প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী ‘যথাস্থানে বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্প – এর আওতায় দিল্লির কালকাজিতে নবনির্মিত ৩০২৪টি ফ্ল্যাটের উদ্বোধন করেছেন


ভূমিহীন ক্যাম্পের যোগ্য ঝুপড়িবাসীদের হাতে ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দেওয়া হয়েছে

“প্রত্যেকের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য দেশ ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও সবকা প্রয়াস’ – এর পথ অনুসরণ করছে”

“আমাদের সরকার দরিদ্র জনসাধারণের সরকার। নীতি-নির্ধারণ ও নীতি গ্রহণের সময় দরিদ্ররা অগ্রাধিকার পান”

“যখন জীবনে নিরাপত্তা থাকে, তখন দরিদ্র মানুষ নিজেকে দারিদ্র্যের কবল থেকে মুক্ত করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন”
“আপনাদের জীবনের পরিবর্তন আনার জন্য আমরা রয়েছি”

“পিএম – ইউডিএওয়াই প্রকল্পের মাধ্যমে দিল্লির অবৈধ কলোনীগুলিকে বৈধতা দিতে গৃহ নির্মাণের কাজ চলছে”

“কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্য হ’ল দিল্লিকে দেশের রাজধানী শহর হিসাবে যথাযথভাবে গড়ে তুলতে সবধরনের সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন একটি শহর হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা”

“দিল্লির দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত নাগরিকরা উচ্চাকাঙ্খী ও প্রতিভাবান”

Posted On: 02 NOV 2022 6:13PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০২ নভেম্বর, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে ‘যথাস্থানে বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্প’ – এর আওতায় দিল্লির কালকাজিতে নবনির্মিত ৩,০২৪টি ফ্ল্যাটের উদ্বোধন করেছেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি ভূমিহীন ক্যাম্পের যোগ্য ঝুপড়িবাসীদের হাতে ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দেন।

এই উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটি দিল্লির শত শত পরিবারের কাছে স্মরণীয়। বহু ঝুপড়িবাসী পরিবারের জীবনের নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কালকাজি এক্সটেনশনের প্রথম পর্যায়ে ৩ হাজারেরও বেশি বাড়ি ইতোমধ্যেই নির্মিত হয়েছে। খুব শীঘ্রই এই এলাকার বাকি বাসিন্দারাও তাঁদের নতুন বাড়িতে বসবাসের সুযোগ পাবেন। “আমি নিশ্চিত যে, কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগগুলি দিল্লিকে এক আদর্শ শহর হিসাবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন্ করবে”। দিল্লির মতো বড় শহরে এ ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়িত হওয়ায় বহু মানুষের স্বপ্ন পূরণ হল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হয়েছে দরিদ্র মানুষদের কঠোর পরিশ্রম ও উদ্যোগের কারণে। “এইসব দরিদ্র মানুষদের এ ধরনের মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য করা হয়েছিল। যখন একটি শহরে এ ধরনের অসাম্য দেখা যায়, তখন সেই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ে আমরা কিভাবে ভাববো? স্বাধীনতার অমৃতকালে আমাদের এই অসাম্য দূর করতে হবে। প্রত্যেকের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য দেশ ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও সবকা প্রয়াস’ – এর পথ অনুসরণ করছে”। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক দশক ধরে দেশের প্রশাসনের ভাবনা ছিল দারিদ্র্য হল শুধুমাত্র গরীব মানুষদের ভাবনার বিষয়। কিন্তু আমাদের সরকার দরিদ্র মানুষের সরকার। আর তাই তাঁদের কথা না ভেবে এই সরকার থাকতে পারে না। শ্রী মোদী বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে নীতি-নির্ধারণ ও নীতি গ্রহণের সময় দরিদ্ররাই অগ্রাধিকার পান। এই সরকার শহরাঞ্চলের গরীব মানুষদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ছিল, যখন দিল্লিতে ৫০ লক্ষ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল না। তাঁরা ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতেন। “তাঁরা দিল্লিতেই থাকতেন, অথচ দিল্লি তাঁদের থেকে অনেক দূরে ছিল”। বর্তমান সরকার এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটায়। গরীব মানুষদের জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়। এর ফলে, দিল্লির দরিদ্র মানুষরা প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের সুবিধা লাভ করেন। এর মধ্যে রাস্তার হকাররাও এই সুবিধা পাচ্ছেন। আজ বহু মানুষ ইউপিআই ব্যবহার করছেন। স্বনিধি প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার রাস্তার হকার আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এক দেশ, এক রেশন কার্ড - ব্যবস্থার মাধ্যমে দিল্লির মানুষের সহজ জীবনযাত্রা আমরা নিশ্চিত করেছি”। অতিমারীর সময়ে দরিদ্র মানুষরা এই উদ্যোগের মাধ্যমে যথেষ্ট উপকৃত হয়েছেন। গত দু’বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ দরিদ্র মানুষ বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দিল্লিতেই ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। আজ দিল্লির ৪০ লক্ষ দরিদ্র মানুষ বীমার আওতায় এসেছেন। জন ঔষধি প্রকল্পের আওতায় এখন চিকিৎসার খরচ কমেছে। “যখন জীবনে নিরাপত্তা থাকে, তখন দরিদ্র মানুষ নিজেকে দারিদ্র্যের কবল থেকে মুক্ত করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। যতক্ষণ না তাঁরা দারিদ্র্যের কবল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন, ততক্ষণ কোনও বিশ্রাম নেন না”। এই কাজটি কোনও ব্যয়বহুল বিজ্ঞাপন ছাড়াই নীরবে হয়ে থাকে। এর কারণ, “আপনাদের জীবনের পরিবর্তন আনার জন্য আমরা রয়েছি”।  

দিল্লির অবৈধ কলোনীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষরা তাঁদের জীবনযাত্রা নিয়ে সবসময়েই উদ্বেগের মধ্যে থাকেন। “কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লির বাসিন্দাদের এই উদ্বেগ নিরসনে উদ্যোগী হয়েছে। “পিএম – ইউডিএওয়াই প্রকল্পের মাধ্যমে দিল্লির অবৈধ কলোনীগুলিকে বৈধতা দিতে গৃহ নির্মাণের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন”। তিনি আরও বলেন, গরীব ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি যাতে তাঁদের বাড়ি তৈরি করতে পারেন, তার জন্য সরকার তাঁদের সুদ বাবদ ৭০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। 

শ্রী মোদী বলেছেন, “দিল্লির মানুষদের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করতে আমাদের সরকার সবধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্য হ’ল দিল্লিকে দেশের রাজধানী শহর হিসাবে যথাযথভাবে গড়ে তুলতে সবধরনের সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন একটি শহর হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা”। লালকেল্লার প্রাকার থেকে উচ্চাকাঙ্খী সমাজ সম্পর্কে তাঁর ভাষণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিল্লির দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত নাগরিকরা উচ্চাকাঙ্খী ও প্রতিভাবান। 

জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লির উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৪ সালে এই অঞ্চলে মেট্রো রেলের যাত্রাপথ ছিল ১৯০ কিলোমিটার। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪০০ কিলোমিটার। গত ৮ বছরে ১৩৫টি নতুন মেট্রো স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে, মানুষের সময় ও অর্থ – দুই-ই বেঁচেছে। দিল্লির যানজট কমাতে সরকার ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তাঘাট চওড়া করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে, আর্বান এক্সটেনশন রোড, মহাসড়কের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অক্ষরধাম থেকে বাঘপত – এর মধ্যে ছয় লেনের সড়ক নির্মাণ এবং গুরুগ্রাম ও সোহানা রোডের এলিভেটেড করিডর নির্মাণের বিষয়গুলি উল্লেখ করেন।

শ্রী মোদী জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লির জন্য দ্রুতগতির রেল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানান। নতুন দিল্লি রেল স্টেশনের সংস্কারের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দ্বারকায় ৮০ হেক্টর জমির উপর ভারত বন্দনা পার্কের কাজ সম্পন্ন হতে চলেছে। “ডিডিএ দিল্লির ৭০০টি বড় উদ্যানকে রক্ষণা-বেক্ষণ করে। ওয়াজিরাবাদ ব্যারেজ থেকে ওখলা ব্যারেজ পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার পথে বেশ কয়েকটি উদ্যান গড়ে তোলা হবে”। 

আজ যাঁরা গৃহ প্রবেশ করছেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য তাঁদের এলইডি বাল্ব ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও, কলোনীর বাসিন্দারা জলের অপচয়, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা সহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁরা যাতে সতর্ক থাকেন, সে বিষয়ে তিনি সকলকে খেয়াল রাখতে  বলেন। আজ কেন্দ্রীয় সরকার কোটি কোটি দরিদ্র মানুষদের জন্য গৃহ নির্মাণ করছে, তাঁদের বাড়িতে নলবাহিত জল সরবরাহ নিশ্চিত করছে, বিদ্যুৎ সংযোগ এবং উজ্জ্বলা প্রকল্পের মাধ্যমে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার পৌঁছে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন  বস্তি মানেই একটি অপরিচ্ছন্ন স্থান – সেই ধারণা থেকে আজ আমরা বেরিয়ে আসছি। “দিল্লি ও দেশের উন্নয়নে প্রত্যেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে আমি আশাবাদী। প্রত্যেক নাগরিকের অবদানে দিল্লি ও ভারতের উন্নয়ন যাত্রা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে”।   

অনুষ্ঠানে দিল্লির উপ-রাজ্যপাল শ্রী বিনয় কুমার সাক্সেনা, কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী হরদীপ সিং পুরী, দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রী কৌশল কিশোর, বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতী মীণাক্ষি লেখি সহ সাংসদরা উপস্থিত ছিলেন। 

প্রেক্ষাপট

সকলের জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন পূরণের অঙ্গ হিসাবে দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩৩৭টি বস্তি অঞ্চলে ‘যথাস্থানে বস্তি পুনর্বাসন’প্রকল্পের আওতায় গৃহ নির্মাণ করছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের মানুষদের উন্নত ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবনধারণের জন্যই এই উদ্যোগ। কালকাজি এক্সটেনশন, জেইলরওয়ালাবাগ ও কাঠকুলি কলোনীতে তিনটি এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। কালকাজি এক্সটেনশনে পর্যায়ক্রমে ভূমিহীন ক্যাম্প, নবজীবন ক্যাম্প ও জওহর ক্যাম্পে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। প্রথম পর্বে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষদের জন্য নিকটবর্তী বাণিজ্যিক অঞ্চলে ৩ হাজার ২৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে। ভূমিহীন ক্যাম্পের বাসিন্দাদের নবনির্মিত এই ফ্ল্যাটগুলিতে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। এই খোলা জায়গায় আগামী দিনে দ্বিতীয় পর্বে নবজীবন ক্যাম্প ও জওহর ক্যাম্পের বাসিন্দাদের পুর্নবাসন দেওয়া হবে।   

৩৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে ৩ হাজার ২৪টি ফ্ল্যাট। এখানে রান্নাঘরে টাইলস্ বসানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে বিদ্যুতের সাব-স্টেশন, সোয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, লিফট্, ভূ-গর্ভস্থ জলাধার সহ নানা ধরনের অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকছে। বাসিন্দারা যাতে নিজেদের নিরাপদ মনে করেন, তার জন্য তাঁদের প্রয়োজনীয় নথিপত্র দেওয়া হবে।  

 

PG/CB/SB



(Release ID: 1874472) Visitor Counter : 238