প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী মেঘালয়ের শিলং – এ ২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকার একগুচ্ছ প্রকল্প শিলান্যাস, উদ্বোধন ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন


“উত্তর-পূর্বের উন্নয়নের পথে সব বাধাকে সরকার লাল কার্ড দেখিয়েছে”

“সেদিন আর বেশি দূরে নেই, যখন ভারত বিশ্বকাপের মতো বৃহৎ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে এবং প্রতিটি ভারতবাসী আমাদের দলের জন্য সোচ্চার হবে”

“উন্নয়ন শুধুমাত্র বাজেট বরাদ্দ, দরপত্র আহ্বান, শিলান্যাস এবং উদ্বোধনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না”

“আজ যে পরিবর্তন আমরা প্রত্যক্ষ করছি, তা আমাদের উদ্দেশ্য, সিদ্ধান্ত, অগ্রাধিকার এবং কর্মসংস্কৃতির পরিবর্তনের ফলেই সম্ভব হয়েছে”

“পিএম ডিভাইনের আওতায় আগামী ৩-৪ বছরের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে”

“আদিবাসী সমাজে ঐতিহ্য, ভাষা এবং সংস্কৃতি বজায় রেখে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের উন্নয়ন নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে”

“পূর্ববর্তী সরকারের উত্তর-পূর্বের জন্য ‘বিভাজন’ - এর মানসিকতা ছিল, কিন্তু আমাদের সরকার ‘পবিত্র’ এক উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে”

Posted On: 18 DEC 2022 2:50PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মেঘালয়ের শিলং – এ ২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকার একগুচ্ছ প্রকল্প শিলান্যাস, উদ্বোধন ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। এর আগে তিনি শিলং – এ স্টেট কনভেনশন সেন্টারে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদে সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এবং একটি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী যে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য যে মোবাইল টাওয়ারগুলির উদ্বোধন করেছেন তার মধ্যে ৩২০টির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে এবং ৮৯০টি প্রকল্পের কাজ শেষের পথে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হ’ল – ফোর-জি মোবাইল টাওয়ার, উমসাওলিতে আইআইএম শিলং – এর নবনির্মিত ক্যাম্পাস, শিলং – এর নতুন স্যাটেলাইট টাউনশিপের সঙ্গে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য শিলং – ডিয়েংপাসো সড়ক এবং মেঘালয়ের সঙ্গে মণিপুর ও অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশে ৪টি সড়ক প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী মাশরুম উন্নয়ন কেন্দ্রে স্পাওন গবেষণাগার এবং সুসংহত মৌ পালন উন্নয়ন কেন্দ্র ছাড়াও মোজোরাম, মণিপুর, ত্রিপুরা ও আসামে ২১টি হিন্দি পাঠাগার উদ্বোধন করেছেন। তিনি তুরায় সুসংহত আতিথেয়তা ও সম্মেলন কেন্দ্র এবং শিলং টেকনোলজি পার্কের দ্বিতীয় পর্বের শিলান্যাস করেছেন।

এই উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেঘালয় হ’ল একটি সমৃদ্ধশালী রাজ্য, এখানকার মানুষের উষ্ণ এবং আপন করে নেওয়ার মানসিকতা তারই প্রতিফলন। যোগাযোগ, শিক্ষা, দক্ষতা সংক্রান্ত যেসব প্রকল্পগুলির উদ্বোধন হ’ল তার জন্য তিনি মেঘালয়ের নাগরিকদের অভিনন্দন জানান। আগামী দিনে এইসব প্রকল্প উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হবে।

শ্রী মোদী বলেন, একদিকে যখন বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন আজ এখানে এই জনসভা – এ এক অদ্ভুত সমাপতন। “একদিকে যখন ফুটবল প্রতিযোগিতা হচ্ছে, আরেক দিকে আমরা একটি ফুটবল খেলার মাঠ থেকে উন্নয়নের প্রতিযোগিতায় নেতৃত্ব দিচ্ছি। বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর কাতারে বসলেও এখানকার মানুষের তার প্রতি আগ্রহ একটুও কম নয়”। এ প্রসঙ্গে তিনি ফুটবল খেলার মাঠে খেলোয়াড়োচিত মনোভাব যাঁদের থাকে না, তাঁদের লাল কার্ড দেখানোর প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে বলেন, উত্তর-পূর্বের উন্নয়নের পথে সব বাধাকে বর্তমান সরকার লাল কার্ড দেখিয়েছে। “এই অঞ্চলের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টিকারী দুর্নীতি, বৈষম্য, পক্ষপাত দুষ্টতা, অস্থিরাবস্থা অথবা ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি – এইসব মন্দ জিনিসগুলিকে সমূলে উৎপাটন করতে আমরা সৎভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে চলেছি”। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যদিও অশুভ শক্তির প্রভাব সুদূরপ্রসারী, কিন্তু আমাদের একটি একটি করে সেগুলিকে বিনাশ করতে হবে। বর্তমান সরকারের গৃহীত উদ্যোগগুলি ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ক্রীড়া ক্ষেত্রে উন্নয়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিষয়ে সরকারের নতুন প্রয়াসের সুফল উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অনুভূত হচ্ছে। দেশের প্রথম ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় এই অঞ্চলে গড়ে তোলার পাশাপাশি, এখানে বহু উদ্দেশ্য সাধক ক্রীড়া পরিকাঠামো, ফুটবল খেলার মাঠ এবং অ্যাথলিটদের জন্য বিশেষ ট্র্যাক নির্মাণের মতো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের ৯০টি প্রকল্পের কাজ চলছে। শ্রী মোদী বলেন, যদিও কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দল খেলছে, কিন্তু তিনি দেশের যুবশক্তির ক্ষমতার প্রতি আস্থাশীল। আর তাই সেদিন আর বেশি দূরে নেই, যখন ভারত বিশ্বকাপের মতো বৃহৎ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে এবং প্রতিটি ভারতবাসী আমাদের দলের জন্য সোচ্চার হবে।

“উন্নয়ন শুধুমাত্র বাজেট বরাদ্দ, দরপত্র আহ্বান, শিলান্যাস এবং উদ্বোধনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না” বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৪ সালের আগে থেকে তিনি এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন। “আজ যে পরিবর্তন আমরা প্রত্যক্ষ করছি, তা আমাদের উদ্দেশ্য, সিদ্ধান্ত, অগ্রাধিকার এবং কর্মসংস্কৃতির পরিবর্তনের ফলেই সম্ভব হয়েছে। আর তার ফল আমরা এখন অনুভব করছি”। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অত্যাধুনিক পরিকাঠামো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ উন্নত এক ভারত গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সকলের উদ্যোগে বা ‘সবকা প্রয়াস’ – এর মাধ্যমে দেশের প্রত্যেক অঞ্চলের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সরকারের অন্যতম উদ্দেশ্য। বৈষম্য দূর করে, দূরত্ব ঘুচিয়ে, দক্ষতা বাড়িয়ে এবং যুব শক্তির জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কর্মসংস্কৃতির যে পরিবর্তন ঘটেছে, তার প্রতিফলন আমরা প্রত্যেকটি প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে অনুভব করছি। এখন সব প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার এ বছর পরিকাঠামো খাতে ৭ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। ৮ বছর আগে এই কাজে ব্যয় হ’ত ২ লক্ষ কোটি টাকারও কম। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্যগুলি এখন একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ কিভাবে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে, সেই বিষয়টি উল্লেখ করেন। এই অঞ্চলে সবকটি রাজ্যের রাজধানী শহরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ চলেছে। ২০১৪ সালের আগে এই অঞ্চলে সাপ্তাহিক বিমান পরিষেবার সংখ্যা ছিল ৯০০। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৯০০-য় পৌঁছেছে। শ্রী মোদী বলেন, উড়ান প্রকল্পের আওতায় মেঘালয়ে ১৬টি রুটে বিমান চলাচল করছে। আজ রাজ্যবাসী স্বল্প মূল্যে বিমান পরিষেবা পাচ্ছেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চল সহ মেঘালয়ের কৃষকরা এখন কৃষি উড়ান প্রকল্পের মাধ্যমে এই অঞ্চলে উৎপাদিত ফলমূল ও শাক-সব্জি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বাজারে সহজেই পাঠাতে পারছেন।

প্রধানমন্ত্রী আজ যেসব যোগাযোগ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন, সেগুলির বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বিভিন্ন তথ্য সকলের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন। তিনি জানান, গত ৮ বছরে মেঘালয়ে জাতীয় সড়ক নির্মাণে ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এই সময়কালে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার আওতায় পূর্ববর্তী ২০ বছরের তুলনায় সাত গুণ বেশি সড়ক নির্মাণ হয়েছে।

উত্তর–পূর্বাঞ্চলের যুবসম্প্রদায়ের কাছে ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রসঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। ২০১৪ সালের নিরিখে এই অঞ্চলে অপ্টিকাল ফাইবারের আওতায় এসেছে চার গুণ বেশি অঞ্চল। আর মেঘালয়ে এর পরিমাণ পাঁচ গুণ। ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের প্রত্যেকটি এলাকায় মোবাইল পরিষেবা উন্নত করার জন্য ৬ হাজার মোবাইল টাওয়ার বসানো হয়েছে। “মেঘালয়ের যুব সম্প্রদায়ের কাছে এই পরিকাঠামো নতুন সুযোগ এনে দেবে। শিক্ষা সংক্রান্ত পরিকাঠামোর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, আইআইএম এবং প্রযুক্তি সংক্রান্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় এই অঞ্চলের মানুষের কাছে কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ১৫০টিরও বেশি একলব্য স্কুল গড়ে তোলা হচ্ছে, যার মধ্যে ৩৯টি স্কুলই মেঘালয়ে।

শ্রী মোদী পর্বতমালা প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে রোপওয়ে নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বড় বড় উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি যাতে দ্রুত ছাড়পত্র পায়, তার জন্য পিএম ডিভাইন প্রকল্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। “পিএম ডিভাইনের আওতায় আগামী ৩-৪ বছরের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে”।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পূর্ববর্তী সরকারের উত্তর-পূর্বের জন্য ‘বিভাজন’ - এর মানসিকতা ছিল, কিন্তু আমাদের সরকার ‘পবিত্র’ এক উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে। “সম্প্রদায় বা ধর্ম আলাদা হতেই পারে, কিন্তু আমরা সবধরনের বৈষম্য দূর করেছি। আজ উত্তর-পূর্বে উন্নয়নের করিডর নির্মাণ করা হচ্ছে, সীমান্ত নিয়ে বিবাদের অবসান ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে”। শ্রী মোদী বলেছেন, গত ৮ বছরে বিভিন্ন সংগঠন হিংসার পথ পরিহার করে স্থায়ী শান্তির পথে এগিয়ে চলেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আফস্পার কথা উল্লেখ করেন। রাজ্য সরকারগুলির সহযোগিতায় এই অঞ্চলের পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে এবং দীর্ঘদিন ধরে চলা বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে যে বিবাদ ছিল, তা দূর করার কাজ চলছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এখন সীমান্তবর্তী এলাকার তকমা ঘুচিয়ে নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির প্রবেশ পথ হয়ে উঠেছে। ভাইব্রেন্ট ভিলেজ স্কিম – এর আওতায় সীমান্তবর্তী অঞ্চলের গ্রামগুলিতে উন্নত সুযোগ-সুবিধা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শত্রুদের যাতে সুবিধা না হয়, সেই আশঙ্কায় এই অঞ্চলগুলিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়ন ঘটানো হয়নি। “আজ আমরা নতুন নতুন রাস্তা, সুড়ঙ্গ, সেতু, রেলপথ এবং ছোট ছোট বিমানবন্দর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে গড়ে তুলছি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে এখন প্রাণের স্পন্দন অনুভূত হচ্ছে। আমাদের শহরগুলিতে যে গতিতে উন্নয়ন হয়ে থাকে, সেই গতি আমাদের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের জন্যও প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী পোপের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, আজ মানবজাতি যেসব সমস্যার সম্মুখীন, তাঁরা সেই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সকলের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট সব সমস্যার সমাধান হবে – এই সিদ্ধান্তে তাঁরা উপনীত হয়েছেন। “আমাদের এই ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে”।

বর্তমান সরকারের শান্তি ও উন্নয়নের রাজনীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেছেন, এই মানসিকতার সবচেয়ে বেশি সুফল পেয়েছেন আমাদের আদিবাসী সমাজ। আদিবাসী সমাজে ঐতিহ্য, ভাষা এবং সংস্কৃতি বজায় রেখে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের উন্নয়ন নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বাঁশ চাষের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের উদাহরণ তুলে ধরেন। আজ আদিবাসী সমাজের মানুষেরা বাঁশ দিয়ে নানা উপকরণ তৈরি করছেন। “বন থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন উপাদান বিক্রির জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৮৫০টি বন ধন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এই কাজে বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা যুক্ত হয়েছেন। আমাদের বোনরা এর মধ্যে বেশ কিছু গোষ্ঠীর পরিচালনা করেন”।

শ্রী মোদী বলেছেন, আবাস, জল এবং বিদ্যুৎ সংযোগের মতো সামাজিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্বাঞ্চল প্রভূত উপকৃত হয়েছে। গত কয়েক বছরে এই অঞ্চলে ২ লক্ষ নতুন বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দরিদ্র মানুষদের জন্য ৭০ হাজার গৃহ নির্মাণের পাশাপাশি, ৩ লক্ষ বাড়িতে নলবাহিত জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। “আমাদের আদিবাসী পরিবারগুলি এই প্রকল্পগুলির সুবিধা সবচেয়ে বেশি পেয়েছে”।

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, এই অঞ্চলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের মানুষের আশীর্বাদেই উত্তর-পূর্বাঞ্চলে উন্নয়ন বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি আসন্ন বড়দিন উপলক্ষে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে মেঘালয়ের রাজ্যপাল অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার ডঃ বি ডি মিশ্র, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী কনরাড কে সাংমা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী জি কিষাণ রেড্ডি, শ্রী কিরেণ রিজিজু, শ্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, প্রতিমন্ত্রী শ্রী বি এল ভার্মা, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী এন বীরেন সিং, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী জোরামথাঙ্গা, আসামের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নেইফিও রিও, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী প্রেম সিং তামাং, অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পেমাখান্ডু এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মানিক সাহা উপস্থিত ছিলেন।

প্রেক্ষাপট:

এই অঞ্চলের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী ফোর-জি মোবাইল টাওয়ার জাতিকে উৎসর্গ করেছেন। এর মধ্যে ৩২০টির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আরও ৮৯০টির কাজ শেষের পথে। এছাড়াও, তিনি উমসাওলিতে আইআইএম শিলং – এর নবনির্মিত ক্যাম্পাস, শিলং – এর নতুন স্যাটেলাইট টাউনশিপের সঙ্গে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য শিলং – ডিয়েংপাসো সড়ক এবং মেঘালয়ের সঙ্গে মণিপুর ও অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশে ৪টি সড়ক প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী মাশরুম উন্নয়ন কেন্দ্রে স্পাওন গবেষণাগার এবং সুসংহত মৌ পালন উন্নয়ন কেন্দ্র ছাড়াও মিজোরাম, মণিপুর, ত্রিপুরা ও আসামে ২১টি হিন্দি পাঠাগারও উদ্বোধন করেছেন। এই মৌ পালন উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে মৌ পালনকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

শ্রী মোদী আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরা – এই ৬টি সড়ক প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। এছাড়াও, তিনি তুরায় সুসংহত আতিথেয়তা ও সম্মেলন কেন্দ্র এবং শিলং টেকনোলজি পার্কের দ্বিতীয় পর্বের শিলান্যাসও করেছেন। দেড় লক্ষ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে পার্কের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলবে। এর ফলে, আরও ৩ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সুসংহত আতিথেয়তা ও সম্মেলন কেন্দ্রে একটি কনভেনশন হাব, অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা এবং ফুড কোড থাকবে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে পর্যটনের প্রসারে সহায়তা করতে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলিকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে সাহায্য করবে।

 

PG/CB/SB



(Release ID: 1885238) Visitor Counter : 146