স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

একটি সংবাদ সংস্থার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সংবিধান (১৩০-তম সংশোধনী) বিল ২০২৫ সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রীর মতামত

Posted On: 25 AUG 2025 3:32PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৫ অগাস্ট, ২০২৫

 

একটি সংবাদ সংস্থার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহ সংবিধান (১৩০-তম সংশোধনী) বিল ২০২৫ সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁর মতামত জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশ্বাস, দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী বা কোনও মন্ত্রী জেলে থেকে সরকার চালাতে পারে না বলে তিনি জানান। সংবিধান (১৩০-তম সংশোধনী) বিল ২০২৫-এর সংস্থান রয়েছে যে কোনও গুরুতর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী সহ কেন্দ্র বা রাজ্যের কোনও মন্ত্রী গ্রেপ্তারের পর ৩০ দিনের মধ্যে জামিন না পেলে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।  তা যদি করা না হয়, আইনগত বাধ্যবাধকতায় স্বাভাবিকভাবেই তিনি সেই পদ থেকে সরে যাবেন। তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকারের পক্ষ থেকে এই সংবিধান সংশোধনী বিলকে সভায় পেশ করতে বিরোধীদের বাধা দেওয়া উচিত নয়। 

শ্রী শাহ আরও বলেন, যৌথ সংসদীয় কমিটিতে এই সংবিধান সংশোধনী বিলটিকে পাঠাতে তিনি নিজেই প্রস্তাব দিয়েছেন। এই বিল পাশের জন্য দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যা গরিষ্ঠতার দরকার। সমস্ত রাজনৈতিক দলেরই এই বিলের পক্ষে মত দেওয়া উচিত। সরকারের পক্ষ থেকে কোনও বিল বা সংশোধনী বিলকে সভায় পেশ করতে না দেওয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধীদের পক্ষে যথার্থ আচরণ নয় বলেই তাঁর মত। তিনি বলেন, সংসদের উভয় সভাতেই বিতর্ক বা আলোচনা হতে পারে, তবে তা হৈ-হট্টগোল করার জায়গা নয়। কোনও বিলকে পেশ করতে না দেওয়া গণতান্ত্রিক মনোভাবের পরিচয় নয় বলে তিনি মনে করেন। এজন্য বিরোধী দলকে দেশের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। 

শ্রী অমিত শাহ বলেন, এই বিল কোনও বিরোধী দলের বিরুদ্ধে নয়। এই বিলের ছত্রছায়ায় বিজেপি শাসনাধীন সরকারগুলিও আসবে। বিরোধী দল জনসাধারণকে এই নিয়ে বিভ্রান্ত করছে বলে তিনি জানান। ৩০ দিনের মধ্যে জামিন হলে পদ হারাতে হবে না বলেও বিলে সংস্থান রয়েছে। এছাড়া কোনও ভুয়ো মামলায় দেশের আদালত জামিন মঞ্জুর করতে পারে। তিনি বলেন, হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের মামলায় জামিন মঞ্জুর করার অধিকার রয়েছে। তবে  জামিন না হলে ব্যক্তিকে পদ ছাড়তে বাধ্য থাকতে হবে। জেলে থেকে কোনও মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী সরকার চালাতে পারেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। ৩০ দিন পরে যদি মামলায় জামিন মঞ্জুর হয়, তাহলে সেই ব্যক্তি পুনরায় সেই পদে ফিরতে শপথ নিতে পারেন। 

তিনি বলেন, কারাবাসের সংস্থান আমাদের সরকার করেনি। বছরের পর বছর ধরে তা চলে আসছে। ১৩০-তম সংবিধান সংশোধনীতে গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ৫ বছর বা তার বেশি সময় যে শাস্তির সংস্থান রয়েছে তাতে সেই ব্যক্তি পদত্যাগ করতে বাধ্য। ৫ বছর জেলে থেকে কোনও মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীর সরকার চালানো সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, ভারতে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে এখনও যে সংস্থান রয়েছে তাতে কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধি ২ বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য জেলে থাকলে সাংসদ হিসেবে পদ খোয়াতে হয়। স্বাধীনতার পর থেকেই এই ব্যবস্থা চলে আসছে। 

শ্রী শাহ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বহু নেতা, মন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং কারাবাসে গেছেন। বর্তমানে এমন একটা ধারা তৈরি হয়েছে, যে জেলে যাওয়ার পরও তাঁরা পদত্যাগ করছেন না। তামিলনাড়ুর কয়েকজন মন্ত্রী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এবং বেশ কয়েকজন মন্ত্রী জেলে গিয়েও পদত্যাগ করেননি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, তাহলে কী সরকারের সচিব, পুলিশের মহানির্দেশক বা মুখ্যসচিবকে জেলখানায় হাজির হয়ে তাদের নির্দেশ নিয়ে আসতে হবে? এই বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগের এবং এ নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার বলে তিনি জানান। 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে এই সংবিধান সংশোধনের ছত্রছায়ায় নিয়ে এসেছেন। প্রধান বিরোধী দলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ৩৯-তম সংবিধান সংশোধন এনে নিজেকে রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতির মতন আইনের এর পরিধির আওতার বাইরে নিজেকে রেখেছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী এই সংবিধান সংশোধনীতে প্রধানমন্ত্রী জেলে গেলে তাঁর পদত্যাগ বাধ্যতামূলকভাবে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে আদালতেরও বিলম্বের কোনও কারণ নেই। কারণ আদালত অবিলম্বেই তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে। আমাদের দেশের আদালত আইনের গুরুত্ব বোঝে। ফলে এক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত হওয়াটাই বাঞ্ছনীয় বলে তিনি জানান। 

তিনি বলেন, প্রধান বিরোধী দলের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার কথা মানায় না। কারণ, তাদের সময় কম করে ১২টি মামলার বিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশের পর সিবিআই তদন্ত হয়েছে এবং অনেককে আটক করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের ক্ষেত্রে সংসদের যৌথ সংসদীয় কমিটির সিদ্ধান্তের পরেও যদি কোনও দল বিরোধীতার পথেই হাঁটেন, তাহলে সরকারের কাছে এই বিল পেশ করা ছাড়া অন্য কোনও বিকল্প থাকবে না। এই বিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে সুচিন্তিত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো হবে বলেও তিনি জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি দুর্নীতির পঙ্কে নিমজ্জিত থাকেন তাহলে গ্রেপ্তার হতে হবে, জেল হবে এবং পদত্যাগ করতে হবে। 

শ্রী শাহ বলেন, বিরোধী দলের  নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া সাজে না। সিবিআই যখন তাঁকে অভিযুক্ত হিসেবে সমন পাঠিয়েছিল তার ঠিক পরের দিন তিনি পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর মামলা চলে, এবং তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ সাব্যস্ত হন। ওই জাতীয় কোনও বিষয়ে তিনি জড়িত না থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশত তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। ৯৬ দিনে তিনি জামিন পেলেও তারপর কিন্তু রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি আর শপথ নেননি। কেবলমাত্র তাই নয়, যাবতীয় মামলা খারিজ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কোনও সাংবিধানিক পদও গ্রহণ করেন নি বলে জানান। 

শ্রী শাহ বলেন, নৈতিক বাধ্যবাধকতা রাজনৈতিক জয়-পরাজয়ে নির্দিষ্ট হয় না। নৈতিকতা চন্দ্র-সূর্যের মতন এক চিরস্থায়ী বিষয়। আমাদের জোটের সকলেই এই আইনের ব্যাপারে সহমত। তবে সংসদ কেমনভাবে চলবে, তা কেবলমাত্র শাসক দল ঠিক করে না। বিরোধী দল যদি সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে সুস্থিতির বাতাবরণ রক্ষা করতে না পারে, সংসদ চলতে না দেয়, তাহলে তাদেরকেও মনে রাখতে হবে যে দেশের মানুষ তা প্রত্যক্ষ করছেন। তবে এই বিল পাশ হবে বলে তিনি আশাবাদী এবং নৈতিকতার প্রতি অঙ্গীকার বশতই বিরোধীদেরও অনেকে এই বিলকে সমর্থন করবেন বলে তিনি বিশ্বাস রাখেন। 

 

SC/AB/NS…


(Release ID: 2160661)