প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
আইএনএস বিক্রান্ত-এ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে দীপাবলি উদযাপনকালে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
20 OCT 2025 1:46PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ২০ অক্টোবর, ২০২৫
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
আজ একটি বিশেষ দিন, এই মুহুর্ত ভোলার নয়, এই দৃশ্য অসাধারণ। আমার একদিকে বিস্তৃত সীমাহীন মহাসাগর, অন্যদিকে, মা ভারতীর বীর সেনানীদের অতুলনীয় শৌর্য। আমার একদিকে সীমাহীন দিগন্ত, অনন্ত আকাশ, এবং অন্যদিকে, বিপুল শৌয ও শক্তির প্রতীক আইএনএস বিক্রান্ত। সাগরের জলে সূর্যালোকের প্রতিফলন, আমাদের বীর সেনানীদের হাতে প্রজ্বলিত দীপশিখার মতো। আমি সৌভাগ্যবান যে এইবার আমি দীপাবলির পুণ্য লগ্ন উদযাপন করছি নৌসেনার বীর যোদ্ধাদের সঙ্গে।
বন্ধুরা,
আইএনএস বিক্রান্ত-এ গত রাতের অভিজ্ঞতা আমার পক্ষে ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আমি আপনাদের মধ্যে সঞ্চারিত উৎসাহ ও উদ্দীপনা অনুভব করেছি। আপনাদের রচিত সঙ্গীত যখন আপনারা পরিবেশন করছিলেন, এই গানে যেভাবে অপারেশন সিঁদুরের বর্ণনা ফুটে উঠেছে... সম্ভবত কোনো কবিই সেই অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেন না, যা পারেন যুদ্ধ ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে থাকা একজন সৈনিক। আমার চোখে প্রতীয়মান হয়েছে বিপুল সামরিক সক্ষমতার অপূর্ব প্রকাশ।
বন্ধুরা,
এই বিশাল রণপোতগুলি, বাতাসের চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন বিমান ও ডুবো জাহাজ, এসবেরই নিজস্ব জায়গা ও ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু এসবে প্রাণসঞ্চার করে আপনাদের উদ্দীপনা ও অনুভূতি। লোহায় তৈরি এই জাহাজগুলি জীবন্ত হয়ে ওঠে আপনাদের পদার্পণে, হয়ে ওঠে নির্ভীক শক্তির বাহক। গতকাল থেকে আমি আপনাদের সঙ্গে রয়েছি এবং প্রতিটি মুহুর্ত আমাকে নতুন কিছু শিখিয়েছে ও দেখিয়েছে। দিল্লি ছেড়ে আসার সময় থেকেই এই মুহুর্তটির অপেক্ষায় ছিলাম আমি।
কিন্তু বন্ধুরা,
আপনাদের কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা, দায়বদ্ধতা সবকিছুই এমন উচ্চ স্তরে পৌঁছে রয়েছে যে আমি নিজেকে সেই জায়গায় পুরোপুরি নিয়ে যেতে পারি নি। তবে, তা অনুভব করেছি, জেনেছি। আমি বুঝতে পারি, ওই জীবনযাপন কতটা কঠিন, কিন্তু যখন আপনাদের কাছে এসেছি, আপনাদের শ্বাস ও হৃদস্পন্দন অনুভব করেছি, গতরাতে আপনাদের চোখে যে আলোর ঝলক দেখেছি, এবং অন্যদিনের তুলনায় কিছুটা আগে ঘুমতে গেছি – যা আমি সাধারণত করি না। সারাদিন আপনাদের কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষ করে গভীর এক সন্তুষ্টির সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েছি অনেক আগেই। এ নিছক ঘুম নয় ; অন্তরে অনুভূত সন্তুষ্টির বোধ থেকে তৈরি হওয়া এক শান্তির নিদ্রা।
বন্ধুরা,
সমুদ্রের ওপরে রাতের উদযাপন এবং এই সকালের সূর্যালোক আমার দীপাবলিকে বিশেষ করে তুলেছে নানান দিক থেকে। তাই আরও একবার আপনাদের সকলকে দীপাবলির আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই ! আপনাদের সকলকে এবং আইএনএস বিক্রান্ত-এর ওপরে দাঁড়িয়ে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাই দেশের প্রতিটি নাগরিককে, বিশেষ করে আপনাদের পরিবারবর্গকে।
বন্ধুরা,
দীপাবলির উৎসবে সকলেই নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকতে চান। আমিও আমার পরিবারের সঙ্গে দীপাবলি উদযাপনেই অভ্যস্ত ছিলাম। আপনারা যেহেতু আমার পরিবারেরই সদস্য, তাই আপনাদের কাছেই এসেছি দীপাবলি উদযাপন করতে। এজন্যই এই দীপাবলি আমার কাছে এতটা তাৎপর্যপূর্ণ।
বন্ধুরা,
আইএনএস বিক্রান্ত-কে যেদিন দেশের প্রতি উৎসর্গ করা হল, সেদিন আমি বলেছিলাম : বিক্রান্ত বিশাল, অসাধারণ, সমীহ আদায়কারী। বিক্রান্ত অনন্য, অতুলনীয়। বিক্রান্ত কেবলমাত্র একটি যুদ্ধ জাহাজ নয়, ভারতের কঠোর পরিশ্রম, সক্ষমতা এবং একবিংশ শতকের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতীক। আপনাদের মনে থাকবে, যেদিন ভারত দেশে তৈরি আইএনএস বিক্রান্ত-কে পেল, সেদিনই নৌবাহিনী ঔপনিবেশিক আমলের একটি প্রতীকের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের প্রেরণা সমৃদ্ধ একটি প্রতীক গ্রহণ করেছে আমাদের নৌবাহিনী। ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের জয় ! ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের জয় ! ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের জয় !
বন্ধুরা,
আইএনএস বিক্রান্ত ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এবং ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’-র শক্তিশালী প্রতীক। সাগর এপার-ওপার করা আইএনএস বিক্রান্ত ভারতের সামরিক শক্তির প্রতিফলন। মাত্র কয়েকমাস আগে, আমরা দেখেছি, বিক্রান্ত-এর নামটুকুই কিভাবে কাঁপুনি জাগিয়েছে, ঘুম কেড়ে নিয়েছে পাকিস্তানের। আইএনএস বিক্রান্ত এমন একটি নাম যা শত্রুর যাবতীয় আস্ফালন ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারে এক লহমায়। এই হল আইএনএস বিক্রান্ত ! এই হল আইএনএস বিক্রান্ত ! এই হল আইএনএস বিক্রান্ত !
বন্ধুরা,
এই উৎসবের লগ্নে আমি আমদের সশস্ত্র বাহিনীকে কুর্নিশ জানাই। ভারতীয় নৌসেনার ভয়ে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর অতুলনীয় দক্ষতায়, ভারতীয় স্থল সেনার সাহসিকতায় এবং তিন বাহিনীর অপূর্ব সমন্বয়ের সুবাদে অপারেশন সিঁদুরের সময় এত তাড়াতাড়ি পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করেছে। তাই বন্ধুরা, সেবার এই পুণ্যভূমি থেকে, আইএনএস বিক্রান্তের শৌর্যভূমি থেকে আমি তিন বাহিনীর বীর সেনানীদের আবারও কুর্নিশ জানাই।
বন্ধুরা,
শত্রু যখন দৃশ্যমান, যুদ্ধ যখন অনিবার্য, তখন যারা নিজেদের ক্ষমতায় লড়াই করতে পারে, তারা অবশ্যই অধিকতর শক্তিশালী। বাহিনীকে শক্তিশালী হতে হলে, আত্মনির্ভর হতেই হবে। এই বীর সৈনিকদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই ভূমিতে। যাঁদের কোলে এঁদের জন্ম সেই মায়েরাও বেড়ে উঠেছেন এই ভূমিতে। সেজন্যই তাঁদের মধ্যে মাতৃভূমির সম্মান রক্ষায়, এমনকি জীবন পর্যন্ত সবকিছু সমর্পণ করার অন্তর্নিহিত আদর্শ জাগরূক। যদি বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে বহু পয়সা-কড়ি দিয়ে প্রচন্ড শক্তিশালী সৈনিকদেরও নিয়ে আসা হয়, তারা কি আপনাদের মতো মৃত্যুবরণে সক্ষম হবেন ? আপনাদের মতো সবকিছু বিলিয়ে দিতে পারবেন ? ভারতীয় হওয়ার চেতনায়, ভারতের মাটিতে জীবন অতিবাহিত করার মধ্যে যে শক্তি নিহিত তা একইভাবে সঞ্চারিত হয় এদেশে নির্মিত প্রতিটি যন্ত্র প্রকৌশলের মধ্যে – আমাদের শক্তি বেড়ে যায় বহুগুণ। আমরা অত্যন্ত গর্বিত যে বিগত দশকে আত্মনির্ভরতার দিশায় দ্রুত এগিয়েছে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী হাজার হাজার সরঞ্জামের একটি তালিকা তৈরি করেছে এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসব আর আমদানি করা হবে না। তাই বাহিনীর প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ সরঞ্জামই এখন দেশে তৈরি হচ্ছে। বিগত ১১ বছরে আমাদের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন তিন গুণ হয়েছে। শুধুমাত্র গত বছরেই এক্ষেত্রে উৎপাদনের মূল্যমান ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে – যা একটি রেকর্ড। আরেকটি উদাহরণ তুলে ধরি- ২০১৪-র পর থেকে ভারতীয় শিপইয়ার্ডে তৈরি ৪০-টিরও বেশি যুদ্ধ জাহাজ পেয়েছে নৌসেনা। যে সহ নাগরিকরা শুনছেন, তাঁরা এই সংখ্যাটি মনে রাখুন। আমি নিশ্চিত, এটা শোনার পর আপনাদের দীপাবলির প্রদীপ আরও উজ্জ্বল হবে। আজ আমাদের সক্ষমতা কোন পর্যায়ে ? গড়ে প্রতি ৪০ দিনে একটি দেশজ যুদ্ধ জাহাজ কিংবা ডুবো জাহাজ নৌসেনার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। প্রতি ৪০ দিনে !
বন্ধুরা,
ব্রহ্মস কিংবা আকাশ-এর মতো আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রগুলি অপারেশন সিঁদুরের সময় নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ রেখেছে। ব্রহ্মস নামেই শত্রুর ভয়ের উদ্রেক হয়। ব্রহ্মস ধেয়ে আসছে জানলেই তারা ভয়ে কাঁপে! এখন বিশ্বের বহু দেশ এই সব ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে চাইছে। যখনই বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে আমার দেখা হয়, তাঁদেরও অনেকেই এই ক্ষেপণাস্ত্র কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ! ভারত এখন জল, স্থল ও বায়ুসেনার ব্যবহার্য অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানিতে সক্ষম হয়ে উঠছে। আমাদের লক্ষ্য ভারতকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানিকারক দেশ করে তোলা। বিগত দশকে আমাদের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানি ৩০ গুণেরও বেশি বেড়েছে! এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে আমাদের প্রতিরক্ষা স্টার্টআপ এবং দেশের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন কেন্দ্রগুলির ভূমিকা। আমাদের স্টার্টআপগুলি এখন উদ্ভাবনমূলক উদ্যোগের ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্যের পথে এগিয়ে চলেছে !
বন্ধুরা,
সক্ষমতার এবং সেবা ও মানবতার প্রশ্নে ভারত সবসময়ই ज्ञानाय दानाय च रक्षणाय, অর্থাৎ জ্ঞান, সমৃদ্ধি, সকলের ক্ষমতায়ণের মন্ত্রে এগিয়েছে। আজ অন্তঃসংযুক্ত বিশ্বে, যেখানে বিশ্বের অর্থনীতি এবং বিকাশ সমুদ্র পথে বাণিজ্যের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল, ভারতীয় নৌসেনা সুস্থিতি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আসীন। আজ বিশ্বের তেল সরবরাহের ৬৬ শতাংশ এবং পণ্য সরবরাহের ৫০ শতাংশ হয়ে থাকে ভারত মহাসাগর দিয়ে। এই সমুদ্রপথকে নিরাপদ রাখতে প্রহরীর ভূমিকায় অবতীর্ণ ভারতীয় নৌবাহিনী। আপনারা সেই কাজ করছেন। এছাড়াও ভারতীয় নৌসেনা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তি রক্ষা অভিযান, জলদস্যুদের মোকাবিলা কিংবা মানবিক সহায়তা প্রদানের কাজে নিয়োজিত অবিরত।
বন্ধুরা,
আমাদের দ্বীপগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে নৌবাহিনীর ভূমিকা অনেকখানি। কিছু সময় আগে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে সাধারণতন্ত্র দিবসে দেশের প্রতিটি দ্বীপে ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলিত হওয়া উচিত। এই কাজ করে চলেছে নৌসেনা। এজন্য আমি অভিনন্দন জানাই নৌবাহিনীকে।
বন্ধুরা,
ভারত এগিয়ে চলেছে দ্রুত। আমরা নিশ্চিত করতে চাইছি যাতে দক্ষিণ বিশ্বের প্রতিটি দেশ আমাদের সঙ্গে এগিয়ে চলে। তাই আমরা “সাগর – সমুদ্র দৃষ্টিভঙ্গী” অনুযায়ী কাজ করছি জরুরী ভিত্তিতে। বিকাশের ক্ষেত্রে অনেক দেশেরই অংশীদার হয়েছি আমরা এবং প্রয়োজনমত বিশ্বের যেকোনও প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছি ত্রাণ সহায়তা। আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া – বিশ্ব বর্তমানে বিপর্যয় এবং সঙ্কটের সময়ে ভারতের মধ্যে খুঁজে পাচ্ছে প্রকৃত বন্ধুকে। ২০১৪-য় প্রতিবেশী দেশ মালদ্বীপ পানীয় জলের সঙ্কটের মুখোমুখি হয়। আমরা সূচনা করি অপারেশন নীর-এর। আমাদের নৌবাহিনী সেখানে পরিশ্রুত জল নিয়ে পৌঁছে যায়। ২০১৭-য় শ্রীলঙ্কায় বিধ্বংসী বন্যার সময় সবার আগে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। ২০১৮-য় সুনামির আঘাতে জর্জরিত ইন্দোনেশিয়ায় উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে হাত লাগিয়েছে ভারত। একইভাবে মায়ানমারের ভূমিকম্প, ২০১৯-এ মোজাম্বিকে এবং ২০২০-তে মাদাগাস্কারের সঙ্কটের সময় পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত।
বন্ধুরা,
বিদেশে আটকে থাকা ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে একের পর এক অভিযানে হাত লাগিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী। ইয়েমেন থেকে সুদান, সবখানে আপনাদের সাহসিকতা ও শৌর্য শক্তি জুগিয়েছে ভারতীয়দের। তাঁদের জীবনরক্ষা এবং দেশে ফেরা সম্ভব হয়েছে আপনাদের জন্য।
বন্ধুরা,
আমাদের সামরিক বাহিনী জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে সম্পূর্ণ দায়বদ্ধতা ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেশকে সেবা করে চলেছে। সমুদ্রে আমাদের জলসীমা এবং বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষা করছে নৌবাহিনী। অন্তরীক্ষে দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত বিমানবাহিনী। ভূমিতে, তাপদগ্ধ মরু থেকে বরফে ঢাকা হিমবাহ, আমাদের স্থলবাহিনী এবং বিএসএফ, আইটিবিপির কর্মীরা দুর্লঙ্ঘ্য দেওয়ালের মত দাঁড়িয়ে রয়েছেন। অন্য অনেক জায়গাতেই এসএসবি, অসম রাইফেল, সিআরপিএফ, সিআইএসএফ দেশরক্ষায় নিয়োজিত। মা ভারতীয় সেবায় দিন রাত এক করে কাজ করে চলেছে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। আমি ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীকেও কুর্নিশ জানাই – যাঁরা নৌসেনার সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে আমাদের উপকূল রেখাকে নিরাপদ রাখছেন।
বন্ধুরা,
আরো অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী ধারাবাহিক সাফল্যের পথে এগিয়ে চলেছে। এর মধ্যে একটি হল মাওবাদী জঙ্গিদের দমন। আজ দেশ নকশাল – মাওবাদী হিংসার হাত থেকে প্রায় মুক্ত। ২০১৪-র আগে দেশের প্রায় ১২৫-টি জেলা মাওবাদী হিংসার আঘাতে জর্জরিত ছিল। বিগত ১১১ বছরে এই সংখ্যা নেমে এসেছে ১১-য়। এর মধ্যে আবার মাত্র তিনটি জেলায় তাদের কিছুটা প্রভাব রয়েছে। দীপাবলি আনন্দময় হয়ে ওঠার এও একটা বড় কারণ। দীর্ঘদিন ভীতির আবহে থাকতে বাধ্য হওয়া লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন বিকাশের মূল স্রোতে যোগ দিচ্ছেন। যেসব অঞ্চলে একদা মাওবাদীরা রাস্তা, স্কুল কিংবা হাসপাতাল তৈরিতে বাধা দিত, চিকিৎসকদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ত, এমনকি মোবাইল টাওয়ার নির্মাণ করতে দিত না – সেখানে এখন তৈরি হচ্ছে রাস্তা, গড়ে উঠছে কারখানা, স্কুল, হাসপাতাল।
বন্ধুরা,
আজ আমি বীর সৈনিকদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু মনে করুন আমাদের পুলিশ কর্মীদের কথাও। শুধুমাত্র একটি লাঠি নিয়ে, তেমন কোনো প্রশিক্ষণ না নিয়েও তাঁরা দেশের শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার কাজ করে চলেছেন। নকশাল পন্থীদের সঙ্গে লড়াই করেছেন সাহসিকতার সঙ্গে। তাঁদের আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আমি এমন অনেককে জানি যাঁরা হাত পা খুইয়েও সাহসিতায় থেকেছেন অবিচল। এমন অনেক পরিবারকে জানি যাঁরা মাওবাদী হিংসার শিকার হয়েছেন। তাঁদের গ্রাম প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছিল। কিন্তু শান্তি ফিরিয়ে আনতে, পরবর্তী প্রজন্মের শিক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে তাঁরা কাজ করে গেছেন ধারাবাহিকভাবে।
বন্ধুরা,
স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন আমাদের পুলিশ কর্মীদের এই সমস্যার মুখোমুখি থাকতে হয়েছে। কিন্তু বিগত ১০ বছরে ৫০ বছরের এই উপদ্রব প্রায় দূর করেছেন তাঁরা। সফল হয়েছেন ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে। দেশের মধ্যে থাকা শত্রুদের মোকাবিলায় সাহস ও ধৈর্য লাগে অনেক বেশি। নিশ্চিত করতে হয় যাতে সাধারণ মানুষের প্রাণহানি না ঘটে। দেশের ভেতরে যেভাবে গরিলা যুদ্ধের মোকাবিলা হয়েছে তা নিয়ে একদিন অনেক লেখাজোকা হবে। সারা বিশ্ব জানবে ভারতের বীর নিরাপত্তা রক্ষীরা কিভাবে মাওবাদী সন্ত্রাস নির্মূল করেছেন।
বন্ধুরা,
একদা মাওবাদী উপদ্রুত জেলাগুলিতে আজ জিএসটি সাশ্রয় উৎসবে কেনাবেচায় রেকর্ড হচ্ছে। যেখানে আগে মাওবাদীরা সংবিধানের নাম পর্যন্ত উচ্চারিত হতে দিত না, সেখানে আজ “স্বদেশী ”-র আদর্শ প্রতিফলিত হচ্ছে। বিপথগামী যে যুবারা আগে ৩০৩ রাইফেল নিয়ে ঘুরতেন তাঁরা এখন সংবিধানকে আলিঙ্গন করছেন।
বন্ধুরা,
ভারত দ্রুত এগিয়ে চলেছে। আমরা ১৪০ কোটি দেশবাসীর স্বপ্নের বাস্তবায়নে নিয়োজিত। যা ছিল অসম্ভব তা এখন সম্ভব হচ্ছে। দেশ গঠনের এই যাত্রায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর বিরাট ভূমিকা রয়েছে। আপনারা প্রবাহের সঙ্গেই কেবল চলেন না, তার অভিমুখ বদলে দিতে পারেন। আজ সাগরের ঢেউও যেন বলছে – ভারতমাতার জয়। সাগরের গর্জন, পর্বত কন্দরে বাতাসের প্রতিধ্বনি, মরুভূমির ধূলারাশি – সবকিছুর বার্তাতেই প্রতিধ্বনিত - ভারতমাতার জয়! ভারতমাতার জয়! এই উৎসাহ ও প্রত্যয়ের আবহে আমি আপনাদের আরও একবার দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের স্বপ্নের উড়ান পৌঁছে যাক নতুন উচ্চতায়।
আমার সঙ্গে একযোগে উচ্চস্বরে বলুন ; ভারতমাতার জয়! ভারতমাতার জয়! ভারতমাতার জয়! বন্দে মাতরম! বন্দে মাতরম! বন্দে মাতরম! বন্দে মাতরম! বন্দে মাতরম! বন্দে মাতরম! বন্দে মাতরম! বন্দে মাতরম! বন্দে মাতরম! বন্দে মাতরম! অনেক ধন্যবাদ!
*******
SSS/AC/SG
(Release ID: 2181242)
Visitor Counter : 3
Read this release in:
English
,
Gujarati
,
Urdu
,
हिन्दी
,
Marathi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Odia
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam