প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী মণিপুরের ইম্ফলে একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন


“উত্তর-পূর্ব – নেতাজী যাকে ভারতের স্বাধীনতার প্রবেশদ্বার বলে অভিহিত করেছিলেন আজ তা নতুন ভারতের স্বপ্ন পূরণের প্রবেশদ্বার হতে চলেছে”

“উত্তর-পূর্বের সব সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য আমরা উদ্যোগী হয়েছি”

“আজ দেশের যুব সম্প্রদায় মণিপুরের খেলোয়াড়দের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হচ্ছে”

“স্থলবেষ্টিত রাজ্য থেকে মণিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে”

“আমরা মণিপুরে স্থিতাবস্থা বজায় রেখেছি এবং রাজ্যকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছি। ডবল ইঞ্জিন সরকারই শুধুমাত্র এই কাজ করতে পারে”

Posted On: 04 JAN 2022 3:14PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৪ জানুয়ারি, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মণিপুরের ইম্ফলে ১৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এগুলি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১,৮৫০ কোটি টাকা। ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নয়টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। এই প্রকল্পগুলির জন্য ২,৯৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। আজ যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন ও শিলান্যাস হয়েছে সেগুলির মধ্যে সড়ক পরিকাঠামো, পানীয় জল সরবরাহ, স্বাস্থ্য, নগরোন্নয়ন, আবাসন, তথ্যপ্রযুক্তি, দক্ষতা বিকাশ, কলা-সংস্কৃতি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্র রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি জাতীয় সড়ক প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। এগুলি নির্মাণে ব্যয় হবে ১,৭০০ কোটি টাকা। শ্রী মোদী ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে বরাক নদীর ওপর একটি ইস্পাতের সেতুর উদ্বোধন করেন। এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা। এর ফলে, শিলচর ও ইম্ফলের মধ্যে যানজট কমবে। তিনি মণিপুরের জনসাধারণের উদ্দেশে ২,৩৮৭টি মোবাইল টাওয়ার উৎসর্গ করেছেন। এগুলি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১,১০০ কোটি টাকা।  

প্রধানমন্ত্রী থৌবল বহুমুখী প্রকল্পের আওতায় জল সরবরাহ ব্যবস্থাপনার উদ্বোধন করেছেন। এই প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৮০ কোটি টাকা। বহুমুখি এই প্রকল্পের ফলে, ইম্ফল শহরে পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় সুবিধা হবে। এছাড়াও, এর সাহায্যে তামেংলং জেলার ১০টি জনপদে ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই প্রকল্পের ফলে সেনাপতি জেলা সদরে জল সরবরাহের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। একাজে ব্যয় হয়েছে ৫১ কোটি টাকা।  

শ্রী মোদী ইম্ফলে একটি অত্যাধুনিক ক্যান্সার হাসপাতালের শিলান্যাস করেছেন। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে এই হাসপাতাল নির্মাণে ব্যয় হয়েছে  ১৬০ কোটি টাকা। তিনি কিয়ামগেই-তে ২০০ শয্যার কোভিড হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। ডিআরডিও-র সহযোগিতায় এই হাসপাতাল নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩৭ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী, ইন্টিগ্রেটেড কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার, ইম্ফল নদীর পশ্চিম তীরের সৌন্দর্যায়নের প্রথম পর্যায় ও থাংগল বাজারে মল রোডের উন্নয়নের প্রথম পর্বের উদ্বোধন করেছেন। এগুলি ইম্ফল স্মার্ট সিটি প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছে।

শ্রী মোদী সেন্টার ফর ইনভেনশন, ইনোভেশন, ইনকিউবেশন অ্যান্ড ট্রেনিং – সিআইআইআইটি-র শিলান্যাস করেছেন। এটি নির্মাণে ব্যয় হবে ২০০ কোটি টাকা। এছাড়াও তিনি হরিয়ানার গুরগাওঁ-এ মণিপুর ইনস্টিটিউট অফ পারফর্মিং আর্টস-এর শিলান্যাস করেছেন। এই প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় ২৪০ কোটি টাকা।

প্রধানমন্ত্রী এই উপলক্ষে এক জনসভায় বলেন, আর কয়েকদিন পরেই ২১শে জানুয়ারি – মণিপুর রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস। এ বছর মণিপুর রাজ্য প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত হবে। সারা দেশ যখন স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ উপলক্ষে অমৃত মহোৎসব উদযাপন করছে, সেই পরিস্থিতিতে মণিপুরের জন্য এটি আরও একটি আনন্দের বিষয়।

মণিপুরের জনসাধারণের সাহসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ বিশ্বাস করেন ভারতের স্বাধীনতা মৈরাং থেকে শুরু হয়েছিল। এখানে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু প্রথমবার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। নেতাজী উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারতের স্বাধীনতার প্রবেশদ্বার বলে অভিহিত করতেন। আজ এই অঞ্চল নতুন ভারতের স্বপ্ন পূরণের প্রবেশদ্বার হয়ে উঠতে চলেছে। শ্রী মোদী বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারত দেশের উন্নয়নের চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে। আজ এই অঞ্চলের উন্নয়ন যথেষ্টই অনুভূত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী, আজ যেসব প্রকল্পগুলির উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন তার জন্য মণিপুরের জনসাধারণকে তিনি অভিনন্দন জানান। মণিপুরের মানুষ একটি স্থিতিশীল ও সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গড়ে তুলেছেন যার প্রভাব আজ অনুভূত হচ্ছে। তিনি বলেন, এই স্থিতিশীলতার জন্য এবং মণিপুরের মানুষের নির্বাচনের কারণে আজ রাজ্যের ৬ লক্ষ কৃষক পরিবার কিষাণ সম্মান নিধির আওতায় কোটি কোটি টাকা পেয়েছেন; ৬ লক্ষ দরিদ্র পরিবার পিএম গরীব কল্যাণ প্রকল্পের আওতায় নানাবিধ সুবিধা পাচ্ছেন; প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় রাজ্যে ৮০ হাজার গৃহ নির্মাণ হয়েছে; আয়ুষ্মান প্রকল্পের আওতায় ৪ লক্ষ ২৫ হাজার রোগীর বিনামূল্যে চিকিৎসা করা গেছে; বিনামূল্যে ১ লক্ষ ৫০ হাজার রান্নার গ্যাসের সংযোগের এবং ১ লক্ষ ৩০ হাজার বিদ্যুতের সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে;  ৩০ হাজার শৌচাগার নির্মিত হয়েছে; ৩০ লক্ষের বেশি টিকার ডোজ বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে এবং রাজ্যের প্রতিটি জেলায় একটি করে অক্সিজেন প্ল্যান্ট গড়ে উঠেছে।

শ্রী মোদী বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে  দায়িত্ব গ্রহণের আগেও তিনি বহুবার মণিপুর সফর করেছেন। সেই সময় তিনি রাজ্যবাসীর দুর্দশার বিষয়গুলি উপলব্ধি করেছিলেন। “আর তাই ২০১৪-র পর আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে দিল্লি থেকে আপনাদের দুয়ারে নিয়ে এসেছি।” প্রতিটি অফিসার এবং মন্ত্রীকে এই অঞ্চলে যেতে বলা হয়েছে এবং মানুষের স্থানীয় চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ আমাদের মন্ত্রী পরিষদে এই অঞ্চলের পাঁচজন প্রভাবশালী মুখ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব পালন করেছেন।”

শ্রী মোদী বলেন, তাঁর সরকারের বিগত সাত বছরের কঠোর পরিশ্রম আজ মণিপুর সহ সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রতিফলিত হচ্ছে। আজ মণিপুর পরিবর্তিত কর্মসংস্কৃতির একটি প্রতীক হয়ে উঠেছে। মণিপুরের সংস্কৃতি এবং তাঁদের অন্যের প্রতি যত্নশীল হওয়ার জন্যই এগুলি সম্ভব হয়েছে। এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে এখানকার মানুষের সৃজনশীলতাকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আজ যে সব প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হল, সেই সব  সড়ক ও পরিকাঠামো প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন। সিআইআইআইটি এই অঞ্চলের যুব সম্প্রদায়ের সৃজনশীল ক্ষমতা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে আরও বিকশিত করতে সাহায্য করবে। অত্যাধুনিক ক্যান্সার হাসপাতালটি এই অঞ্চলের চিকিৎসা ব্যবস্থায় পরিবর্তন ঘটাবে। মণিপুর ইনস্টিটিউট অফ পারফর্মিং আর্টস এবং গোবিন্দজি মন্দিরের পুনর্নির্মাণ এখানকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণের জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য ‘অ্যাক্ট ইস্ট নীতি’ একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। ঈশ্বর এই অঞ্চলে বহু প্রাকৃতিক সম্পদ এবং নানাবিধ সম্ভাবনায় ভরিয়ে দিয়েছেন। এখানে উন্নয়নের বহু সুযোগ রয়েছে এবং পর্যটন শিল্পের আরও বিকাশ ঘটানো সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্বের এই সম্ভাবনাগুলিকে কাজে লাগাতে হবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল এখন ভারতের উন্নয়নের প্রবেশদ্বার হয়ে উঠেছে।

শ্রী মোদী বলেন, মণিপুর দেশকে দুষ্প্রাপ্য কিছু রত্ন উপহার দিয়েছে। এই অঞ্চলের যুব সম্প্রদায়, বিশেষত যুবতীরা সারা বিশ্বের কাছে দেশের মাথা উঁচু করে দিয়েছেন। আজ দেশের যুব সম্প্রদায় মণিপুরের খেলোয়াড়দের থেকে অনুপ্রাণিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ডবল ইঞ্জিন সরকারের নিরলস উদ্যোগের কারণে আজ এই অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ এবং নিরাপত্তাহীনতার কোনও স্থান নেই। পুরো অঞ্চল আজ শান্তি ও উন্নয়নের প্রতীক হয়ে উঠেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শত শত যুবক-যুবতী তাঁদের অস্ত্র সহ আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ তাঁরা উন্নয়নের মূলস্রোতের অংশীদার হয়েছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে যে চুক্তিগুলি বকেয়া ছিল, বর্তমান সরকার সেগুলিকে বাস্তবায়িত করেছে। স্থলবেষ্টিত রাজ্যের বদলে মণিপুর আজ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মণিপুরের জন্য একবিংশ শতাব্দী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, আগে অনেক সময় নষ্ট করা হয়েছে। আজ আর বসে থাকলে চলবে না। “আমাদের মণিপুরের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে এবং রাজ্যকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। একমাত্র ডবল ইঞ্জিন সরকারই এই কাজটি করতে পারে।”

 

CG/CB/DM/


(Release ID: 1787541) Visitor Counter : 179