প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী বারাণসীতে একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন


গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে তোলা এবং এই অঞ্চলের কৃষকদের সাহায্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী ‘বনাস ডেয়ারি সঙ্কুল’ – এর শিলান্যাস করেছেন

প্রধানমন্ত্রী উত্তর প্রদেশের ২০ লক্ষেরও বেশি নাগরিককে বসবাসের অধিকার সম্বলিত নথি ‘ঘরৌনি’ বন্টন করেছেন; প্রধানমন্ত্রী বারাণসীতে ৮৭০ কোটি টাকারও বেশি ২২টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন

কিষাণ দিবসে চৌধুরী চরণ সিং-এর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন

“ভারতের দুগ্ধ শিল্পের উন্নয়নকে আমাদের সরকারের অগ্রাধিকার দিচ্ছে”

“যাঁরা গরু-মহিষ নিয়ে মজা করেন, তাঁরা ভুলে যান যে, দেশে ৮ কোটিরও বেশি পরিবার গো-পালনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন”

“আজ উত্তর প্রদেশ দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুগ্ধ উৎপাদক রাজ্য; দুগ্ধ শিল্পের প্রসারে এই রাজ্য তাৎপর্যপূর্ণভাবে এগিয়ে রয়েছে”

“দুগ্ধ শিল্প, প্রাণী পালন এবং শ্বেত বিপ্লবকে নতুনভাবে গুরুত্ব দেওয়ার কাজে কৃষকদের জীবনে বড় পরিবর্তন এসেছে”

“মা বসুন্ধরার পুনরুজ্জীবনের জন্য আমাদের ভূমিকে রক্ষা করতে হবে, এর মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হবে”

Posted On: 23 DEC 2021 3:11PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তর প্রদেশের বারাণসীর কারখিয়াও-তে রাজ্য শিল্প উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ফুডপার্কের শিলান্যাস করেছেন। ৩০ একর জমিতে ৪৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই পার্ক গড়ে তোলা হবে। এখান থেকে প্রতিদিন ৫ লক্ষ লিটার দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বনাস ডেয়ারীর সঙ্গে যুক্ত ১ লক্ষ ৭০ হাজারেরও বেশি দুগ্ধ উৎপাদকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ৩৫ কোটি টাকা বোনাস হিসাবে পাঠিয়েছেন। শ্রী মোদী বারাণসীর রামনগরের দুগ্ধ উৎপাদক সমবায় ইউনিয়ন প্ল্যান্টের জন্য বায়োগ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের শিলান্যাস করেন। ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সহায়তায় ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড দুগ্ধজাত সামগ্রীর গুণমান পরীক্ষার জন্য যে লোগো এবং পোর্টাল তৈরি করেছে শ্রী মোদী তারও উদ্বোধন করেন। 

তৃণমূল স্তরে জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিবাদ দূর করতে উত্তর প্রদেশের ২০ লক্ষেরও বেশি নাগরিককে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক স্বামীত্ব প্রকল্পে বসবাসের অধিকার সংক্রান্ত ‘ঘরৌনি’ নথি তৈরি করেছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে সুবিধাভোগীদের সেই নথি প্রদান করেন। 

এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বারাণসীতে ৮৭০ কোটি টাকার ২২টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। এর ফলে, বারাণসীতে সার্বিক উন্নয়ন আরও নিশ্চিত হবে। 

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডঃ মহেন্দ্রনাথ পান্ডে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানে কিষাণ দিবস উপলক্ষে চৌধুরী চরণ সিং-কে প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শ্রী মোদী প্রাণী পালনের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “কারও কারও গরু সম্বন্ধে কথা বললেই মনে হয়, তা এক বিরাট অপরাধ। কিন্তু, আমরা গরুকে মাতৃজ্ঞানে শ্রদ্ধা করি। যাঁরা গরু-মহিষকে নিয়ে মজা করেন, তাঁরা ভুলে যান – এই দেশের প্রায় ৮ কোটি পরিবার প্রাণী পালন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আমাদের সরকার দুগ্ধ শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই, আজ এখানে বনাস কাশী সঙ্কুল – এর শিলান্যাস করা হ’ল”। শ্রী মোদী এ প্রসঙ্গে গবাদী পশুকে ক্ষুরাচাল বা ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিস থেকে রক্ষা করার জন্য দেশ জুড়ে টিকাকরণ কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন। বিগত ৬-৭ বছরে দুগ্ধ উৎপাদন প্রায় ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ বিশ্বের ২২ শতাংশ দুধ ভারতে উৎপাদিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ উত্তর প্রদেশ দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুধ উৎপাদনই করছে না, দুগ্ধ শিল্পের প্রসারেও অন্যান্য রাজ্য থেকে এগিয়ে রয়েছে, এর জন্য আমি আনন্দিত”।

প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, দুগ্ধ শিল্প, প্রাণী পালন এবং শ্বেত বিপ্লবের নতুন উদ্যোগ আমাদের কৃষকদের জীবনে পরিবর্তন নিয়ে আসবে। তিনি বলেন, প্রথমত – প্রাণী পালন দেশের ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য অতিরিক্ত আয়ের উৎস হতে পারে। এরকম কৃষকের সংখ্যা ১০ কোটিরও বেশি। দ্বিতীয়ত – বিশ্ব বাজারে ভারতের দুগ্ধজাত পণ্য সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, আগামী দিনে যার আরো প্রসারিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তৃতীয়ত প্রাণী পালনের মধ্য দিয়ে মহিলাদের আর্থিক সমৃদ্ধি হবে, এর ফলে মহিলারা আরো বেশি শিল্পোদ্যোগে শামিল হবেন। চতুর্থত প্রাণী পালন, বায়োগ্যাস উৎপাদন, জৈব চাষ, প্রাকৃতিক চাষে সহায়ক হতে পারে। দেশ জুড়ে অভিন্ন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান ষ্ট্যাণ্ডার্ড কাজ করে। কামধেনু গাভির শংসায়নের জন্য একটি লোগো তৈরি করা হয়েছে। এই লোগোটি দেখতে পেলে এর শুদ্ধতা নিশ্চিত হবে ও ভারতীয় দুগ্ধজাত সামগ্রীর বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।

প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষের উপর গুরুত্ব দিয়ে শ্রী মোদী বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পদ্ধতির চাষের গুরুত্ব কমেছে এবং চাষে রাসায়নিক পদার্থের প্রয়োগ বেড়েছে। “মা বসুন্ধরার পুনরুজ্জীবন, আমাদের ভূমিকে রক্ষা করতে, আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আমাদের আবারও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হবে। আজ এটি অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে”। শ্রী মোদী কৃষকদের কাছে প্রাকৃতিক পদ্ধতি এবং জৈব পদ্ধতিতে চাষ করার অনুরোধ জানান। আমাদের কৃষি ক্ষেত্রকে আত্মনির্ভর করে তুলতে এটি সহায়ক হবে।

তৃণমূল স্তরে জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিবাদ দূর করতে উত্তর প্রদেশের ২০ লক্ষেরও বেশি নাগরিককে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক স্বামীত্ব প্রকল্পে বসবাসের অধিকার সংক্রান্ত ‘ঘরৌনি’ নথি তৈরি করেছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে সুবিধাভোগীদের সেই নথি প্রদান করেন। শ্রী মোদী বলেন, এর মধ্য দিয়ে গ্রামাঞ্চলে উন্নয়নের জোয়ার আসবে এবং গ্রামের দরিদ্র মানুষ মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন করবেন। তাঁরা উন্নয়নযজ্ঞে সামিল হবেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বারাণসী দ্রুতগতিতে উন্নয়নের আদর্শ কেন্দ্র হয়ে উঠছে। নতুন নতুন প্রকল্পগুলি বারাণসীর মানুষের জীবনে নানাবিধ সুবিধা নিয়ে আসছে। আজ যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করা হ’ল সেগুলি স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। 

শ্রী মোদী বলেন, যাঁরা উত্তর প্রদেশের রাজনীতিকে ধর্ম, বর্ণ ও জাতপাতের দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে বিচার করে এসেছেন, তাঁরা ডবল ইঞ্জিনের দ্বিগুণ শক্তিতে আজ বিভ্রান্ত। এরা দরিদ্র মানুষের জন্য স্কুল, কলেজ, রাস্তাঘাট, জল ও বাড়ির কথা বিবেচনা করেন না। রান্নার গ্যাস সংযোগ ও শৌচালয় নির্মাণকে উন্নয়নের অঙ্গ বলে মনে করেন না। “উত্তর প্রদেশের মানুষ আগে যা পেয়েছেন এবং আজ আমাদের সরকারের থেকে যা পাচ্ছেন, তার পার্থক্য স্পষ্ট উপলব্ধি করছে। আমরা উত্তর প্রদেশের ঐতিহ্যকে বিকশিত করছি এবং উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছি”। 

প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা ক্ষেত্রের বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের ইন্টার ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর টিচার্স এডুকেশনের উদ্বোধন হয়েছে। সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অফ হায়ার টিবেটিয়ান স্টাডিজ – এ ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে টিচার্স এডুকেশন সেন্টার উদ্বোধনের পাশাপাশি, শ্রী মোদী বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় এবং কারাউন্ডিতে আইটিআই - এর কর্মী আবাসনের উদ্বোধন করেন। 

স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মহামনা পন্ডিত মদন মোহন মালব্য ক্যান্সার সেন্টারের ১৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য হস্টেল এবং বিশ্রামাগারের উদ্বোধনও করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভাদ্রসিতে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট আয়ুষ হাসপাতালের উদ্বোধন ও আয়ুষ মিশনের আওতায় পিন্দ্রা ব্লকে সরকারি হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস করেন। এই মেডিকেল কলেজটি তৈরি করতে ৪৯ কোটি টাকা ব্যয় হবে। 

প্রধানমন্ত্রী প্রয়াগরাজ থেকে ভাদোহী পর্যন্ত ২টি চার লেনের সড়ককে ৬ লেনের সড়কে উন্নীত করার প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। এর ফলে, বারাণসীতে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে এবং শহরের মানুষ যানজটের সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন। 

পবিত্র শহরের পর্যটন শিল্পের বিকাশে প্রধানমন্ত্রী বারাণসীর গোবরধনে শ্রী গুরু রবিদাসজী মন্দির উন্নয়নের প্রথম পর্বে পর্যটন বিকাশ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। 

শ্রী মোদী অন্যান্য যেসব প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে – বারাণসীর দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থায় স্পীড ব্রিডিং ফেসিলিটি, পায়োকপুর গ্রামে একটি পরীক্ষাগার এবং পিন্দ্রা ব্লকে এডভোকেট বিল্ডিং। 

 

CG/CB/SB



(Release ID: 1784771) Visitor Counter : 156