প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী বিশেষ গুণাবলী সহ ৩৫টি ফসল জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন

Posted On: 28 SEP 2021 12:42PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ বিশেষ গুণাবলী সহ ৩৫টি ফসল জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। একই সঙ্গে, প্রধানমন্ত্রী রায়পুরের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ বায়োটিক ট্রেস ম্যানেজমেন্টের নবনির্মিত ভবন জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে গ্রিন ক্যাম্পাস পুরস্কার বিতরণ করেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি কৃষকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন এবং অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। 

অনুষ্ঠানে জম্মু ও কাশ্মীরের গেন্ডারবলের শ্রীমতী জাইতুন বেগমের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁর উদ্ভাবনী কৃষি পদ্ধতির বিষয়ে জানতে চান এবং কিভাবে তিনি অন্যান্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ও উপত্যকায় মেয়েদের শিক্ষার জন্য কাজ করেছেন, তা নিয়েও আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, খেলাধূলায় জম্মু ও কাশ্মীরের মেয়েরা ভালো সাফল্য লাভ করেছেন। তিনি আরও বলেন যে, ক্ষুদ্র জমি রয়েছে, এমন কৃষকদের সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং তাঁরা যাতে সরাসরি সমস্ত সুবিধা পান তার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

উত্তর প্রদেশের বুলন্দ শহরে একজন কৃষক তথা বীজ উৎপাদক শ্রী কুলবন্ত সিং-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, কিভাবে তিনি এই বৈচিত্র্যময় বীজ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আরও জানতে চান যে, কিভাবে তিনি কুসায় কৃষি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন এবং এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে কৃষকদের মধ্যে কি মানসিকতা রয়েছে। কৃষকদের ফসল প্রক্রিয়াজাতকরণ ও মূল্য সংযোজনের জন্য প্রধানমন্ত্রী উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। শ্রী মোদী বলেন, কৃষকরা যাতে ফসলের ভালো দাম পান, তার জন্য সরকার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। ফসল বাজারে পৌঁছনো, উন্নতমানের বীজ, সয়েল হেলথ্‌ কার্ড ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। 

প্রধানমন্ত্রী গোয়ার বার্দেজের শ্রীমতী দর্শনা পেডনকারের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানতে চান, তিনি কিভাবে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করেছেন এবং একই সঙ্গে পশুপালনের কাজ চালিয়ে গেছেন। কৃষকদের নারকেলের মূল্য সংযোজনের বিষয় সম্পর্কেও জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। একজন মহিলা কৃষক যেভাবে উদ্যোক্তা হিসাবে উঠে এসেছেন, তার জন্য প্রধানমন্ত্রী উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী মণিপুরের শ্রী থৈবা সিং-এর সঙ্গে কথা বলার সময় জানতে চান, কিভাবে তিনি সশস্ত্র বাহিনীতে জীবন কাটানোর পর কৃষি কাজ শুরু করেছেন। এর জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রশংসাও করেন। কৃষি, মৎস্যচাষ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কৃষকদের বৈচিত্র্যময় কর্মকান্ডের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আগ্রহ প্রকাশ করেন। শ্রী মোদী ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় বিজ্ঞান’ – এর উদাহরণ তুলে ধরে শ্রী সিং – এর প্রশংসা করেন। 

উত্তরাখন্ডের উধম সিং নগরের শ্রী সুরেশ রানার সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, কিভাবে তিনি ভুট্টা চাষ শুরু করেছিলেন। উত্তরাখন্ডের কৃষকরা কৃষক উৎপাদন সংগঠন (এফপিও)-গুলিকে দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করেছেন। এর জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁদের প্রশংসাও করেন। তিনি বলেন, যখন কৃষকরা সম্মিলিতভাবে কাজ করেন, তখন তাঁরা অনেক বেশি লাভবান হন। সরকার কৃষকদের জন্য সম্পদ ও পরিকাঠামো সহজলভ্য করে তুলতে সচেষ্ট রয়েছে।

অনুষ্ঠানের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বিগত ৬-৭ বছরে কৃষি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। শ্রী মোদী বলেন, “আমরা আরও গুণগতমানসম্পন্ন, বিশেষ করে পরিবর্তিত আবহাওয়া ও অনুকূল পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া বীজ উৎপাদনের ওপর জোর দিয়েছি”।

প্রধানমন্ত্রী করোনা মহামারীর মধ্যে গত বছর বিভিন্ন রাজ্যে পঙ্গপালের হামলার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, অনেক চেষ্টা করে এই হামলা মোকাবিলা করা গেছে। এমনকি, কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান যে, যখন কৃষক ও কৃষি কাজের বিষয়গুলিতে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হয়, তখন সেক্ষেত্রে দ্রুত বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়। তিনি জানান, মাটির সুরক্ষার জন্য ১১ কোটি সয়েল হেলথ্‌ কার্ড বন্টন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সরকারের কৃষক-বান্ধব উদ্যোগগুলির তালিকা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কৃষকদের চাষের কাজে পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার জন্য প্রায় ১০০টি বাকি থাকা সেচ প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। কৃষকরা যাতে উচ্চ ফলন পেতে পারেন, তার জন্য তাঁদের ফসলকে রোগের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নতুন উন্নতমানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, কৃষকদের ফসলের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এমনকি, ফসলের ক্রয় প্রক্রিয়াতেও উন্নতিসাধন করা হয়েছে। এতে অধিক সংখ্যক কৃষক লাভবান হয়েছেন। রবি ফসলের মরশুমে ৩০ লক্ষ মেট্রিক টনেরও বেশি গম কেনা হয়েছে। এতে কৃষকরা ৮৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ পেয়েছেন। মহামারী চলাকালীন গম ক্রয় কেন্দ্রগুলির সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী জানান যে, কৃষকদের প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করে তাঁদের ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হয়েছে। আজ কৃষকরা আরও ভালো পদ্ধতিতে আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য পাচ্ছেন। সম্প্রতি ২ কোটিরও বেশি কৃষককে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। 

শ্রী মোদী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নতুন ধরনের কীটপতঙ্গ, নতুন রোগ, মহামারী দেখা দিচ্ছে। এর ফলে, মানুষ ও গবাদি পশুর স্বাস্থ্য নানান সমস্যার সম্মুখীণ হচ্ছে এবং ফসলেরও ক্ষতি হচ্ছে। এই বিষয়গুলির ওপর বিশেষ নজর দিয়ে গবেষণার প্রয়োজন। তিনি বলেন, যখন বিজ্ঞান, সরকার ও সমাজ একসঙ্গে কাজ করবে, তখন তার সুফলও মিলবে। কৃষক ও বিজ্ঞানীদের এ ধরনের যৌথ প্রয়াস নতুন সমস্যা মোকাবিলায় দেশকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলে জানিয়েও তিনি জানান। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকদেরকে ফসল-ভিত্তিক আয় ব্যবস্থাপনার বাইরে নিয়ে এসে এবং তার মূল্য সংযোজন ও অন্যান্য কৃষি কাজের জন্য উৎসাহিত করার প্রয়াস চলানো হচ্ছে। তিনি বিজ্ঞান ও গবেষণার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করে আরও বাজরা সহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। শ্রী মোদী বলেন, এগুলি স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে চাষ করা যায়। আগামী বছরকে রাষ্ট্রসংঘ ‘বাজরা বছর’ হিসাবে ঘোষণা করতে চলেছে। তাই, এ ক্ষেত্রে দেশবাসীকে রাষ্ট্রসংঘের সুযোগ-সুবিধাগুলি সদ্ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রাচীণ কৃষি ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়েই ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হওয়া সমান গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির ও নতুন কৃষি সরঞ্জাম ভবিষ্যতে চাষের ক্ষেত্রে মূল চাবিকাঠি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম ব্যবহারের সুফল আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি”।

 

CG/SS/SB



(Release ID: 1759031) Visitor Counter : 217