প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
১৫তম ভারত-জাপান বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের যৌথ বিবৃতি: আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য অংশীদারিত্ব
Posted On:
29 AUG 2025 7:06PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৯ আগস্ট, ২০২৫
জাপানের প্রধানমন্ত্রী মহামান্য মিঃ ইশিবা শিগেরু-র আমন্ত্রণে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫তম ভারত-জাপান বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষ্যে ২৯-৩০ আগস্ট ২০২৫ তারিখে জাপানে সরকারি সফরে গিয়েছেন। ২৯ আগস্ট ২০২৫ সন্ধ্যায় জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (কান্তেই) প্রধানমন্ত্রী মোদীকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী ইশিবা। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আনুষ্ঠানিকভাবে গার্ড অফ অনার গ্রহণ করেন। দুই প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সেখানে তাঁরা ভারত ও জাপানের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করেন যা সভ্যতাগত সম্পর্ক, অভিন্ন মূল্যবোধ ও স্বার্থ, অভিন্ন কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং একে অপরের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। দুই প্রধানমন্ত্রী গত দশকে ভারত-জাপান অংশীদারিত্বের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন এবং আগামী দশকগুলিতে পারস্পরিক নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য কৌশলগত ও ভবিষ্যৎমুখী অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করার উপায় নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী উভয় পক্ষের মধ্যে টেকসই উচ্চ-স্তরের বিনিময়, মন্ত্রী পর্যায়ের এবং সংসদীয় যোগাযোগকে স্বাগত জানিয়েছেন, যা পারস্পরিক আস্থা এবং সম্পর্কের গভীরতা প্রতিফলিত করে। গত এক দশকে এই অংশীদারিত্ব নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, দক্ষতা ও গতিশীলতা, এবং সাংস্কৃতিক ও জনগণের সাথে জনগণের সংযোগের মতো বিস্তৃত ক্ষেত্রগুলিতে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত হয়েছে। দুই প্রধানমন্ত্রীই বলেন যে, ভারত ও জাপানের সত্তরটিরও বেশি সংলাপ ব্যবস্থা রয়েছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মীগোষ্ঠী রয়েছে যাঁরা উভয় দেশের বিভিন্ন মন্ত্রক, সংস্থা এবং বিভাগের মধ্যে নিবিড় সম্পৃক্ততা এবং সহযোগিতা সুনিশ্চিত করেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে একমত হয়েছেন যে ভারত-জাপান অংশীদারিত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। এখন আমাদের সাফল্যের উপর ভিত্তি করে পারস্পরিক পরিপূরক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে আর পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য আমাদের নিজ নিজ শক্তি এবং চমৎকার সম্পর্ককে কাজে লাগাতে হবে। তাঁরা দু’জনেই অভিন্ন লক্ষ্য অর্জন এবং বিশেষ কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সংকল্পের কথা ব্যক্ত করেন। এই লক্ষ্যে, দুই প্রধানমন্ত্রী তিনটি অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্রের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে একাধিক ঘোষণা করেন - যা আমাদের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করবে, আমাদের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করবে এবং আমাদের জনগণের সঙ্গে জনগণের বিনিময়কে আরও নিবিড় করবে। তাঁরা পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদন ও ব্যবহার, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, ডিজিটাল অংশীদারিত্ব, মহাকাশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ সহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ নথি স্বাক্ষরকে স্বাগত জানিয়েছেন। উভয় নেতা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন:
(i) পরবর্তী দশকের জন্য একটি যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ - যা অর্থনীতি, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, গতিশীলতা, পরিবেশ, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, স্বাস্থ্য, জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক এবং রাজ্য-এলাকাভিত্তিক সম্পৃক্ততার মতো আটটি স্তম্ভে অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সমগ্র জাতির প্রচেষ্টার রেখা নির্ধারণ করবে;
(ii) নিরাপত্তা সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি যৌথ ঘোষণাপত্র, যা সমসাময়িক ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমাদের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্পর্ককে পরবর্তী স্তরে উন্নীত করবে; এবং
(iii) ভারত-জাপান মানবসম্পদ বিনিময় ও সহযোগিতার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা, যা প্রতিভা গতিশীলতার জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করবে এবং পাঁচ বছরে ৫০০,০০০ এরও বেশি কর্মীর বিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করবে, যার মধ্যে রয়েছে ভারত থেকে জাপানে ৫০,০০০ দক্ষ কর্মী এবং সম্ভাব্য প্রতিভার কর্মসংস্থান।
দুই প্রধানমন্ত্রী ভারত-জাপান অর্থনৈতিক নিরাপত্তা উদ্যোগের ঘোষণাও করেছেন যা অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার গতি সম্প্রসারিত করবে, যার মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য ও ক্ষেত্রে সরবরাহ শৃঙ্খল সুরক্ষিত করা এবং শক্তিশালী করা। আর টেলিযোগাযোগ, ওষুধ, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, সেমিকন্ডাক্টর এবং পরিষ্কার শক্তির উপর উচ্চতর অগ্রাধিকার সহ গুরুত্বপূর্ণ এবং উদীয়মান প্রযুক্তিতে সহযোগিতা ত্বরান্বিত করা। তাঁরা ২০২৪ সালের নভেম্বরে কৌশলগত বাণিজ্য ও প্রযুক্তি সহ অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংলাপ শুরুর উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। দুই প্রধানমন্ত্রী তাঁদের পররাষ্ট্র মন্ত্রককে শিল্প ও শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৌশলগত ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ফলাফল এবং প্রকল্পগুলি চিহ্নিত করার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত নীতিগত পর্যায়ের বিনিময় ত্বরান্বিত করার দায়িত্ব দিয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে, উভয় পক্ষ উচ্চ প্রযুক্তির বাণিজ্যকে আরও সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে কাজ করতে সম্মত হয়েছে এবং পারস্পরিকভাবে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জগুলি সহজ করে তুলেছে। উভয় পক্ষই কৌশলগত ক্ষেত্রে বর্তমান সহযোগিতার রূপরেখা তুলে ধরে একটি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা তথ্যপত্র জারি করেছে। দুই প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় ও জাপানি কোম্পানিগুলিকে সরবরাহ শৃঙ্খলের বৈচিত্র্য এবং স্থিতিস্থাপকতার দিকে উৎসাহিত করার জন্য অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। ব্যবসায়িক সুযোগ সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে খনিজ সম্পদ ক্ষেত্রে সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরকে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী ভারত-জাপান ডিজিটাল অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, যা ডিজিটাল প্রতিভা বিনিময়, গবেষণা ও উন্নয়ন, স্টার্ট-আপ এবং কর্পোরেট অংশীদারিত্বের মাধ্যমে উদীয়মান প্রযুক্তিতে যৌথ সহযোগিতাকে উৎসাহিত করে। তাঁরা ভারত-জাপান ডিজিটাল অংশীদারিত্ব ২.০ কে স্বাগত জানিয়েছেন, যা ডিজিটাল বিপ্লবের পরবর্তী পর্যায়ে সহযোগিতাকে উন্নীত করবে। দুই প্রধানমন্ত্রী জাপান-ভারত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সহযোগিতা উদ্যোগের সূচনাও ঘোষণা করেন, যার লক্ষ্য বৃহৎ ভাষা মডেল (এলএলএম) সহ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা আরও নিবিড় করা, শিল্প ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে বিনিময়ের জন্য মঞ্চ স্থাপন করা, যৌথ গবেষণা প্রকল্পগুলিকে সমর্থন করা এবং ভারতে ডেটা সেন্টারগুলির উন্নয়ন ও পরিচালনা সহজতর করা। প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে ‘এআই ইমপ্যাক্ট’ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যা ২০২৬ সালের ১৯-২০ ফেব্রুয়ারি তারিখে ভারতে আয়োজিত হবে। তদুপরি, দুই প্রধানমন্ত্রী স্টার্টআপগুলির জন্য সহায়তার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন এবং জাপান-ভারত স্টার্ট-আপ সহায়তা উদ্যোগ (জেআইএসএসআই) সহ ভারতে উভয় দেশের স্টার্টআপগুলির কার্যক্রম প্রচারে একমত হয়েছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী ভারত ও জাপানের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা সহযোগিতা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা ২০২৪ সালের আগস্টে নয়াদিল্লিতে তাদের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের তৃতীয় ২+২ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং তাঁদের মন্ত্রীদের যত দ্রুত সম্ভব টোকিওতে চতুর্থ দফার বৈঠক আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন। ২০২২ সালের মার্চ মাসে শেষ শীর্ষ সম্মেলনের পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে আদান-প্রদানে তাঁরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তাঁরা ভারতের আয়োজনে বহুপাক্ষিক মিলানে মহড়ায় জাপান মেরিটাইম সেলফ ডিফেন্স ফোর্সের (জেএমএসডিএফ) অংশগ্রহণ এবং ভারতীয় বিমান বাহিনী কর্তৃক আয়োজিত প্রথম বহুপাক্ষিক মহড়া তরঙ্গ শক্তিতে জাপানি দলের অংশগ্রহণকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা জাপান বিমান আত্মরক্ষা বাহিনী (জেএএসডিএফ) এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) মধ্যে দ্বিপাক্ষিক যুদ্ধবিমান মহড়া 'বীর গার্ডিয়ান ২০২৩'-এর উদ্বোধনী সংস্করণ এবং ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো একই ক্যালেন্ডার বছরে তিনটি বাহিনীর দ্বিপাক্ষিক মহড়ার আয়োজনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তি সহযোগিতার ক্ষেত্রে বর্তমান সহযোগিতাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং উভয় পক্ষের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চলমান সহযোগিতার মাধ্যমে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাস্তবায়িত করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দিয়েছেন, পাশাপাশি ভবিষ্যতে উভয় পক্ষের অপারেশনাল পদ্ধতিকে কার্যকরভাবে সমর্থন করার জন্য নির্দিষ্ট ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিশেষ কৌশলগত ও অ্যান্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে অর্থনৈতিক সহযোগিতার গুরুত্ব স্বীকার করে, দুই প্রধানমন্ত্রী ২০২২ সাল থেকে পাঁচ বছরে জাপান থেকে ভারতে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ এবং অর্থায়নে ৫ ট্রিলিয়ন ইয়েনের লক্ষ্যমাত্রার অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। ভারতে জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার জন্য ভারতের গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি এবং সহজে ব্যবসা করার ব্যবস্থা উন্নত করার ক্ষেত্রে অন্যান্য পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে, দুই প্রধানমন্ত্রী জাপান থেকে ভারতে ১০ ট্রিলিয়ন ইয়েনের বেসরকারি বিনিয়োগের নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ইশিবা ভারতে জাপানি কোম্পানিগুলির সরবরাহ শৃঙ্খল আরও নিবিড় করার পক্ষে অপরিসীম সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং এই লক্ষ্য পূরণের জন্য ভারতীয় পক্ষকে তাঁদের নিয়ন্ত্রক এবং অন্যান্য সংস্কার অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে জাপানি কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠানগুলির অবদানের কথা উল্লেখ করে ভারতে বিনিয়োগ সহজতর করার জন্য অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রক এবং অন্যান্য সংস্কার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাঁর অভিপ্রায়ের কথা তুলে ধরে আরও জাপানি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে এই সংস্কারগুলি গ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তাঁরা ভারত-জাপান শিল্প প্রতিযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের (আইজেআইসিপি) আওতায় জাপানের শিল্প শহরতলিগুলির (জেআইটি) সমর্থন আর সরবরাহ, বস্ত্র, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, কৃষি, মোটরগাড়ি, শিল্প মূলধনী পণ্য এবং অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার দ্বিপাক্ষিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছেন। দুই প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বৈচিত্র্য আনার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) বাস্তবায়নের আরও পর্যালোচনা ত্বরান্বিত করে এটিকে আরও দূরদর্শী করে তোলা।
দুই প্রধানমন্ত্রী গত কয়েক দশক ধরে ভারতে জাপানের উন্নয়ন সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এই উন্নয়ন সহযোগিতা ভারতের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। তাঁরা ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নের প্রতি তাঁদের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এই উন্নয়ন সহযোগিতা অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সুনিশ্চিত করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। তাঁরা হার্ড, সফট আর জনগণের সঙ্গে জনগণের সংযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাঁদের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করা এবং একইভাবে, আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় অ্যাক্ট ইস্ট ফোরাম (এইএফ) এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের বিশাল সম্ভাবনাকে উন্মুক্ত করার জন্য তাঁদের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
উভয় প্রধানমন্ত্রী ভারত ও জাপানের মধ্যে একটি প্রধান প্রকল্প হিসেবে মুম্বাই-আহমেদাবাদ হাই স্পিড রেলের গুরুত্ব উল্লেখ করেছেন। তাঁরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এর কর্মসূচি শুরু করার লক্ষ্যে কাজ করতে এবং ভারতে সর্বশেষ জাপানি শিনকানসেন প্রযুক্তি প্রবর্তনে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছেন। ২০৩০-এর দশকের গোড়ার দিকে জাপানি সিগন্যালিং সিস্টেমে চালিত শিনকানসেনের ই-১০ সিরিজ চালু করার বিষয়ে জাপানের প্রস্তাবকে ভারতীয় পক্ষ প্রশংসা করে। এই লক্ষ্যে, জাপানি সিস্টেম সহ সিগন্যালিং দ্রুত স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ অবিলম্বে শুরু করার ক্ষেত্রে ঐক্যমত গড়ে উঠেছে, পাশাপাশি জেনারেল ইন্সপেকশন ট্রেন (জিআইটি) এবং ই-৫ সিরিজের শিনকানসেন রোলিং স্টকের একটি সেট প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার গুরুত্ব স্বীকার করে, দুই প্রধানমন্ত্রী, ২০২২ সালে চালু হওয়া ক্লিন এনার্জি পার্টনারশিপের উপর ভিত্তি করে এবং দ্বিপাক্ষিক জ্বালানি সহযোগিতা আরও জোরদার করার লক্ষ্যে, তাদের যৌথ স্বীকৃতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে নেট-জিরো অর্থনীতি অর্জনের জন্য কোনও একক পথ নেই, বরং বিভিন্ন পথ রয়েছে যা প্রতিটি দেশের জাতীয় পরিস্থিতিকে প্রতিফলিত করে। এই প্রসঙ্গে, তাঁরা যৌথ ক্রেডিটিং মেকানিজম (জেসিএম) তে সহযোগিতা স্মারক (মেমোরান্ডাম অফ কো-অপারেশন অন দ্য জয়েন্ট ক্রেডিটিং মেকানিজম, জেসিএম) এবং ক্লিন হাইড্রোজেন এবং অ্যামোনিয়া সংক্রান্ত যৌথ অভিপ্রায়ের ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরকে স্বাগত জানিয়েছেন।
জনগণের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে, দুই প্রধানমন্ত্রী জনগণের সঙ্গে মানুষের বিনিময়ের নতুন ধারার লক্ষ্যে মানব সম্পদের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক পরিপূরকগুলি কাজে লাগানোর জন্য তাদের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তারা ফুকুওকাতে ভারতীয় কনস্যুলেট খোলার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন, যা জাপানের কিউশু অঞ্চলের সাথে ভারতের সম্পর্ক আরও গভীর করবে। তারা নিহোঙ্গো পার্টনারস প্রোগ্রাম এবং ৩৬০ ঘন্টা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সের মাধ্যমে ভারতে জাপানি ভাষা শিক্ষার অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন। দুই প্রধানমন্ত্রী জাপান-ভারত ইনস্টিটিউট ফর ম্যানুফ্যাকচারিং এবং জাপানি এনডোড কোর্সের সাফল্যের উপর ভিত্তি করে গড়ে তোলার জন্য তাদের যৌথ সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন, যা ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাপানি উৎপাদন এবং ব্যবস্থাপনা দক্ষতায় দক্ষ ৩০,০০০ জন ব্যক্তির একটি প্রতিভা পাইপলাইন তৈরি করেছে। দুই প্রধানমন্ত্রী ভারত ও জাপানের জনগণের মধ্যে একে অপরের দেশ এবং সংস্কৃতি আবিষ্কারের জন্য ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, যা দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান পর্যটন প্রবাহের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। "হিমালয়ের সাথে মাউন্ট ফুজির সংযোগ" এই প্রতিপাদ্যের অধীনে ভারত-জাপান পর্যটন বিনিময় বর্ষ (এপ্রিল ২০২৩-মার্চ ২০২৫) সফলভাবে উদযাপনের জন্য তারা প্রশংসা করেছেন। দুই দেশের মধ্যে শতাব্দী প্রাচীন সভ্যতার সংযোগের উপর ভিত্তি করে, নেতারা এই ক্ষেত্রে পর্যটন বিনিময়কে উৎসাহিত করার বিষয়ে একমত হয়েছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী আনন্দের সাথে উল্লেখ করেছেন যে ২০২৫ সালকে ভারত-জাপান বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন বিনিময় বছর হিসেবে উদযাপন করা হচ্ছে, যা দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত প্রথম সমঝোতা স্মারকের ৪০তম বার্ষিকী উপলক্ষে। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যৌথ গবেষণা সহযোগিতা, দুই দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের বিনিময় সফর এবং 'লোটাস' প্রোগ্রাম এবং সাকুরা বিজ্ঞান বিনিময় প্রোগ্রামের সহযোগিতায় জাপানি কোম্পানিগুলিতে ইন্টার্নশিপের সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে নতুন চালু হওয়া শিল্প-শিক্ষা সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং জাপান মহাকাশ অনুসন্ধান সংস্থার মধ্যে চন্দ্রমেরু অনুসন্ধান (এলইউপিইএক্স) মিশনে অগ্রগতিতে দুই প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা সুকুবার কেইকে-তে ভারতীয় বিমলাইনের উপর সমঝোতা স্মারক আরও ছয় বছরের জন্য সম্প্রসারণের সাম্প্রতিক অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। দুই প্রধানমন্ত্রী ৫ জুন ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহযোগিতা সংক্রান্ত ১১তম যৌথ কমিটির বৈঠকের অগ্রগতির প্রশংসা করেন - বিশেষ করে কোয়ান্টাম প্রযুক্তি, পরিষ্কার প্রযুক্তি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জৈবপ্রযুক্তি এবং ভূ-স্থানিক প্রযুক্তির মতো নতুন এবং উদীয়মান ক্ষেত্রগুলির ক্ষেত্রে।
দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগ গভীরতর করার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এই বিষয়টি স্বীকার করে উভয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুর তোয়ামা এবং উত্তরপ্রদেশের এহিম এবং গুজরাটের ইয়ামানাশি এবং শিজুওকার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত রাজ্য-প্রিফেকচার( আঞ্চলিক) অংশীদারিত্বকে স্বাগত জানিয়েছেন, পাশাপাশি ভারতের সাথে ব্যবসায়িক বিনিময় প্রচারের জন্য কানসাই সমন্বয় সভা, কানসাই অঞ্চলে আঞ্চলিক অংশীদারিত্বকে স্বাগত জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী জাপানের কানসাইয়ের ওসাকাতে চলমান এক্সপো ২০২৫-এর জন্য প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং এক্সপোতে ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য জাপানের সমর্থনের প্রশংসা করেছেন, যা সাম্প্রতিক মাসগুলিতে রাজ্য-প্রিফেকচার( আঞ্চলিক) অংশীদারিত্বকে অসাধারণ গতি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইশিবা ইয়োকোহামায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গ্রিন x এক্সপো ২০২৭-এ ভারতের অংশগ্রহণকে স্বাগত জানিয়েছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী, বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে, আইনের শাসনের উপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে নিজেদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথা, আর ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ এবং স্থিতিস্থাপক উন্মুক্ত বাণিজ্যিক আবহ গড়ে তোলার প্রতি তাঁদের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা বাস্তব প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বাস্তব সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রতি তাঁদের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোয়াডের মতো বহুপাক্ষিক কাঠামোর মাধ্যমে সমমনা দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেছেন, যাতে এই অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। এই প্রসঙ্গে, তাঁরা কোয়াডকে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং স্থায়ী আঞ্চলিক গোষ্ঠীতে রূপান্তরিত করার জন্য স্বাগত জানিয়েছেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে তিনি এই বছরের শেষের দিকে ভারত আয়োজিত পরবর্তী কোয়াড নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের জন্য অপেক্ষা করছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী পূর্ব চীন সাগর এবং দক্ষিণ চীন সাগরের পরিস্থিতি নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা যে কোনও একতরফা পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা পুনর্ব্যক্ত করেছেন যা নৌ-চলাচল এবং আকাশপথে বিমান চলাচলের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে এবং বলপ্রয়োগ বা বলপ্রয়োগের মাধ্যমে স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের প্রচেষ্টা করে। তাঁরা বিতর্কিত অঞ্চলের সামরিকীকরণের বিষয়ে তাঁদের গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। উভয় প্রধানমন্ত্রী পুনরায় নিশ্চিত করেছেন যে সমুদ্র বিরোধ বিশেষ করে রাষ্ট্রসংঘের সমুদ্র আইন সংক্রান্ত কনভেনশন (ইউএনসিএলওএস) শান্তিপূর্ণভাবে এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে সমাধান করা উচিত।
দুই প্রধানমন্ত্রী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি ব্যবহার করে উত্তর কোরিয়ার অস্থিতিশীল উৎক্ষেপণ এবং রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক প্রস্তাব (ইউএনএসসিআর) লঙ্ঘন করে পারমাণবিক অস্ত্রের অব্যাহত প্রচেষ্টার নিন্দা করেছেন। তারা প্রাসঙ্গিক ইউএনএসসিআর অনুসারে উত্তর কোরিয়ার সম্পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের প্রতি তাঁদের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং উত্তর কোরিয়াকে রাষ্ট্রসংঘের সনদ এবং ইউএনএসসিআর-এর অধীনে তাঁর সমস্ত বাধ্যবাধকতা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা কোরিয়ান উপদ্বীপে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য উত্তর কোরিয়াকে সংলাপে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা এই অঞ্চলে এবং তার বাইরে উত্তর কোরিয়ায় এবং সেখান থেকে পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির বিস্তার সম্পর্কে অব্যাহত উদ্বেগ মোকাবেলার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। তাঁরা সমস্ত রাষ্ট্রসংঘের সদস্য রাষ্ট্রকে ইউএনএসসিআর-এর অধীনে তাঁদের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন, যার মধ্যে উত্তর কোরিয়ায় স্থানান্তর নিষিদ্ধ করা বা উত্তর কোরিয়া থেকে সমস্ত অস্ত্র এবং সংশ্লিষ্ট উপকরণ সংগ্রহ করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উভয় প্রধানমন্ত্রী অপহরণ সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী দ্ব্যর্থহীনভাবে এবং দৃঢ়ভাবে সন্ত্রাসবাদ এবং হিংস্র চরমপন্থার নিন্দা করেছেন, যার মধ্যে সীমান্ত সন্ত্রাসবাদও অন্তর্ভুক্ত। তারা ২২শে এপ্রিল ২০২৫ তারিখে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং ২৯শে জুলাই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মনিটরিং টিমের প্রতিবেদনে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) উল্লেখ করে তা লক্ষ্য করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও ব্যাখ্যা করেছেন যে টিআরএফ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। প্রধানমন্ত্রী ইশিবা উদ্বেগের সাথে এটি উল্লেখ করেছেন। তাঁরা এই নিন্দনীয় কাজের অপরাধী, সংগঠক এবং অর্থায়নকারীদের কোনও বিলম্ব ছাড়াই বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা আল কায়েদা, আইসিস/দায়েশ, লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি), জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) এবং তাঁদের সহযোগীদের সহ রাষ্ট্রসংঘের তালিকাভুক্ত সমস্ত সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী এবং সত্ত্বার বিরুদ্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার এবং সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল নির্মূল করার, সন্ত্রাসবাদী অর্থায়ন চ্যানেল এবং অন্তর্দেশীয় অপরাধের সঙ্গে এর সংযোগ নির্মূল করার এবং সন্ত্রাসীদের সীমান্ত অতিক্রমের গতিবিধি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক (এফওআইপি) এবং ইন্দো-প্যাসিফিক মহাসাগর উদ্যোগ (আইপিওআই) এর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা আশিয়ান -এর ঐক্য ও কেন্দ্রিকতার প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থন এবং "আশিয়ান আউটলুক অন দ্য ইন্দো- পেসিফিক(এওআইপি)"-র প্রতি তাঁদের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে তাঁরা মিয়ানমারের ক্রমবর্ধমান সংকট এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার উপর এর প্রভাব, মানুষের স্থানচ্যুতি এবং আন্তঃজাতিক অপরাধ বৃদ্ধির বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তাঁরা সকল পক্ষকে অবিলম্বে সবধরনের হিংসা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। দুই প্রধানমন্ত্রী জরুরি অবস্থা সমাপ্তির সাম্প্রতিক ঘোষণা এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেছেন। দুই প্রধানমন্ত্রী সকল অংশীদারদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সুযোগ করে দেয় এমন গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন এবং আটক ব্যক্তিদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা আশিয়ান-এর প্রচেষ্টার প্রতি তাঁদের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে সংকটের একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য পাঁচ দফা ঐক্যমত্যের পূর্ণ এবং কার্যকর বাস্তবায়নের আহ্বান।
দুই প্রধানমন্ত্রী আফ্রিকা সহ ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারত ও জাপানের মধ্যে সহযোগিতামূলক প্রকল্পের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা আফ্রিকার সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য একটি শিল্প কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে ভারতে শিল্প কেন্দ্রীকরণকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে আফ্রিকায় টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য জাপান-ভারত সহযোগিতা উদ্যোগের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা ৯ম টোকিও আন্তর্জাতিক আফ্রিকান উন্নয়ন সম্মেলন (টিআইএডি৯) সফলভাবে আয়োজনকে স্বাগত জানিয়েছেন আর ভারত মহাসাগর অঞ্চল এবং আফ্রিকায় সংযোগ ও মূল্য শৃঙ্খল শক্তিশালী করার উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা সম্পর্কে মতামত বিনিময় করেছেন। এই প্রেক্ষাপটে, প্রধানমন্ত্রী মোদী টিআইএডি৯ -এ প্রধানমন্ত্রী ইশিবা কর্তৃক ঘোষিত ভারত মহাসাগর-আফ্রিকার অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। তাঁরা একমত হয়েছেন যে জাপান, ভারত এবং অঞ্চলের অন্যান্য দেশের মধ্যে সহযোগিতা সকল অংশীদারদের জন্য সমৃদ্ধি আনতে পারে।
দুই প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রসংঘ সনদ সহ আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ইউক্রেনে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি অর্জনের জন্য বিভিন্ন দেশের চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকেও স্বাগত জানিয়েছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি তাঁদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন, সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে সংযম প্রদর্শন, অসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলতে পারে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সমাধানের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। দুই প্রধানমন্ত্রী গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা সকল জিম্মি ও যুদ্ধবন্দীদের মুক্তি এবং তাৎক্ষণিক ও টেকসই যুদ্ধবিরতি, সেইসঙ্গে অবনতি হতে থাকা মানবিক পরিস্থিতি মোকাবেলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর গুরুত্বের উপর জোরালোভাবে জোর দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে, তাঁরা এই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ইচ্ছুক বিভিন্ন দেশের চলমান প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
উভয় প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) জরুরি সংস্কারের জন্য ঘনিষ্ঠভাবে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন, যার মধ্যে বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতাকে আরও ভালোভাবে প্রতিফলিত করার জন্য স্থায়ী এবং অস্থায়ী উভয় বিভাগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তাঁরা রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে তাঁদের দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছেন, বিশেষ করে আন্তঃসরকার আলোচনা কাঠামোর অধীনে পাঠ্য-ভিত্তিক আলোচনা শুরু করার মাধ্যমে, যার সামগ্রিক লক্ষ্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সুনির্দিষ্ট ফলাফল অর্জন করা। তাঁরা রাষ্ট্রসংঘের দক্ষতা এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য পরিবর্তনশীল বিশ্বে বিশ্বব্যাপী শাসনে অবদান রাখবে এমন কিছু সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছে। তাঁরা রাষ্ট্রসংঘে ওই প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে ইউএনএসসি-তে স্থায়ী আসনের জন্য একে অপরের প্রার্থী হওয়ার প্রতি তাঁদের পারস্পরিক সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত-জাপান সহযোগিতাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন ব্যবস্থার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ১৫তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন ২০১৪ সাল থেকে ভারত-জাপান বিশেষ কৌশলগত এবং বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এবং তার পরেও উপকৃত অব্যাহত সহযোগিতার জন্য একটি কাঠামো তৈরি করতে সহায়তা করেছে। দুই প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, ২০২৭ সালে ভারত-জাপান কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫তম বার্ষিকীর দিকে দুই দেশ একসঙ্গে এগিয়ে চলেছে, যা যথাযথভাবে উদযাপন করা হবে। এই প্রেক্ষাপটে, উভয় নেতাই ব্যবসা, বুদ্ধিবৃত্তিক, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে উভয় দেশের সকল অংশীদারদের মধ্যে প্রাণবন্ত মতামত বিনিময়, ধারণা এবং নীতিগত সুপারিশের বাস্তবসম্মত বিনিময়কে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী মোদী জাপান সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে এবং তাঁর প্রতিনিধিদলের সমস্ত সদস্যদের প্রতি উষ্ণ আতিথেয়তা এবং আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং এই বছরের শেষের দিকে আয়োজিত কোয়াড লিডার্স শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী ইশিবা আনন্দের সঙ্গে এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, এই সফর ভারত ও জাপানের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের ভিত্তি গঠনকারী গভীর সভ্যতাগত সম্পর্ক, প্রাণবন্ত মানুষ-থেকে-মানুষের সংযোগ এবং শেয়ার করা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে পুনরুজ্জীবিত করেছে।
SC/SB/DM
(Release ID: 2162233)
Visitor Counter : 22
Read this release in:
Malayalam
,
English
,
हिन्दी
,
Marathi
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Tamil
,
Kannada
,
Assamese
,
Manipuri
,
Urdu
,
Odia