প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১১,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি বড় জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন

আমরা দিল্লিকে উন্নয়নের একটি মডেল হিসাবে গড়ে তুলছি যা উন্নয়নশীল ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিফলিত করে : প্রধানমন্ত্রী

মানুষের জীবনকে সহজতর করার নিরন্তর প্রচেষ্টা, এমন একটি লক্ষ্য যা প্রতিটি নীতি এবং প্রতিটি সিদ্ধান্তকে পরিচালিত করে : প্রধানমন্ত্রী

আমাদের কাছে সংস্কার মানে সুশাসনের সম্প্রসারণ : প্রধানমন্ত্রী

পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কারগুলি সারা দেশের নাগরিকদের জন্য দ্বিগুণ সুবিধা নিয়ে আসবে: প্রধানমন্ত্রী

ভারতকে শক্তিশালী করতে হলে চক্রধারী মোহন (শ্রীকৃষ্ণ)-এর থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ভারতকে আত্মনির্ভর করে তুলতে হবে, এক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই চরখাধারী মোহন (মহাত্মা গান্ধী)-এর পথ অনুসরণ করতে হবে

আসুন, আমরা ভোকাল ফর লোকালের পথ অনুসরণ করে ভারতে তৈরি পণ্যগুলির উপর আস্থা রাখি এবং ক্রয় করি: প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 17 AUG 2025 3:29PM by PIB Agartala

নয়াদিল্লি,১৭ আগস্ট,২০২৫ : প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ দিল্লির রোহিণীতে প্রায় ১১,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি বড় জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এক্সপ্রেসওয়ের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, এক্সপ্রেসওয়ের নাম "দ্বারকা" এবং অনুষ্ঠানটি "রোহিণী"-তে।  তিনি জন্মাষ্টমীর উৎসবের মনোভাব তুলে ধরেন এবং কাকতালীয়ভাবে উল্লেখ করেন যে, তিনি নিজেই দ্বারকাধিশের ভূমি থেকে এসেছেন।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বায়ুমণ্ডলে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের মর্ম গভীরভাবে গেঁথে রয়েছে।

আগস্ট মাস স্বাধীনতা ও বিপ্লবের রঙে পরিপূর্ণ বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, আজাদি কা মহোৎসব উদযাপনের মধ্যে, জাতীয় রাজধানী দিল্লি আজ একটি উন্নয়ন বিপ্লবের সাক্ষী।  তিনি জানান, এর আগে, দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে এবং আরবান এক্সটেনশন রোডের মাধ্যমে দিল্লি উন্নত সংযোগ পেয়েছিল, যা দিল্লি, গুরুগ্রাম এবং সমগ্র এনসিআর অঞ্চলের মানুষের সুবিধার উন্নতি ঘটাবে।  তিনি আরও বলেন, অফিস ও কারখানায় যাতায়াত সহজ হবে এবং প্রত্যেকের সময় সাশ্রয় হবে। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, এই সংযোগের ফলে ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা এবং কৃষকরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন। এই আধুনিক সড়ক পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য তিনি দিল্লি-এনসিআর-এর সমস্ত বাসিন্দাকে অভিনন্দন জানান।

এবছরের ১৫ ই আগস্ট, অর্থাৎ গত শুক্রবার লালকেল্লার প্রাচীর থেকে তার ভাষণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,"আজকের ভারত তার আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন এবং সংকল্প দ্বারা সংজ্ঞায়িত হয়, যে উপাদানগুলি সমগ্র বিশ্ব এখন অনুভব করছে। তিনি বলেন, বিশ্ব যখন ভারতের দিকে তাকায় এবং তার অগ্রগতির মূল্যায়ন করে, তখন তার প্রথম দৃষ্টি পড়ে জাতীয় রাজধানী দিল্লির দিকে। শ্রী মোদী দিল্লিকে উন্নয়নের মডেল হিসাবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন, যেখানে প্রত্যেকে সত্যিকার অর্থে অনুভব করতে পারে যে এটি একটি উন্নয়নশীল এবং আত্মবিশ্বাসী ভারতের রাজধানী।

গত ১১ বছরে এই অগ্রগতি অর্জনের জন্য সরকার বিভিন্ন স্তরে ধারাবাহিকভাবে কাজ করেছে, একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত এক দশকে দিল্লি-এনসিআর যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে।  শ্রী মোদী বলেন, "মেট্রো নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে দিল্লি-এনসিআর এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংযুক্ত অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি।  তিনি আরও বলেন, এই অঞ্চলটি নমো ভারত দ্রুত রেলের মতো উন্নত ব্যবস্থায় সজ্জিত।  তিনি বলেন, গত ১১ বছরে দিল্লি-এনসিআর-এ যাতায়াত আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে সহজ হয়েছে।

দিল্লিকে বিশ্বমানের শহরে রূপান্তরিত করার অঙ্গীকারের কথা নিশ্চিত করে শ্রী মোদী বলেন, আজ প্রত্যেকেই এই অগ্রগতির প্রত্যক্ষ সাক্ষী।  দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে এবং আরবান এক্সটেনশন রোডের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুটি সড়কই অত্যন্ত ভালো মানের। তিনি উল্লেখ করেন যে, পেরিফেরাল এক্সপ্রেসওয়ে অনুসরণ করে, আরবান এক্সটেনশন রোড এখন দিল্লির পরিকাঠামো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উল্লেখযোগ্য সহায়তা প্রদান করবে।

আরবান এক্সটেনশন রোডের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, এটি দিল্লিকে আবর্জনার স্তূপ থেকে মুক্ত করতে সহায়তা করছে, আরবান এক্সটেনশন রোড নির্মাণে লক্ষ লক্ষ টন বর্জ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে।  তিনি বলেন, আবর্জনার স্তূপ হ্রাস করে বর্জ্য পদার্থকে রাস্তা নির্মাণের জন্য পুনর্ব্যবহার করা হয়েছে।  নিকটবর্তী ভালসোয়া ল্যান্ডফিল সাইটের কথা উল্লেখ করে এবং এর আশেপাশে বসবাসকারী পরিবারগুলির গুরুতর সমস্যার কথা স্বীকার করে শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে, সরকার দিল্লির বাসিন্দাদের এই ধরনের চ্যালেঞ্জ থেকে মুক্ত করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, শ্রীমতী রেখা গুপ্তার  নেতৃত্বে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।  দিল্লি সরকার ক্রমাগত যমুনা নদী পরিষ্কার করার কাজে অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, যমুনা নদী থেকে ইতিমধ্যেই ১৬ লক্ষ মেট্রিক টন পলি অপসারণ করা হয়েছে। শ্রী মোদী আরও উল্লেখ করেন যে, অল্প সময়ের মধ্যেই দিল্লিতে ৬৫০টি ডি.ই.ভি.আই (দিল্লি ইলেকট্রিক ভেহিকেল ইন্টার কানেক্টর) বৈদ্যুতিক বাস চালু করা হয়েছে।  তিনি আরও বলেন, শহরে বৈদ্যুতিক বাসের বহর শীঘ্রই ২,০০০ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যা "সবুজ দিল্লি, পরিচ্ছন্ন দিল্লি" এই উদ্যোগটিকে আরো শক্তিশালী করছে।

বহু বছর পর বিজেপি দল জাতীয় রাজধানী দিল্লিতে সরকার গঠন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দিল্লির উন্নয়নের দুর্বল গতির জন্য পূর্ববর্তী সরকারগুলির সমালোচনা করেন।  তিনি স্বীকার করেন যে, যদিও পূর্ববর্তী সরকারগুলির বিশৃঙ্খলা থেকে দিল্লিকে উত্থিত করা একটি কঠিন কাজ, বর্তমান সরকার দিল্লির গৌরব ও উন্নয়ন পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে।  শ্রী মোদী দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানে বর্তমান রাজ্য সরকারগুলির অনন্য সংহতির কথা তুলে ধরেন।  তিনি মন্তব্য করেন যে, এই  সমগ্র অঞ্চলটিতে তার দল ও নেতৃত্বকে জনগণ বিপুল আশীর্বাদ দিয়েছে তা সুস্পষ্ট প্রতিফলিত। শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে, এই দায়িত্ব স্বীকার করে সরকার দিল্লি-এনসিআর-এর উন্নয়নে সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি উল্লেখ করেন যে, কিছু রাজনৈতিক দল এখনও জনগণের রায় মেনে নিতে অক্ষম। তিনি বলেন, এই দলগুলি জনসাধারণের আস্থা ও বাস্তবতা উভয় থেকে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে।  কয়েক মাস আগে দিল্লি ও হরিয়ানার জনগণকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হরিয়ানার বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে দিল্লির জল সরবরাহে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ এনে মিথ্যা দাবি করা হয়েছিল।  তিনি বলেন, দিল্লি এবং সমগ্র এনসিআর এখন এই ধরনের নেতিবাচক রাজনীতি থেকে মুক্ত হয়েছে, এনসিআর-কে রূপান্তরিত করার জন্য সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করে তিনি আস্থা প্রকাশ করেন যে এই দৃষ্টিভঙ্গি সফলভাবে বাস্তবায়িত হবে।

শ্রী মোদী বলেন, "সুশাসন আমাদের সরকারের বৈশিষ্ট্য এবং আমাদের প্রশাসনে জনগণ সর্বাগ্রে।  তিনি বলেন, আমাদের দলের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা হল নাগরিকদের জীবনকে সহজতর করা।  তিনি উল্লেখ করেন যে, এই প্রতিশ্রুতি দলের নীতি ও সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হয়। হরিয়ানার অতীত সরকারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ছিল যখন প্রভাব বা সুপারিশ ছাড়া একটি নিয়োগও কঠিন ছিল।  তিনি বলেন, হরিয়ানায় বিজেপি সরকারের অধীনে লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতী সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারি চাকরি পেয়েছেন।  তিনি নিষ্ঠা সহকারে এই উদ্যোগ অব্যাহত রাখার জন্য শ্রী নায়েব সিং সাইনির প্রশংসা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিল্লিতে যারা একসময় স্থায়ী আবাসনবিহীন বস্তিতে থাকতেন, তারা এখন পাকা বাড়ি পাচ্ছেন।  তিনি উল্লেখ করেন যে, আগে বিদ্যুৎ, জল এবং গ্যাস সংযোগের মতো মৌলিক সুযোগ-সুবিধার অভাব ছিল এমন অঞ্চলগুলিতে এখন এই প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি দিয়ে সজ্জিত করা হচ্ছে। জাতীয় অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, গত ১১ বছরে সারা দেশে রেকর্ড সংখ্যক সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।  তিনি রেল স্টেশনগুলির চলমান রূপান্তরের কথা উল্লেখ করেন এবং 'বন্দে ভারত"এর মতো আধুনিক ট্রেনগুলির জন্য গর্ব প্রকাশ করে বলেন, বিমানবন্দরগুলি এখন ছোট শহরগুলিতে গড়ে তোলা হচ্ছে।  এনসিআর অঞ্চলের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিমানবন্দরের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, এখন হিন্ডন বিমানবন্দর থেকে বেশ কয়েকটি শহরে বিমান চলাচল করছে, তিনি আরও জানান যে, নয়ডা বিমানবন্দরের কাজও প্রায় শেষ হতে চলেছে।

শ্রী মোদী বলেন, এই ধরনের অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে কারণ গত এক দশকে দেশ তার পুরনো দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছে।  তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশের যে স্তরের পরিকাঠামো প্রয়োজন এবং যে গতিতে তা গড়ে তোলা প্রয়োজন, তা অতীতে অর্জন করা যায়নি।  ইস্টার্ন এবং ওয়েস্টার্ন পেরিফেরাল এক্সপ্রেসওয়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিল্লি-এনসিআর কয়েক দশক ধরে এই সড়কগুলির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আসছে।  তিনি উল্লেখ করেন যে, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এই প্রকল্পগুলি সম্পর্কিত ফাইলগুলি চালাচালি চালাচালি শুরু হয়েছিল, কিন্তু প্রকৃত কাজ তখনই শুরু হয়েছিল যখন জনগণ বিজেপি দলকে  সেবা করার সুযোগ দিয়েছে।  তিনি বলেন, কেন্দ্র ও হরিয়ানায় যখন আমাদের সরকার গঠিত হয়, তখন সড়কগুলি বাস্তবে পরিণত হয়।  প্রধানমন্ত্রী গর্বের সঙ্গে বলেন যে, আজ এই এক্সপ্রেসওয়েগুলি বিশিষ্টতার সঙ্গে দেশের সেবা করছে।

উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির প্রতি উদাসীনতা শুধুমাত্র দিল্লি-এনসিআর-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং সারা দেশেই ছিল বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন যে, আগে পরিকাঠামোর জন্য  বাজেট বরাদ্দ খুব কম ছিল, এমনকি অনুমোদিত প্রকল্পগুলিও সম্পূর্ণ হতে কয়েক বছর সময় লাগত।  তিনি উল্লেখ করেন যে, গত ১১ বছরে পরিকাঠামোগত বাজেট ৬ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে।  প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বর্তমানে প্রকল্পগুলির দ্রুত সমাপ্তির দিকে মনোনিবেশ করা হচ্ছে, যে কারণে দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের মতো উদ্যোগগুলি এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি বলেন, এই প্রকল্পগুলিতে যথেষ্ট বিনিয়োগ কেবল সুযোগ-সুবিধা তৈরি করছে না, বরং বড় আকারের কর্মসংস্থানও তৈরি করছে। শ্রী মোদী বলেন, নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহার সংশ্লিষ্ট কারখানা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিতে কর্মসংস্থান বাড়ায়। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই উন্নয়নগুলির ফলে পরিবহন ও লজিস্টিক ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।


প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী বলেন, আগে যারা দীর্ঘ সময় ধরে শাসন করতেন, তারা জনগণের ওপর শাসনকে তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে দেখতেন।  তিনি জোর দিয়ে বলেন বলেন যে, তাদের দলের প্রচেষ্টা হল নাগরিকদের জীবন থেকে সরকারের চাপ এবং হস্তক্ষেপ উভয়ই দূর করা।  তিনি অতীতের পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য একটি উদাহরণ তুলে ধরে দিল্লির পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কথা উল্লেখ করেন, যারা পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে একটি বড় দায়িত্ব পালন করেন, তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হত যেন তারা দাসপ্রথার অধীনে রয়েছে।  শ্রী মোদী একটি বিস্ময়কর সত্য প্রকাশ করে বলেন, দিল্লি পৌর নিগম আইনের অধীনে, একটি বিধান ছিল যে কোনও স্যানিটেশন কর্মী যদি পূর্ব নোটিশ ছাড়াই কাজে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হন, তবে তাদের এক মাসের জন্য জেল হতে পারে।  প্রধানমন্ত্রী এই ধরনের আইনের পিছনের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং জিজ্ঞাসা করেন যে, কীভাবে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সামান্য ত্রুটির জন্য জেলে যেতে হতে পারে।  যারা এখন সামাজিক ন্যায়বিচারের কথা বলছেন, তাদের সমালোচনা করে তিনি উল্লেখ করেন যে, তারা দেশে এই ধরনের অন্যায্য আইন বজায় রেখেছেন। শ্রী মোদী ঘোষণা করেন যে, তাদের সরকারই সক্রিয়ভাবে এই ধরনের পশ্চাদমুখী আইনগুলিকে চিহ্নিত ও বাতিল করছে।  তিনি জানান, সরকার ইতিমধ্যেই এই ধরনের শত শত আইন বাতিল করেছে এবং এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমাদের কাছে সংস্কার মানে সুশাসনের সম্প্রসারণ"। তিনি বলেন, সংস্কারের দিকে ক্রমাগত নজর দেওয়া হচ্ছে।  তিনি ঘোষণা করেন যে আগামী দিনগুলিতে জীবনযাত্রা ও ব্যবসা উভয়কেই সহজ করার জন্য বেশ কয়েকটি বড় সংস্কার প্রবর্তন করা হবে।  এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে জিএসটি-তে পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।  এই দীপাবলিতে নাগরিকরা জিএসটি সংস্কারের মাধ্যমে দ্বিগুণ বোনাস পাবেন। সমস্ত রাজ্যগুলির সঙ্গে সম্পূর্ণ পরিকাঠামো ভাগ করে নেওয়ার কথা জানিয়ে শ্রী মোদী আশা প্রকাশ করেন যে, সমস্ত রাজ্য ভারত সরকারের এই উদ্যোগে সহযোগিতা করবে। তিনি এই প্রক্রিয়াটি দ্রুত শেষ করার আহ্বান জানান যাতে এই দীপাবলিকে আরও বিশেষ করে তোলা যায়।  সরকারের লক্ষ্য জিএসটি আরও সহজ করা এবং করের হার সংশোধন করা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সংস্কারের সুবিধা প্রত্যেক পরিবারে, বিশেষ করে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের কাছে পৌঁছবে।  তিনি আরও বলেন, এই পরিবর্তনগুলি থেকে সর্বস্তরের উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি  ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন।

ভারতের প্রাচীন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ভারতের সবচেয়ে বড় শক্তি বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে, এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য জীবনের গভীর দর্শনের মূর্ত প্রতীক।  তিনি মন্তব্য করেন যে, এই দর্শনের মধ্যে আমরা "চক্রধারী মোহন" এবং "চরখাধারী মোহন" উভয়ের মুখোমুখি হই।  তিনি উল্লেখ করেন যে, সময়ে সময়ে জাতি এই দুই ব্যাক্তিত্বের সারমর্ম অনুভব করে।  "চক্রধারী মোহন" বলতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বোঝায়, যিনি সুদর্শন চক্রের শক্তি প্রদর্শন করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, "চরখাধারী মোহন" বলতে মহাত্মা গান্ধীকে বোঝায়, যিনি চক্রের মাধ্যমে দেশকে স্বদেশী শক্তির দিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন।

"ভারতের ক্ষমতায়নের জন্য, আমাদের অবশ্যই চক্রধারী মোহনের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে হবে, ভারতকে স্বনির্ভর করতে, আমাদের অবশ্যই চরখাধারী মোহনের পথ অনুসরণ করতে হবে", প্রধানমন্ত্রী বলেন, "ভোকাল ফর লোকাল" প্রত্যেক নাগরিকের জীবন মন্ত্র হওয়া উচিত। তিনি বলেন, এই মিশন জাতির জন্য কঠিন নয়, কারণ ভারত যখনই কোনও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখনই তা বাস্তবায়িত হয়েছে। একসময় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে থাকা খাদির উদাহরণ তুলে ধরে শ্রী মোদী জাতির কাছে তার আবেদনের কথা স্মরণ করেন, যা সম্মিলিত সংকল্প এবং দৃশ্যমান ফলাফলের দিকে পরিচালিত করেছে।  তিনি জানান, গত এক দশকে খাদির বিক্রি প্রায় সাতগুণ বেড়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, ভারতের জনগণ "ভোকাল ফর লোকাল"-এর চেতনায় খাদিকে গ্রহণ করেছে।  প্রধানমন্ত্রী মেড ইন ইন্ডিয়া মোবাইল ফোনের প্রতি নাগরিকদের আস্থার কথাও তুলে ধরেন। "এগারো বছর আগে, ভারত তার বেশিরভাগ মোবাইল ফোন আমদানি করত। আজ, বেশিরভাগ ভারতীয় মেড ইন ইন্ডিয়া ফোন ব্যবহার করেন। ভারত এখন বছরে ৩০ থেকে ৩৫ কোটি মোবাইল ফোন উৎপাদন ও রপ্তানি করে।

ভারতের মেড ইন ইন্ডিয়া ইউপিআই আজ বিশ্বের বৃহত্তম রিয়েল-টাইম ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে তৈরি রেল কোচ এবং লোকোমোটিভগুলির চাহিদা এখন অন্যান্য দেশেও বাড়ছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক পরিকাঠামো এবং সার্বিক পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে ভারত গতিশক্তি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছে।  তিনি উল্লেখ করেন যে, এই প্ল্যাটফর্মে ১,৬০০ স্তরের তথ্য রয়েছে।  তিনি বলেন যে কোনও প্রকল্পের জন্য, প্ল্যাটফর্মটি সমস্ত প্রাসঙ্গিক শর্ত এবং নিয়ন্ত্রক প্রয়োজনীয়তাগুলিতে তাৎক্ষণিক অ্যাক্সেস সরবরাহ করে-এটি বন্যপ্রাণী, বন অঞ্চল, নদী বা ড্রেন সম্পর্কিত হোক না কেন, উল্লেখ করে যে এই জাতীয় সমস্ত তথ্য কয়েক মিনিটের মধ্যে পাওয়া যায়, যা প্রকল্পগুলিকে দ্রুত অগ্রগতি করতে সক্ষম করে।  শ্রী মোদী জানান, গতিশক্তির জন্য একটি নিবেদিত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে।  তিনি জোর দিয়ে বলেন, গতিশক্তি দেশের অগ্রগতির জন্য একটি শক্তিশালী ও রূপান্তরকারী পথে পরিণত হয়েছে।

এক দশক আগে ভারতে খেলনা আমদানির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, যখন ভারতীয়রা 'ভোকাল ফর লোকাল "-কে গ্রহণ করার সংকল্প নিয়েছিলেন, তখন দেশীয় খেলনা উৎপাদন কেবল উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়নি, বরং ভারত বিশ্বব্যাপী ১০০টিরও বেশি দেশে খেলনা রপ্তানি শুরু করেছে ।

সমস্ত নাগরিককে ভারতে তৈরি পণ্যের উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী জনগণকে ভারতে তৈরি পণ্যগুলি বেছে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "আপনি যদি ভারতীয় হন তবে ভারতে যা তৈরি হয় তা কিনুন"।  চলতি উৎসবের মরশুমের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী আহ্বান রাখেন প্রত্যেককে যেন তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে স্থানীয় পণ্যের আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন।  তিনি নাগরিকদের শুধুমাত্র ভারতে তৈরি এবং ভারতীয়দের তৈরি জিনিসগুলি উপহার দেওয়ার জন্য সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান।

সারা দেশের দোকানদারদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ হয়তো একটু বেশি লাভের জন্য বিদেশে তৈরি পণ্য বিক্রি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, তারা কোনও অন্যায় করেননি, তবে তাদের এখন 'ভোকাল ফর লোকাল "-এর মন্ত্র গ্রহণ করার আহ্বান জানান।  তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, এই একক পদক্ষেপ জাতির উপকার করবে এবং বিক্রি হওয়া প্রতিটি পণ্য একজন ভারতীয় শ্রমিক বা একজন দরিদ্র নাগরিককে সহায়তা করবে।  প্রতিটি বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ ভারতের মধ্যেই থেকে যাবে এবং তাতে ভারতীয়রাই উপকৃত হবে বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এর ফলে ভারতীয় নাগরিকদের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।  তিনি দোকানদারদের গর্বের সঙ্গে মেড ইন ইন্ডিয়া পণ্য বিক্রি করার আহ্বান জানান।

সম্প্রতি নতুন কেন্দ্রীয় সচিবালয়-কর্তব্য ভবনের উদ্বোধন এবং নতুন সংসদ ভবনের সমাপ্তির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "দিল্লি এমন একটি রাজধানী হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে যা ভারতের গৌরবময় অতীতকে তার আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যতের সঙ্গে যুক্ত করছে।  তিনি উল্লেখ করেন যে, কর্তব্য পথ এখন তার নতুন রূপে জাতির সামনে দাঁড়িয়ে আছে।  শ্রী মোদী বলেন, ভারত মণ্ডপম এবং যশভুমির মতো আধুনিক সম্মেলন কেন্দ্রগুলি দিল্লির মর্যাদা বাড়িয়ে তুলছে।  তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, এই উন্নয়নগুলি দিল্লিকে ব্যবসা ও বাণিজ্যের জন্য একটি প্রধান গন্তব্য হিসাবে স্থান দিয়েছে।  এই উদ্যোগগুলির শক্তি ও অনুপ্রেরণায় দিল্লি বিশ্বের অন্যতম সেরা রাজধানী হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। 

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী নীতিন গড়করি, দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর শ্রী বিনয় কুমার সাক্সেনা, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী রেখা গুপ্তা, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নায়েব সিং সাইনি, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী অজয় তাম্তা, শ্রী হর্ষ মালহোত্রা প্রমুখ।

পটভূমি

এই প্রকল্পগুলি-দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের দিল্লি অংশ এবং আরবান এক্সটেনশন রোড- ২ (ইউ.ই.আর-২)-রাজধানীতে যানজট নিরসনের জন্য সরকারের ব্যাপক পরিকল্পনার আওতায় তৈরি করা হয়েছে, যার উদ্দেশ্য হল যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে উন্নত করা, ভ্রমণের সময় হ্রাস করা এবং দিল্লি ও তার আশেপাশের অঞ্চলে যানজট হ্রাস করা।  এই উদ্যোগগুলি প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিশ্বমানের পরিকাঠামো তৈরির দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিফলিত করে যা জীবনযাত্রার স্বাচ্ছন্দ্য বাড়ায় এবং নির্বিঘ্ন গতিশীলতা নিশ্চিত করে।

৫,৩৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের ১০.১ কিলোমিটার দীর্ঘ দিল্লি সেকশনটি গড়ে তোলা হয়েছে।  এই বিভাগটি যশভূমি, ডি.এম.আর.সি ব্লুলাইন এবং অরেঞ্জ লাইন, আসন্ন বিজওয়াসন রেল স্টেশন এবং দ্বারকা ক্লাস্টার বাস ডিপোর সঙ্গে মাল্টি-মডেল সংযোগ প্রদান করবে।   এই বিভাগে রয়েছে :

প্যাকেজ ১: দ্বারকা সেক্টর-২১-এ শিব মূর্তি চৌরাস্তা থেকে রোড আন্ডার ব্রিজ (আর.ইউ.বি) পর্যন্ত ৫.৯ কিমি।

দ্বিতীয় প্যাকেজঃ দ্বারকা সেক্টর-২১ আর.ইউ.বি থেকে দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্ত পর্যন্ত ৪.২ কিলোমিটার, যা আরবান এক্সটেনশন রোড-২ এর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ প্রদান করে।

এর আগে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ হরিয়ানা অংশের উদ্বোধন করেন। 

প্রধানমন্ত্রী আলিপুর থেকে দিচাওন কালান পর্যন্ত আরবান এক্সটেনশন রোড-২ (ইউ.ই.আর-২)-এর পাশাপাশি বাহাদুরগড় ও সোনিপাতের সঙ্গে নতুন সংযোগের উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৫,৫৮০ কোটি টাকা।  এটি দিল্লির ইনার এবং আউটার রিং রোড এবং মুকারবা চক, ধৌলা কুয়ান এবং এনএইচ- ৯-এর মতো ব্যস্ত পয়েন্টগুলিতে যানজটকে সহজ করবে।  নতুন এই উদ্যোগগুলি বাহাদুরগড় এবং সোনিপথে সরাসরি প্রবেশাধিকার দেবে, শিল্প সংযোগ উন্নত করবে, শহরের যানজট হ্রাস করবে এবং এন.সি.আর-এ পণ্য সামগ্রী পরিবহনের গতি বাড়িয়ে তুলবে।

***

KMD/PS


(Release ID: 2157364)
Read this release in: English