প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

‘বাণিজ্য ভবন’ এবং ‘নির্যাত’ পোর্টালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 23 JUN 2022 12:53PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৩ জুন, ২০২২

মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী পীযূষ গোয়েলজি, শ্রী সোম প্রকাশজি এবং শ্রীমতী অনুপ্রিয়া প্যাটেলজি, শিল্প, বাণিজ্য ও রপ্তানী ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সহকর্মীরা, বিশিষ্টজন, ভদ্রমহোদয়া ও ভদ্রমহোদয়গণ!

নতুন ভারতের নাগরিক-কেন্দ্রিক প্রশাসনের পথ চলায় আজ আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হল। গত আট বছর ধরে দেশ এই পথ অনুসরণ করেই এগিয়ে চলেছে। আজ আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন নতুন ‘বাণিজ্য ভবন’ এবং রপ্তানী বাণিজ্যের জন্য একটি পোর্টাল উপহার হিসেবে দেশকে দেওয়া হল। এগুলির মধ্যে একটি কায়িক পরিকাঠামো এবং অন্যটি ডিজিটাল পরিকাঠামোর প্রতিনিধিত্ব করে যার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর ভারতের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আমাদের প্রশাসনের ইতিবাচক পরিবর্তন প্রতিফলিত হয়। এই উপলক্ষে শিল্প ও বাণিজ্য জগতের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে, বিশেষত অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের অভিনন্দন জানাই। আজ দেশের প্রথম শিল্পমন্ত্রী ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণ বার্ষিকী। তাঁর নীতি, সিদ্ধান্ত এবং সঙ্কল্প স্বাধীন ভারতকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দেশ আজ তাঁকে সশ্রদ্ধ চিত্তে শ্রদ্ধা জানায়।

বন্ধুগণ,

আমি নিশ্চিত যে নতুন বাণিজ্য ভবনে আপনারা নতুন উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রবেশ করবেন। সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করা এবং সহজ জীবনযাত্রার জন্য আপনাদের অধ্যবসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দুটি চাহিদার সঙ্গে সহজ প্রাপ্তি্র বিষয়টি যুক্ত। সরকারের সঙ্গে যখন কেউ মতবিনিময় করবেন এবং বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করবেন তখন তিনি কোনও অসুবিধায় পড়তে চাইবেন না। গত আট বছরে প্রশাসনের ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ছিল ব্যাঙ্কিং এবং সরকারি নীতি প্রণয়নে ন্যূনতম চাহিদাগুলি যাতে পূরণ হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা। ‘মুদ্রা যোজনা’, বিভিন্ন নীতির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের উৎসাহিত করা, ব্যাঙ্ক ঋণ, গ্রাম ও ছোট ছোট শহরগুলিতে লক্ষ লক্ষ রাস্তার হকারের জন্য ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করার মত শিল্পোদ্যোগীদের সাহায্যের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে হাজার হাজার নতুন শিল্পোদ্যোগের বিকাশ হয়েছে। সরকারের প্রকল্পগুলির সুবিধা যখন বৈষম্যহীনভাবে প্রত্যেকের কাছে পৌঁছয় তখন সার্বিক বিকাশ নিশ্চিত হয়। নতুন এই বাণিজ্য ভবনের সহজ প্রাপ্তি এবং সর্বস্তরের উন্নয়নের প্রতিফলন দেখা দেওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত।

বন্ধুগণ,

এসওপি, অর্থাৎ স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর বা সাধারণ পরিচালন বিধি - কথাগুলির সঙ্গে আপনারা সকলেই পরিচিত। আগে সরকারের এসওপি-র মানে ছিল একটি প্রকল্প শুরু করা, কিন্তু সেই প্রকল্প শেষ হবে কিনা তার কোনও নিশ্চয়তা ছিল না। রাজনৈতিক স্বার্থে বিভিন্ন ঘোষণা করা হত ঠিকই, কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে সেগুলি শেষ করার ক্ষেত্রে কারোর কোনও চিন্তাভাবনা ছিল না। এই ভাবনা থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি,  তার উদাহরণ এই ভবনটি। ২০১৮ সালের ২২ জুন এই ভবনের শিলান্যাস আমিই করেছিলাম, আর দেখুন কি অদ্ভুত সমাপতন, আজ ২০২২-এর ২৩ জুন আমিই এই বাড়িটি উদ্বোধন করছি। এই সময়কালে করোনার জন্য বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে, কিন্তু যে সঙ্কল্প আমরা নিয়েছিলাম তার জন্য আজ এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হল। নতুন ভারতের এটিই নতুন এসওপি। শিলান্যাসের দিন কোনও প্রকল্পের যে সময়সীমা ধার্য করা হবে সেটি বাস্তবায়িত করা হবে। আপনারা গত কয়েক বছর ধরে দিল্লিতে এ ধরনের নানা উদাহরণ দেখতে পাবেন। দিনকয়েক আগেই আমি প্রগতি ময়দানের কাছে সুসংহত যোগাযোগ করিডরটির উদ্বোধন করি। বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্য হল, প্রকল্পগুলিকে দীর্ঘদিন ফেলে না রেখে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা এবং সরকারি প্রকল্পের যে উদ্দেশ্য সেটি সফল করা। এভাবেই দেশের করদাতাদের আমরা সম্মান জানাব। আর এখন ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’-এর মতো অত্যাধুনিক একটি পরিকল্পনা আমরা হাতে নিয়েছি। নতুন ভারতের উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিষয়টি মনে রেখে নতুন এই বাণিজ্য ভবন দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে উৎসাহের সঞ্চার করবে।

বন্ধুগণ,

শিলান্যাস থেকে উদ্বোধনের সময়কালে বাণিজ্য ক্ষেত্রে আমাদের সাফল্যগুলি আজ বাণিজ্য ভবনের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত। এই ভবনের শিলান্যাসের সময় আমি উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলাম এবং আন্তর্জাতিক উদ্ভাবন সূচকে ওপরে উঠে আসার বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। আজ সেই সূচকে আমাদের স্থান ৪৬ এবং আমরা ক্রমশ ওপরে উঠে আসছি। শিলান্যাসের দিন সহজে ব্যবসা করার বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছিলাম। আজ যখন এই ভবনটির উদ্বোধন হচ্ছে, সেই সময় ৩২ হাজার অহেতুক আইন বিলোপ করা হয়েছে। আপনারা ভাবতে পারছেন, ৩২ হাজার আইন! যখন এই ভবনের শিলান্যাস করা হয়েছিল তার কয়েক মাস আগে জিএসটি বাস্তবায়িত হয়। সেই সময় জিএসটি-কে নিয়ে নানা সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছিল। আজ প্রতি মাসে ১ লক্ষ কোটি টাকা জিএসটি সংগ্রহ করা নিতান্ত স্বাভাবিক একটি ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিলান্যাসের দিন আমরা ‘জেম’ পোর্টালে ৯ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর বরাত পাওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলাম। আজ এই পোর্টালে ৪৫ লক্ষ ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগী নাম নথিভুক্ত করেছেন। এখানে ২.২৫ লক্ষ কোটি টাকার পণ্যসামগ্রীর বরাত দেওয়া হয়েছে।

বন্ধুগণ,

২০১৪ সালে দেশে মোবাইল তৈরির কারখানা ছিল দুটি। বাণিজ্য ভবনের শিলান্যাসের সময়ে আমি জানিয়েছিলাম, দেশে এ ধরনের কারখানার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২০। আজ এই ধরনের কারখানা ২০০-র বেশি। একটা সময় আমরা মোবাইল ফোন আমদানি করতে বাধ্য হতাম। আজ আমরা বিশ্বের বৃহত্তম মোবাইল ফোন রপ্তানীকারী দেশ হয়ে উঠছি। চার বছর আগে ভারতে আর্থিক প্রযুক্তি সংক্রান্ত নতুন শিল্পোদ্যোগের সংখ্যা ৫০০-ও ছিল না। আজ সেই সংখ্যা ২,৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। প্রতি বছর আমরা ৮ হাজার নতুন শিল্পোদ্যোগ বা স্টার্ট-আপকে স্বীকৃতি দিচ্ছি। বর্তমানে এই সংখ্যা ১৫ হাজার অতিক্রম করেছে। বিশ্বজুড়ে মহামারীর আবহে আমরা যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের কারণে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছি।

বন্ধুগণ,

নতুন ভারত গড়ার লক্ষ্যে যে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি তার আদর্শ উদাহরণ আমাদের রপ্তানী বাণিজ্য ব্যবস্থা। এই ভবনের শিলান্যাসের দিন আমরা সঙ্কল্প নিয়েছিলাম, ভারতকে উৎপাদন শিল্পের গন্তব্য স্থল হিসেবে গড়ে তুলব, আন্তর্জাতিক স্তরে রপ্তানী বাণিজ্যে ভারতের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করব। গত বছর বিশ্বজুড়ে নানা সমস্যার কারণে সরবরাহ শৃঙ্খল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারত ৬৭ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বা ৫০ লক্ষ কোটি টাকার পণ্যসামগ্রী রপ্তানী করেছে। আপনারা বুঝতেই পারছেন, এই সাফল্য অভূতপূর্ব। গত বছর দেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সব ধরনের সমস্যা সত্ত্বেও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে রপ্তানীর পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বা ৩০ লক্ষ কোটি টাকা অর্জন করতে হবে। আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণে সফল হয়েছি। বর্তমানে ৪১ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার বা ৩১ লক্ষ কোটি টাকার পণ্যসামগ্রী রপ্তানী সম্ভব হয়েছে।

বন্ধুগণ,

গত কয়েক বছরে এই সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে আমরা আমাদের রপ্তানী বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি করেছি। এই লক্ষ্য পূরণে আমাদের দ্বিগুণ পরিশ্রম করতে হবে। এক্ষেত্রে সকলের যৌথ উদ্যোগের প্রয়োজন। এখানে শিল্প ও রপ্তানী উন্নয়ন পরিষেদের সদস্যরা রয়েছেন। আপনাদের সকলের কাছে আমার অনুরোধ, স্বল্পমেয়াদি কোনও পরিকল্পনা না করে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ধার্য করুন। কিভাবে সেই লক্ষ্য অর্জন করা যায় তা নিশ্চিত করতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সরকার কিভবে আপনাদের সহযোগিতা করবে সেটিও আপনারা আমাদের জানান।

বন্ধুগণ,

জাতীয় আমদানী-রপ্তানী সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের বার্ষিক মূল্যায়ন সংক্রান্ত নতুন পোর্টাল ‘নির্যাত’ – এর সূচনা এই লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। রপ্তানীকারক, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, রাজ্য সরকার সহ সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকে এই পোর্টাল থেকে সঠিক তথ্য পাবেন। এর ফলে আমাদের শিল্প জগৎ এবং রপ্তানীকারকদের প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা হবে। বিশ্বের ২০০টির বেশি দেশের ৩০টির বেশি পণ্যসামগ্রীর আমদানি সংক্রান্ত তথ্য এই পোর্টাল থেকে আপনারা পাবেন। খুব শীঘ্রই জেলা-ভিত্তিক রপ্তানী সংক্রান্ত তথ্যও এই পোর্টালে দেওয়া হবে। আগামীদিনে ‘এক জেলা-এক পণ্য’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এই পোর্টাল সহায়ক হবে কারণ, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আমরা এই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি। এর মধ্য দিয়ে জেলাগুলিকে রপ্তানী বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আমি নিশ্চিত, রপ্তানী বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির মধ্যে এর ফলে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। আমরা রাজ্যগুলির মধ্যে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা চাই। কোন রাজ্য কতটা পণ্য রপ্তানী করল, কোন কোন জায়গায় পণ্যসামগ্রী রপ্তানী করা সম্ভব হল এবং পণ্য রপ্তানীর ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যের দিকটি বিবেচনা করা এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বন্ধুগণ,

আমরা যদি বিভিন্ন দেশের উন্নয়ন যাত্রার বিষয়টি পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব, সেইসব দেশে যখন রপ্তানীর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে তখন তাদের বিকাশ নিশ্চিত হয়েছে। তাই, উন্নয়নশীল রাষ্ট্র থেকে উন্নত রাষ্ট্র হয়ে উঠতে রপ্তানী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এক্ষেত্রে কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভরতার সুযোগও বাড়বে। গত আট বছর ধরে ভারত তার রপ্তানী বাণিজ্যের পরিমাণ ক্রমশ বাড়িয়ে আসছে এবং রপ্তানী ক্ষেত্রে লক্ষ্য পূরণ করছে। রপ্তানী বাণিজ্য বৃদ্ধি, সহজে পণ্য উৎপাদন এবং তা নতুন নতুন বাজারে পৌঁছে দেওয়ার মধ্য দিয়ে রপ্তানী বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এখন আমরা পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। এর ফলে আমাদের রপ্তানী বাণিজ্যের পরিমাণ আরও বাড়বে। আপনারা জানেন, উৎপাদন শিল্পের প্রসার ঘটাতে উৎসাহ-ভিত্তিক উৎপাদন প্রকল্প কতটা সহায়ক হয়েছে। আমাদের রপ্তানীকারকদের থেকে মতামত সংগ্রহের ফলে আমরা এই নীতির পরিবর্তন ঘটিয়েছি। আজ সরকারের প্রতিটি মন্ত্রক, প্রতিটি দপ্তর রপ্তানী বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়াতে সম্পূর্ণ সরকারি উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রক, কৃষি মন্ত্রক কিংবা বাণিজ্য মন্ত্রক – সবার মূল উদ্দেশ্য একটিই। আজ আমাদের রপ্তানী বাণিজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যসামগ্রী বিপুল সংখ্যায় স্থান পেয়েছে। অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দেশে নতুন নতুন ক্ষেত্রে রপ্তানী বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এর ফলে রপ্তানীর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে, একইসঙ্গে উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলার সংখ্যাও বেড়েছে। বস্ত্র ও বস্ত্রবয়ন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত পণ্যসামগ্রীর রপ্তানীর পরিমাণ ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় তৃণমূল স্তরে বিভিন্ন উদ্যোগের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। ‘ভোকাল ফর লোকাল’ এবং ‘এক জেলা-এক পণ্য’ উদ্যোগের মাধ্যমে সরকার স্থানীয় পণ্যসামগ্রী রপ্তানী করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। এখন আমাদের দেশে তৈরি পণ্যসামগ্রী বহু দেশে প্রথমবার রপ্তানী হয়েছে। স্থানীয় স্তরে উৎপাদিত পণ্য বর্তমানে প্রকৃত অর্থেই আন্তর্জাতিকতার ছোঁয়া পাচ্ছে। সীতাভোগ মিষ্টি এবং নারকেলের নাড়ু বাহরিনে রপ্তানী হচ্ছে। নাগাল্যান্ডের তাজা ঝাল লঙ্কা লন্ডনের বাজারে পৌঁছেছে। আসাম থেকে বার্মিজ আঙুর দুবাইতে রপ্তানী হয়েছে। ছত্তিশগড়ের বনাঞ্চলের আমাদের আদিবাসী ভাই ও বোনেদের মহুয়া ফুল ফ্রান্সে এবং কার্গিলের খুমানি দুবাইতে রপ্তানী শুরু হয়েছে। আরুবা, বেরিজ, বার্মুডা, গ্রেনাডা এবং স্যুইজারল্যান্ডে হস্তশিল্পের বিভিন্ন সামগ্রী নতুন বাজার পাচ্ছে। আমাদের কৃষক, তন্তুবায় এবং বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী উৎপাদনকারীরা বর্তমানে তাঁদের উৎপাদিত সামগ্রীর ওপর জিআই ট্যাগ ব্যবহার করতে পারছেন। এর ফলে ঐসব সামগ্রী বিদেশে রপ্তানী করা সম্ভব হচ্ছে। গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরশাহী এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমরা বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। অন্যান্য দেশের সঙ্গেও এর ইতিবাচক দিক অনুভূত হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে আমি আমাদের বিভিন্ন দূতাবাসগুলির ভূমিকার প্রশংসা করি। ভারতের পণ্যসামগ্রী রপ্তানীর জন্য নতুন নতুন সুযোগ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করতে আমাদের দূতাবাসগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

বন্ধুগণ,

ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন নতুন বাজার খুঁজে পাওয়া এবং সেই বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করা দেশের উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতীতে আমাদের ব্যবসায়ীরা দেখেছেন, পারস্পরিক আস্থা ও অংশীদারিত্বের মধ্য দিয়ে কিভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। স্বাধীনতার অমৃতকালে সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে যাতে সরবরাহ শৃঙ্খল আরও শক্তিশালী হয়। এই ধারনার ওপর ভিত্তি করে আমরা সংযুক্ত আরব আমিরশাহী এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছি। অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গেও এ ধরনের চুক্তি রূপায়ণের ক্ষেত্রেও আমরা দ্রতগতিতে এগিয়ে চলেছি।

বন্ধুগণ,

গত আট বছর ধরে এই সাফল্য প্রত্যেক ভারতীয়কে গর্বিত করেছে। এই উৎসাহ নিয়েই আমরা আগামী ২৫ বছর স্বাধীনতার অমৃতকালে বিভিন্ন সঙ্কল্প বাস্তবায়নে কাজ করব। আজ এই নতুন ভবন ও পোর্টালটি উদ্বোধন করা হল, কিন্তু আমাদের দায়িত্ব এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। নতুন লক্ষ্য অর্জনে আরও সঙ্কল্পবদ্ধ হয়ে নতুন উদ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। প্রত্যেক দপ্তরকে আমি নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই পোর্টাল এবং যে মঞ্চটি তৈরি করা হল, তার কাজের মূল্যায়ন করতে বলব। এইভাবে যদি কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সেটির সমাধান করা যাবে।  আমি শিল্প জগৎ এবং রপ্তানী বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সকলকে অনুরোধ জানাব, সরকারকে তাঁরা তাঁদের প্রয়োজনীয় চাহিদার কথা জানান এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে উদ্ভাবনমূলক পরামর্শ দিন। আমরা সকলে মিলে সেইসব সমস্যার সমাধান করব। আপনারা ‘নির্যাত’ পোর্টালটি দেখুন এবং এখানে আর কি কি যোগ করা প্রয়োজন বা কোন কোন বৈশিষ্ট্য বাদ দিলে ভালো হয় সেগুলি জানান। জেলাস্তরে রপ্তানী বাণিজ্য বৃদ্ধি করার জন্য কি কি করা উচিৎ? আমরা চাই জেলাস্তরে রপ্তানী বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর একটি প্রতিযোগিতা গড়ে উঠুক যার মূল ভাবনা থাকবে - কেউ এই প্রতিযোগিতায় হারবে না এবং এর জন্য কোনও বিরূপ প্রভাব পড়বে না। আমাদের উৎপাদকদের বিশ্বমানের প্যাকেজিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সকলের উদ্যোগ, অর্থাৎ ‘সবকা প্রয়াস’-এর মাধ্যমে প্রত্যেকের পরামর্শ বিবেচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। আরও একবার এই নতুন ভবনের জন্য আমি সকলকে অভিনন্দন জানাই। এই পবিত্র প্রকল্পটিতে অংশগ্রহণের জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানোয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। অনেক ধন্যবাদ! আপনাদের অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

PG/CB/DM


(Release ID: 1836781) Visitor Counter : 203