প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

শ্রী রাম বাহাদুর রাইয়ের বইপ্রকাশ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

Posted On: 18 JUN 2022 9:57PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লী,  ১৮  জুন, ২০২২

 

নমস্কার !

আমাদের দেশের জনসাধারণকে মুনি-ঋষিরা অনুপ্রাণিত করার জন্য ‘চরৈবতি-চরৈবতি’ মন্ত্র দিয়েছেন।

একজন সাংবাদিকের জন্য এই মন্ত্রের অর্থ নতুন ধারনার সন্ধান করা এবং স্বাভাবিকভাবে সমাজের কাছে নতুন কোনো কিছু তুলে ধরা। রাম বাহাদুর রাই যেভাবে তাঁর সারাজীবন ধরে এই সাধনা চালিয়েছেন তারই ফলশ্রুতি হিসেবে আজ আমরা এই বইটি পেয়েছি। আমি আশা করবো এই বই ‘ভারতীয় সংবিধান-আনকাহি কাহানি’ দেশের সংবিধানকে আরও সর্বাত্মকভাবে আমাদের সামনে উপস্থাপিত করবে। এই মহান উদ্যোগের জন্য আমি রাম বাহাদুর রাইজি-কে এবং যাঁরা এই প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত তাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। 

বন্ধুগণ,

এখানে উপস্থিত সকলেই দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করছেন। দেশের স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব উদযাপিত হচ্ছে। ১৮ই জুন হল সেই দিন যেদিন মূল সংবিধানের প্রথম সংশোধনটি প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ স্বাক্ষর করেছিলেন। অর্থাৎ আমাদের স্বাধীনতার গতিশীল দিক সেদিন সকলে উপলব্ধি করেছেন। সংবিধানকে নিয়ে লেখা এই বই প্রকাশের একটি বিশেষত্ব রয়েছে। আমাদের সংবিধানের বড় শক্তি হল বিভিন্ন বৈচিত্রময় ধারণার সমাহার যা তথ্য ও সত্যের সন্ধান করার জন্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে। 

বন্ধুগণ,

আমাদের সংবিধান স্বাধীন ভারতের পরিকল্পনা এমনভাবে করেছে যেখানে বহু প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণ হবে। ১৯৪৬ সালের ৯ই ডিসেম্বর সংবিধান রচনার জন্য গণপরিষদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ স্বাধীনতা লাভের বহু আগেই এই বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং সময়ের নিরিখে এর তাৎপর্য অপরিসীম। যাঁরা ইতিহাস এবং সংবিধানের বিষয়ে ওয়াকিবহাল তাঁরা সকলেই এই বিষয়গুলির সম্পর্কে জানেন। কিন্তু আমি এর একটি আবেগপূর্ণ প্রেক্ষাপট অনুভব করছি। একটি চূড়ান্ত অনিশ্চিত সময়ে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন যখন নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, তখন দেশ তার স্বাধীনতার প্রতি পূর্ণ আস্থাশীল। স্বাধীনতার অনেক আগে দেশ স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং সংবিধান নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এর থেকে এটা স্পষ্ট যে ভারতের সংবিধান শুধুমাত্র একটি বই নয়, এটি একটি ধারণা, অঙ্গীকার এবং স্বাধীনতার প্রতি অটুট বিশ্বাস। 

বন্ধুগণ,

আজ স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের সময়কালে দেশ স্বাধীনতা আন্দোলনের বহু অজানা তথ্য সামনে তুলে আনছে। যেসব স্বাধীনতা সংগ্রামীরা তাঁদের সর্বস্ব বিসর্জন দিয়ে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন অথচ আজ তাদের কেউ মনে রাখেনি, যেসব ঘটনা স্বাধীনতা আন্দোলনকে নতুন দিশা দেখিয়েছে অথচ আজ তা বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছে, এমনকি যে আদর্শ স্বাধীনতা আন্দোলনে শক্তি যুগিয়েছে অথচ পরবর্তীতে সেগুলির কথা আমরা ভুলে গেছি- এগুলি সবই আজ প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে। দেশ আবারও এই বিষয়গুলিকে সংকলিত করছে যাতে অতীতের সেই চেতনা ভবিষ্যৎ ভারতকে শক্তিশালী করে তুলতে পারে। আজ ভারতের যুব সম্প্রদায় অজানা ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছেন এবং বই লিখছেন। অমৃত মহোৎসবের সময়কালে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। “ভারতীয় সংবিধান- অনুক্ত কাহানি” শীর্ষক বইটি এই উদ্যোগে গতির সঞ্চার করবে। স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে আমাদের সংবিধানের না বলা নানা কথা দেশের যুব সম্প্রদায়কে নতুনভাবে ভাবতে শেখাবে। রাম বাহাদুরজি তাঁর বইয়ের একটি কপি বেশ কয়েকদিন আগে আমার কাছে পাঠিয়েছিলেন। বইটির কয়েকটি পাতা উল্টাতে গিয়ে আমার বেশ কয়েকটি বিষয় নজরে এসেছে। রাম বাহাদুরজি, এক জায়গায় আপনি লিখেছেন, ‘ভারতের সংবিধানের ইতিহাসে স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি বিলুপ্ত ধারা স্থান পেয়েছে, এমনটি ভাবার কারণ নেই। আমাদের সংবিধানের বিষয়ে জানা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য।’ আপনি আপনার বইয়ের প্রথমেই লিখেছেন যে জরুরি অবস্থার সময়ে সংবিধানের বিষয়ে আপনার বিশেষ আগ্রহ জন্মায়। সেই সময় মিসা আইনে আপনি কারাবন্দী। তখনই সংবিধান আপনাকে আপনার অধিকার সম্পর্কে ভাবতে শেখায়। সংবিধান সম্পর্কে জানার নাগরিকের অধিকার বলে আপনি মনে করেন। অধিকার এবং কর্তব্যের এই মিশ্রণই আমাদের সংবিধানকে অনন্য করে তুলেছে। আপনার যদি অধিকার থাকে আপনার তাহলে কর্তব্য থাকবে। আর আপনার যদি কোনো কিছুর প্রতি কর্তব্য থাকে তাহলে অধিকারও সমানভাবে শক্তিশালী হয়। তাই স্বাধীনতার অমৃতকালে দেশ এখন কর্তব্যবোধ নিয়ে আলোচনা করছে এবং এই বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

বন্ধুগণ, 

যখন আমরা নতুন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি তখন জ্ঞান আমাদের আরও সচেতন করে তোলে। উপলব্ধির মাধ্যমে আমরা নতুন ধারণা পাই। তাই দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সংবিধানের ক্ষমতাকে উপলব্ধি করতে হবে। গান্ধীজি সংবিধানের বিষয়ে কিভাবে আমাদের মধ্যে ধারণা গড়ে তুলেছেন, সর্দার প্যাটেল কিভাবে ধর্মের ভিত্তিতে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলুপ্ত করে ভারতীয় সংবিধানকে সাম্প্রদায়িকতা থেকে মুক্ত করেছেন, কিভাবে ডঃ আম্বেদকর সংবিধানের প্রস্তাবনা রচনা করেছেন ও এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের ভাবনাকে রূপ দিয়েছেন এবং কিভাবে ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদের মতো বিদ্বান মানুষেরা সংবিধানকে ভারতের আত্মার সঙ্গে যুক্ত করতে উদ্যোগী হয়েছেন এসব তথ্য এই বই থেকে পাওয়া যাবে। এগুলির মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবো। 

বন্ধুগণ,

ভারত হল মুক্তমনা একটি দেশ। স্থবিরতা আমাদের স্বভাবে নেই। গণপরিষদের গঠন নিয়ে বিতর্ক, সংবিধানকে গ্রহণ করা থেকে তার বর্তমান অবস্থা- প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আমরা এর গতিশীল এবং প্রগতিশীল চরিত্রটি উপলব্ধি করতে পারি। আমরা তর্ক করি, প্রশ্ন তুলি, বিতর্কে জড়িয়ে পড়ি আর প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করি। আমি নিশ্চিত যে এই ধারাবাহিকতাকে আমাদের জনসাধারণ ভবিষ্যতেও বজায় রাখবেন। আমরা ভবিষ্যতেও গবেষণা চালিয়ে যাবো এবং আরও উন্নত ভবিষ্যৎ গড়বো। আপনারা দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজ এইভাবেই দেশের গতিশীলতাকে নেতৃত্ব দেবেন, এই বিশ্বাস নিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি। 

অনেক অনেক ধন্যবাদ !

(প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি হিন্দিতে দিয়েছেন)।

 

PG/CB/NS


(Release ID: 1835613) Visitor Counter : 208