জায়গা নয়, বরং ছত্তিশগড়ের ভাগ্য গঠনের জন্য একটি জীবন্ত কেন্দ্র। এখানে জন্ম নেওয়া প্রতিটি ধারণা জনসেবার চেতনা, উন্নয়নের সংকল্প এবং ভারতকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস বহন করবে। এটাই আমাদের সম্মিলিত সংকল্প।
বন্ধুগণ,
গণতন্ত্রে কর্তব্যকে সর্বদা প্রথমে রাখা উচিত। আসুন আমরা সকলেই নতুন পরিষদের উদ্বোধনের এই মুহূর্তে আমাদের জনজীবনকে সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে আমাদের দায়িত্ব পালনে উৎসর্গ করার শপথ নিই। এই পবিত্র স্থান থেকে, আমাদের প্রজাতন্ত্রের অমৃত বছরে, আসুন আমরা জনগণের সেবাকে আমাদের জীবনের লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করি। গণতন্ত্রের এই সুন্দর নতুন মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আমি আবারও সকলকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা জানাই। এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার জন্য আমি বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী এবং আমার বন্ধু রমন সিংজিকে অভিনন্দন জানাই।
জয় ভারত! জয় ছত্তিশগড়!
আপনাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ
SC/SB/NS….
(Release ID: 2185468)
Visitor Counter : 6