প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
ইউইআর- টু (UER-II) এবং দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের দিল্লি অংশের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
17 AUG 2025 4:19PM by PIB Kolkata
নয়া দিল্লি: ১৭ আগস্ট ২০২৫
আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহকর্মী শ্রী নীতিন গডকরী জি, হরিয়ানার মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সাইনি জি, দিল্লির মাননীয় লেফটেন্যান্ট গভর্নর শ্রী বিনয় সাক্সেনা জি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী রেখা গুপ্ত জি, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদের সহকর্মীবৃন্দ, অজয় তামতা জি, হর্ষ মালহোত্রা জি, দিল্লি ও হরিয়ানার সাংসদগণ, উপস্থিত দিল্লি ও হরিয়ানার মন্ত্রীগণ, অন্যান্য জনপ্রতিনিধি এবং আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
এই এক্সপ্রেসওয়েটির নাম দ্বারকা, যেখানে এই অনুষ্ঠানটি হচ্ছে তার নাম রোহিণী, জন্মাষ্টমীর আনন্দ উদযাপন, আর কাকতালীয়ভাবে আমিও দ্বারকাধিশের ভূমি থেকেই এসেছি; তাই পুরো পরিবেশটি কৃষ্ণময় (কৃষ্ণ-পূর্ণ) হয়ে উঠেছে।
বন্ধুগণ,
এই আগস্ট মাসটি স্বাধীনতা এবং বিপ্লবের রঙে রঞ্জিত। স্বাধীনতার এই উৎসবের মাঝে, আজ দেশে যে উন্নয়ন বিপ্লব ঘটছে, দেশের রাজধানী দিল্লি তার সাক্ষী হয়ে উঠছে। কিছুক্ষণ আগে, দিল্লি দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে এবং নগর সম্প্রসারণ সড়কের সংযোগ পেয়েছে। এর ফলে দিল্লি, গুরুগ্রাম এবং সমগ্র এনসিআরের মানুষের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। অফিস এবং কারখানায় যাতায়াত সহজ হবে, সকলের সময় সাশ্রয় হবে। ব্যবসায়ী শ্রেণী এবং আমাদের কৃষকরা বিশেষ সুবিধা পাবেন। এই আধুনিক রাস্তা এবং আধুনিক পরিকাঠামোর জন্য আমি দিল্লি-এনসিআরের সমস্ত মানুষকে অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
গত পরশু, ১৫ই আগস্ট, লাল কেল্লা থেকে, আমি দেশের অর্থনীতি, দেশের আত্মনির্ভরতা এবং দেশের আত্মবিশ্বাস সম্পর্কে আত্মপ্রত্যয় নিয়ে কথা বলেছিলাম। আজকের ভারত কী ভাবছে, তার স্বপ্ন কী, তার সংকল্প কী, আজ গোটা বিশ্ব এই সবকিছুই অনুভব করছে।
আর বন্ধুগণ,
যখন বিশ্ব ভারতের দিকে তাকায়, মূল্যায়ন করে, তখন তার প্রথম নজর পড়ে আমাদের রাজধানী, আমাদের দিল্লির উপর। অতএব, আমাদের দিল্লিকে এমন একটি উন্নয়নের মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে সবাই মনে করে যে হ্যাঁ, এটি একটি উন্নয়নশীল ভারতের রাজধানী।
বন্ধুগণ,
গত ১১ বছর ধরে, কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার বিভিন্ন স্তরে এর জন্য ক্রমাগত কাজ করে আসছে। এখন যেহেতু সংযোগের বিষয়টি রয়েছে। গত দশকে দিল্লি-এনসিআরের সংযোগের অভূতপূর্ব উন্নতি দেখা গেছে। এখানে আধুনিক এবং প্রশস্ত এক্সপ্রেসওয়ে রয়েছে, দিল্লি-এনসিআর মেট্রো নেটওয়ার্কের দিক থেকে, এটি বিশ্বের বৃহত্তম নেটওয়ার্ক এলাকাগুলির মধ্যে একটি। এখানে ‘নমো ভারত’ এর মতো একটি আধুনিক দ্রুত রেল ব্যবস্থা রয়েছে। অর্থাৎ, গত ১১ বছরে দিল্লি-এনসিআর-এ যাতায়াত আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়েছে।
বন্ধুরা,
দিল্লিকে একটি মহান নগর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমরা যে কাজটি হাতে নিয়েছি তা অব্যাহত রয়েছে। আজও আমরা সকলেই এর সাক্ষী। দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে হোক বা নগর সম্প্রসারণ সড়ক, উভয় রাস্তাই চমৎকারভাবে নির্মিত হয়েছে। পেরিফেরাল এক্সপ্রেসওয়ের পরে, এখন নগর সম্প্রসারণ সড়ক দিল্লিকে অনেক সাহায্য করবে।
বন্ধুগণ,
নগর সম্প্রসারণে মহাসড়কের আরেকটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি দিল্লিকে আবর্জনার পাহাড় থেকে মুক্ত করতেও সাহায্য করছে। নগর সম্প্রসারণ সড়ক নির্মাণে লক্ষ লক্ষ টন বর্জ্য ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ, আবর্জনার পাহাড় কমিয়ে, সেই বর্জ্য পদার্থ রাস্তা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে এবং এটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে করা হয়েছে। ভালসোয়া ল্যান্ডফিল সাইটটি কাছেই। আমরা সকলেই জানি যে এখানে বসবাসকারী পরিবারগুলির জন্য এটি কত বড়ো সমস্যা। আমাদের সরকার দিল্লির জনগণকে এই ধরনের প্রতিটি সমস্যা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য কাজ করছে।
বন্ধুগণ,
আমি খুশি যে রেখা গুপ্তাজির নেতৃত্বে দিল্লির বিজেপি সরকার যমুনা পরিষ্কারের কাজে নিরন্তর নিয়োজিত রয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে যে এত অল্প সময়ের মধ্যে যমুনা থেকে ১৬ লক্ষ মেট্রিক টন পলি অপসারণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দিল্লিতে ৬৫০টি ‘দেবী’ বৈদ্যুতিক বাস চালু করা হয়েছে এবং শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে এই বৈদ্যুতিক বাসগুলির সংখ্যাও অনেক বাড়বে, প্রায় দুই হাজারের সংখ্যা অতিক্রম করবে। এটি সবুজ দিল্লি-পরিচ্ছন্ন দিল্লির মন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে।
বন্ধুগণ,
বহু বছর পর, রাজধানী দিল্লিতে বিজেপি সরকার গঠিত হয়েছে। আমরা আগেও খুব বেশি দিন ক্ষমতায় ছিলাম না, আর আমরা দেখেছি যে পূর্ববর্তী সরকারগুলি দিল্লিকে যেভাবে ধ্বংস করেছে, দিল্লিকে যেভাবে এত গর্তে ভরিয়ে তুলেছে, আমি জানি যে নতুন বিজেপি সরকারের পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে বেড়ে চলা সমস্যাগুলি থেকে দিল্লিকে বের করে আনা কতটা কঠিন হবে। প্রথমে, গর্ত ভরাট করার জন্য শক্তি ব্যয় করা হবে এবং তারপরে অনেক কষ্টে কিছু কাজ হতে দেখা যাবে। তবে আমি নিশ্চিত যে দিল্লিতে আপনারা যে দলকে নির্বাচিত করেছেন, তাঁরা কঠোর পরিশ্রম করবে এবং গত কয়েক দশক ধরে দিল্লিবাসী যেসব সমস্যার মুখোমুখি করে আসছে তা থেকে বের করে আনবে।
বন্ধুগণ,
এই কাকতালীয় ঘটনাটি প্রথমবারের মতো ঘটেছে, যখন দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থান সর্বত্র বিজেপি সরকার রয়েছে। এটি দেখায় যে এই পুরো অঞ্চলটি আমাদের সকলের জন্য বিজেপিকে কতটা আশীর্বাদ করেছে। অতএব, আমাদের দায়িত্ব বুঝতে পেরে আমরা দিল্লি-এনসিআরের উন্নয়নে নিযুক্ত। তবে, কিছু রাজনৈতিক দল আছে যারা এখনও জনগণের এই আশীর্বাদ হজম করতে পারছে না। তাঁরা জনগণের আস্থা এবং বাস্তবতা উভয় থেকে অত্যন্ত বিচ্ছিন্ন; তাঁরা অনেক দূরে চলে গেছে। তোমাদের মনে আছে, কয়েক মাস আগে দিল্লি ও হরিয়ানার জনগণকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর, তাদের মধ্যে শত্রুতা তৈরি করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। এমনকি বলা হয়েছিল যে হরিয়ানার জনগণ দিল্লির জল বিষাক্ত করছে। দিল্লি এবং সমগ্র এনসিআর এই ধরনের নেতিবাচক রাজনীতি থেকে মুক্ত হয়েছে। এখন আমরা এনসিআরকে উন্নত ও রূপান্তরিত করার সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আর আমি নিশ্চিত যে, আমরা তা করতে পারবো।
বন্ধুগণ,
সুশাসনই হল বিজেপি সরকারের পরিচয়। বিজেপি সরকারের কাছে, জনসাধারণই সর্বোচ্চ। আপনারাই আমাদের হাইকমান্ড; আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টা জনগণের জীবনকে সহজ করার। এটি আমাদের নীতিতে প্রতিফলিত হয়, এটি আমাদের সিদ্ধান্তগুলিতে দৃশ্যমান। একটা সময় ছিল যখন কংগ্রেস হরিয়ানা শাসন করত, যখন কোনও ঘুষ -টুশ না দিয়ে একটি নিয়োগও পাওয়া কঠিন ছিল। কিন্তু হরিয়ানায়, বিজেপি সরকার সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে লক্ষ লক্ষ যুবককে সরকারি চাকরি দিয়েছে। নায়েব সিং সাইনিজির নেতৃত্বে এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
বন্ধুগণ,
এখানে দিল্লিতেও, যাঁরা বস্তিতে থাকতেন, যাঁদের নিজস্ব বাড়ি ছিল না, তাঁরা কংক্রিটের তৈরি বাড়ি পাচ্ছেন। যেখানে বিদ্যুৎ, জল, গ্যাস সংযোগ ছিল না, সেখানে এই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। আর যদি দেশের কথা বলি, তাহলে গত ১১ বছরে দেশে রেকর্ড সংখ্যক রাস্তা তৈরি হয়েছে এবং আমাদের রেলস্টেশনগুলি সংস্কার করা হচ্ছে। বন্দে ভারতের মতো আধুনিক ট্রেনের চলাচল আমাদের গর্বিত করে। ছোট ছোট শহরগুলিতে বিমানবন্দর তৈরি হচ্ছে। একবার দেখুন তো, দিল্লি-এনসিআর-এ ক’টা বিমানবন্দর তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই হিন্ডন বিমানবন্দর থেকে অনেক শহরে বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। নয়ডার বিমানবন্দরও খুব চালু হতে চলেছে।
বন্ধুগণ,
এটি তখনই সম্ভব হয়েছে যখন দেশ গত দশকে তার পুরানো রীতিনীতি পরিবর্তন করেছে। দেশের যে স্তরের পরিকাঠামোর প্রয়োজন ছিল, যে গতিতে এসব তৈরি করা উচিত ছিল, অতীতে তা হয়নি। এখন আমাদের কাছে পূর্ব এবং পশ্চিম পেরিফেরাল এক্সপ্রেসওয়ে রয়েছে। দিল্লি-এনসিআর বহু দশক ধরে এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আসছিল। ইউপিএ সরকারের সময়, এই বিষয়ে ফাইলগুলি চলতে শুরু হয়েছিল। কিন্তু প্রকৃত কাজ শুরু হয়েছিল যখন আপনারা আমাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন, যখন কেন্দ্রে এবং হরিয়ানায় বিজেপি সরকার গঠিত হয়েছিল। আজ এই মহাসড়কগুলি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে পরিষেবা প্রদান করছে।
বন্ধুগণ,
উন্নয়ন প্রকল্পের প্রতি উদাসীনতার এই পরিস্থিতি কেবল দিল্লি-এনসিআর-এ নয়, সমগ্র দেশে ছিল। প্রথমত, আগে পরিকাঠামো নির্মাণ খাতে বাজেট খুব কম ছিল, এমনকি যে প্রকল্পগুলি অনুমোদিত হয়েছিল সেগুলিও বছরের পর বছর ধরে সম্পন্ন হয়নি। গত ১১ বছরে, আমরা পরিকাঠামোর বাজেট ৬ গুণেরও বেশি বাড়িয়েছি। এখন প্রকল্পগুলি দ্রুত সম্পন্ন করার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণেই আজ দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের মতো প্রকল্পগুলি সম্পন্ন হচ্ছে।
আর ভাই ও বোনেরা,
এই সমস্ত অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে কেবল সুযোগ-সুবিধা তৈরি হচ্ছে না, এই প্রকল্পগুলি বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থানও তৈরি করছে। যখন এত নির্মাণ কাজ হয়, তখন শ্রমিক থেকে ইঞ্জিনিয়ার পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মসংস্থান পান। ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী উৎপাদন ও জোগানের সঙ্গে জড়িত কারখানা এবং দোকানগুলিতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়। পরিবহন এবং সরবরাহ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান তৈরি হয়।
বন্ধুগণ,
যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে সরকার পরিচালনা করেছেন, তাঁদের জন্য সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ছিল জনগণকে শাসন করা। আমাদের প্রচেষ্টা হল সরকারি চাপ এবং জনগণের জীবনে হস্তক্ষেপ উভয়ই বন্ধ করা। আমি আপনাদের আরেকটি উদাহরণ দেব যে দিল্লিতে আগে কী পরিস্থিতি ছিল। এটি শুনে আপনি অবাক হবেন। দিল্লিতে আমাদের ‘স্বচ্ছতা মিত্র’রা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে নিযুক্ত সহকর্মীরা, তাঁরা সকলেই দিল্লিতে খুব বড় দায়িত্ব পালন করে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রথমে তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানানো উচিত। কিন্তু পূর্ববর্তী সরকারগুলি এই লোকদের তাদের দাস হিসাবে বিবেচনা করেছিল। আমি আমার এই ছোট পরিচ্ছন্নতা ভাইদের কথা বলছি। এই লোকেরা যারা সংবিধান মাথায় নিয়ে নাচছে, কীভাবে তারা সংবিধানকে চূর্ণ করেছে, কীভাবে তাঁরা বাবা সাহেবের অনুভূতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, আজ আমি আপনাদের সেই সত্যটি বলতে যাচ্ছি। আমার কথা শুনে আপনারা অবাক হয়ে যাবেন। দিল্লিতে যাঁরা সাফাই কর্মী হিসেবে কাজ করেন, তাঁদের জন্য এই দেশে, দিল্লিতে একটি বিপজ্জনক আইন ছিল। দিল্লি পৌর কর্পোরেশন আইনে একটি কথা লেখা ছিল যে যদি কোনও সাফাই কর্মী না জানিয়ে কাজে না আসে, তাহলে তাঁকে এক মাসের জন্য জেলে পাঠানো যেতে পারে। আপনারাই বলুন, একবার ভাবুন, এই লোকেরা সাফাই কর্মচারীদের সম্পর্কে কী ভাবত? আপনারা কি তাঁদেরকে জেলে রাখবেন, তাও একটি ছোট ভুলের জন্য? যাঁরা আজ সামাজিক ন্যায়বিচারের কথা বলে, তাঁরা দেশে এমন অনেক নিয়ম-কানুন বজায় রেখেছিল। মোদিই এই ধরনের ভুল আইন খুঁজে বের করে সেগুলো নির্মূল করছেন। আমাদের সরকার ইতিমধ্যেই শত শত আইন বাতিল করেছে এবং এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বন্ধুগণ,
আমাদের জন্য সংস্কার মানে সুশাসনের প্রসার। অতএব, আমরা ক্রমাগত সংস্কারের উপর জোর দিচ্ছি। আগামী দিনে, আমরা অনেক বড় সংস্কার করতে যাচ্ছি যাতে জীবন এবং ব্যবসা উভয়ই সহজ হয়ে ওঠে।
বন্ধুগণ,
এই ধারাবাহিকতায়, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য জিএসটিতে সংস্কার ঘটতে চলেছে। এই দীপাবলিতে, দেশবাসী জিএসটি সংস্কার থেকে দ্বিগুণ বোনাস পাবেন। আমরা রাজ্যগুলিতে এর সম্পূর্ণ ফর্ম্যাট পাঠিয়েছি। আমি আশা করি যে সমস্ত রাজ্য ভারত সরকারের এই উদ্যোগে সহযোগিতা করবে। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবো, যাতে এবারের দীপাবলি আরও দর্শনীয় হয়। আমাদের প্রচেষ্টা হল জিএসটি আরও সরলীকরণ করা এবং করের হার সংশোধন করা। প্রতিটি পরিবার, দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত, প্রতিটি ছোট এবং বড় উদ্যোক্তা, প্রত্যেক ব্যবসায়ী এবং দোকানদার এর দ্বারা উপকৃত হবেন।
বন্ধুগণ,
ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি হল আমাদের প্রাচীন সংস্কৃতি, আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য। এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি জীবন দর্শন, একটি জীবন্ত দর্শন রয়েছে এবং জীবনের এই দর্শনে আমরা চক্রধারী মোহন এবং চরখাধারী মোহন উভয়কেই জানতে পারি। সময়ে সময়ে, আমরা চক্রধারী মোহন থেকে চরখাধারী মোহন উভয়কেই অনুভব করি। চক্রধারী মোহন মানে সুদর্শন চক্রের ধারক ভগবান কৃষ্ণ, যিনি জনগণকে সুদর্শন চক্রের শক্তির অভিজ্ঞতা করিয়েছিলেন এবং চরখাধারী মোহন মানে মহাত্মা গান্ধী, যিনি চরকা ঘুরিয়ে জনগণকে স্বদেশীর শক্তির অভিজ্ঞতা করিয়েছিলেন।
বন্ধুগণ,
ভারতকে শক্তিশালী করতে হলে চক্রধারী মোহনের অনুপ্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে এবং ভারতকে আত্মনির্ভরশীল করতে হলে চরখাধারী মোহনের পথ অনুসরণ করতে হবে। আমাদের ‘ভোকাল ফর লোকাল’ মন্ত্রকে আমাদের জীবনমন্ত্র করে তুলতে হবে।
বন্ধুগণ,
এই কাজটি আমাদের জন্য কঠিন নয়। আমরা যখনই কোনও প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমরা তা করেছি। আমি আপনাদের খাদির একটি ছোট উদাহরণ দেব, খাদি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিল, এটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার কেউ ছিল না, যখন আপনারা আমাকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছিলেন, আমি দেশবাসীর কাছে আবেদন করেছিলাম, দেশ অঙ্গীকার করেছিল এবং তার ফলও দেখা গেছে। এক দশকে খাদির বিক্রি প্রায় ৭ গুণ বেড়েছে। দেশের মানুষ ‘ভোকাল ফর লোকাল’ মন্ত্র যেমন গ্রহণ করেছেন, একইভাবে খাদিকে গ্রহণ করেছেন। একইভাবে, দেশ ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ফোনের প্রতিও আস্থা প্রকাশ করেছে। ১১ বছর আগে, আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ ফোন আমদানি করতাম। আজ, বেশিরভাগ ভারতীয় মেড ইন ইন্ডিয়া ফোন ব্যবহার করেন। আজ আমরা প্রতি বছর ৩০-৩৫ কোটি মোবাইল ফোন তৈরি করছি, ৩০-৩৫ কোটি, ৩০-৩৫ কোটি মোবাইল ফোন তৈরি করছি এবং রপ্তানিও করছি।
বন্ধুগণ,
আমাদের মেড ইন ইন্ডিয়া, আমাদের ইউপিআই, আজ বিশ্বের বৃহত্তম রিয়েল টাইম ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম। রেলওয়ে কোচ হোক বা ভারতে তৈরি লোকোমোটিভ, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এর চাহিদা এখন বাড়ছে।
বন্ধুগণ,
যখন রাস্তাঘাটের পরিকাঠামোর কথা আসে, এক্ষেত্রে ভারত একটি গতিশক্তি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, এতে ১৬০০ স্তর রয়েছে, তথ্যের এক হাজার ছয়শ স্তর রয়েছে এবং যেকোনও প্রকল্পকে কী ধরণের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হবে, কী নিয়ম মেনে চলতে হবে, তা বন্যপ্রাণী হোক বা বন, নদী হোক বা নালা, এই সবকিছুই কয়েক মিনিটের মধ্যে পাওয়া যায় এবং প্রকল্পগুলি দ্রুত গতিতে এগিয়ে যায়। আজ, গতিশক্তির একটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে এবং গতিশক্তি দেশের অগ্রগতির জন্য একটি অত্যন্ত শক্তিশালী পথ হয়ে উঠেছে।
বন্ধুগণ,
এক দশক আগে পর্যন্ত, আমরা বিদেশ থেকে খেলনাও আমদানি করতাম। কিন্তু যখন আমরা ভারতীয়রা ‘ভোকাল ফর লোকাল’ হওয়ার শপথ নিলাম, তখন ভারতে শুধু প্রচুর পরিমাণে খেলনা তৈরি শুরু হয়নি, আজ আমরা বিশ্বের ১০০ টিরও বেশি দেশে খেলনা রপ্তানিও শুরু করেছি।
বন্ধুগণ,
তাই, আমি আবারও আপনাদের সকলকে, সকল দেশবাসীকে অনুরোধ করব যে আমাদের ভারতে তৈরি পণ্যের উপর আস্থা রাখা উচিত। যদি আপনারা ভারতীয় হন, তাহলে কেবল সেই পণ্যগুলিই কিনুন যা ভারতে তৈরি। এখন উৎসবের মরশুম চলছে। আপনাদের স্থানীয় পণ্যের আনন্দ আপনাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে ভাগ করে নিন, আপনারা সিদ্ধান্ত নিন, আপনাদের এমন উপহার দেওয়া উচিত যা ভারতে তৈরি, ভারতীয়দের দ্বারা তৈরি।
বন্ধুগণ,
আজ, আমি ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং দোকানদারদেরও একটি কথা বলতে চাই; একটা সময় আপনারা হয়তো বিদেশে তৈরি পণ্য বিক্রি করে থাকতে পারেন, যাতে আপনাদের হয়তো মনে হয়েছে যে আপনারা একটু বেশি লাভ হচ্ছিলো। এতদিন আপনারা যা করেছেন তা হয়ে গেছে, কিন্তু এখন আপনাদেরকেও ‘ভোকাল ফর লোকাল’ মন্ত্রে আমাকে সমর্থন করা উচিত। আপনাদের এই পদক্ষেপ কেবল দেশের জন্যই নয়, আপনাদের পরিবার এবং আপনাদের সন্তানদেরও উপকার করবে। আপনাদের বিক্রি করা প্রতিটি জিনিস দেশের কোনও না কোনও শ্রমিক বা দরিদ্র ব্যক্তির উপকারে আসবে। আপনাদের বিক্রি করা প্রতিটি জিনিসের টাকা ভারতেই থাকবে এবং কোনও না কোনও ভারতীয়কে দেওয়া হবে। অর্থাৎ, এটি কেবল ভারতীয়দের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে, অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে এবং তাই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, পূর্ণ গর্বের সঙ্গে ভারতে তৈরি পণ্য বিক্রি করুন।
বন্ধুগণ,
আজ দিল্লি এমন একটি রাজধানী হয়ে উঠছে যা ভারতের অতীতকে তার ভবিষ্যতের সাথে একত্রিত করছে। মাত্র কয়েকদিন আগে, দেশ একটি নতুন কেন্দ্রীয় সচিবালয়, কর্তব্য ভবন পেয়েছে। একটি নতুন সংসদ ভবন তৈরি হয়েছে। কর্তব্য পথ আমাদের সামনে একটি নতুন রূপে রয়েছে। ভারত মণ্ডপম এবং যশোভূমির মতো আধুনিক সম্মেলন কেন্দ্রগুলি আজ দিল্লির গৌরব বৃদ্ধি করছে। এগুলো দিল্লিকে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য একটি দুর্দান্ত স্থান করে তুলছে। আমি নিশ্চিত যে এই সকল মানুষের শক্তি এবং অনুপ্রেরণায়, আমাদের দিল্লি অদূর ভবিষ্যতেই বিশ্বের সেরা রাজধানী হিসেবে আবির্ভূত হবে। এই কামনা নিয়ে, আবারও, এসব উন্নয়নমূলক কাজের জন্য, আপনাদের সকলকে, দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ এবং সমগ্র অঞ্চলকে আমার শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ!
***
SC/SB
(Release ID: 2157774)
Read this release in:
English
,
Gujarati
,
Urdu
,
Hindi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada