প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১১,০০০ কোটি টাকার দুটি প্রধান জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন
Posted On:
17 AUG 2025 3:29PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৭ অগাস্ট, ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ দিল্লির রোহিণীতে প্রায় ১১,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি প্রধান জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এক্সপ্রেসওয়ের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই এক্সপ্রেসওয়েটির নাম "দ্বারকা" এবং অনুষ্ঠানটি হচ্ছে "রোহিণী"-তে। জন্মাষ্টমীর উৎসবের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি নিজেই দ্বারকাধিশের ভূমি থেকে এসেছেন।
অগাস্ট মাস স্বাধীনতা ও বিপ্লবের মাস বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, আজাদি কা মহোৎসব উদযাপনের মধ্যেই জাতীয় রাজধানী দিল্লি আজ আরও একটি উন্নয়ন বিপ্লবের সাক্ষী হ’ল। তিনি বলেন, এর আগে দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে এবং আরবান এক্সটেনশন রোডের মাধ্যমে দিল্লির যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছিল। এই পথ দিল্লি, গুরুগ্রাম এবং সমগ্র এনসিআর অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাবে। তিনি আরও বলেন, অফিস ও কারখানায় যাতায়াত সহজ হবে এবং প্রত্যেকের সময় সাশ্রয় হবে। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, এই সংযোগ স্থাপনের ফলে ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা এবং কৃষকরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন। এই আধুনিক সড়ক পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য তিনি দিল্লি-এনসিআর-এর সমস্ত বাসিন্দাদের অভিনন্দন জানান।
এই বছরের ১৫ ই অগাস্ট, অর্থাৎ গত শুক্রবার লালকেল্লার প্রাকার থেকে তাঁর ভাষণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "বর্তমান ভারত নিজের আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন এবং সংকল্প দ্বারা সংজ্ঞায়িত এবং সমগ্র বিশ্ব তা অনুভব করছে। তিনি বলেন, বিশ্ব যখন ভারতের দিকে তাকায় এবং তার অগ্রগতি মূল্যায়ন করে। বিশ্বের প্রথম দৃষ্টি পড়ে জাতীয় রাজধানী দিল্লির দিকে। শ্রী মোদী দিল্লিকে উন্নয়নের মডেল হিসাবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। একটি উন্নয়নশীল এবং আত্মবিশ্বাসী ভারতের রাজধানী হিসেবে এর উপস্থিতি গড়ে তোলার কথা বলেন শ্রী মোদী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১১ বছরে এই অগ্রগতি অর্জনের জন্য সরকার বিভিন্ন স্তরে ধারাবাহিকভাবে কাজ করেছে। গত এক দশকে দিল্লি-এনসিআর যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, "মেট্রো নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে দিল্লি-এনসিআর এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংযুক্ত অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি। তিনি আরও বলেন, এই অঞ্চলটি নমো ভারত দ্রুত রেলের মতো উন্নত ব্যবস্থায় সেজে উঠেছে। তিনি বলেন, গত ১১ বছরে দিল্লি-এনসিআর-এ যাতায়াত আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে সহজ হয়েছে।
দিল্লিকে বিশ্বমানের শহর হিসেবে রূপান্তরিত করার অঙ্গীকারের কথা নিশ্চিত করে শ্রী মোদী বলেন, বর্তমানে প্রত্যেকেই এই অগ্রগতির সাক্ষী। দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে এবং আর্বান এক্সটেনশন রোডের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুটি সড়কই অত্যন্ত উন্নত মানের। তিনি বলেন যে, আর্বান এক্সটেনশন রোড এখন দিল্লির পরিকাঠামো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উল্লেখযোগ্য সহায়তা প্রদান করবে।
আর্বান এক্সটেনশন রোড দিল্লিকে আবর্জনার স্তূপ থেকে মুক্ত করতে সহায়তা করছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আর্বান এক্সটেনশন রোড নির্মাণে লক্ষ লক্ষ টন বর্জ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে। নিকটবর্তী ভালসোয়া ল্যান্ডফিল সাইটের কথা উল্লেখ করে এবং এর আশেপাশে বসবাসকারী পরিবারগুলির গুরুতর সমস্যার কথা স্বীকার করে শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে, সরকার দিল্লির বাসিন্দাদের এই ধরনের চ্যালেঞ্জ থেকে মুক্ত করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, শ্রীমতী রেখা গুপ্তার নেতৃত্বে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দিল্লি সরকার ক্রমাগত যমুনা নদী পরিষ্কার করার কাজ অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, যমুনা নদী থেকে ইতিমধ্যেই ১৬ লক্ষ মেট্রিক টন পলি অপসারণ করা হয়েছে। শ্রী মোদী আরও উল্লেখ করেন যে, অল্প সময়ের মধ্যেই দিল্লিতে ৬৫০টি ডি.ই.ভি.আই (দিল্লি ইলেকট্রিক ভেহিকেল ইন্টার কানেক্টর) বৈদ্যুতিক বাস চালু করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, শহরে বৈদ্যুতিক বাসের সংখ্যা শীঘ্রই ২,০০০ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বহু বছর পর বিজেপি দল জাতীয় রাজধানী দিল্লিতে সরকার গঠন করেছে একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দিল্লির উন্নয়নের মন্থর গতির জন্য পূর্ববর্তী সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও বর্তমান সরকার দিল্লির গৌরব ও উন্নয়ন পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাবে। শ্রী মোদী দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানে বর্তমান রাজ্য সরকারগুলির অনন্য সংহতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই সমগ্র অঞ্চলটিতে তার দল ও নেতৃত্বকে জনগণ বিপুল আশীর্বাদ দিয়েছে তা সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত। তিনি বলেন যে, সরকার দিল্লি-এনসিআর-এর উন্নয়নে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শ্রী মোদী বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল এখনও জনগণের রায় মেনে নিতে পারছে না। কয়েক মাস আগে দিল্লি ও হরিয়ানার জনগণকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হরিয়ানার বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে দিল্লির জল সরবরাহে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ এনে মিথ্যা দাবি করা হয়েছিল। দিল্লি এবং সমগ্র এনসিআর এখন এই ধরনের নেতিবাচক রাজনীতি থেকে মুক্ত হয়েছে, এনসিআর-কে রূপান্তরিত করার জন্য সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
শ্রী মোদী বলেন, "সুশাসন আমাদের সরকারের বৈশিষ্ট্য এবং আমাদের প্রশাসনে জনগণ সর্বাগ্রে। তিনি বলেন, আমাদের দলের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা হল নাগরিকদের জীবনকে সহজতর করা। তিনি উল্লেখ করেন যে, এই প্রতিশ্রুতি দলের নীতি ও সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হয়। হরিয়ানার অতীত সরকারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ছিল যখন প্রভাব বা সুপারিশ ছাড়া একটি নিয়োগও কঠিন ছিল। তিনি বলেন, হরিয়ানায় বিজেপি সরকারের অধীনে লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতী সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারি চাকরি পেয়েছেন। তিনি নিষ্ঠা সহকারে এই উদ্যোগ অব্যাহত রাখার জন্য শ্রী নায়েব সিং সাইনির প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিল্লিতে যারা একসময় বস্তিতে থাকতেন, তারা এখন পাকা বাড়ি পাচ্ছেন। তিনি বলেন যে, আগে বিদ্যুৎ, জল এবং গ্যাস সংযোগের মতো মৌলিক সুযোগ-সুবিধার অভাব ছিল এমন অঞ্চলগুলিতে এখন এই প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি প্রদান করা হচ্ছে। জাতীয় অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, গত ১১ বছরে সারা দেশে রেকর্ড সংখ্যক সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি রেল স্টেশনগুলির চলমান রূপান্তরের কথা উল্লেখ করেন এবং 'বন্দে ভারত’ - এর মতো আধুনিক ট্রেনগুলির জন্য গর্ব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এখন ছোট শহরগুলিতে বিমানবন্দর গড়ে তোলা হচ্ছে। এনসিআর অঞ্চলে বিমানবন্দরের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এখন হিন্ডন বিমানবন্দর থেকে বেশ কয়েকটি শহরে বিমান চলাচল শুরু হয়েছে এবং নয়ডা বিমানবন্দরের কাজও প্রায় সম্পন্ন হতে চলেছে।
শ্রী মোদী বলেন, গত এক দশকে দেশ তার পুরনো দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করায় এই ধরনের অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। তিনি ইস্টার্ন এবং ওয়েস্টার্ন পেরিফেরাল এক্সপ্রেসওয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, দিল্লি-এনসিআর কয়েক দশক ধরে এই সড়কগুলির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আসছে। পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এই প্রকল্পগুলি নিয়ে ফাইলগুলি আদান-প্রদানের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু, জনগণ বিজেপি দলকে সেবা করার সুযোগ দেওয়ার পরই প্রকৃত কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, কেন্দ্র ও হরিয়ানায় যখন বিজেপি সরকার গঠিত হয়, তখন সড়ক প্রকল্পগুলি বাস্তবে পরিণত হয়।
উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির প্রতি উদাসীনতা শুধুমাত্র দিল্লি-এনসিআর-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং সারা দেশেই ছিল বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, আগে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে খুব কম বাজেট বরাদ্দ করা হ’ত, এমনকি অনুমোদিত প্রকল্পগুলিও সম্পূর্ণ হতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগত। তিনি বলেন, গত ১১ বছরে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বাজেট ৬ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পগুলির দ্রুত সমাপ্তির দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে, যে কারণে দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের মতো উদ্যোগগুলি এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি বলেন, এই প্রকল্পগুলি কেবল সুযোগ-সুবিধা তৈরি করছে তা নয়, বরং ব্যাপক কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করছে।
প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী বলেন, আগে যারা দীর্ঘ সময় ধরে শাসন করতেন, তারা জনগণের ওপর শাসনকে তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে দেখতেন। তিনি বলেন, তাদের দলের প্রচেষ্টা হল নাগরিকদের জীবন থেকে সরকারের চাপ এবং হস্তক্ষেপ উভয়ই দূর করা। তিনি অতীতের পরিস্থিতির কথা বোঝাতে উদাহরণ হিসেবে দিল্লির পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কথা উল্লেখ করেন। যাঁরা পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে একটি বড় দায়িত্ব পালন করেন, তাঁদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হ’ত যেন তাঁরা দাসত্ব প্রথার অধীনে রয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, দিল্লি পৌর নিগম আইনের অধীনে, একটি বিধান ছিল যে কোনও স্বচ্ছতা কর্মী যদি পূর্ব নোটিশ ছাড়াই কাজে আসতে না পারেন, তা হলে তাঁদের এক মাসের জন্য জেল হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এই ধরনের আইন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। যাঁরা এখন সামাজিক ন্যায়বিচারের কথা বলছেন, তাঁরাই দেশে এই ধরনের অন্যায্য আইন বজায় রেখেছিল বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তাঁর সরকার এই ধরনের পশ্চাদমুখী আইনগুলিকে চিহ্নিত ও বাতিল করেছে এবং এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমাদের কাছে সংস্কার মানে সুশাসনের সম্প্রসারণ"। তিনি বলেন যে, আগামী দিনগুলিতে জীবনযাত্রা ও ব্যবসা উভয়কেই সহজ করার জন্য বেশ কয়েকটি বড় সংস্কার প্রবর্তন করা হবে। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে জিএসটি-তে পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই দীপাবলিতে নাগরিকদের জিএসটি সংস্কারের মাধ্যমে দ্বিগুণ বোনাস দেওয়া হবে। সব রাজ্য ভারত সরকারের এই উদ্যোগে সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সংস্কারের সুবিধা প্রত্যেক পরিবারে, বিশেষ করে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের কাছে পৌঁছবে। তিনি বলেন, এই পরিবর্তনগুলি থেকে সর্বস্তরের উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন।
ভারতের প্রাচীন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ভারতের সবচেয়ে বড় শক্তি বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে, এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য জীবনের গভীর দর্শনের মূর্ত প্রতীক। তিনি মন্তব্য করেন যে, এই দর্শনের মধ্যে আমরা "চক্রধারী মোহন" এবং "চরকাধারী মোহন" উভয়ের মুখোমুখি হই। তিনি বলেন, "চক্রধারী মোহন" বলতে সুদর্শন চক্রের শক্তি প্রদর্শনকারী ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বোঝায়। অন্যদিকে, "চরখাধারী মোহন" বলতে মহাত্মা গান্ধীকে বোঝায়। মহাত্মা গান্ধী তাঁর চরকার মাধ্যমে দেশকে স্বদেশী শক্তির দিকে উদ্বুদ্ধ করে তুলেছিলেন।
শ্রী মোদী বলেন, "ভারতের ক্ষমতায়নের জন্য, আমাদের অবশ্যই চক্রধারী মোহনের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে হবে এবং ভারতকে স্বনির্ভর করতে, আমাদের অবশ্যই চরকাধারী মোহনের পথ অনুসরণ করতে হবে"। প্রধানমন্ত্রী বলেন, "ভোকাল ফর লোকাল" প্রত্যেক নাগরিকের জীবন মন্ত্র হওয়া উচিত। তিনি বলেন, এই মিশন বাস্তবায়িত করা দেশবাসীর জন্য কঠিন নয়, কারণ ভারত যখনই কোনও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখনই তা বাস্তবায়িত হয়েছে। একসময় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে থাকা খাদি সামগ্রীর উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, গত এক দশকে খাদি সামগ্রীর বিক্রি প্রায় সাতগুণ বেড়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, ভারতের জনগণ "ভোকাল ফর লোকাল"-এর চেতনায় খাদি সামগ্রীকে গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মেড ইন ইন্ডিয়া মোবাইল ফোনের প্রতি নাগরিকদের আস্থার কথাও তুলে ধরেন। "এগারো বছর আগে, ভারত তার বেশিরভাগ মোবাইল ফোন আমদানি করত। বর্তমানে, বেশিরভাগ ভারতীয়ই ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ফোন ব্যবহার করেন। ভারত এখন বছরে ৩০ থেকে ৩৫ কোটি মোবাইল ফোন উৎপাদন ও রপ্তানি করে।
ভারতের ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ইউপিআই বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম রিয়েল-টাইম ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে তৈরি রেল কোচ এবং লোকোমোটিভগুলির চাহিদা এখন অন্যান্য দেশেও বাড়ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক পরিকাঠামো এবং সার্বিক পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ভারত গতিশক্তি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছে। তিনি বলেন, এই প্ল্যাটফর্মে ১,৬০০ স্তরের তথ্য রয়েছে। শ্রী মোদী জানান, গতিশক্তির জন্য একটি নিবেদিত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। তিনি বলেন, গতিশক্তি দেশের অগ্রগতির জন্য একটি শক্তিশালী ও রূপান্তরকারী পথে পরিণত হয়েছে।
এক দশক আগে পর্যন্ত ভারতে খেলনা আমদানির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, যখন ভারতীয়রা 'ভোকাল ফর লোকাল’কে গ্রহণ করার সংকল্প নিয়েছিলেন, তখন দেশীয় খেলনা উৎপাদন কেবল উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়নি, বরং ভারত বিশ্বব্যাপী ১০০টিরও বেশি দেশে খেলনা রপ্তানি শুরু করেছে।
সমস্ত নাগরিককে ভারতে তৈরি পণ্যের উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী জনগণকে ভারতে তৈরি পণ্যগুলি বেছে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "আপনি যদি ভারতীয় হন তবে ভারতে যা তৈরি হয় তা কিনুন"। আসন্ন উৎসবের মরশুমে প্রিয়জনদের সঙ্গে স্থানীয় পণ্যের আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার জন্য দেশবাসীকে উৎসাহিত করেন তিনি। নাগরিকদের শুধুমাত্র ভারতে তৈরি এবং ভারতীয়দের তৈরি সামগ্রী উপহার দেওয়ার বিষয়ে আহ্বান জানান।
সমগ্র দেশের দোকানদারদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ হয়তো একটু বেশি লাভের জন্য বিদেশে তৈরি পণ্য বিক্রি করেছেন, তা অন্যায় নয়। তবে, তাঁদেরকেও এখন 'ভোকাল ফর লোকাল "-এর মন্ত্র গ্রহণ করার আহ্বান জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, এই একক পদক্ষেপ জাতির উপকার করবে এবং বিক্রি হওয়া প্রতিটি পণ্য একজন ভারতীয় শ্রমিক বা একজন দরিদ্র নাগরিককে সহায়তা করবে। প্রতিটি বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ দেশেই থেকে যাবে এবং তাতে ভারতীয়রাই উপকৃত হবেন বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এর ফলে ভারতীয় নাগরিকদের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। তিনি দোকানদারদের গর্বের সঙ্গে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ পণ্য বিক্রি করার আহ্বান জানান।
সম্প্রতি নতুন কেন্দ্রীয় সচিবালয়-কর্তব্য ভবনের উদ্বোধন এবং নতুন সংসদ ভবনের সমাপ্তির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "দিল্লি এমন একটি রাজধানী হিসেবে উঠে আসছে, যা ভারতের গৌরবময় অতীতকে তার আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যতের সঙ্গে যুক্ত করছে। তিনি বলেন যে, কর্তব্য পথ এখন নতুন রূপে জাতির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। শ্রী মোদী বলেন, ভারত মণ্ডপম এবং যশোভুমির মতো আধুনিক সম্মেলন কেন্দ্রগুলি দিল্লির মর্যাদা বাড়িয়ে তুলছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, এই উন্নয়নগুলি দিল্লিকে ব্যবসা ও বাণিজ্যের জন্য একটি প্রধান গন্তব্য হিসাবে তুলে ধরছে। এই উদ্যোগগুলির শক্তি ও অনুপ্রেরণায় দিল্লি বিশ্বের অন্যতম সেরা রাজধানী হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী নীতিন গড়করি, দিল্লির উপ-রাজ্যপাল শ্রী বিনয় কুমার সাক্সেনা, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী রেখা গুপ্তা, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নায়েব সিং সাইনি, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী অজয় তাম্তা, শ্রী হর্ষ মালহোত্রা প্রমুখ।
SC/PM/SB
(Release ID: 2157555)
Read this release in:
Odia
,
Malayalam
,
Assamese
,
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Manipuri
,
Bengali-TR
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada