প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী ৪৪তম দাবা অলিম্পিয়াডের ঐতিহাসিক মশাল রিলের সূচনা করেছেন


ভারত প্রথমবার দাবা অলিম্পিয়াডের আয়োজন করছে

ফিডে-র সভাপতি প্রধানমন্ত্রীকে নেতৃত্বদানের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন

“এই সম্মান শুধুমাত্র ভারতের নয়, বরং এটি দাবার গৌরবজ্জ্বল ঐতিহ্যের সম্মান”

“আমি আশা করি ভারত এ বছর পদক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড তৈরি করবে”

“যদি যথাযথ সহযোগিতা ও সঠিক পরিবেশের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে দূর্বল মানুষও যেকোন লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন”

“টার্গেট অলিম্পিক্স পোডিয়াম স্কিম (টিওপিএস)-এর মতো প্রকল্প এবং ভারতের দূরদর্শী ক্রীড়া নীতি গ্রহণের সুফল পাওয়া শুরু হয়েছে”

“আগে যুব সম্প্রদায়কে সঠিক মঞ্চের জন্য অপেক্ষা করতে হত। আজ খেলো ইন্ডিয়া কর্মসূচির মাধ্যমে দেশ প্রতিভার অন্বেষণ করছে এবং তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে”

“আপনারা কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তা করবেন না বা কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না, আপনাদের ক্ষমতার ১০০ শতাংশ কাজে লাগান”

Posted On: 19 JUN 2022 6:50PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লী,  ১৯  জুন, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লীর ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে ৪৪তম দাবা অলিম্পিয়াডের ঐতিহাসিক মশাল রিলের সূচনা করেছেন। ফিডে-র  সভাপতি মিঃ আর্কাডে ডভোরকোভিচ মশালটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী ওই মশাল গ্র্যান্ডমাস্টার বিশ্বনাথন আনন্দকে হস্তান্তরিত করেন। আগামী ৪০ দিন চেন্নাইয়ের কাছে মহাবলীপুরমে পৌঁছানোর আগে মশালটি দেশের ৭৫টি শহরে ঘুরবে। প্রত্যেক শহরে একজন দাবার গ্র্যান্ডমাস্টার রাজ্যের পক্ষ থেকে মশাল গ্রহণ করবেন। অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী খেলো দাবা প্রতিযোগিতা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন। তিনি দাবার প্রথম চালটি দেন। দ্বিতীয় চাল শ্রীমতী কোনেরু হাম্পি দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর এবং শ্রী নিশীথ অধিকারী ছাড়াও দাবাড়ু, দাবাপ্রেমী, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।

সারা বিশ্বজুড়ে দাবাকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য ভারত সরকার যে মশাল রিলের আয়োজন করেছে ফিডে-র  সভাপতি মিঃ ডভোরকোভিচ তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানান। “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতির জন্য ফিডে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ এবং আমরা এরজন্য সম্মানিত বোধ করছি।” এই প্রসঙ্গে তিনি ২০১০ সালে একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের কথা উল্লেখ করন। ওই ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই দাবা খেলেন। ফিডে-র  সভাপতি আশা করেন সারা বিশ্বে এবং ভারতে স্কুল স্তরে দাবা খেলা একটি বিষয় হয়ে উঠবে। “ভারতে দ্রুততম হারে দাবা খেলার প্রসার ঘটছে এবং এরজন্য গর্ব অনুভব করার যথেষ্ট কারণ আপনাদের রয়েছে। দাবার স্বার্থে আপনার নেতৃত্বে যে অসাধারণ কাজগুলি হয়েছে তারজন্য আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।”

এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আজ দাবা অলিম্পিয়াডে প্রথমবারের মতো মশাল রিলে ভারত থেকে শুরু হল। এই প্রথম ভারত দাবা অলিম্পিয়াড আয়োজন করার সুযোগ পেয়েছে। আমরা গর্বিত যে খেলার জন্মস্থান ভারত, সেই খেলা আজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরেছে। অনেক দেশ এই খেলার বিষয়ে অত্যন্ত উৎসাহী। বহু শতাব্দী আগে এই খেলার মশাল ভারত থেকে চতুরঙ্গ হিসেবে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরেছিল। আজ দাবা অলিম্পিয়াডে প্রথম মশাল ভারত থেকে তার যাত্রা শুরু করল। যখন ভারত স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন করছে, অমৃত মহোৎসবের এই সময়কালে দাবা অলিম্পিয়াডের মশাল দেশের ৭৫টি শহর সফর করবে। এফআইডিই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রত্যেক দাবা অলিম্পিয়াডের মশাল রিলে ভারত থেকে শুরু হবে। আমি এই সিদ্ধান্তের জন্য এফআইডিই এবং তার সমস্ত সদস্যদের অভিনন্দন জানাই।”

প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে দাবার ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষ বিভিন্ন বিষয়বস্তুর বিশ্লেষণ করার জন্য এবং সমস্যার সমাধান করতে চতুরঙ্গ বা দাবার উদ্ভাবন করেছেন। আজ দাবা ভারত থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পৌঁছেছে এবং জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। শিক্ষার একটি মাধ্যম হিসেবে দাবাকে শিশু এবং তরুণ-তরুণীদের জন্য ব্যবহার করা হয়।” এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দাবা খেলায় ভারত যথেষ্ট উন্নতি করছে। এ বছর দাবা অলিম্পিয়াডে ভারতীয় দল সর্ববৃহৎ। প্রধানমন্ত্রী আশা করেন ভারত এ বছর পদক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড তৈরি করবে।

শ্রী মোদী বলেছেন, দাবার মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনের বহু বিষয় উপলব্ধি করতে পারি। জীবনের যেকোন অধ্যায়ে সঠিক বিষয়কে সমর্থন করার শিক্ষা দাবা থেকে আমরা পাই। “দাবার প্রত্যেক গুটির নিজস্ব ক্ষমতা ও শক্তি রয়েছে। যদি আপনি যেকোন একটি গুটিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করেন তাহলে তা সবথেকে শক্তিশালী হয়ে উঠবে। দাবার বোর্ডের এই বিশেষত্ব আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়। যদি যথাযথ সহযোগিতা ও সঠিক পরিবেশ দেওয়া যায় তাহলে দুর্বল মানুষও যেকোন লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন।”

দাবার আর একটি শিক্ষার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দাবার আর একটি বৈশিষ্ট্য হল এর দূরদর্শিতা। দাবার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি স্বল্পমেয়াদী কোনো সাফল্যের চাইতে দূরদর্শী পদক্ষেপ প্রকৃত সাফল্য নিয়ে আসে।” প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে বলেন, “টার্গেট অলিম্পিক্স পোডিয়াম স্কিম (টিওপিএস বা টপস) প্রকল্প এবং ভারতের দূরদর্শী ক্রীড়া নীতির কারণে এখন বিভিন্ন সুফল পাওয়া যাচ্ছে।”   

টোকিও অলিম্পিক্স, প্যারালিম্পিক্স, টমাসকাপ এবং বক্সিং-এ সাম্প্রতিক সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশে  প্রতিভা, সাহস, নিষ্ঠা এবং যুবশক্তির কোনো অভাব নেই। আগে যুব সম্প্রদায়কে সঠিক মঞ্চের জন্য অপেক্ষা করতে হত। আজ খেলো ইন্ডিয়া কর্মসূচির মাধ্যমে দেশ প্রতিভার অন্বেষণ করছে এবং তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।” খেলো ইন্ডিয়া কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আজ ক্রীড়া প্রতিভা উঠে আসছে। দেশের বিভিন্ন শহর এবং জেলায় অত্যাধুনিক ক্রীড়া পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। নতুন শিক্ষা ব্যবস্থায় খেলাধুলাকে একটি বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। শরীরচর্চা, ক্রীড়া বিজ্ঞানের মতো নতুন নতুন বিষয় উঠে আসছে। দেশে ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী খেলোয়াড়দের উপর প্রত্যাশার যে চাপ রয়েছে সেই প্রসঙ্গটি তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন। তিনি তাঁদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তা করবেন না বা কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না, আপনাদের ক্ষমতার ১০০ শতাংশকে আপনারা কাজে লাগান।” দেশ খেলোয়াড়দের অধ্যাবসায় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। খেলাধুলায় যেমন হার-জিত থাকে, একইসঙ্গে বারবার জয়লাভের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তিনি দাবা খেলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, এই খেলায় একটা চালে ভুল হলে মাথা ঘামিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। তাই মাথা ঠান্ডা রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এই প্রসঙ্গে যোগ এবং ধ্যানের কথা উল্লেখ করেন। দৈনন্দিন জীবনে যোগকে অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ করে তোলার জন্য এবং আসন্ন আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে অংশগ্রহণে তিনি সকলকে আহ্বান জানান।

এই প্রথম আন্তর্জাতিক দাবা সংগঠন ফিডে  অলিম্পিকের ঐতিহ্য অনুসারে দাবা অলিম্পিয়াডে মশাল রিলের সূচনা করেছে। ভারত হল প্রথম দেশ যেখানে এই উদ্যোগ নেওয়া হল। দাবার জন্মস্থান ভারত। তাই ভবিষ্যতে দাবা অলিম্পিয়াডে ভারত থেকেই মশাল যাত্রার সূচনা হবে, যা সব মহাদেশ ঘুরে আয়োজক দেশে পৌঁছাবে।

৪৪তম দাবা অলিম্পিয়াড আগামী  ২৮ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে। ১৯২৭ সাল থেকে এই অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই প্রথম ভারতে এবং ৩০ বছর পরে এশিয়া মহাদেশে দাবা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হবে। ১৮৯টি দেশ থেকে প্রতিযোগীরা অংশ নেবেন। এবারই সবথেকে বেশি দাবাড়ু এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন।   

 

PG/CB/NS



(Release ID: 1836154) Visitor Counter : 176