প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী অন্ধ্রপ্রদেশের ভীমাভরমে কিংবদন্তী স্বাধীনতা সংগ্রামী আল্লুরি সীতারামা রাজু’র বর্ষব্যাপী ১২৫তম জন্মজয়ন্তীর সূচনা করলেন

প্রধানমন্ত্রী আল্লুরি সীতা রামা রাজুর ৩০ ফুট দীর্ঘ ব্রোঞ্জ মূর্তির আবরণ উন্মোচন করলেন
“স্বাধীনতা সংগ্রাম শুধুমাত্র কিছু বছরের কিছু এলাকার অথবা কিছু মানুষের ইতিহাস নয়”
“আল্লুরি সীতারামা রাজু ভারতের সংস্কৃতি, আদিবাসী পরিচয়, শৌর্য, আদর্শ এবং মূল্যবোধের প্রতীক”
আমাদের নতুন ভারত আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্নের ভারত হওয়া উচিৎ। সেই ভারত – যেখানে দরিদ্র, কৃষক, শ্রমিক, অনগ্রসর আদিবাসী সকলেই সমান সুযোগ পাবেন
“বর্তমানে নতুন ভারতে নতুন নতুন সুযোগ, পথ, ভাবনা প্রক্রিয়া এবং সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে এবং আমাদের যুবসমাজ এইসব সম্ভাবনা পূরণ করার দায়িত্ব নিয়েছে”
“অন্ধ্রপ্রদেশ নায়ক এবং দেশপ্রেমীদের ভূমি”
“১৩০ কোটি ভারতবাসী প্রতিটি সমস্যাকেই বলছেন ‘দম হ্যায় তো হামে রোক লো’ – যদি পারো আমাদের থামাও”

Posted On: 04 JUL 2022 1:13PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৪ জুলাই, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ অন্ধ্রপ্রদেশের ভীমাভরমে কিংবদন্তী স্বাধীনতা সংগ্রামী আল্লুরি সীতারামা রাজু’র বর্ষব্যাপী ১২৫তম জন্মজয়ন্তীর সূচনা করলেন। অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী বিশ্বভূষণ হরিচন্দন, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ওয়াই এস জগন মোহন রেড্ডি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী জি কিষাণ রেড্ডি অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতি-স্থলে উপস্থিতদের উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের মতো মূল্যবান ঐতিহ্যের এই মহান ভূমিকে নমস্কার জানানোর সুযোগ পেয়ে বাধিত বোধ করছেন। তিনি আজাদি কা অমৃত মহোৎসব আল্লুরি সীতারামা রাজু’র ১২৫তম জন্মজয়ন্তী এবং রাম্পা বিদ্রোহের ১০০ বছর একসঙ্গে পূর্তির উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী মহান ‘মান্যম বীরুডু’ আল্লুরি সীতারামা রাজু’কে স্মরণ করেন এবং সমগ্র দেশের পক্ষ থেকে তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবার-পরিজনের সঙ্গে দেখা হওয়ায় হর্ষও প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী ‘আদিবাসী পরম্পরা’ এবং অন্ধ্রপ্রদেশের ঐতিহ্য থেকে উৎসারিত স্বাধীনতা সংগ্রামীদেরও শ্রদ্ধা জানান।

প্রধানমন্ত্রী জানান যে, আল্লুরি সীতা রামা রাজু গারুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী এবং রাম্পা ক্রান্তির শতবর্ষ সারা বছর ধরে পালিত হবে। তিনি বলেন, পান্ডরঙ্গীতে তাঁর জন্মস্থান, চিন্তাপল্লী পুলিশ থানার সংস্কার, মোগাল্লুতে আল্লুরি ধ্যান মন্দির নির্মাণ, এই কাজগুলি অমৃত মহোৎসবের উদ্দেশ্যের প্রতীক। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, আজকের এই অনুষ্ঠানে প্রতিফলিত হচ্ছে যে, প্রত্যেকেই আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নায়কোচিত কাজ সম্পর্কে সচেতন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রাম শুধুমাত্র কিছু বছরের কিছু এলাকার অথবা কিছু মানুষের ইতিহাস নয়। এই ইতিহাস ভারতের প্রত্যেকটি অঞ্চলের আত্মত্যাগ, দৃঢ়চিত্ততার ইতিহাস। তিনি আরও বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস দেশের বৈচিত্র্য, সংস্কৃতি এবং ঐক্যের শক্তির প্রতীক”।

আল্লুরি সীতারামা রাজু’কে ভারতের সংস্কৃতি, আদিবাসী পরিচিতি, শৌর্য, আদর্শ এবং মূল্যবোধের প্রতীক হিসাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সীতারামা রাজু গারুর জন্ম থেকে আত্মত্যাগ পর্যন্ত তাঁর জীবনযাত্রা আমাদের সকলের কাছে অনুপ্রেরণা। তিনি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন আদিবাসী সমাজের অধিকার, তাঁদের আনন্দ-দুঃখ এবং দেশের স্বাধীনতার জন্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আল্লুরি সীতারামা রাজু ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ যা দেশকে একসূত্রে বেঁধে রেখেছে তার প্রতীক”।

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ভারতের অধ্যাত্মবোধ আল্লুরি সীতারামা রাজু’কে দিয়েছিল সহমর্মিতা ও করুণা, আদিবাসী সমাজের পরিচিতি ও সাম্যের বোধ, জ্ঞান ও সাহস। আল্লুরি সীতারামা রাজুর যৌবনকাল এবং রাম্পা বিদ্রোহে যাঁরা তাঁদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, তাঁদের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, তাঁদের আত্মত্যাগ আজও সমগ্র দেশের প্রাণশক্তি এবং অনুপ্রেরণার উৎস। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের যুবসমাজ স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিল। আজ যুবসমাজের সামনে সুবর্ণ সুযোগ দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসার”। তিনি উল্লেখ করেন যে, “এখন নতুন নতুন সুযোগ, পথ, ভাবনা প্রক্রিয়া এবং সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে নতুন ভারতে এবং আমাদের যুবসমাজ সেই সম্ভাবনা পূরণে দায়িত্ব নিচ্ছে”।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্ধ্রপ্রদেশ নায়ক ও দেশপ্রেমীদের ভূমি। এখানে ছিলেন পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়ার মতো স্বাধীনতার নায়ক, যিনি দেশের পতাকা তৈরি করেছিলেন। এই ভূমি কানেগান্তি হনুমান্থু, কান্ডুকুরি বীরসালিঙ্গম পান্তুলু এবং পত্তি শ্রীরামুলুর মতো নায়কদের ভূমি। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, আজ আমাদের সকল দেশবাসীর দায়িত্ব অমৃতকালে এইসব স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্ন পূরণ করা। আমাদের নতুন ভারতকে হতে হবে তাঁদের স্বপ্নের ভারত। সেই ভারত – যেখানে দরিদ্র, কৃষক, শ্রমিক, অনগ্রসর, আদিবাসীদের জন্য থাকবে সমান সুবিধা। প্রধানমন্ত্রী জানান যে, গত আট বছরে সরকার দেশের জনজাতি সমাজের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এই প্রথম আদিবাসী মিউজিয়াম তৈরি করা হয়েছে আদিবাসীদের গর্ব ও দেশের ঐতিহ্য প্রদর্শনের জন্য। অন্ধ্রপ্রদেশের লাম্বাসিঙ্গিতে ‘আল্লুরি সীতারামা রাজু মেমোরিয়াল ট্রাইবাল ফ্রিডম ফাইটার্স মিউজিয়াম’ও তৈরি করা হচ্ছে। একইভাবে, ১৫ নভেম্বর ভগবান বীরসা মুন্ডার জন্ম দিনটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় জনজাতীয় গৌরব দিবস হিসাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, বিদেশী শাসকরা সবচেয়ে বেশি অত্যাচার করেছে জনজাতির উপর এবং চেষ্টা করেছে তাঁদের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, আজ দক্ষ ভারত মিশনের মাধ্যমে জনজাতির শিল্প ও দক্ষতা নতুন পরিচয় পাচ্ছে। ‘ভোকাল ফর লোকাল’ জনজাতির শিল্প দক্ষতাকে উপার্জনের মাধ্যম করে তুলছে। তিনি বলেন, বহু পুরনো আইনে জনজাতি মানুষের বাঁশের মতো বনজ সম্পদ কাটায় নিষেধাজ্ঞা ছিল, সেগুলি আমরা পরিবর্তন করেছি এবং তাদের বনজ সম্পদের অধিকারও দিয়েছি। একই রকমভাবে, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য সংগ্রহের জন্য বনজ সম্পদের সংখ্যা ১২ থেকে বাড়িয়ে ৯০-এরও বেশি করা হয়েছে। ৩ হাজারেরও বেশি বন গণ বিকাশ কেন্দ্র এবং ৫০ হাজারেরও বেশি বন গণ স্বনির্ভর গোষ্ঠী জনজাতি পণ্য ও শিল্পকে আধুনিক সুবিধার সঙ্গে সংযুক্ত করছে। উচ্চাকাঙ্খী জেলা কর্মসূচি প্রভূতভাবে সাহায্য করবে জনজাতি জেলাগুলিকে এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে ৭৫০টিরও বেশি একলব্য মডেলের বিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে এবং মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষায় উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে জাতীয় শিক্ষা নীতিতে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মান্যম বিরুডু’ আল্লুরি সীতারামা রাজু ব্রিটিশদের সঙ্গে তাঁর লড়াইয়ে দেখিয়েছিলেন যে – ‘দম হ্যায় তো মুঝে রোক লো’ – যদি পারো আমাকে আটকাও। বর্তমানেও দেশ নানারকম সমস্যার সম্মুখীন। সেই একই সাহসের সঙ্গে ১৩০ কোটি দেশবাসী একতা ও শক্তির সঙ্গে প্রত্যকটি সমস্যাকে বলছে ‘দম হ্যায় তো হামে রোক লো’।

প্রেক্ষাপট

আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অঙ্গ হিসাবে সরকার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বীকৃতিদান এবং সারা দেশের মানুষকে তাঁদের সম্পর্কে অবহিত করায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই উদ্যোগের অঙ্গ হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কিংবদন্তী স্বাধীনতা সংগ্রামী আল্লুরি সীতারামা রাজুর বর্ষব্যাপী ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উদযাপনের সূচনা করলেন ভীমাভরমে। ১৮৯৭ সালের ৪ঠা জুলাই জন্ম নিয়েছিলেন আল্লুরি সীতারামা রাজু। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তিনি স্মরণীয়। পূর্বঘাট পর্বতমালা অঞ্চলে জনজাতি মানুষের স্বার্থ রক্ষায় তিনি লড়াই করেছিলেন। ১৯২২ সালে শুরু হওয়া রাম্পা বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে স্থানীয় মানুষ বলতেন, ‘মান্যম বীরুডু’ (অরণ্য নায়ক)।

বর্ষব্যাপী উদযাপনের অঙ্গ হিসাবে সরকার একাধিক উদ্যোগের পরিকল্পনা করেছে। বিজয় নগরম গ্রাম জেলার পান্ডরঙ্গিতে আল্লুরি সীতারামা রাজুর জন্মস্থান এবং চিন্তাপল্লী পুলিশ থানার  (রাম্পা বিদ্রোহের শতবর্ষ উপলক্ষে – এই থানার উপর আক্রমণ দিয়েই সূচনা হয়েছিল রাম্পা বিদ্রোহের) সংস্কার করা হবে। এছাড়াও, মোগাল্লুতে আল্লুরি সীতারামা রাজুর ধ্যানমগ্ন একটি মূর্তি সহ আল্লুরি ধ্যানমন্দির নির্মাণ, দেওয়াল চিত্র এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর আলাপচারিতামূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রামীর জীবন কাহিনী বর্ণনার প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে সরকার।                                

PG/AP/SB



(Release ID: 1839162) Visitor Counter : 164