প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

আনলক ১.০ পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের দ্বিতীয় পর্ব


নমুনা পরীক্ষার বর্তমান ক্ষমতাকে পুরো কাজে লাগিয়ে তা বৃদ্ধি করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 17 JUN 2020 5:57PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১৭ জুন, ২০২০

 

 


কোভিড – ১৯ মহামারীর নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা ও আনলক ১.০ পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২ দিন ধরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে যে আলোচনা করছেন, আজ ছিল তার দ্বিতীয় পর্ব।

 
কয়েকটি বড় বড় রাজ্য এবং শহরে, যেখানে জনঘনত্ব বেশি, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে সমস্যা হয় এবং প্রতিদিন বহু মানুষ যাতায়াত করেন, এরকম জায়গায় ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। এর ফলে ঐ অঞ্চলের পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। যদিও জনসাধারণের ধৈর্য, প্রশাসনের তৎপরতা এবং করোনা যোদ্ধাদের দায়বদ্ধতার জন্য এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সঠিক সময়ে শনাক্তকরণ, চিকিৎসা এবং সংক্রণের খবর জানানোর মধ্য দিয়ে সংক্রমিতদের সুস্থ হয়ে ওঠার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, লকডাউনের এই সময়ে জনসাধারণ যেভাবে শৃঙ্খলা বজায় রাখছেন, তার ফলে এই ভাইরাসের সংক্রমণের মাত্রা আটকানো গেছে। 


স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর সুযোগ বৃদ্ধিঃ- 


এই সঙ্কটের মোকাবিলা করতে আরো ভালো স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং দক্ষ কর্মীর উপস্থিতির কথা প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ও  মাস্ক, দেশে আরো বেশি করে উৎপাদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জানান, পিএম কেয়ার্স তহবিল ব্যবহার করে নমুনা পরীক্ষার কিট যথেষ্ট পরিমাণে সরবরাহ করা হচ্ছে ও দেশে ভেন্টিলেটর তৈরি করে সেগুলি বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে। যথেষ্ট পরিমাণ পরীক্ষাগার, কোভিড  সংক্রমিতদের চিকিৎসার জন্য লক্ষ লক্ষ বেড, হাজার হাজার আইসোলেশন ও কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রর ব্যবস্থা করা এবং প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে প্রচুর মানব সম্পদ তৈরি করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিকাঠামো গড়ে তোলা, তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থাপনা এবং জনসাধারণের অংশীদারিত্বের উপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।   


প্রধানমন্ত্রী দ্রুত নমুনা পরীক্ষা, সংক্রমিতদের সংস্পর্শে কেউ এসেছে কিনা তা শনাক্ত করে তাঁকে নিভৃতাবাসে পাঠানোরও ওপর গুরুত্ব দেন। নমুনা পরীক্ষার বর্তমান ক্ষমতাকে পুরো কাজে লাগিয়ে তাকে আরো বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি টেলিমেডিসিনের উপযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেন, অসুস্থ মানুষদের চিকিৎসায় প্রবীণ অভিজ্ঞ চিকিৎসকমন্ডলী গঠন করে, তাদের সাহায্য নেবার ব্যবস্থা করতে হবে। হেল্পলাইনের মাধ্যমে দ্রুত সময়োপযোগী এবং সঠিক তথ্য প্রচার করা এবং তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে এই হেল্পলাইন পরিষেবা চালানোর পরামর্শও প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন।


শঙ্কা এবং নিন্দার বিরুদ্ধে যুদ্ধ


প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সব রাজ্যে আরোগ্য সেতু অ্যাপ বিপুল সংখ্যায় ডাউনলোড করা হয়েছে, সেখানে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। এই অ্যাপের ব্যবহার আরো বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেবার পরামর্শ তিনি দেন। আসন্ন বর্ষা মরশুমে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে শ্রী মোদী সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভয় এবং নিন্দার বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে। বিপুল সংখ্যায় যারা এই ভাইরাসকে পরাজিত করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাঁদের বিষয়ে জনসাধারণকে জানাতে হবে। করোনা যোদ্ধা, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহায্য করা আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, এই যুদ্ধে জনসাধারণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাস্ক, ফেস কভারের ব্যবহার ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিও সবসময় মনে রাখতে হবে। 


মুখ্যমন্ত্রীদের বক্তব্য 


দু’দিনের আলোচনার  আজ ছিল দ্বিতীয় দিনে  মহারাষ্ট্র, তামিলনাডু, দিল্লি, গুজরাট, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা, জম্মু-কাশ্মীর, তেলেঙ্গানা ও ওডিশার প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহণ করেন।


এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বকে মুখ্যমন্ত্রীরা স্বাগত জানান। সঙ্কটের এই সময়ে তাঁরা নিজ নিজ রাজ্যে বর্তমান স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামোর বিষয়ে এবং এই ভাইরাসের সংক্রমণ আটকানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন, সেবিষয়ে বিস্তারিত জানান। প্রথম সারির যোদ্ধাদের সাহায্য করা কনটেনমেন্ট এলাকায় নজরদারী চালানো, মাস্কের ব্যবহার সহ অন্যান্য সুরক্ষামূলক নিয়ম পালন করা, নমুনা পরীক্ষার হার বৃদ্ধি এবং যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরে এসেছেন, তাঁদের কাজের সুযোগ করে দেবার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে বিষয়ে প্রতিনিধিরা বিস্তারিতভাবে  জানিয়েছেন। 


আনলক ২.০ 


মুখ্যমন্ত্রীদের বক্তব্য শোনার পর প্রধানমন্ত্রী তাঁদের ধন্যবাদ জানান। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সকলকে এক জোট হয়ে লড়াই করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। অর্থনৈতিক কাজকর্ম শুরু করার সময় কাজের জায়গায় যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করার ওপরও তিনি জোর দেন।  লকডাউনের বিষয়ে গুজবের মোকাবিলা করার কথাও তিনি বলেন এবং জানান, দেশ এখন, ‘আনলক’-এর পর্যায়ে রয়েছে। জনসাধারণের ক্ষতি যেন না হয়, তা নিশ্চিত করে, আনলকের দ্বিতীয় পর্যায়ের বিষয়ে আমাদের এখন ভাবতে হবে। 


নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনীতিতে জোয়ার আসার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। মূদ্রাস্ফীতিও এখন নিয়ন্ত্রণে। শ্রী মোদী, রাজ্যগুলিকে পরিকাঠামো ও নির্মাণ কাজে গতি আনার পরামর্শ দেন। অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ, কৃষি ও কৃষিপণ্যের বাজারজাত করণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানান। আগামী মাসগুলিতে পরিযায়ী শ্রমিকরা যে সব সমস্যার সম্মুখীন হবেন, তা যথাযথভাবে সমাধান করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সকলকে সতর্ক থাকতে বলেন। 


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এই মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা এখনও পর্যন্ত সফল, তবে এই যুদ্ধ এখনও শেষ হয় নি। যেহেতু আমার আনলক পর্যায়ে শুরু করেছি, তাই আমাদের আরো সতর্ক থাকতে হবে। তিনি, আত্মরক্ষার জন্য সব মুখ্যমন্ত্রীদের আরোগ্য সেতু অ্যাপটি ডাউনলোড করতে জনসাধারণকে উৎসাহিত করার পরামর্শ দেন। 


স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব জানান, লকডাউনের সময়ে এবং পরবর্তীতে প্রথম দফার আনলকে সংক্রমণের হার ক্রমশ কমছে। তিনি লকডাউনের ইতিবাচক প্রভাবের বিষয়ে উল্লেখ করে বলেন, এই ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ায় বহু জীবন রক্ষা করা গেছে, মানুষের মধ্যে সচেতনা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিকাঠামো বৃদ্ধি করাও সম্ভব হয়েছে। তিনি আরো জানান, বিশ্বে যে সব দেশে সংক্রমিত এবং মৃত্যুর হার কম, ভারত, তার মধ্যে অন্যতম। 

 



CG/CB/SFS



(Release ID: 1632200) Visitor Counter : 210