প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদে আইসিআরআইএসএটি-র ৫০তম বর্ষপূর্তি উদযাপনের সূচনা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 05 FEB 2022 6:26PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

 

তেলেঙ্গানার মাননীয় রাজ্যপাল ডঃ তামিলসাই সৌন্দর রাজনজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমরজি, শ্রী জি কিষাণ রেড্ডিজি, আইসিআরআইএসএটি-র ডায়রেক্টর জেনারেল মহোদয়, অনলাইন মাধ্যমে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে,  বিশেষ করে, আফ্রিকার দেশগুলি থেকে এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হওয়া গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ আর এখানে উপস্থিত ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ!

আজ বসন্ত পঞ্চমীর পবিত্র উৎসব। আজ আমরা জ্ঞানের দেবী মা সরস্বতীর পূজা করি। আপনারা সবাই যে ক্ষেত্রে রয়েছেন তার ভিত্তি তো জ্ঞান-বিজ্ঞান, উদ্ভাবন এবং আবিষ্কারও। সেজন্য বসন্ত পঞ্চমীর দিন এহেন উৎসবের আয়োজন একটি বিশেষ গুরুত্ব নিয়ে আসে। আপনাদের সবাইকে এই গোল্ডেন জুবিলি সেলিব্রেশন, এই সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ উদযাপনের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা!

বন্ধুগণ,

একটি প্রতিষ্ঠনের জীবনে ৫০ বছর একটি অনেক বড় সময় হয়, আর এই ৫০ বছরের যাত্রাপথে যখন, যিনি, যেভাবেই অবদান রেখেছেন, তাঁরা সকলেই অভিনন্দনের অধিকারী। এই প্রতিষ্ঠনের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গত ৫০ বছরে যাঁরা যাঁরা চেষ্টা করেছেন, আমি তাঁদেরকেও আজ অভিনন্দন জানাচ্ছি। এটাও একটা অদ্ভূত সংযোগ যে আজ যখন ভারত তার স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উৎসব পালন করছে, তখন আপনাদের সংস্থা ৫০ বছরের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। যখন ভারত তার স্বাধীনতার শতবর্ষ পালন করবে, তখন আপনারা ৭৫তম বর্ষ পালন করবেন। যেভাবে ভারত আগামী ২৫ বছরের জন্য তার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে, তা নিয়ে কাজ করা শুরু করে দিয়েছে, তেমনই আগামী ২৫ বছর আইসিআরআইএসএটি-এর জন্যও ততটা গুরুত্বপূর্ণ।

বন্ধুগণ,

আপনাদের কাছে পাঁচ দশকের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই পাঁচ দশকে আপনারা ভারত সহ বিশ্বের একটি বড় অংশকে কৃষির উন্নতিকল্পে সাহায্য করেছেন। আপনাদের গবেষণা, আপনাদের প্রযুক্তি উদ্ভাবন অনেক কঠিন পরিস্থিতিতে কৃষিকে সহজ, টেকসই এবং সুদূরপ্রসারী করে তুলেছে। একটু আগেই আমি যে টেকনলজি ডিসপ্লে বা প্রযুক্তির প্রদর্শন দেখেছি তাতে আইসিআরআইএসএটি-র প্রচেষ্টাগুলির সাফল্য সর্বতোভাবেপরিলক্ষিত হয়। জল এবং মাটি ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে ক্রপ ভ্যারাইটি বা ফসলের বৈচিত্র্য এবং প্রোডাকশন প্র্যাক্টিসেস বা উৎপাদনের নানা পন্থায় সংস্কার, অন ফার্ম ডাইভার্সিটি বৃদ্ধি, লাইভস্টক ইন্টিগ্রেশন এবং কৃষকদের বাজারের সঙ্গে যুক্ত করা – এই হলিস্টিক অ্যাপ্রোচ বা সার্বিক ও সর্বসমন্বয়ী     দৃষ্টিকোণ নিশ্চিতভাবেই কৃষিকে টেকসই এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কাজ করে। তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ডালের বিভিন্ন প্রজাতি, বিশেষ করে ছোলা মটর চাষে যে অগ্রগতি হয়েছে, সেখানে আপনাদের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষকদের সঙ্গে আইসিআরআইএসএটি-এর কোলাবোরেটিভ অ্যাপ্রোচ বা সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি কৃষিকে আরও শক্তিশালী করবে, সমৃদ্ধ করবে। আজ ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ রিসার্চ ফেসিলিটি কোলাবোরেটিভ অ্যাপ্রোচ’ বা জলবায়ু পরিবর্তনের গবেষণা ও উদ্ভিদের নিরাপত্তায় আর ‘র‍্যাপিড জেনারেশন অ্যাডভান্সমেন্ট ফেসিলিটি’ বা দ্রুত প্রজননের উন্নতির সুবিধা রূপে নতুন নতুন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই গবেষণার ব্যবস্থাগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যার মোকাবিলায় কৃষি জগতকে অত্যন্ত সাহায্য করবে। আপনারা জানেন, পরিবর্তিত আবহাওয়ায় আমাদের নানা কৃষি প্রক্রিয়ায় কি ধরনের পরিবর্তন আসা উচিৎ। তেমনই ভারত একটি অনেক বড় উদ্যোগ নিয়েছে যাতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যত ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় আসে, সেখানে মানুষের মৃত্যু নিয়ে আলোচনা সামনে আসে, কিন্তু পরিকাঠামোর যে লোকসান হয় তা গোটা ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে দেয়। সেজন্য ভারত সরকার ‘ক্লাইমেট রেজিস্ট্যান্স’ বা আবহাওয়া পরিবর্তনজাত বিপর্যয়রোধী পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য নানা ধরনের ভাবনাচিন্তা এবং প্রকল্প রচনার জন্য বিশ্বমানের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। আজ তেমনই একটি কাজ এই কৃষিক্ষেত্রের জন্য হচ্ছে। আপনারা সকলেই এজন্য অভিনন্দনের যোগ্য।

বন্ধুগণ,

এমনিতে জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের সমস্ত জনগণকেই প্রভাবিত করে, কিন্তু এর দ্বারা সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন সমাজের নিচুতলার মানুষেরা, প্রান্তিক মানুষেরা - যাঁদের কাছে রিসোর্স-এর অভাব রয়েছে, যাঁরা সম্পদহীন, যাঁরা উন্নয়নের সিঁড়িতে ওপরে ওঠার জন্য পরিশ্রম করছেন, তাঁদের মধ্যে বৃহৎ সংখ্যক মানুষ হলেন আমাদের ক্ষুদ্র কৃষকরা, আর ভারতে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ কৃষকই ক্ষুদ্র কৃষক। আবহাওয়া পরিবর্তন উদ্ভূত নানা বিপর্যয় আমাদের ক্ষুদ্র কৃষকদের জীবনে অনেক বড় সঙ্কট হয়ে আসে। সেজন্য ভারত জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যার মোকাবিলা করতে বিশ্ববাসীর নজর এদিকে ঘোরানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। ভারত ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ‘নেট জিরো’ লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে। আমরা ‘লাইফ মিশন’ (লাইফস্টাইল মিশন ফর এনভায়রনমেন্ট)-এর প্রয়োজনকেও হাইলাইট করেছি। তেমনই ‘প্রো-প্ল্যানেট পিপল’ একটা এমন মুভমেন্ট যা জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার জন্য প্রত্যেক কমিউনিটিকে, প্রত্যেক ব্যক্তিকে ‘ক্লাইমেট রেসপন্সিলিবিলিটি’বা জলবায়ুর প্রতি দায়বদ্ধতার  সঙ্গে যুক্ত করে, আর এই যুক্ত করা শুধু কথার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ রেখে নয়, ভারত সরকারের পদক্ষেপের মধ্যেও এটা প্রতিফলিত হয়। বিগত বছরগুলির এই প্রচেষ্টাগুলিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে এ বছরের বাজেটে ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন’কে অনেক বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এই বাজেট প্রত্যেক স্তরে, প্রত্যেক ক্ষেত্রে পরিবেশ-বান্ধব ভবিষ্যতের জন্য ভারতের দায়বদ্ধতাকে উৎসাহ যোগানো বাজেট।

বন্ধুগণ,

আবহাওয়া এবং অন্যান্য অনুঘটকের কারণে ভারতের কৃষির সামনে যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলির মোকাবিলায় ভারতের নানা প্রচেষ্টার সঙ্গে আপনারা প্রত্যেকেই এক একজন বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী, টেকনিশিয়ান রূপে খুব ভালোভাবেই অবহিত। আপনাদের মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তিই এটা জানেন, ভারতে ১৫টি ‘অ্যাগ্রো-ক্লাইমেটিক জোন’ রয়েছে। আমাদের দেশে বসন্ত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত এবং শীত – এই ছয়টি ঋতুও আসে। অর্থাৎ, আমাদের কাছে কৃষির সঙ্গে অনেক বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং অনেক প্রাচীন অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই অভিজ্ঞতাগুলি থেকে যেন বিশ্বের অন্যান্য দেশও লাভবান হয় তা সুনিশ্চিত করতে আইসিআরআইএসএটি-এর মতো সংস্থাগুলিকেও তাদের প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে। আজ আমরা দেশের প্রায় ১৭০টি জেলায় ‘ড্রট প্রুফিং’-এর সমাধান দিচ্ছি। জলবায়ু সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ থেকে আমাদের কৃষকদের বাঁচানোর জন্য আমরা ‘ফোকাস ব্যাক টু বেসিক্স’ এবং ‘মার্চ টু ফিউচার’ – এই দুই দৃষ্টিভঙ্গির ‘ফিউশন’ বা মেলবন্ধন করছি। আমাদের লক্ষ্য দেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি ক্ষুদ্র কৃষকরা - যাঁদেরকে আমাদের সবচাইতে বেশি প্রয়োজন। এই বাজেটেও আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে প্রাকৃতিক কৃষি এবং ‘ডিজিটাল এগ্রিকালচার’-এর ওপর অভূতপূর্ব জোর দেওয়া হয়েছে। একদিকে আমরা মিলেটস বা মোটা দানাশস্যের উৎপাদনের পরিমাণ ও পরিধি বৃদ্ধির ওপর জোর দিচ্ছি, রাসায়নিকমুক্ত কৃষির ওপর জোর দিচ্ছি, সেখানে অন্যদিকে সোলার পাম্প থেকে শুরু করে ‘কিষাণ ড্রোন’ পর্যন্ত কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির নানা সরঞ্জামকে উৎসাহ যোগাচ্ছি। স্বাধীনতার অমৃতকালে, অর্থাৎ আগামী ২৫ বছরে কৃষি উন্নয়নের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির একটি অনেক বড় অংশ হল এই প্রযুক্তিমুখীনতা।

বন্ধুগণ,

পরিবর্তিত ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ‘ডিজিটাল এগ্রিকালচার’। এটাই আমাদের ভবিষ্যৎ এবং এতে ভারতের মেধাবী যুবক-যুবতীরা অনেক ভালো কাজ করতে পারবেন। ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে আমাদের কৃষকদের ক্ষমতায়িত করা যেতে পারে, এর জন্য ভারতের প্রচেষ্টা নিরন্তর ক্রমবর্ধমান। ‘ক্রপ অ্যাসেসমেন্ট’ থেকে শুরু করে ‘ল্যান্ড রেকর্ডস’-এর ডিজিটাইজেশন, ড্রোনের মাধ্যমে কীটনাশক এবং বিভিন্ন পুষ্টিবর্ধক ঔষধ স্প্রে করা – এরকম অনেক পরিষেবাতে প্রযুক্তির ব্যবহার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার ক্রমবর্ধমান। কৃষকদের সুলভ এবং হাইটেক পরিষেবা দেওয়ার জন্য কৃষি গবেষণা সংক্রান্ত ইকো-সিস্টেম এবং প্রাইভেট এগ্রিটেক প্লেয়ার্সদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ এগিয়ে চলেছে। সেচের অভাব রয়েছে এরকম এলাকাগুলিতে কৃষকদের উন্নত বীজ, অধিক ফলনশীল বীজ, জল ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে আইসিএআর এবং আইসিআরআইএসএটি-এর অংশীদারিত্ব অত্যন্ত সফলভাবে কাজ করছে। এই সাফল্যকে ক্রমে ডিজিটাল কৃষিতেও সম্প্রসারিত করা হচ্ছে।

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার অমৃতকালে আমরা ‘হায়ার এগ্রিকালচারাল গ্রোথ’-এ মনোনিবেশ করার পাশাপাশি ‘ইনক্লুসিভ গ্রোথ’কেও অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আপনারা সবাই জানেন যে কৃষিক্ষেত্রে মহিলাদের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদেরকে সব ধরনের সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমেই চালানো হচ্ছে। কৃষিতে দেশের একটি বড় জনসংখ্যাকে দারিদ্র্য থেকে বের করে উন্নত জীবনশৈলীর দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। এই অমৃতকাল, কঠিন ভৌগোলিক পরিস্থিতিতে কৃষিকাজ করা কৃষকদের নানা প্রতিকূলতা দূর করার জন্য নতুন নতুন মাধ্যমও তাঁদের সামনে উপস্থিত করবে। আমরা দেখেছি, সেচের অভাবে দেশের একটা বড় অংশ ‘সবুজ বিপ্লব’-এর অংশ হয়ে উঠতে পারেনি। এখন আমরা দ্বিমুখী রণনীতি নিয়ে কাজ করছি। একদিকে আমরা জল সংরক্ষণের মাধ্যমে নদীগুলিকে যুক্ত করে একটি বড় এলাকাকে সেচের আওতায় নিয়ে আসছি, আর এখন এর গোড়ার দিকেই যত সাফল্য দেখছি তা অ  বুন্দেলখণ্ডে কিভাবে জল ব্যবস্থাপনাকে আর ‘প্রতি বিন্দুতে অধিক ফসল উৎপাদন’-এর অভিযানকে সফল করার ক্ষেত্রে কিভাবে সাফল্য এসেছে, একজন বৈজ্ঞানিক আমাদের সামনে তার বিস্তারিত বিবরণ দিচ্ছিলেন। তেমনই অন্যদিকে, আমরা কম সেচযুক্ত এলাকাগুলিতে ‘ওয়াটার ইউজ এফিশিয়েন্সি’ বা  জল ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের ওপর জোর দিচ্ছি। যে ফসলগুলি উৎপাদনে কম জলের প্রয়োজন হয় আর কম জল থাকলেও যেগুলির ফলনে প্রভাব পড়ে না, সেগুলিরও আধুনিক বৈচিত্র্যের বিকাশ এবং ফলনেও উৎসাহ যোগানো হচ্ছে। ভোজ্য তেলে আত্মনির্ভরতার জন্য আমরা যে জাতীয় মিশন শুরু করেছি, সেটাও আমাদের নতুন দৃষ্টিকোণকে তুলে ধরে। আগামী পাঁচ বছরে আমাদের লক্ষ্য পাম অয়েল ক্ষেত্রে ৬.৫ লক্ষ হেক্টর বৃদ্ধি করা। সেজন্য কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের প্রত্যেক স্তরে সাহায্য করছে। তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষকদের জন্যও একটি মিশন অত্যন্ত লাভজনক হবে। আমাকে বলা হয়েছে, তেলেঙ্গানার কৃষকরা পাম অয়েল প্ল্যান্টেশনের ক্ষেত্রে অনেক বড় লক্ষ্য রেখেছেন। তাঁদের সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যথাসম্ভব সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে।

বন্ধুগণ,

বিগত কয়েক বছরে ভারত তার ‘পোস্ট হার্ভেস্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার’কেও অত্যন্ত শক্তিশালী করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ৩৫ মিলিয়ন টনের কোল্ড চেন স্টোরেজ ক্যাপাসিটি গড়ে তুলেছে। সরকার যে ১ লক্ষ কোটি টাকার ‘এগ্রিকালচার ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড’ তৈরি করেছে, তার ফলে ‘পোস্ট হার্ভেস্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ দ্রুতগতিতে বিকশিত হয়েছে। আজ ভারতে আমরা এফপিও-গুলির এবং ‘এগ্রিকালচার ভ্যালু চেন’ গঠনের ওপরও অত্যন্ত জোর দিচ্ছি। দেশের ক্ষুদ্র কৃষকদের হাজার হাজার এপিও-র মাধ্যমে সংগঠিত করে আমরা তাঁদেরকে একটি সচেতন এবং বড় মার্কেট ফোর্স হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

বন্ধুগণ,

ভারতের ‘সেমি-অ্যারিড জোন’গুলিতে কাজ করার ক্ষেত্রে আইসিআরআইএসএটি-এর একটা দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেজন্য ‘সেমি-অ্যারিড জোন’গুলির জন্য আমরা সবাই মিলেমিশে, কৃষকদেরকে সঙ্গে নিয়ে, টেকসই ও সুদূরপ্রসারী এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তুলব। আপনাদের অভিজ্ঞতাগুলিকে পূর্ব এবং দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে শেয়ার করার জন্য ‘এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম’ও শুরু করা যেতে পারে। আমাদের লক্ষ্য শুধুই শস্য উৎপাদন বাড়ানো নয়। আজ ভারতের কাছে অতিরিক্ত খাদ্যশস্য রয়েছে যার ভিত্তিতে আমরা দেশে এত দীর্ঘ সময় ধরে বিশ্বের সর্ববৃহৎ খাদ্য সুরক্ষা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। এখন আমরা খাদ্য সুরক্ষার পাশাপাশি পুষ্টি সুরক্ষার দিকেও জোর দিয়েছি। এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিগত সাত বছর ধরে আমরা অনেক ‘বায়ো-ফর্টিফায়েড ভ্যারাইটিজ’-এর উন্নয়ন করেছি। এখন আমাদের কৃষিকে ‘ডাইভার্সিফাই’ করার জন্য আমাদের খরা প্রভাবিত ক্ষেত্রগুলিতে অধিক ফসল উৎপাদন সুনিশ্চিত করতে, ফসলের নানা রোগ, পোকা-মাকড় ও জীবাণু থেকে অধিক সুরক্ষা প্রদান করতে ‘রেজিলিয়েন্ট ভ্যারাইটিজ’ নিয়ে আমাদের বেশি বেশি কাজ করতে হবে।

বন্ধুগণ,

আইসিআরআইএসএটি, আইসিএআর এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে মিলে আরও একটি ক্ষেত্রে উদ্যোগ নিয়ে আমরা কাজ করতে পারি। এই ক্ষেত্রটি হল বায়ো-ফুয়েল বা জৈব জ্বালানির। আপনারা তো দীর্ঘকাল ধরেই ‘স্যুইট সরঘম’ নিয়ে কাজ করছেন। আপনারা এমন বীজ তৈরি করতে পারেন যেগুলির মাধ্যমে কৃষকরা খরাপ্রবণ এলাকায় কিংবা যে কৃষকদের কম জমি রয়েছে তাঁরা বেশি করে জৈব জ্বালানি প্রদানকারী ফসল উৎপাদন করতে পারেন। বীজের কার্যকরী বিতরণ সরবরাহ কেমন হবে, এই প্রক্রিয়ার প্রতি বিশ্বাস কিভাবে জন্ম নেবে তা নিয়েও আমাদের সবাইকে একসঙ্গে মিলেমিশে চিন্তাভাবনা ও কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে।

বন্ধুগণ,

আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে আপনাদের মতো উদ্ভাবক ও মেধাসম্পন্ন মানুষদের সহযোগিতায় গণ-অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আর সামাজিক দায়বদ্ধতা পালন করে আমরা কৃষি সংক্রান্ত সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করতে পারব। ভারত এবং বিশ্বের কৃষকদের জীবন উন্নত করতে আপনারা আরও সমর্থ হয়ে উঠুন, উন্নত থেকে উন্নততর প্রযুক্তিগত সমাধান দিতে থাকুন, এই কামনা নিয়ে আরও একবার আইসিআরআইএসএটি-এর এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় উপলক্ষে উদযাপনে, তার গরিমাময় অতীতকে অভিনন্দন জানিয়ে, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কামনা করে, দেশের কৃষকদের মর্যাদা, পরিশ্রম ও শৌর্য রূপে আপনাদের এই পরিশ্রম যেন কাজে লাগে এই শুভেচ্ছা জানিয়ে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা!

ধনবাদ!

 

CG/SB/DM/



(Release ID: 1795907) Visitor Counter : 158