প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
“পরীক্ষা পে চর্চা ২০২৪” অনুষ্ঠানে ছাত্র, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
Posted On:
29 JAN 2024 8:00PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ২৯ জানুয়ারি ২০২৪
নমস্কার,
এইমাত্র, আমি আমাদের প্রিয় ছাত্রছাত্রীদের কাজ দেখেছি যারা কিছু উদ্ভাবন করেছেন, বিভিন্ন ধরণের মডেল তৈরি করেছে। তারা এই মডেলগুলিতে জাতীয় শিক্ষা নীতি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেছে। জল, মাটি, আকাশ, মহাকাশ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম কি ভাবছে এবং তাদের কি সমাধান আছে তা দেখার সুযোগ পেয়েছি। মনে হয়েছিল, আমার কাছে পাঁচ-ছ ঘন্টা সময় থাকলেও তা যথেষ্ট হবে না কারণ প্রত্যেকেই তাদের উপস্থাপনা অন্যদের চেয়ে ভালোভাবে উপস্থাপন করেছে। তাই, আমি সেই ছাত্রদের, তাদের শিক্ষকদের এবং তাদের স্কুলগুলিকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাই। এবং আমি তোমাদেরকেও অনুরোধ করছি যে যাওয়ার আগে অবশ্যই এই প্রদর্শনীটি দেখো, এটি কী নিয়ে, তা বোঝার চেষ্টা করো এবং নিজের স্কুলে ফিরে গিয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীদেরকে সঙ্গে তোমাদের অভিজ্ঞতার কথা শুনিও। তোমরা কি তা করবে? আমি এখান থেকে একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছি, ওখান থেকে নয়, ওখান থেকে নয়, তোমরা কি তা করবে? তোমরা কি আমার কণ্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছ? ... ঠিক আছে!
তোমরা কি জানো যে তোমরা এখন কোথায়? তোমরা এমন এক জায়গায় এসে পৌঁছেছো যেখানে বিশ্বের সকল বিশিষ্ট নেতারা ভারত মণ্ডপে দুই দিন ধরে বিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। আর আজ, তোমরা সেই জায়গায় এসেছো। আর তোমাদের পরীক্ষার উদ্বেগের পাশাপাশি, আজ তোমরা ভারতের ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা করতে যাচ্ছ। আর এক অর্থে, এই 'পরীক্ষা পে চর্চা' অনুষ্ঠানটি আমারও পরীক্ষা। আর তোমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো আমাকে পরীক্ষা করতে চাইবে। এমন কিছু ছাত্রছাত্রী অবশ্যই থাকবে যারা সত্যিকার অর্থে মনে করবে যে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা উচিত, যার সমাধান তাদের নিজেদের এবং অন্যদের - উভয়ের জন্যই উপকারী। আমি হয়তো সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না, কিন্তু সেই প্রশ্নের অনেক সমাধান আমাদের অনেক সহকর্মীর জন্য উপকারী হবে। তাই আর সময় নষ্ট না করে শুরু করা যাক। কোথা থেকে শুরু করা উচিত?
উপস্থাপক - মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আপনার অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
এই একই চেতনায়, সমস্যার সমাধান বেরিয়ে আসবে,
জমি অনুর্বর হলেও, সেখান থেকে জল প্রবাহিত হবে,
কিছু একটা করে দেখানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাও,
এই রাতগুলোর বেষ্টনি থেকে একটি সোনালী আগামীকাল বেরিয়ে আসবে,
এই রাতগুলোর বেষ্টনি থেকে একটি সোনালী আগামীকাল বেরিয়ে আসবে।
প্রধানমন্ত্রী মহোদয়! আপনার অনুপ্রেরণামূলক এবং আলোকিত ভাষণ আমাদের সর্বদা ইতিবাচক শক্তি এবং আত্মবিশ্বাসে ভরে তোলে। আপনার আশীর্বাদ এবং অনুমতি নিয়ে, আমরা এই অনুষ্ঠানটি শুরু করতে চাই। ধন্যবাদ, শ্রদ্ধেয় মহাশয়।
উপস্থাপক – মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আমাদের বন্ধু আরব দেশ ওমানে অবস্থিত ইন্ডিয়ান স্কুল, দারসাইত, যা প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য এবং পর্যটন ক্ষেত্রে ভারতের অংশীদার, তার ছাত্রী, দানিয়া শাবু, অনলাইনে আমাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। সে আপনাকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চায়। দানিয়া, দয়া করে এগিয়ে এসো এবং তোমার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো।
দানিয়া - শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী! আমি দানিয়া শাবু ভারকি, ওমানের ইন্ডিয়ান স্কুল দারসাইতের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। আমার প্রশ্ন হলো, পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের চাপের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রত্যাশা কী প্রভাব ফেলে আর এই বাহ্যিক প্রভাবগুলির চাপ সামলে কীভাবে সামঞ্জস্য রক্ষা করা যায়? ধন্যবাদ!
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, দানিয়া। প্রধানমন্ত্রী মহোদয়, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের রাজধানী দিল্লির বুরারির সরকারি সর্বোদয় বাল বিদ্যালয়ের মোহাম্মদ আরশ, অনলাইনে আমাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। সে আপনার কাছ থেকে তার সন্দেহ নিরসন করতে চায়। মোহাম্মদ আরশ, তোমার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো।
মোহাম্মদ আরশ - শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী! নমস্কার। আমার নাম আরশ, এবং আমি জিএসএসএসবি বুরারিতে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। আপনার কাছে আমার প্রশ্ন হল, আমাদের পরিবেশে পরীক্ষা সম্পর্কিত নেতিবাচক আলোচনা কীভাবে সমাধান করা যায়, যা আমাদের পড়াশোনা এবং ভালো ফলাফল করার ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে? শিক্ষার্থীদের জন্য আরও ইতিবাচক এবং সহায়ক পরিবেশ তৈরি করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে? ধন্যবাদ।
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, মোহাম্মদ! ওমান থেকে দানিয়া শাবু, দিল্লি থেকে আরশ, এবং তাদের মতো অসংখ্য শিক্ষার্থী প্রায়শই সামাজিক এবং সমবয়সীদের প্রত্যাশার চাপ মোকাবেলা করাকে চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করে। অনুগ্রহ করে তাদের পথনির্দেশ করুন।
প্রধানমন্ত্রী - আমাকে জানানো হয়েছে যে এটি সম্ভবত 'পরীক্ষা পে চর্চা'-র সপ্তম পর্ব, এবং যতদূর মনে পড়ে, এই প্রশ্নটি প্রতিবার এবং বিভিন্ন উপায়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। এর অর্থ হল, সাত বছরে সাতটি ভিন্ন ব্যাচ এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে। এবং প্রতিটি নতুন ব্যাচকে একই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এখন, ছাত্রছাত্রীদের ব্যাচ পরিবর্তন হলেও, শিক্ষকদের ব্যাচ তত ঘন ঘন পরিবর্তিত হয় না। শিক্ষকরা, আমি এখন পর্যন্ত যে সমস্ত পর্বের মধ্য দিয়ে গেছি, যদি আমাদের আলোচনা অনুযায়ী তাঁদের স্কুলের সমস্যাগুলি সমাধান করে থাকেন, তাহলে আমরা ধীরে ধীরে এই সমস্যাটি মোকাবেলা করতে পারি। একইভাবে, এটা সম্ভব যে প্রত্যেক পরিবারে, বড় ছেলে বা মেয়ে আগে একবার বা দুবার এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গেছে। কিন্তু অন্যদের খুব বেশি অভিজ্ঞতা নাও থাকতে পারে। তবে, প্রত্যেক অভিভাবকই এক বা অন্যভাবে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
এখন প্রশ্ন উঠছে, সমাধান কী? আমরা চাপ নেওয়া বন্ধ করতে বলতে পারি না, চাপ বন্ধ করতে পারি; কিন্তু আমরা সেটাও বলতে পারি না। তাই, আমাদের যেকোনও ধরণের চাপ সামলাতে সক্ষম হওয়া উচিত, আমাদের অলস বসে থাকা উচিত নয়। আমাদের এই সত্যটি বোঝার চেষ্টা করা উচিত যে চাপ জীবনের একটি অংশ, চাপ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই, আমাদের নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। ঠিক যেমন আপনি যখন এমন কোনও জায়গায় যান যেখানে খুব ঠান্ডা থাকে এবং আপনি একটি উষ্ণ অঞ্চলে থাকেন, তখন আপনি মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেন যে আমাকে তিন-চার দিন পরে এত ঠান্ডা জায়গায় যেতে হবে। তাই, যখন আপনি নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করেন, তখন ধীরে ধীরে প্রক্রিয়াটি সহজ বলে মনে হয়।সেখানে পৌঁছানোর পরে, কখনও কখনও আপনার মনে হয়, "ওহ, আমি যতটা ভেবেছিলাম ততটা ঠান্ডা নয়।" এটি ঘটে কারণ, আপনি ততক্ষণে আপনার মন তৈরি করেছেন। অতএব, আপনার তাপমাত্রা পরীক্ষা করার দরকার নেই, আপনার মন প্রস্তুত। একইভাবে, আমাদের এই চাপকে, এই পরিস্থিতিকে, আমাদের নিজস্ব উপায়ে জয় করার জন্য সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।
আরেকটি বিষয় বিবেচনা করার বিষয় হল চাপের ধরণ। আমরা নিজেদের উপর চাপ বাড়িয়ে দিই, যেমন ভোর চারটায় ঘুম থেকে ওঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া, অথবা রাত এগারোটা পর্যন্ত পড়াশোনা করা, অথবা নির্দিষ্ট সংখ্যক উত্তর সমাধান করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা। আমরা নিজেরাই এই চাপ অনুভব করি। আমি বুঝতে পারি যে, আমাদের নিজেদেরকে এতটা প্রসারিত করা উচিত নয় যে এটি আমাদের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। আমাদের ধীরে ধীরে উন্নতি করা উচিত। ধরা যাক, গতকাল আমি সাতটি প্রশ্ন সমাধান করেছি, আজ আমি আটটি সমাধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারপর, যদি আমি ১৫-টি করার লক্ষ্য রাখি, এবং মাত্র সাতটি সমাধান করতে পারি, তাহলে আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে ভাবি, "আচ্ছা, আমি গতকাল এটা করতে পারিনি, তাই আজই আমাকে এটা শেষ করতে হবে?" এভাবেই, আমরা নিজেদের উপর চাপ তৈরি করি। আমরা বৈজ্ঞানিক উপায়ে এই প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করতে পারি। দ্বিতীয়ত, বাবা-মাও চাপ তৈরি করেন। "তুমি এটা কেন করোনি? কেন ঘুমিয়েছিলে? কেন তাড়াতাড়ি ওঠো না? তাড়াতাড়ি করো, তোমার পরীক্ষা নেই?" তাঁরা এমনকি এমন কথাও বলেন যে, "তোমার বন্ধু কী করছে এবং তুমি কী করছ?" এসব কথাবার্তা সকাল-সন্ধ্যা চলে, এবং যদি মা ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তাহলে বাবা শুরু করে, আর যদি বাবা ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তাহলে বড় ভাই একই ভাষ্য শুরু করে। আর তারপরও যদি তা যথেষ্ট না হয়, তাহলে স্কুল শিক্ষক একই কথা পুনরাবৃত্তি করেন। তারপর কিছু লোক আছে যারা বলেন, এগিয়ে যাও, তুমি যা ইচ্ছা করো, আমি যেমন আছি তেমনই থাকব। কিছু লোক এটাকে গুরুত্ব সহকারে নেয়। কিন্তু এটা অন্য ধরণের চাপ।
তৃতীয়ত, এমন একটি পরিস্থিতিও আছে যেখানে কোনও আপাত কারণ নেই, এটি কেবল একটি উপলব্ধি, এবং কোনও কারণ ছাড়াই, আমরা এটিকে একটি সংকট বলে মনে করি। যখন আমরা আসলে পরীক্ষা দিয়ে ফেলি, তখন আমরা বুঝতে পারি যে এটি এত কঠিন ছিল না, আর আমি কেবল অপ্রয়োজনীয় চাপের মধ্যে ছিলাম। তাই, আমি মনে করি যে শিক্ষকদের সঙ্গে মিলেমিশে পরীক্ষার্থীর গোটা পরিবারকে একসঙ্গে এটি মোকাবিলা করতে হবে। যদি কেবল শিক্ষার্থী এটি মোকাবিলা করে বা কেবল পিতামাতারা এটি মোকাবিলা করে, তবে তা যথেষ্ট হবে না। এবং আমি বিশ্বাস করি যে পরিবারের মধ্যে আলাপ- আলোচনা চলতে থাকা উচিত। এই ধরনের পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা নিয়ে প্রত্যেক পরিবারে আলোচনা হওয়া উচিত। একটি পদ্ধতিগত তত্ত্ব থাকার পরিবর্তে, আমাদের ধীরে ধীরে জিনিসগুলি বিকশিত করা উচিত। যদি আমরা এইভাবে বিকশিত হই, আমি নিশ্চিত যে আমরা এই সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠতে পারব। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক - প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, চাপ মোকাবিলার উপায়গুলি পরামর্শ দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভাগ্যলক্ষ্মী জী, যিনি একজন অভিভাবক, তিনি অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত এবং বীর সাভারকরের আত্মত্যাগের সাক্ষী বিখ্যাত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ভাগ্যলক্ষ্মী জী, অনুগ্রহ করে আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন।
ভাগ্যলক্ষ্মী - শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, নমস্কার। একজন অভিভাবক হিসেবে, ছাত্ররা যে সমবয়সীদের চাপের মুখোমুখি হয় সে সম্পর্কে আপনার কাছে আমার একটি প্রশ্ন আছে, এই চাপ একরকমভাবে বন্ধুত্বের সৌন্দর্য কেড়ে নেয়। এটি সহপাঠীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। এই বিষয়ে আপনার মতামত কী? দয়া করে আমাকে একটি সমাধান দিন। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, ভাগ্যলক্ষ্মী জী। গুজরাটের পঞ্চমহলের জওহর নবোদয় বিদ্যালয়, যা সত্য, অহিংসা এবং ধার্মিকতার মিলিত শিক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের প্রভাবিত করে, সেই বিদ্যালয়ের ছাত্রী দৃষ্টি চৌহান আপনার কাছ থেকে তার সমস্যার সমাধান জানতে চান, প্রধানমন্ত্রী মহোদয় । দৃষ্টি, দয়া করে তোমার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো।
দৃষ্টি চৌহান - শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী, নমস্কার। আমি দৃষ্টি চৌহান, পঞ্চমহলের জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। আপনার কাছে আমার প্রশ্ন হল, কখনও কখনও পরীক্ষার প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার জন্য অতিরিক্ত চাপ তৈরি করে। এই চাপ কীভাবে মোকাবিলা করবে দয়া করে সে সম্পর্কে পরামর্শ দিন? এই বিষয়ে আপনার দিকনির্দেশনা চাইছি। ধন্যবাদ, স্যার।
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, দৃষ্টি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর বৃষ্টিভেজা কেরল রাজ্যে অবস্থিত কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় নং ১, কালিকট থেকে অনলাইনে আমাদের সাথে যুক্ত স্বাতী দিলীপ আপনাকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চাইছেন। স্বাতী, দয়া করে আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন।
স্বাতী - নমস্কার! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, আমি স্বাতী দিলীপ, এর্নাকুলাম অঞ্চলের প্রধানমন্ত্রী শ্রী কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় নং ১, কালিকট থেকে একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। স্যার, আপনি কি আমাদের এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে অস্বাস্থ্যকর এবং অপ্রয়োজনীয় প্রতিযোগিতা এড়াতে এবং সমবয়সীদের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার বিষয়ে নির্দেশনা দিতে পারেন?
উপস্থাপক - ধন্যবাদ স্বাতী। প্রধানমন্ত্রী, সমবয়সীদের চাপ এবং প্রতিযোগিতা থেকে উদ্ভূত উদ্বেগগুলি কীভাবে এড়ানো যায় এবং এর ফলে সম্পর্কের তিক্ততা কীভাবে রোধ করা যায় সে সম্পর্কে আমাদের লক্ষ্মীজী, দৃষ্টি এবং স্বাতীকে পথনির্দেশ দিন।
প্রধানমন্ত্রী - যদি জীবনে কোনও চ্যালেঞ্জ না থাকত, কোনও প্রতিযোগিতা না থাকত, তাহলে জীবন খুবই অনুপ্রেরণাহীন, চেতনাহীন হয়ে পড়ত। প্রতিযোগিতা অবশ্যই থাকবে। কিন্তু কালিকটের একজন মেয়ে যেমন বলেছে, প্রতিযোগিতা স্বাস্থ্যকর হওয়া উচিত। এখন, আপনার প্রশ্নটি একটু বিপজ্জনক, এবং এটি আমাকে চিন্তিত করে। সম্ভবত আমি 'পরীক্ষা পে চর্চা'-তে প্রথমবারের মতো এমন একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছি। দেখুন, কখনও কখনও এই বিষাক্ত প্রবণতা, এই বীজগুলি পারিবারিক পরিবেশের মধ্যেই বপন করা হয়। এমনকি বাড়িতেও, যদি দুটি সন্তান থাকে, কখনও বাবা-মা একজনের প্রশংসা করবেন, কখনও অন্যজনের। তাই, দুই ভাইবোন বা দুই ভাই বা দুই বোনের মধ্যে হোক না কেন, পরিবারের দৈনন্দিন জীবনে এই বিকৃত প্রতিযোগিতার অনুভূতি সূক্ষ্মভাবে প্রবেশ করানো হয়। এবং সেই কারণেই আমি সমস্ত বাবা-মাকে তাঁদের নিজের সন্তানদের মধ্যে এই ধরণের তুলনা না করার জন্য অনুরোধ করছি। এটি শত্রুতার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে এবং অবশেষে, দীর্ঘ সময় পরে, সেই বীজগুলি পরিবারের মধ্যে একটি অত্যন্ত বিষাক্ত গাছে পরিণত হয়। একইভাবে, আমি অনেক দিন আগে একবার একটি ভিডিও দেখেছিলাম - সম্ভবত আপনিও এটি দেখেছেন - যেখানে কিছু দিব্যাঙ্গ শিশু একটি দৌড়ে অংশ নিচ্ছিল, প্রায় ১২-১৫ জন শিশু, প্রত্যেকের নিজস্ব প্রতিবন্ধকতা ছিল। তাই চ্যালেঞ্জ অনিবার্য ছিল, কিন্তু তারা সবাই দৌড়াচ্ছিল। এর মাঝেই একটি শিশু পড়ে গেল। এখন, যদি তারা আরও বুদ্ধিমান হত, তাহলে তারা কী করত? তারা হয়তো বলত, "আচ্ছা, এই তো, দৌড়ে একজন প্রতিযোগী কমল।" কিন্তু সেই শিশুরা কী করেছিল? যারা এগিয়ে ছিল তারা পিছনে ফিরে গেল, যারা দৌড়াচ্ছিল তারা থেমে গেল, এবং তারা সবাই তাকে সাহায্য করল, এবং তারপর তারা আবার দৌড়াতে শুরু করল। সত্যিই, এই ভিডিওটি দিব্যাঙ্গ শিশুদের জীবন সম্পর্কে হতে পারে, কিন্তু এটি আমাদের সকলকে একটি অসাধারণ অনুপ্রেরণা এবং একটি গভীর বার্তা দেয়।
এখন, তৃতীয় বিষয় হল, তুমি তোমার বন্ধুদের সঙ্গে কীসের জন্য প্রতিযোগিতা করছ, বন্ধু? ধরা যাক ১০০ নম্বরের একটি প্রশ্নপ্ত্র আছে। এখন, তোমার বন্ধু যদি ৯০ নম্বর পায়, তাহলে কি তোমার জন্য ১০ নম্বর বাকি থাকবে? তুমি কি সেই ১০ নম্বর পাবে? নাকি, তোমার জন্যও ১০০ নম্বর পাওয়ার সুযোগ আছে, তাই না? তাহলে, তার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার দরকার নেই, তোমাকে নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে। তোমার বন্ধু যা-ই অর্জন করুক না কেন, তুমি ১০০-এর মধ্যে কত নম্বর পেতে পারো তা দেখার জন্য তোমাকে নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে। তার প্রতি কোনও বিরক্তি পোষণ করার আসলে কোনও প্রয়োজন নেই। আসলে, সে তোমার অনুপ্রেরণা হতে পারে। আর যদি তুমি এই মানসিকতা বজায় রাখো, তাহলে তুমি কী করবে? তুমি একজন যোগ্য ছাত্রকও তোমার বন্ধু বানাতে পারবে না। তুমি এমন কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব করো যে ঠিকমতো পড়াশুনা করছে না, তাহলে তুমি নিজেকে একজন বড় ঠিকাদার বলে ঘুরে বেড়াবে। আসলে, আমাদের প্রতিভাবান বন্ধুদের খোঁজা উচিত। আমাদের যত বেশি প্রতিভাবান বন্ধু থাকবে, আমাদের শিক্ষা তত দ্রুত এগিয়ে যাবে। আমাদের মনোবলও বাড়বে। অতএব, আমাদের মনে কখনোই এই ধরনের ঈর্ষার অনুভূতি ঢুকতে দেওয়া উচিত নয়।
এবং চতুর্থত, এটি বাবা-মায়ের জন্যও অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। বাবা-মা সবসময় তাঁদের সন্তানদের তুলনা করেন। তাঁরা বলেন, "দেখো, তুমি সবসময় খেলছো, আর সে পড়াশোনা করছে। তুমি এটা করতে থাকো, আর সে পড়াশোনা করছে।" অন্য কথায়, তাঁরা সবসময় অন্য কারও উদাহরণ দেয়। তাই, এই ধরণের ভাবনায় শিশুরাও অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। দয়া করে, বাবা-মায়েরা, এই জিনিসগুলি এড়িয়ে চলুন। মাঝে মাঝে আমি এমন বাবা-মায়েদের দেখেছি, যাঁরা নিজের জীবনে খুব বেশি সফল হননি, যাদের নিজের সাফল্য সম্পর্কে বিশ্বকে বলার মতো কিছুই নেই, তাই তাঁরা নিজের সন্তানের রিপোর্ট কার্ডকে তাঁদের ভিজিটিং কার্ডে পরিণত করে। তাঁরা মানুষের সঙ্গে দেখা করেন, আর তাঁদের সন্তানদের সম্পর্কে গল্প বলেন। এখন, এই প্রকৃতি শিশুর মনে এই ধারণা জাগিয়ে তোলে যে "আমিই সবকিছু। এখন আমার কিছু করার দরকার নেই..." এই ভাবনাও শিশুর অনেক ক্ষতি করে।
অতএব, আমাদের বন্ধুদের প্রতি ঈর্ষা করার পরিবর্তে, তাঁদের শক্তি খুঁজে বের করার চেষ্টা করা উচিত।যদি তাঁরা গণিতে পারদর্শী হন এবং আমি তাতে দুর্বল হই, এবং যদি আমার বন্ধু আমাকে আমার শিক্ষকদের চেয়ে গণিতে বেশি সাহায্য করে, তাহলে আমি এটি আরও ভালভাবে বুঝতে পারব এবং একসময় তাঁদের মতো পারদর্শীও হয়ে উঠতে পারি। যদি আমার বন্ধু ভাষাশিক্ষায় খুব বেশি শক্তিশালী না হয় এবং আমি তাতে ভালো হই, এবং যদি আমি তাকে ভাষাশিক্ষায় সাহায্য করি, তাহলে আমরা দুজনেই একে অপরের পরিপূরক হব এবং আরও সক্ষম হয়ে উঠব। অতএব, আসুন আমরা আমাদের বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা এবং হিংসা না করে তাদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াই। আমি এমন কিছু মানুষকে দেখেছি যারা নিজেরা ব্যর্থ হলেও তাদের বন্ধু যদি সফল হয় তাহলে মিষ্টি বিতরণ করে। আমি এমন বন্ধুদেরও দেখেছি যারা খুব ভাল ফলাফল করে কিন্তু যদি তাদের বন্ধু সফল না হয়, তাহলে তারা বাড়িতে উদযাপন করে না, উৎসব করে না। কেন? কারণ তাদের বন্ধু ভাল করেনি... তাদের বন্ধু পিছিয়ে ছিল... এমন বন্ধুও আছে। বন্ধুত্ব কি লেনদেন? না... বন্ধুত্ব কোনও লেনদেন নয়। যেখানে কোনও ধরণের লেনদেন জড়িত থাকে না, সেখানে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা থাকে, সেখানেই বন্ধুত্ব থাকে। এবং এই বন্ধুত্ব, এটি কেবল স্কুল পর্যন্ত স্থায়ী হয় না... এটি সারা জীবন আপনার সাথে থাকে। অতএব, দয়া করে, আসুন এমন বন্ধুদের খুঁজি যারা আমাদের চেয়ে বেশি উৎসাহী এবং পরিশ্রমী, এবং আমাদের সর্বদা তাদের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করা উচিত। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক – ধন্যবাদ, প্রধানমন্ত্রী মহোদয়। আমাদের সব প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রেই মানবতার এই বার্তা সর্বদা অনুপ্রাণিত করবে। পরবর্তী প্রশ্নটি কৃষি সমৃদ্ধ রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুমালার পবিত্র ভূমিতে অবস্থিত জেডিপি হাই স্কুলের সঙ্গীত শিক্ষক শ্রী কোন্ডাকাঞ্চি সম্পত রাওয়ের। শ্রী সম্পত রাও অনলাইনে আমাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন এবং আপনাকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চান। শ্রী সম্পত রাও, দয়া করে আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন।
সম্পত রাও – প্রধানমন্ত্রী মহোদয়কে শুভেচ্ছা। আমার নাম কোন্ডাকাঞ্চি সম্পত রাও এবং আমি অন্ধ্রপ্রদেশের আনাকাপল্লি জেলার উপ্রাপাল্লির জেডিপি হাই স্কুলের একজন শিক্ষক। স্যার, আপনার কাছে আমার প্রশ্ন হল, একজন শিক্ষক হিসেবে, আমি কিভাবে আমার শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে এবং তাদের চাপমুক্ত রাখতে সাহায্য করতে পারি? দয়া করে আমাকে এই বিষয়ে পথনির্দেশ দিন। ধন্যবাদ, স্যার।
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, স্যার। অসমের মনোরম ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় একটি চা বাগানে অবস্থিত সায়রা উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা বান্টি মেধি দর্শকদের মধ্যে উপস্থিত আছেন এবং তিনি প্রধানমন্ত্রীকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চান। ম্যাডাম, আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন।
বান্টি মেধি - নমস্কার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়। আমি বান্টি মেধি, অসমের শিবসাগর জেলার একজন শিক্ষিকা। আমার প্রশ্ন হল শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে একজন শিক্ষকের ভূমিকা কী হওয়া উচিত? দয়া করে আমাদের পথ দেখান। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, ম্যাডাম। প্রধানমন্ত্রী মহোদয়, অনুগ্রহ করে, অন্ধ্রপ্রদেশের সঙ্গীত শিক্ষক শ্রী সম্পত রাও জী এবং শ্রোতাদের মধ্যে উপস্থিত শিক্ষিকা বান্টি মেধি জি-র জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের প্রেক্ষিতে কিছু বলুন, তাঁরা পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের চাপমুক্ত রাখতে শিক্ষকদের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চান। অনুগ্রহ করে সমগ্র শিক্ষক সম্প্রদায়কে পরামর্শ দিন।
প্রধানমন্ত্রী - প্রথমত, আমি বিশ্বাস করি যে সঙ্গীত শিক্ষকরা কেবল তাঁদের নিজস্ব ক্লাসের শিক্ষার্থীদের জন্যই নয়, বরং পুরো স্কুলের শিশুদের জন্যও মানসিক চাপ দূর করার ক্ষমতা রাখেন। সঙ্গীতে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে... যদি আমরা কান বন্ধ করে গান শুনি... কখনও কখনও এমন হয়... আমরা সেখানে থাকি, সঙ্গীত বাজছে, কিন্তু আমরা অন্য কোথাও হারিয়ে যাই। এবং সেই কারণেই আমরা তার আনন্দ অনুভব করতে পারি না। আমি বুঝতে পারি যখন কোনও শিক্ষক শিক্ষার্থীদের এই চাপ কমানোর উপায় সম্পর্কে ভাবেন। আমি ভুল হতে পারি, তবে আমার মনে হয় পরীক্ষার অগ্নিপরীক্ষা সম্পর্কে শিক্ষকের মনে সম্ভবত একটি চিন্তাভাবনা থাকে। যদি শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে সম্পর্ক পরীক্ষার অগ্নিপরীক্ষার নিরিখে আবদ্ধ হয়, তবে প্রথমেই সেই সম্পর্কটি সংশোধন করা উচিত। বছরের শুরুতে যখন আপনি শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করেন, তখন থেকেই শিক্ষার্থীর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়, সেই সম্পর্ক পরীক্ষা না আসা পর্যন্ত বাড়তে থাকা উচিত। তাহলেই, সম্ভবত পরীক্ষার দিনগুলিতে কোনও চাপ থাকবে না।
একবার ভেবে দেখুন, আজ মোবাইল ফোনের যুগ; প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছেই হয়তো মোবাইল ফোন রয়েছে। কোন শিক্ষার্থী কি কখনও আপনাকে ফোন করেছে? সে কি কখনও ফোন করে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেছে, "আমি এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি, আমি চিন্তিত..."? যদি না করে থাকে, তাহলে ভেবে দেখেছেন, কেন? কারণ, সে মনে করে না যে আপনি তার জীবনে কোন বিশেষ স্থান রাখেন। সে মনে করে যে আপনার সঙ্গে তার সম্পর্ক শুধু আপনি যে বিষয়গুলো পড়ান সেগুলো নিয়ে। তা সে গণিত, রসায়ন বা ভাষা - যাই হোক না কেন! যেদিন আপনি সিলেবাসের বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, সে অবশ্যই তার সমস্যাগুলি নিয়েও আপনার সঙ্গে কথা বলবে।
যদি এই সম্পর্ক থাকে, তাহলে পরীক্ষার সময় চাপের সম্ভাবনা সত্যিই কমে যাবে। আপনি নিশ্চয়ই অনেক ডাক্তার দেখেছো... যদিও সকলেরই ডিগ্রি আছে, কিছু ডাক্তার যারা সাধারণ অনুশীলনকারী... তারা আরও সফল কারণ রোগী চলে যাওয়ার পর, তারা এক বা দুই দিন পরে তাদের রোগীকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করে, "ভাই, তুমি কি ঠিকমতো ওষুধ খেয়েছ? কেমন লাগছে?" রোগী পরের দিন তাদের হাসপাতালে ফিরে আসবে। কিন্তু তাকে অপেক্ষা করানোর পরিবর্তে, সেই ডাক্তার তার রোগীর সাথে কয়েকবার কথা বলবেন। এবং এটি করার মাধ্যমে, তিনি তার রোগীকে অর্ধেক পথ সুস্থ করে তুলতে সক্ষম হন। তোমাদের মধ্যে কি এমন কেউ শিক্ষক? ধরো, একটা বাচ্চা খুব ভালো করেছে। তার কোন শিক্ষক কি তার বাড়িতে এসে পরিবারকে বলেছে যে, "তোমার বাচ্চা সত্যিই ভালো করেছে এবং আজ আমি তোমাকে মিষ্টি খাইয়ে দেব।" বাবা-মায়ের আনন্দ কল্পনা করতে পারো? বাচ্চাটি নিশ্চয়ই তার বাবা-মাকে তার পারফর্ম্যান্সের কথা বলেছে। কিন্তু যখন একজন শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে পরিবারকে বলে, তখন সেই বাচ্চাটি উৎসাহিত হবে এবং পরিবারও মাঝে মাঝে ভাববে, "বাহ, শিক্ষক যখন এটি বর্ণনা করেননি তখন পর্যন্ত আমরা জানতাম না যে আমার বাচ্চার এই ক্ষমতা আছে। আমাদের সত্যিই একটু বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।"
তাহলে দেখবেন, পরিবেশ সম্পূর্ণরূপে বদলে যাবে। আর এখন প্রথম কথা হলো পরীক্ষার সময় চাপ কমানোর জন্য কী করা উচিত? আমি ইতিমধ্যেই অনেক কথা বলেছি। আমি এটা পুনরাবৃত্তি করি না। কিন্তু যদি আপনি সারা বছর ধরে আপনার ছাত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন...... মাঝে মাঝে আমি অনেক শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করি, "ভাই, আপনি কত বছর ধরে পড়াচ্ছেন? যারা ছাত্র হিসেবে আপনার সংস্পর্শে এসেছিল, তাদের অনেকেই নিশ্চয়ই এখন বিয়ে করে ফেলেছে।আপনার কোন ছাত্র কি আপনাকে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র দিতে এসেছিলেন?" নিরানব্বই শতাংশ শিক্ষক আমাকে বলেছেন যে কোনও ছাত্র আসেনি। এর অর্থ হল আমরা কেবল নিজেদের কাজ করছিলাম, নিজের বা ছাত্রদের জীবনে পরিবর্তন আনছিলাম না। একজন শিক্ষকের কাজ কেবল তার ছাত্রদের শেখানো নয়, একজন শিক্ষকের কাজ হল তাদের জীবন গঠন করা, শিক্ষার্থীদের জীবনকে ক্ষমতায়িত করা, এবং এটিই পরিবর্তন আনে। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক - শিক্ষক এবং ছাত্রের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদানের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ত্রিপুরা রাজ্যের পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার প্রণবানন্দ বিদ্যা মন্দির সুন্দরভাবে আদিবাসী সংস্কৃতি চর্চা ও সংরক্ষণ করে ছাত্রী, সেই স্কুলের ছাত্রী আদ্রিতা চক্রবর্তী আমাদের সঙ্গে অনলাইনে যোগ দিচ্ছে। পরীক্ষার চাপ থেকে মুক্তির জন্য সে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার সমস্যার সমাধান চায়। আদ্রিতা, অনুগ্রহ করে তোমার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো।
আদ্রিতা চক্রবর্তী - নমস্কার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমার নাম আদ্রিতা চক্রবর্তী। আমি পশ্চিম ত্রিপুরার প্রণবানন্দ বিদ্যা মন্দিরের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আপনার কাছে আমার প্রশ্ন হল পরীক্ষার শেষ কয়েক মিনিটে আমি নার্ভাস হয়ে যাই এবং আমার হাতের লেখাও খারাপ হয়ে যায়। আমি কীভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারি? দয়া করে আমাকে একটি সমাধান দিন। ধন্যবাদ, স্যার।
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, আদ্রিতা। ছত্তিশগড়ের কাঙ্কেরের জওহর নবোদয় বিদ্যালয় করপ থেকে অনলাইনে আমাদের সাথে যোগ দিচ্ছে সেই স্কুলের ছাত্র শেখ তাইফুর রহমান। পরীক্ষার চাপ থেকে মুক্তির জন্য সে উপদেশ চায়। তাইফুর রহমান, অনুগ্রহ করে আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন।
শেখ তাইফুর রহমান - মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নমস্কার। আমার নাম শেখ তাইফুর রহমান। আমি ছত্তিশগড়ের প্রধানমন্ত্রী শ্রী জওহর নবোদয় বিদ্যালয় কাঙ্কেরের একজন ছাত্র। স্যার, পরীক্ষার সময় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী উদ্বিগ্ন বোধ করে, যার ফলে তারা বোকা ভুল করে, যেমন প্রশ্ন সঠিকভাবে না পড়া ইত্যাদি। স্যার, আপনার কাছে আমার প্রশ্ন হল আমরা কীভাবে এই ভুলগুলি এড়াতে পারি? দয়া করে আপনার পরামর্শ দিন। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক: ধন্যবাদ, তাইফুর। এই সমাবেশে আমাদের মধ্যে উপস্থিত আছে কটকের ওড়িশা আদর্শ বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী, রাজলক্ষ্মী আচার্য। সে প্রধানমন্ত্রীকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চায়। রাজলক্ষ্মী, তোমার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো।
রাজলক্ষ্মী আচার্য - মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জয় জগন্নাথ! আমার নাম রাজলক্ষ্মী আচার্য, আমি কটকের জোকিডোলা বাঁকি ওড়িশা আদর্শ বিদ্যালয় থেকে এসেছি। স্যার, আমার প্রশ্ন হল - এটা বলা সহজ যে তুমি ঠান্ডা মাথায় পরীক্ষায় বসো, কিন্তু পরীক্ষার হলে পরিস্থিতি এত ভয়ঙ্কর, যেমন "নড়াচড়া করবে না, সোজা দেখুন" ইত্যাদি। তাহলে, কিভাবে ঠান্ডা মাথায় পরীক্ষা দেওয়া যেতে পারে? ধন্যবাদ, স্যার।
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, রাজলক্ষ্মী। শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়, আদ্রিতা, তাইফুর এবং রাজলক্ষ্মী, আরও অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে, পরীক্ষা পে চর্চার পূর্ববর্তী সংস্করণগুলিতে বারবার এই প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করেছে এবং এটি এখনও কিছু শিক্ষার্থীর জন্য উদ্বেগের বিষয়। পরীক্ষার সময় চাপ কিভাবে মোকাবিলা করবে? দয়া করে এই বিষয়ে আপনার পরামর্শ দিন।
প্রধানমন্ত্রী - আবারও আলোচনাটা মানসিক চাপের দিকে ঘুরছে। এখন, এই চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় কীভাবে? তোমরা দেখো কী ধরণের ভুল করা হয়। আমরা যদি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছু ভুল লক্ষ্য করি, তাহলে আমরা এই সমস্যাটি বুঝতে পারব। কিছু ভুল বাবা-মায়ের অতিরিক্ত উৎসাহের কারণে হয়। কিছু ভুল ছাত্রদের অতিরিক্ত নিষ্ঠার ফলে হয়। আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের এসব এড়িয়ে চলা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, আমি কিছু বাবা-মায়কে ভাবতে দেখেছি, "আজ পরীক্ষা, আমাদের সন্তানের জন্য নতুন কলম আনি অথবা নতুন পোশাক পরিয়ে তাকে স্কুলে পাঠাই।" শুধু সুন্দর পোশাক পরার মাধ্যমে, অনেক সময় নষ্ট হয়... শার্ট ঠিক আছে কিনা বা ইউনিফর্ম ঠিকভাবে পরা কিনা তা পরীক্ষা করতে। অভিভাবকদের কাছে আমার অনুরোধ, শিশুটি যে কলমটি নিয়মিত ব্যবহার করে পরীক্ষায় সেটাই দিন। সে সেখানে কলম দেখাতে যাচ্ছে না, আর পরীক্ষার সময়, কারোরই খেয়াল করার সময় নেই যে আপনার সন্তান নতুন পোশাক পরে এসেছে নাকি পুরনো পোশাক পরে এসেছে। তাই, তাঁদের এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। দ্বিতীয়ত, তাঁরা তাকে "পরীক্ষার দিন বলে অমুক জিনিসটা খা" বলে বিশেষ কোনও খাবার চাপ দিয়ে খাইয়ে বিদায় জানাবে। সেদিন প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাওয়াটা তার অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দেয়। তারপর তার মা হয়তো বলতে পারেন, "ওহ, তোর পরীক্ষাকেন্দ্র অনেক দূরে! রাতে যখন ফিরবি তখন দেরি হয়ে যাবে। সেজন্য কিছু খেয়ে যা অথবা সঙ্গে কিছু নিয়ে যা।" সে প্রতিরোধ শুরু করে, বলে, "আমি এটা খাবো না।" চাপ শুরু হয় সেখান থেকেই, এমনকি বাড়ি থেকে বেরোনোর আগেই। তাই, সকল অভিভাবকের কাছ থেকে আমার প্রত্যাশা আর তাঁদের প্রতি আমার পরামর্শ হল, তাকে তার নিজের আনন্দে থাকতে দিন। যদি সে পরীক্ষা দিতে যায়, তাহলে তাকে উত্তেজনা এবং উৎসাহের সঙ্গে যেতে দিন । তাকে তার প্রতিদিনের রুটিন যথারীতি অনুসরণ করতে দিন। তাহলে নিষ্ঠাবান ছাত্রদের কী হবে? তাদের সমস্যা হল, পরীক্ষার হলের দরজা খোলা পর্যন্ত তারা বই বন্ধ করে না। এখন বলো, যখন তুমি রেলওয়ে স্টেশনে যাবে, তুমি কি কখনো এভাবে ট্রেনে উঠতে যাবে? সেখানে তুমি ৫-১০ মিনিট আগে যাবে, প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকবে, তোমার বগিটি কোথায় দাঁড়াতে পারে, মোটামুটি সেই হিসাব করে সেখানে গিয়ে দাঁড়াবে, তারপর ভাববে কোন লাগেজটা আগে ভেতরে নিয়ে যাবে। তার মানে ট্রেন আসার আগেই তোমার মন নিজেকে স্থির করে নিতে শুরু করে। একইভাবে, তোমার পরীক্ষার হলের ক্ষেত্রেও প্রস্তুতি নেবে। হল তো আর সকাল থেকে তোমার জন্য খোলা থাকবে না, পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১০-১৫ মিনিট আগেই খুলবে। তাই, হল খোলার সাথে সাথেই ভেতরে যাও এবং আরাম করে বসে বিশ্রাম নাও।কোনও মজার কথা ভাবো, আর যদি তোমার পাশে কোনও বন্ধু থাকে, তাহলে তার সঙ্গে একটি বা দুটি মজার কথা বলো, ৫-১০ মিনিট হাসতে হাসতে কাটাও। এভাবেই চলতে দাও।অথবা বুকভরে গভীর শ্বাস নাও। ধীরে ধীরে, ৮-১০ মিনিটের জন্য নিজেকে একাগ্র করে তোলো। আর যখন হাতে প্রশ্নপত্র পাবে, তখন শান্ত থেক। নাহলে, কী হবে, তুমি ভাবতে শুরু করবে যে প্রশ্নপত্র এসেছে কি না, কেমন প্রশ্ন আসবে, পরীক্ষাকেন্দ্রে যে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে তার জন্য তোমার কী করার আছে? এটি যে কোন কোণেই থাকুক না কেন, তাতে তোমার উদ্বেগের কী আছে? তোমরা খামোখা এসব ভাবনায় নিজেকে ব্যস্ত রেখে কোনও কারণ ছাড়াই সময় এবং শক্তি নষ্ট করবে। তোমাদের নিজের মধ্যে একাগ্র উচিত, এবং প্রশ্নপত্র আসার সঙ্গে সঙ্গে... কখনও কখনও এটা হয় যে তুমি প্রথম বেঞ্চে বসে আছো , আর পরিদর্শক শেষ বেঞ্চ থেকে প্রশ্নপত্র বিতরণ শুরু করলেন। তখন তোমার মন চঞ্চল হয়ে ভাবতে শুরু করে, " ওরা আমার পাঁচমিনিট আগে পেল, আমি পাঁচ মিনিট পরে পাবো।" তাই না? তাই না? এখন, যদি তুমি তোমার মনকে এমন কিছুতে ব্যস্ত রাখো, আমি আগে প্রশ্নপত্র পাই বা বিশ নম্বরের পরে, তুমি এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পারবে না।তাহলে কেন এসব ভেবে শক্তি নষ্ট করবে? শিক্ষক যেখান থেকেই শুরু করুন না কেন, তুমি দাঁড়িয়ে বলতে পারবে না, আগে আমাকে দিন; তুমি এটা করতে পারবে না। যেহেতু তুমি জানো যে এটা এরকমই ঘটতে পারে, তাই তোমার সেই অনুযায়ী নিজেকে মানিয়ে নেওয়া উচিত।
একবার যদি চারপাশে যা ঘটছে তা একপাশে সরিয়ে রাখতে পারো... আমরা ছোটবেলা থেকেই এই গল্পগুলো পড়ছি, যেমন অর্জুনের পাখির চোখকে লক্ষ্য করে তির ছোঁড়ার গল্প, কিন্তু যখন জীবনের কথা আসে, তখন তুমি শুধু গাছ দেখতে পাও না, তুমি পাতাও দেখতে পাও, পাখিও দেখতে পাও। কিন্তু তুমি সেই পাখির চোখ দেখতে পাও না। শৈশবে পড়া বা শোনা এই গল্পগুলোকে নিজের জীবনে প্র্যোগ করার আনার একটা সুযোগ এনে দেয় পরীক্ষা। তাই, প্রথম কথা হলো, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরীক্ষায় উদ্বেগের কারণগুলো বাইরের কারণ। কখনও কখনও মনে হয় সময় ফুরিয়ে আসছে, কখনও কখনও মনে হয় আমার আগে সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া উচিত ছিল। তাই, এর সমাধান হল প্রথমে পুরো প্রশ্নপত্র একবার পড়ে নেওয়া। তারপর প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে মোটামুটি কতটা সময় লাগবে তা ভেবে নেওয়া, আর সেই অনুযায়ী তোমার সময় নির্ধারণ করা। এখন, যখন তুমি খাও, যখন তুমি খেতে বসো, তখন কি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে খাও যে তোমাকে বিশ মিনিটের মধ্যে খাওয়া শেষ করতে হবে? "হ্যাঁ, বিশ মিনিট হয়ে গেছে এবং আমার খাওয়া শেষ।" এর জন্য কোনও ঘড়ি বা ঘণ্টা নেই, যেমন, "ঠিক আছে, এখন খাওয়া শুরু করো, এখন খাওয়া বন্ধ করো।" এটা এমনভাবে হয় না।এটা অনুশীলনের মাধ্যমে হয়।
দ্বিতীয়ত, আমি দেখেছি যে আজকাল সবচেয়ে বড় সমস্যা, তা হল, যখন তুমি পরীক্ষা দিতে যাও, তখন তুমি শারীরিকভাবে কী করো? তুমি শারীরিকভাবে কলম হাতে ধরে লেখো, তাই না? মস্তিষ্ক তার কাজ করে, কিন্তু তুমি কী করো? তুমি লেখো। আজকাল, আইপ্যাড, কম্পিউটার এবং মোবাইলের কারণে লেখার অভ্যাস ধীরে ধীরে কমে গেছে, যেখানে পরীক্ষার জন্য তোমাকে লিখতে হয়। এর মানে হল যে যদি আমাকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়, তাহলে আমাকে দ্রুত লেখার অভ্যাসও করতে হবে।আজকাল, লেখার অভ্যাস কমে গেছে। তাই, স্কুলের পরে প্রতিদিন তুমি যতটা সময় তোমার পড়াশোনায় ব্যয় করো, তার কমপক্ষে ৫০%, কমপক্ষে ৫০% সময়, তোমার নোটবুকে কিছু লেখা উচিত। যদি সম্ভব হয়, সেই বিষয়ে লিখো। এবং তুমি যা লিখেছো তা তিন বা চারবার পড়ো এবং যা লিখেছো তা সংশোধন করো। তাহলে, তোমার উন্নতি এত ভালো হবে যে তুমি কারো সাহায্য ছাড়াই লেখার অভ্যাস গড়ে তুলবে। তাহলে, কত পৃষ্ঠা লিখতে হবে, লিখতে কত সময় লাগবে, এই সব জিনিস তুমি আয়ত্ত করতে পারবে। কখনও কখনও, অনেক বিষয়ের সঙ্গে, তোমার মনে হতে পারে, "ওহ, আমি এটা জানি।" উদাহরণস্বরূপ, তুমি একটি বিখ্যাত গান শুনছ। গানটি বাজছে, এবং তোমার মনে হতে পারে, "আমি এই গানটি জানি কারণ আমি এটি অনেকবার শুনেছি।" কিন্তু একবার গানটি থামলে, কথাগুলো লিখে ফেলার চেষ্টা করো। তখন কি তোমার গানটি মনে আছে? তুমি হয়তো বুঝতে পারো যে শোনার সময়, তোমার যে আত্মবিশ্বাস ছিল এবং তুমি যা অনুভব করেছিলে তা ভাল ছিল। কিন্তু বাস্তবে, তুমি এটি মনে রাখতে পারোনি। আর যদি পরিপূর্ণতার কথা আসে, তাহলে তুমি পিছিয়ে পড়েছো।
আজকের প্রজন্মের কাছে আমার অনুরোধ, পরীক্ষার সময় দ্রুত লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। তুমি কতটা মনে রেখেছো, তা সঠিক হোক বা ভুল, সেটা পরের কথা, আগে লেখার অনুশীলনের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করো। যদি তুমি এই দিকগুলিতে মনোনিবেশ করো, তাহলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে পরীক্ষার হলে তুমি অস্বস্তি বা চাপ অনুভব করবে না, কারণ তুমি প্রস্তুত। যদি তুমি সাঁতার জানো, তাহলে তুমি জলে নামতে ভয় পাবে না কারণ তুমি সাঁতার জানো। একইভাবে, যদি তুমি বইয়ে সাঁতার সম্পর্কে পড়ে থাকো আর জলে নেমে এক হাত দিয়ে শুরু করো, তারপর অন্যটি, তারপর প্রথম পা।তোমার মনে যেভাবে ভেবেছো, কিন্তু ডুব দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সমস্যা শুরু হয়। কিন্তু যারা জলে অনুশীলন শুরু করে, জল যত গভীরই হোক না কেন, তাদের আত্মবিশ্বাস থাকে যে তারা তা অতিক্রম করবে। এই কারণেই অনুশীলন অপরিহার্য, লেখার অনুশীলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তুমি যত বেশি লিখবে, তোমার মন তত তীক্ষ্ণ হবে। তোমার চিন্তাভাবনায়ও তীক্ষ্ণতা প্রতিফলিত হবে। তুমি যা লিখেছো তা তিন-চারবার পড়ো এবং নিজে নিজে সংশোধন করো। যত বেশি তুমি নিজে সংশোধন করবে, তত বেশি তোমার দক্ষতা বাড়বে। তাই পরীক্ষার হলে বসে তোমার কোনও সমস্যা হবে না। দ্বিতীয়ত, কেউ অসাধারণ গতিতে লিখছে। আর তুমি ভাবছ আমি তৃতীয় প্রশ্নে আটকে আছি, আর সে ইতিমধ্যেই সপ্তম প্রশ্নে চলে গেছে। এতে বিভ্রান্ত হও না। সে ৭ নম্বর প্রশ্নে পৌঁছেছে কিনা, সেটা কোন ব্যাপার না। কে জানে, হয়তো সে কোনও সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখছে। নিজের উপর আস্থা রাখো। তোমার চারপাশে অন্যরা কী করছে তা ভুলে যাও। তুমি যত বেশি নিজের উপর মনোযোগ দেবে, তত বেশি তোমার মনোযোগ প্রশ্নপত্রের উপর থাকবে। তুমি যত বেশি প্রশ্নপত্রের উপর মনোযোগ দেবে, তোমার উত্তরগুলি তত বেশি নির্ভুল হবে, এক এক করে। শেষ পর্যন্ত, তুমি কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করবে। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, প্রধানমন্ত্রী মহোদয়। চাপ ব্যবস্থাপনার এই নীতি আমাদের সারা জীবন অনুপ্রাণিত করবে। প্রধানমন্ত্রী, এই হলরুমে আমাদের মধ্যে আছে ধীরজ সুথার, রাজস্থানের রাজসমন্দের একজন ছাত্র, যে কোন্ধোয়া সরকারি সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলে পড়ে। সে আপনাকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চায়। ধীরজ, দয়া করে তোমার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো।
ধীরজ সুথার - নমস্কার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমি ধীরজ সুথার, রাজস্থানের রাজসমন্দের কোন্ধোয়া সরকারি সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুল থেকে। আমি বর্তমানে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ছি। আমার প্রশ্ন হল পড়াশোনার পাশাপাশি, ব্যায়াম কীভাবে করা যায়! কারণ, শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। দয়া করে পরামর্শ দিন। ধন্যবাদ, স্যার।
প্রধানমন্ত্রী - তোমার শরীর দেখে মনে হচ্ছে যে তুমি সঠিক প্রশ্ন করেছ। এবং তোমার উদ্বেগও সঠিক।
উপস্থাপক: ধন্যবাদ, ধীরজ। অনলাইনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন নাজমা খাতুন, বিখ্যাত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখের পিএম শ্রী কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় কার্গিলের ছাত্রী, যা তার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং তুষারাবৃত চূড়ায় নিয়োজিত বীর সৈন্যদের বীরত্বের জন্য বিখ্যাত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তিনি আপনাকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চান। নাজমা, দয়া করে আপনার প্রশ্নটি করুন।
নাজমা খাতুন - শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী, নমস্কার। আমার নাম নাজমা খাতুন, এবং আমি লাদাখের পিএম শ্রী কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় কার্গিলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। আপনার কাছে আমার প্রশ্ন হল, পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার মধ্যে আমরা কীভাবে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারি? ধন্যবাদ।
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, নাজমা। উত্তর-পূর্ব ভারতের রত্ন এবং বহুসংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের নাহারলাগুন সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা টোবি লোমি এই সমাবেশে উপস্থিত আছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চান।
টোবি লোমি - নমস্কার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমার নাম টোবি লোমি, এবং আমি একজন শিক্ষিকা। আমি অরুণাচল প্রদেশের নাহারলাগুন সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসেছি। আমার প্রশ্ন হল, শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার পাশাপাশি কীভাবে প্রাথমিকভাবে তাদের পড়াশোনার উপর মনোযোগ দিতে পারে? অনুগ্রহ করে উপদেশ দিন। ধন্যবাদ, স্যার।
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, ম্যাডাম।প্রধানমন্ত্রী মহোদয়, ধীরজ, নাজমা এবং টোবিজি, পড়াশোনা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার মধ্যে সামঞ্জস্য স্থাপনের জন্য আপনার পরামর্শ চাইছে।
প্রধানমন্ত্রী - তোমাদের অনেকেই নিশ্চয়ই মোবাইল ফোন ব্যবহার করো। তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো ঘন্টার পর ঘন্টা ফোন ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলেছো। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছো যে আমি যদি আমার ফোন চার্জে না রাখি, তাহলে আমার মোবাইলের ব্যবহার কমে যাবে। কিন্তু যদি আমি রিচার্জ না করি, তাহলে মোবাইল ফোন কি কাজ করবে? এটা কি কাজ করবে? তাই, যেমন আমাদের মোবাইল ফোন চার্জ করতে হয়, তেমনি আমাদের শরীরও কি চার্জ করা উচিত নয়? মোবাইল ফোন চার্জ করার মতো অবস্থা, আমাদের শরীর চার্জ করাও একটা অবস্থা। একবার ভেবে দেখো যে তোমার পড়াশোনা করতে মন চায় না। শুধু জানালা বন্ধ করে অন্য সবকিছু বন্ধ করে দাও। এটা কখনোই হতে পারে না। জীবন এভাবে কাটানো যায় না, আর সেই কারণেই জীবনকে একটু ভারসাম্যপূর্ণ করা দরকার। কিছু মানুষ শুধু খেলাধুলা করে, কিন্তু সেটাও একটা সমস্যা। যাইহোক, যখন তোমাকে পরীক্ষা দিতে হয়, তখন জীবনে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার গুরুত্ব থাকে। এই বিষয়গুলো উপেক্ষা করা যায় না। কিন্তু যদি আমরা সুস্থ না থাকি, যদি আমাদের শরীরে সেই ক্ষমতা না থাকে, তাহলে আমরা পরীক্ষায় তিন ঘন্টা বসার ক্ষমতা হারাতে পারি। আর সেই কারণেই সুস্থ মনের জন্যও সুস্থ শরীর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন, সুস্থ শরীরের অর্থ এই নয় যে তোমাকে কুস্তি করতে হবে। এর প্রয়োজন নেই, তবে জীবনের কিছু নিয়ম আছে।
এবার ভাবুন, দিনের আলোতে খোলা আকাশের নীচে তুমি কতটা সময় কাটিয়েছো। যদি তোমাকে পড়াশোনা করতেই হয়, তাহলে একটি বই নিয়ে কিছুক্ষণ রোদের নীচে বসে থেক। কখনও কখনও, এমনকি রোদের আলোও শরীরকে রিচার্জ করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তুমি কি কখনও চেষ্টা করেছো? একটা নিয়ম করে ফেলো যে, যাই হোক না কেন, আমি দিনের বেলায় কিছু সময় বের করব, যাতে আমি রোদের নীচে কিছুটা সময় কাটাতে পারি। একইভাবে, যতই পড়াশোনা করতে হোক না কেন, ঘুমের সঙ্গে কখনো আপস করো না। যখন তোমার মা তোমাকে ঘুমাতে যেতে বলেন, তখন এটিকে হস্তক্ষেপ হিসেবে নেবে না। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর অহংকার এতটাই আঘাত পায় যে তারা ভাবে, "কাল পরীক্ষা থাকলে আমাকে ঘুমাতে বলার তুমি কে? আমার ঘুমানো উচিত কি না? এর সঙ্গে তোমার কী করার আছে?" তারা বাড়িতে এটা করে। যারা এরকম ভাবেনা তাদের কিছু বলতে হবে না, কিন্তু যারা ভাবো তারা হাত তুলে বলো যে, আমি এমন ভাবি!
কেউ কিছু বলছো না। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে ঘুমের সময়ও, একবার যখন তুমি একের পর এক রিল, বা সিনেমা দেখতে শুরু করো... তুমি লুকাতে চাও... তুমি জানো না কত সময় কেটে গেছে, তুমি জানো না তুমি কতটা ঘুম হারিয়েছো। তুমি কী অর্জন করেছো – তুমি শুধু প্রথম রিলটি বের করো... মনে রাখার চেষ্টা করো, কিন্তু পরে তুমি মনেও রাখতে পারো না... তবুও, তুমি দেখতে থাকো। এভাবেই আমরা ঘুমকে অবমূল্যায়ন করি।
আজকের আধুনিক স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ঘুমের গুরুত্বকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়। পর্যাপ্ত ঘুম তোমার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তোমার উচিত এর উপর মনোযোগ দেওয়া। এর মানে এই নয় যে পরীক্ষা তো আসতেই থাকবে... মোদীজি নিজেই ঘুমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। পড়াশুনার সঙ্গে ঘুমের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। অপর্যাপ্ত ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য অনুপযুক্ত। কিছু মানুষ আছে যারা তাদের শরীরকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে তারা এর বাইরেও যেতে পারে। কিন্তু গড়পড়তা মানুষের জীবনের জন্য, এটি অনুপযুক্ত।
তোমার শরীরের জন্য যতটা প্রয়োজনীয় ততটা ঘুমোনোর চেষ্টা করো, আর দেখো ভালোভাবে ঘুমিয়েছো কিনা! তোমাকে গভীরভাবে ঘুমোতে হবে।তুমি অবাক হবে... ওখানে বসে থাকা শিক্ষকরা, যারা বয়স্ক... তারা এটা শুনে অবশ্যই চমকে উঠবেন। আজও, এত কাজ থাকা সত্ত্বেও... আমার এত কাজ নাও থাকতে পারে যতটা তোমাদের আছে, কিন্তু ৩৬৫ দিনের জন্য এর ব্যতিক্রম নেই... যদি আমি বিছানায় শুয়ে পড়ি, তাহলে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই আমি গভীর ঘুমের দেশে চলে যাই... আমার ৩০ সেকেন্ড সময় লাগে। তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ খুব ছোট হতে পারে... তোমরা নিশ্চয়ই বিছানায় কখনও এখানে, কখনও সেখানে উল্টে পড়ছো এবং তারপর ঘুম আসে। কেন? আমি জাগ্রত থাকার সময়ে খুব জেগে থাকি, পুরোপুরি জেগে থাকি, এবং যখন আমি ঘুমাই, আমি পুরোপুরি ঘুমিয়ে পড়ি।আর সেই ভারসাম্য... বয়স্করা হয়তো এই ভারসাম্য রাখতে সমস্যায় পড়তে পারেন... কী করবেন, নানা চিন্তায় তাঁদের ঘুম আসে না; তাঁরা আধ ঘন্টা ধরে এপাশ -ওপাশ করতে থাকেন।কিন্তু তোমরা এটা অভ্যাস করলে সফল হতে পারো।
তারপর পুষ্টির বিষয়... সুষম খাদ্য এবং তোমার বয়সে... সেই বয়সে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, তোমার খাদ্যতালিকায় থাকুক বা না থাকুক... তুমি একটা জিনিস পছন্দ করতে পারো আর তুমি সেটাই খেতে চাও... তোমার পেট ভরা লাগতে পারে... মাঝে মাঝে তোমার মন তৃপ্ত হতে পারে... কিন্তু তা শরীরের চাহিদা পূরণ নাও করতে পারে।
দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার সময়টা এমন যে যখন পরীক্ষার পরিবেশ থাকে, তখন একটা জিনিস ঠিক করো: আমি আমার শরীরের চাহিদা যতটা প্রয়োজন ততটা পূরণ করব। বাবা-মায়েরও এটা করা উচিত নয়... আজ আমি হালুয়া বানিয়েছি, একটু বেশি খাও। মাঝে মাঝে বাবা-মায়েরও মনে হয় যে যদি তাঁরা বেশি পরিমাণে পরিবেশন করেন, তাহলে সন্তান খুশি হবে... না, এটা তাদের শরীরের ব্যাপার... আর এর জন্য, এটা ধনী বা দরিদ্র্যের বিষয় নয়; সামর্থ অনুযায়ী যা পাওয়া যায় তা কাজে লাগাতে হবে।প্রকৃতিতে সবকিছুই আছে... এমনকি আমাদের পুষ্টির জন্য সস্তা বিকল্পও। আর সেই কারণেই আমাদের খাদ্যতালিকায় ভারসাম্য... আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
আর তারপর ব্যায়াম- তুমি কুস্তি-টাইপ ব্যায়াম করো বা না করো, সেটা আলাদা বিষয়... কিন্তু ফিটনেসের জন্য ব্যায়াম করা উচিত। ঠিক যেমন প্রতিদিন দাঁত মাজো... ঠিক তেমনই, কোনও আপস করো না... ব্যায়াম করা উচিত। আমি কিছু বাচ্চা দেখেছি যারা তাদের বইপত্র নিয়ে ছাদে যায়...তারা পড়াশোনা করে এবং কিছু রোদও পায়... তারা কিছু ব্যায়ামও করে, দুটো কাজই সামলে নেয়... এতে কোনও ভুল নেই। নিজেকে শারীরিকভাবে সক্রিয় রাখার জন্য তোমার কিছু উপায় খুঁজে বের করা উচিত। তোমার ৫ মিনিট, ১০ মিনিট সময় শারীরিক কসরৎ করা উচিত। যদি তুমি আরও বেশি করতে পারো, তাহলে দারুন। পরীক্ষার চাপের মধ্যে যদি তুমি এই জিনিসগুলো সহজেই করতে পারো, তাহলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। যদি তুমি এগুলো না করো, তাহলে কাজ হবে না। ভারসাম্য বজায় রাখো, তাহলে তোমার অনেক উপকার হবে। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক - প্রধানমন্ত্রী স্যার, আপনি "এক্সাম ওয়ারিয়র"-এও আমাদের একই বার্তা দিয়েছেন... তুমি যত বেশি খেলবে, তত বেশি তুমি প্রস্ফুটিত হবে। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী স্যার। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর ভূমি, শৈল্পিকতা ও দক্ষতায় সমৃদ্ধ পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রী মধুমিতা মল্লিক ভার্চুয়াল মাধ্যমে আমাদের একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চায়। মধুমিতা, দয়া করে তোমার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো
মধুমিতা – মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নমস্কার। আমার নাম মধুমিতা মল্লিক। আমি কলকাতা অঞ্চলের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় ব্যারাকপুর (সেনাবাহিনী) এর একাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। আপনার কাছে আমার প্রশ্ন হল, যেসব শিক্ষার্থী তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে অনিশ্চিত অথবা নির্দিষ্ট ক্যারিয়ার বা পেশা বেছে নেওয়ার জন্য চাপ অনুভব করে, তাদের আপনি কী পরামর্শ দেবেন? দয়া করে আমাকে এই বিষয়ে নির্দেশনা দিন। ধন্যবাদ, স্যার।
উপস্থাপক: ধন্যবাদ, মধুমিতা। প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, ভগবান কৃষ্ণের শিক্ষার ভূমি এবং সাহসী ক্রীড়াবিদদের রাজ্য, হরিয়ানার পানিপতের দ্য মিলেনিয়াম স্কুলের ছাত্রী অদিতি তানওয়ার একটি অনলাইন মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে এবং আপনার কাছ থেকে পরামর্শ চেয়েছে। অদিতি, দয়া করে তোমার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো।
অদিতি তানওয়ার: শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী, নমস্কার। আমার নাম অদিতি তানওয়ার, এবং আমি হরিয়ানার পানিপতের দ্য মিলেনিয়াম স্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। আপনার কাছে আমার প্রশ্ন হল, আমি ‘হিউম্যানিটিস’ বা কলাকে স্ট্রিম বা ধারা হিসেবে বেছে নিয়েছি, কিন্তু অনেকে প্রায়ই এর জন্য আমাকে উপহাস করে। আমার এই স্ট্রিমটি পছন্দ, তাই আমি এটি বেছে নিয়েছি। কিন্তু মাঝে মাঝে, এইসব বিদ্রুপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। আমি কীভাবে এগুলো সামলাবো এবং উপেক্ষা করবো? এই বিষয়ে আপনার কাছ থেকে পরামর্শ চাই। ধন্যবাদ, স্যার, নমস্কার।
উপস্থাপক: ধন্যবাদ, অদিতি। মধুমিতা, অদিতি এবং আরও কিছু ছাত্রছাত্রী তাদের জীবনে ক্যারিয়ার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে চাপ অনুভব করছে। স্যার, একটি নির্দিষ্ট ক্যারিয়ার বা স্ট্রিম বেছে নেওয়ার মানসিক চাপের সমস্যাটি আমরা কীভাবে সমাধান করতে পারি?
প্রধানমন্ত্রী: আমার মনে হয় না তুমি বিভ্রান্ত। আমি বিশ্বাস করি না যে তুমি ব্যক্তিগতভাবে বিভ্রান্তির মধ্যে আছো। বাস্তবতা হল তোমার নিজের উপর আস্থার অভাব রয়েছে।তোমার নিজের চিন্তাভাবনা নিয়ে সন্দেহ আছে।সেজন্যেই আপনি ৫০ জনকে জিজ্ঞাসা করেন, "আমি যদি এটা করি তাহলে আপনারা কী মনে করেন... আমি যদি ওটা করি তাহলে আপনারা কী মনে করেন?" আপনি নিজেকে জানেন না।আর সেজন্য, আপনি অন্য কারো পরামর্শের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এবং যে ব্যক্তিকে আপনার কাছে বেশি আকর্ষণীয় বলে মনে হয়, এবং যার পরামর্শ সবচেয়ে সহজ বলে মনে হয়, আপনি তাঁরটা গ্রহণ করেন। উদাহরণস্বরূপ, আমি বলেছিলাম যারা খেলে তারা অনেক কিছু অর্জন করে; যারা এই সংকল্প নিয়ে বাড়ি যায়... মোদিজি বলেন, "খেলো আর উজ্জ্বল হও" এখন আমি পড়াশোনা করবো না কারণ... সে যা পছন্দ করে তা বেছে নিয়েছে।
আমার মনে হয় সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হলো বিভ্রান্তি... সিদ্ধান্তহীনতা। সিদ্ধান্তহীনতা... তুমি নিশ্চয়ই পুরনো গল্প শুনেছো... কেউ গাড়ি চালাচ্ছিল আর একটা কুকুর ঠিক করতে পারছিল না, আমি কি এই পথে যাব নাকি ওইপথে, আর শেষ পর্যন্ত সে গাড়ির নিচে মারা গেল। এমনটাই হয়... যদি সে জানত যে ওই পথে গেলে তাদের বাঁচানো যাবে, তাহলে হয়তো চালক তাদের বাঁচাতে পারত। কিন্তু কখনও এদিকে গেলে... কখনও ওদিকে গেলে... তাহলে চালক যতই বিশেষজ্ঞ হোক না কেন, সে বাঁচাতে পারবে না। আমাদের অনিশ্চয়তা এবং সিদ্ধান্তহীনতা এড়িয়ে চলা উচিত। এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, আমাদের যতটা সম্ভব সব বিকল্প বিবেচনা করা উচিত।
দ্বিতীয় কথা হলো, মাঝে মাঝে কিছু মানুষ মনে করে যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খুবই তুচ্ছ বিষয়। এখন, যদি আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, তাহলে এটা কি খুবই তুচ্ছ বিষয় নাকি? কেউ হয়তো বলবে, "ওহ, প্রধানমন্ত্রীর অনেক কাজ আছে... তিনি সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা বলেন।" কিন্তু যখন আমি এর গভীরে প্রবেশ করলাম, তখনই আমি এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে দেখতে পেলাম। আজ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা দেশের প্রধান এজেন্ডা হয়ে উঠেছে, তাই না? পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ছিল একটি ছোট বিষয়, কিন্তু যখন আমরা এতে আমাদের প্রবল ইচ্ছেকে জুড়ি, তখন এটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। অতএব, ভাববেন না... আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন যে কখনও কখনও আপনি কোনও কিছু সম্পূর্ণভাবে পড়া শেষ করতে পারেন না, কিন্তু আপনার মনোযোগ তখনই আকৃষ্ট হয় যখন কেউ বলেন যে গত দশ বছরে, শিল্প ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে ভারতের বাজার ২৫০ গুণ বেড়েছে। আগে, কেউ যদি ছবি আঁকতেন, তাহলে বাবা-মা বলতেন, "প্রথমে পড়াশোনা করো। ছুটির দিনে ছবি আঁকো।" তারা বুঝতে পারেননি যে চিত্রকর্মও জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হতে পারে। এবং সেজন্যই আমাদের কোনও কিছুকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। যদি আমাদের সামর্থ্য থাকে, তাহলে আমরা তা গুরুত্বের সঙ্গে ফুটিয়ে তুলব। আমাদের সামর্থ্য থাকা উচিত। আর তুমি যা কিছু হাতে নাও... তাতে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত করো... কিন্তু যদি আমরা দ্বিধাগ্রস্ত হই... "তিনি এটা নিলেন... আমার এটা নেওয়া উচিত ছিল, তাহলে হয়তো আরও ভালো হতো।" এই দ্বিধা তোমাদের অনেক সমস্যার মধ্যে ফেলতে পারে।
আজ, জাতীয় শিক্ষানীতি তোমাদের জন্য অনেক কিছু সহজ করে দিয়েছে। তুমি একটি ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করছো, কিন্তু যদি তুমি অন্য কিছু চেষ্টা করতে চাও, তাহলে তুমি পরিবর্তন করতে পারো। তুমি তোমার স্ট্রিম পরিবর্তন করতে পারো। কোন নির্দিষ্ট ধারায় আবদ্ধ থাকার কোন প্রয়োজন নেই; তুমি নিজেই নিজের উন্নতি করতে পারো। আর সেজন্যই এখন, শিক্ষাক্ষেত্রেও... আমি একটা প্রদর্শনী দেখছিলাম, আমি দেখছিলাম কিভাবে শিশুদের প্রতিভা প্রদর্শন করা হচ্ছে, এটা সত্যিই চিত্তাকর্ষক।
সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক যা সরকারের পরিকল্পনাগুলি সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করে... এই শিশুরা আমাদের মন্ত্রক পরিচালনাকারী ব্যক্তিদের চেয়ে অনেক ভাল কাজ করেছে। সেখানে 'নারী শক্তি'-র গুরুত্ব অত্যন্ত উজ্জ্বলভাবে চিত্রিত করা হয়েছে। এর অর্থ হল যে আমাদের যেকোনো পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী হওয়া উচিত। একবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠলে, বিভ্রান্তি দূর হয়ে যায়। নইলে, তোমরা নিশ্চয়ই মাঝে মাঝে নিজের পরিবারের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় যাও... মনে আছে? আমি সুযোগ পাই না, কিন্তু তোমরা হয়তো পাও। তুমি রেস্তোরাঁয় যাও... প্রথমে তুমি ভাবো আমি এটা অর্ডার করব... তারপর তুমি পাশের টেবিলে কিছু দেখে বলো না, আমি এটা অর্ডার করবো না। তারপর তুমি দেখতে পাও ওয়েটার অন্য কিছু নিয়ে আসছে। তারপর তুমি তোমার অর্ডারের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিলে। "ঠিক আছে, আমার দুটি অর্ডার বাতিল করো, আমাকে ওটা এনে দাও।" এখন, তোমার পেট কখনোই ভরবে না। তুমি কখনোই তৃপ্ত হবে না, এবং যখন থালাটি আসবে, তখন তুমি ভাববে, আমি আগেরটা কেন অর্ডার করিনি, তাহলে ভাল হতো। যারা খাবার টেবিলে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না তারা কখনোই রেস্তোরাঁ বা খাবার উপভোগ করতে পারবে না। তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি তোমার মা তোমাকে প্রতিদিন সকালে জিজ্ঞাসা করে যে তুমি আজ কি খেতে চাও এবং তোমাকে ৫০টি ধরণের খাবার পরিবেশন করেন, তাহলে... তুমি কি করবে? কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর, তুমি অবশেষে তুমি নিয়মিত যা খাও তাতে ফিরে আসবে।
আমি বুঝতে পারছি যে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, আমাদের ৫০-টি বিষয় বিস্তারিতভাবে দেখা উচিত, তাদের ভাল-মন্দ দিকগুলো দেখা উচিত, কারো কাছ থেকে ভাল-মন্দ দিকগুলো নিয়ে জিজ্ঞাসা করা উচিত... কিন্তু তার পরে, আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। আর সেই কারণেই যেকোনো পরিস্থিতিতেই বিভ্রান্তি কারো জন্য ভালো নয়। সিদ্ধান্তহীনতা ক্ষতিকারক, এবং আমাদের এ থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক - মহাশয়, সাফল্য নিহিত রয়েছে সিদ্ধান্তগ্রহণের স্বচ্ছতার মধ্যে... আপনার বক্তব্য সর্বদা মনে থাকবে। ধন্যবাদ। দীপশ্রী, পুদুচেরির একটি বিখ্যাত শহর, সেদারাপেট, যা তার শান্ত সৈকত, মনোরম রাস্তা এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য পরিচিত, সেখানকার সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী, সে এই মিলনায়তনে আমাদের মধ্যে আছে এবং তার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চায়। দীপশ্রী, অনুগ্রহ করে আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন।
দীপশ্রী - নমস্তে, ভনক্কম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়।
প্রধানমন্ত্রী - ভনক্কম, ভনক্কম।
দীপশ্রী - আমার নাম দীপশ্রী। আমি পুদুচেরির সেদারাপেটের সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসেছি। আমার প্রশ্ন হল আমরা কীভাবে আমাদের বাবা-মায়ের মনে আস্থা তৈরি করতে পারি যে আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি। ধন্যবাদ স্যার।
উপস্থাপক - ধন্যবাদ, দীপশ্রী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা কীভাবে আমাদের বাবা-মাকে বোঝাতে পারি যে আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি? দীপশ্রী এই বিষয়ে আপনার কাছ থেকে পরামর্শ চায়।
প্রধানমন্ত্রী - তুমি একটি প্রশ্ন করেছ, কিন্তু এই প্রশ্নের পিছনে তোমার মনে আরেকটি প্রশ্ন আছে, যা তুমি জিজ্ঞাসা করছ না। দ্বিতীয় প্রশ্নটি হল, পুরো পরিবারে অবিশ্বাস রয়েছে। বিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে, এবং তুমি পরিস্থিতিটি খুব সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করেছ। তুমি প্রশ্নটি এমনভাবে উপস্থাপন করেছ যাতে বাড়ির কেউ রাগ না করেন, তবে এটি শিক্ষক এবং অভিভাবক উভয়ের জন্যই উদ্বেগের বিষয়। আমাদের পারিবারিক জীবনে বিশ্বাসের ঘাটতি কেন হচ্ছে? যদি আমরা পারিবারিক জীবনে বিশ্বাসের ঘাটতি অনুভব করি, তবে এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। এবং এই বিশ্বাসের ঘাটতি হঠাৎ করে ঘটে না... এটি দীর্ঘ সময় ধরে ঘটে।আর সেজন্যই প্রত্যেক অভিভাবক, প্রত্যেক শিক্ষককে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আচরণ খুব সাবধানে বিশ্লেষণ করা উচিত। সর্বোপরি, কেন বাবা-মা তোমার কথা বিশ্বাস করেন না... কোথাও কি এমন কিছু ঘটেছে যা তাঁদের তোমার প্রতি মন পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে? কখনও তুমি হয়তো তোমার বাবা-মাকে বলেছিলে যে তুমি কোনও বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছ, আর যদি বাবা-মা পরে জানতে পারেন যে তুমি সেখানে যাওনি, তাহলে বিশ্বাসের ঘাটতি শুরু হয়। সে বলেছিল সে সেখানে যাবে, কিন্তু পরে যখন বাবা-মা জানতে পারলো যে সে সেখানে যাবে না কিন্তু তুমি বলেছিলে যে আমি সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কিন্তু পথে আমার মন বদলে গেছে, তাই আমি অন্য কোথাও চলে গেছি। তাই বিশ্বাসের ঘাটতির এই পরিস্থিতি আর কখনো তৈরি হবে না। আর একজন ছাত্র হিসেবে, আমাদের অবশ্যই এটা নিয়ে ভাবা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, তুমি বলেছিলে, "মা, তুমি ঘুমাও, চিন্তা করো না, আমি পড়াশোনা করব।" আর যদি মা চুপচাপ জানতে পারে যে তুমি ঘুমাচ্ছ, তাহলে বিশ্বাসের ঘাটতি হবে। তোমার মা মনে করবে যে সে বলেছে সে পড়াশোনা করবে, কিন্তু সে পড়াশোনা করছে না, সে ঘুমাচ্ছে।
অথবা, তুমি হয়তো বলেছিলে এক সপ্তাহ মোবাইল ফোন স্পর্শ করবে না, কিন্তু মা চুপচাপ লক্ষ্য করছে যে তুমি ফোন ব্যবহার করছো... তাহলে বিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দেয়। তুমি কি সত্যিই তোমার কথা মেনে চলো? যদি তুমি তা করো, তাহলে আমি বিশ্বাস করি না যে বাবা-মা বা শিক্ষকরা এমন বিশ্বাসের ঘাটতির পরিস্থিতি তৈরি করবে, তোমার প্রতি অবিশ্বাসের কারণ হবে। একইভাবে, বাবা-মায়েরও ভাবা উচিত। কিছু বাবা-মায়ের এমন অভ্যাস থাকে, যেমন ধরো একজন মা খুব ভালো খাবার রান্না করেছেন এবং ছেলে আসে। কোনও কারণে, সে খাওয়ার মেজাজে নেই অথবা খুব কম খেয়েছে, তাই মা কি বলবে... হুম, তুমি নিশ্চয়ই পথে কোথাও খেয়েছ, নিশ্চয়ই কারো বাড়িতে পেট ভরে খেয়েছ। তাহলে তার কষ্ট হয় এবং সে সত্য কথা বলে না। তারপর মাকে খুশি রাখার জন্য, সে পছন্দ করুক বা না করুক, সে একটু একটু করে খায়। এভাবেই বিশ্বাসের ঘাটতি তৈরি হয়। প্রতিটি পরিবার অবশ্যই এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, তোমার মা বা তোমার বাবা হয়তো তোমাকে টাকা দিয়ে বলেছে যে ১০০ টাকা তোমার এক মাসের জন্য। এটা তোমার পকেটমানি। আর তারপর তারা প্রতি তিন দিন পর পর জিজ্ঞাসা করে, তুমি ওই ১০০ টাকা দিয়ে কি করেছ? আপনি তো ৩০ দিনের জন্য টাকা দিয়েছিলেন, তাই না? সে আপনার কাছে আর টাকা চাইতে আসেনি। তাই, তার উপর বিশ্বাস রাখুন।যদি আপনার তার উপর বিশ্বাস না থাকে, তাহলে আপনার ছেলেকে টাকা দেওয়াই উচিত ছিল না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, বাবা-মায়ের সাথেই এমনটা ঘটে। ওরা প্রতিদিন প্রায় ১০০ টাকা চায়... কেউ হয়তো বলতে পারে - ছেলে, সেদিন আমাদের কাছে খুব বেশি টাকা ছিল না, তাই আমরা তোমাকে মাত্র ১০০ টাকা দিয়েছিলাম। চিন্তা কোরো না, যদি তোমার আরও বেশি দরকার হয়, তাহলে আমাকে বলো। যাতে ছেলেটি অন্যথায় না ভাবে যে তার বাবা-মা তাকে ১০০ টাকা দিয়েছে... এখন তুমি হাততালি দিচ্ছ কারণ এটা তোমার পছন্দের ছিল।
ওই ১০০ টাকা দিয়ে তুমি কি করেছ জিজ্ঞেস করার পরিবর্তে, যদি তারা বলে যে তোমার আরও কিছু প্রয়োজন হয়, আমাদের বলো, ছেলে অবশ্যই বলবে, "মা, আমার কাছে টাকা আছে, আমার জন্য যথেষ্ট।" আমাদের পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগের ধরণটা এমনই হওয়া উচিত। শিক্ষার ক্ষেত্রেও, আমাদের সন্তানদের কাছ থেকে আমাদের প্রত্যাশার ক্ষেত্রেও একই কথা। "কেন তুমি ভাল নম্বর পাওনি? তুমি পড়াশোনা করো না, মনোযোগ দাও না, ক্লাসে বসো না, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করো।" বোঝার চেষ্টা করুন। তাদের টাকা থাকতে পারে, তারা সিনেমা দেখতে গিয়ে থাকতে পারে অথবা হয়তো তারা মোবাইল ফোনে রিল দেখছে। তারপর বাবা-মা এবং সন্তান এক ধরণের কথোপকথনে লিপ্ত হয় যার ফলে দূরত্ব বাড়ে। প্রথমত, বিশ্বাস শেষ হয়, তারপর দূরত্ব বাড়ে, এবং এই দূরত্ব কখনো কখনো সন্তানদের বিষণ্ণতার দিকে ঠেলে দেয়। আর সেই কারণেই বাবা-মায়ের পক্ষে তাদের কথা বোঝা খুবই জরুরি।
একইভাবে, তাঁদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্পষ্টভাষী হওয়া উচিত যাতে তারা সহজেই নিজেদের প্রকাশ করতে পারে। যদি কোন ছাত্র কোন প্রশ্ন বুঝতে না পারে, তাহলে শিক্ষকের উচিত তাকে তিরস্কার না করে ব্যাখ্যা করা। কখনো কখনো যা ঘটে তা হল, শিক্ষক বলেন, "তুমি কিছুই বুঝতে পারবে না, সময় নষ্ট কোরো না এবং এখানে চুপচাপ বসে থাকো।" কখনও কখনও শিক্ষকরা যা করেন তা হল তাঁরা চার-পাঁচজন মেধাবী ছাত্রের প্রতি খুব বেশি অনুরাগী হয়ে ওঠেন, তাদের সঙ্গে তাঁ বেশি যুক্ত হয়ে পড়েন, কিন্তু তাঁরা ক্লাসের বাকি ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে মাথা ঘামান না, ২০ বা ৩০ জন ছাত্র আছে কিনা। শিক্ষকরা সেই ছাত্রদের তাদের ভাগ্যের উপর ছেড়ে দেন। তাঁরা এই দু-চারজন ছাত্রের উপর তাঁদের মনোযোগ দেন, তাঁদের ক্রমাগত প্রশংসা করেন, কেবল তাঁদের ফলাফলের উপর মনোযোগ দেন। এখন, সেই ছাত্ররা কতটা উন্নতি করতে পারে তা ভিন্ন বিষয়, তবে তাঁরা বাকি ছাত্রদের হতাশ করেন। অতএব, দয়া করে সকল ছাত্রকে সমানভাবে বিবেচনা করুন।সকলের সঙ্গে সমানভাবে আচরণ করুন। হ্যাঁ, যে মেধাবী সে নিজেই উন্নতি করবে। কিন্তু যাদের এটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, যদি আপনি তাদের গুণাবলীর প্রশংসা করেন, এমনকি লক্ষণগতভাবেও, তাহলে এটি আশ্চর্যজনক কাজ করবে।
কখনও কখনও এমন একটি শিশু থাকতে পারে যে পড়াশোনায় দুর্বল, কিন্তু তার হাতের লেখা ভালো। শিক্ষক তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারেন যদি তিনি তার আসনে গিয়ে তাকে বলেন, "বাহ, তোমার হাতের লেখা খুব চমৎকার। তুমি কত স্মার্ট।" যদি ক্লাসে কোন অলস ছাত্র থাকে, আর তুমি তাকে বলো, "আরে, তোমার পোশাক খুব সুন্দর, তোমার পোশাক খুব সুন্দর।" তাহলে তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। সে আপনার সঙ্গে খোলামেলাভাবে কথা বলতে শুরু করবে এবং আপনার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করবে কারণ সে অনুভব করবে যে আপনি তার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছেন। যদি এই প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরি হয়, তাহলে আমি বিশ্বাস করি কোন আস্থার ঘাটতি থাকবে না। তবে, এটি কেবল শিক্ষকদের নয়, শিক্ষার্থীদেরও দায়িত্ব। আমাদের আত্মবিশ্লেষণ করা উচিত যে আমার কোন কাজের কারণে আমাদের বাড়ির পরিবারের সদস্যরা আমার উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে, আমাদের আচরণের কারণে আমাদের পরিবারের, আমাদের শিক্ষকদের আস্থা আমাদের উপর থেকে হারিয়ে যাওয়া উচিত নয়।
পরিবারে আমরা আরেকটি জিনিস চেষ্টা করতে পারি... ধরে নিই আপনার ছেলে বা মেয়ের পাঁচজন বন্ধু আছে। মনে রাখবেন যে পাঁচটি পরিবারই মাসে একবার, দুই ঘন্টার জন্য, প্রতিটি পরিবারের মধ্যে পর্যায়ক্রমে একত্রিত হবে। ছোট এবং বৃদ্ধ সকলেই অংশগ্রহণ করবে; এমন নয় যে দুজন লোক বাড়িতে থাকবে। ৮০ বছর বয়সীদের বাবা-মা যদি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকেন, তাহলে তাদেরও যোগদান করা উচিত। তারপর, সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত যে বন্ধুদের একজনের মা একটি বই থেকে একটি ইতিবাচক গল্প বলবেন। পরের বার, একই জিনিসটি এমন এক বন্ধুর বাড়িতে করা উচিত যার অনুষ্ঠানটি আয়োজনের পালা এসেছে। তার বাবা একটি ইতিবাচক সিনেমার গল্প শেয়ার করবেন যা তিনি দেখেছেন। যখনই আপনি এক ঘন্টার আড্ডা দেবেন, কেবল উদাহরণগুলিতে মনোনিবেশ করুন এবং কোনও রেফারেন্স ছাড়াই ইতিবাচক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করুন। আপনি দেখতে পাবেন যে ইতিবাচকতা ধীরে ধীরে প্রবেশ করবে। এবং এই ইতিবাচকতা কেবল আপনার সন্তানদের প্রতিই নয় বরং প্রতিটি ব্যক্তির মধ্যে আস্থার পরিবেশ তৈরি করবে। তোমরা সবাই মিলেমিশে থাকবে, একে অপরকে সাহায্য করবে, এবং আমি বিশ্বাস করি আমাদের এই ধরনের অনুশীলন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাওয়া উচিত। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক - প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, পরিবারগুলিতে বিশ্বাস গুরুত্বপূর্ণ, এবং আপনার বার্তা আমাদের ঘরে আনন্দ বয়ে আনবে। ধন্যবাদ, প্রধানমন্ত্রী মহোদয়, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ এবং সমাজ সংস্কারক মহাত্মা জ্যোতিবা ফুলের জন্মস্থান মহারাষ্ট্রের পবিত্র শহর পুনের একজন অভিভাবক মিঃ চন্দ্রেশ জৈন, এই অনুষ্ঠানে অনলাইনে যোগ দিচ্ছেন। চন্দ্রেশ জৈন জী আপনাকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চান, প্রধানমন্ত্রী। চন্দ্রেশ জী, দয়া করে আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন।
চন্দ্রেশ জৈন - মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জি, আপনাকে শুভেচ্ছা। আমার নাম চন্দ্রেশ জৈন, এবং আমি একজন অভিভাবক। আপনার কাছে আমার একটি প্রশ্ন আছে: আপনি কি মনে করেন না যে আজকাল শিশুরা তাদের মস্তিষ্ক ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছে এবং প্রযুক্তির উপর আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে কারণ সবকিছু তাদের নখদর্পণে পাওয়া যায়? এই তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে প্রযুক্তির দাস না হয়ে প্রযুক্তির মালিক হওয়ার জন্য আলোকিত করা যায়? দয়া করে পরামর্শ দিন। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক: ধন্যবাদ, চন্দ্রেশ জি। আদিবাসী নেতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামী বিরসা মুন্ডার জন্মস্থান ঝাড়খণ্ডের রামগড় জেলার আরেক অভিভাবক শ্রীমতি পূজা শ্রীবাস্তব অনলাইন মাধ্যমে এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে তাঁর উদ্বেগের সমাধান খুঁজতে চান। পূজা, দয়া করে আপনার প্রশ্ন করুন।
পূজা শ্রীবাস্তব: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়। আমার নাম কুমারী পূজা শ্রীবাস্তব। আমি ঝাড়খণ্ডের রামগড়ের শ্রী গুরুনানক পাবলিক স্কুলে পড়া প্রিয়াংশী শ্রীবাস্তবের বাবা-মা। স্যার, আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই যে আমি কীভাবে ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আমার মেয়ের পড়াশোনায় সাহায্য করতে পারি। দয়া করে আমাকে এই বিষয়ে পরামর্শ দিন। ধন্যবাদ স্যার।
উপস্থাপক: ধন্যবাদ, ম্যাডাম। হিমাচল প্রদেশের হামিরপুর জেলার শিবালিক পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত টি.আর. ডিএভি স্কুল কাঙ্গুর ছাত্র অভিনব রানা আমাদের সঙ্গে অনলাইনে যোগ দিচ্ছে।সে প্রধানমন্ত্রীকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চায়। অভিনব, দয়া করে তোমার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো।
অভিনব রানা - মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, নমস্কার। আমার নাম অভিনব রানা, আমি টি.আর. ডিএভি পাবলিক সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুল কাঙ্গু জেলা, হামিরপুর, হিমাচল প্রদেশের একজন ছাত্র। স্যার, আমার প্রশ্ন হল, আমরা কিভাবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার চাপ কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে এবং উৎসাহিত করতে পারি, পাশাপাশি মূল্যবান পড়াশোনার সময় মোবাইল প্রযুক্তিকে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত না করে শেখার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। ধন্যবাদ স্যার।
উপস্থাপক: ধন্যবাদ, অভিনব। প্রধানমন্ত্রী স্যার, চন্দ্রেশ জৈন, পূজা এবং অভিনবের মতো অনেক ব্যক্তি তাদের জীবনে সোশ্যাল মিডিয়া এবং প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান চাপ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা কিভাবে এই প্রতিকূল প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে? দয়া করে এই বিষয়ে যথাযথ পরামর্শ দিন।
প্রধানমন্ত্রী - দেখুন, আমাদের ধর্মগ্রন্থে এবং দৈনন্দিন জীবনেও বলা হয়েছে যে কোনও কিছুর অতিরিক্ত ভাল নয়। সবকিছুরই একটি সীমা থাকা উচিত; এটি তার উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। ধরুন, আপনার মা খুব ভালো খাবার তৈরি করেছেন... যা পুষ্টিতে সমৃদ্ধ... স্বাদ আপনার পছন্দের... সেটি খাওয়ার সময়...আপনি খেতে থাকেন, খেতে থাকেন, খেতে থাকেন, আর তিনি পরিবেশন করতে থাকেন। এটা কি সম্ভব? এটা কি সম্ভব? এক পর্যায়ে, আপনাকে আপনার মাকে বলতে হবে... না মা, যথেষ্ট হয়েছে, আমি আর খেতে পারব না। আপনারা কি এটা করেন নাকি? এটা আপনার প্রিয় খাবার, সব ধরণের পুষ্টিগুণে ভরপুর, খাবারের সময়, তবুও এমন একটা সময় আসে যখন সেই খাবার আপনাকে কষ্ট দিতে পারে, বমি হতে পারে, স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে, আপনি যতই ভালোবাসুন না কেন... আপনাকে থামতে হবে। থামতে হবে নাকি?
একইভাবে, মোবাইল ফোনে এমন অনেক জিনিস আছে যা আপনার পছন্দ। অনেক জিনিস আছে, কিন্তু তবুও কিছু সময় ঠিক করতে হবে। আমি আজকাল দেখেছি... অনেক মানুষকেই দেখবেন... মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্ত বলে মনে হয়। আপনি হয়তো মাঝে মাঝে আমার হাতেও মোবাইল ফোন লক্ষ্য করেছেন...খুব কমই আমার হাতে মোবাইল ফোন দেখতে পাবেন। কারণ, আমি জানি আমার সময়ের সবচেয়ে ফলপ্রসূ ব্যবহার কীরকম হয়া উচিত। যদিও আমি এটাও বিশ্বাস করি যে মোবাইল ফোন আমার জন্য তথ্য সংগ্রহের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি হাতিয়ার। কিন্তু এটি কিভাবে ব্যবহার করব... কতটা ব্যবহার করব... আমার এ বিষয়ে বিচক্ষণতা থাকা উচিত। আজ এটি প্রত্যেক পিতামাতার উদ্বেগের বিষয়। এর ব্যতিক্রম খুব কমই হতে পারে। বাবা-মা নিজেরাই সারাদিন মোবাইল ফোনে আটকে থাকতে পারেন, কিন্তু তাঁরা চান তাঁদের সন্তান এটি থেকে দূরে থাকুক।আর আপনি হয়তো দেখেছেন... এর সবচেয়ে বড় অসুবিধা... এটি আপনার জীবনকে বিকৃত করে। আপনি যদি আপনার পরিবারের দিকে তাকান, তাহলে বাড়ির চারজন লোক চার কোণে বসে একে অপরের কাছে বার্তা পাঠাচ্ছে। তাঁরা উঠে অন্যদের মোবাইল ফোনটি দেখায় না যে তাঁরা এই বার্তাটি পেয়েছে। কেন? এটি একটি গোপন বিষয়। এর ফলে আজকাল অনেক অবিশ্বাস তৈরি হচ্ছে। মা মোবাইল ফোন স্পর্শ করলেই ঘরে ঝড় বয়ে যায়। "তুমি কে আমার মোবাইল ফোন স্পর্শ করার"?
... এটা ঘটুক বা না ঘটুক।আমি মনে করি পরিবারে কিছু নিয়ম থাকা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, খাওয়ার সময় কোনও ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ডাইনিং টেবিলে থাকা উচিত নয়। কোনও উপায় নেই, কিছুই নেই। খাওয়ার সময় সবাই কথোপকথনে, আড্ডায় লিপ্ত হবে। আমরা ঘরে এই নিয়ম মেনে চলতে পারি... আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি... কোনও গ্যাজেট জোন নেই, যার অর্থ একটি নির্দিষ্ট ঘরে কোনও গ্যাজেট প্রবেশ করা যাবে না। আমরা বসব, কথা বলব এবং আড্ডা দেব। পরিবারের মধ্যে উষ্ণ পরিবেশের জন্য এটি প্রয়োজনীয়।
তৃতীয়ত, এখন আমরা প্রযুক্তিকে এড়াতে পারি না, প্রযুক্তিকে বোঝা মনে করা উচিত নয়, প্রযুক্তি থেকে আমাদের পালিয়ে যাওয়া উচিত নয়, তবে এর সঠিক ব্যবহার শেখাও সমানভাবে অপরিহার্য। যদি তুমি প্রযুক্তির সাথে পরিচিত হও... তোমার বাবা-মায়ের হয়তো পূর্ণ জ্ঞান নাও থাকতে পারে... তোমার প্রথম কাজ হওয়া উচিত তাদের সঙ্গে আলোচনা করা যে আজকাল মোবাইল ফোনে কি কি পাওয়া যায়... তাঁদের শিক্ষিত করা... তাঁদের আস্থা অর্জন করা, তুমি তাঁদেরকে দেখাও যে তুমি এটা থেকে গণিত, রসায়ন বা ইতিহাস সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাও। তুমি তাঁদেরকে বোঝাও যে, আমি এই উদ্দেশ্যে মোবাইল ফোন দেখি এবং তোমারও দেখা উচিত। তখন তাঁরাও কিছু আগ্রহ দেখাবেন, নাহলে কী হবে... প্রতিবারই তাঁরা ভাববেন যে তুমি মোবাইল ফোনে তোমার বন্ধুদের সঙ্গে আটকে আছো, অথবা তুমি মোবাইল ফোনে রিল দেখছ। যদি তাঁরা জানেন যে এতে এই মূল্যবান জিনিসগুলো আছে, তাহলে তাঁরা আর আটকাবেন না। তবে, এর অর্থ এই নয় যে বাবা-মাকে বোকা বানানোর জন্য দুর্দান্ত জিনিস দেখানো এবং তারপর অন্য কিছু করা... এটা চলতে পারে না। আমাদের পরিবারের সকলের জানা উচিত কী ঘটছে। যদি আমাদের মোবাইল ফোনের লক কোড পরিবারের সকলের জানা থাকে, তাহলে এর ফলে কী ক্ষতি হবে? যদি পরিবারের প্রত্যেক সদস্য সবার মোবাইল ফোনের লক কোড জানে... যদি এমন স্বচ্ছতা থাকে, তাহলে আপনি অনেক ঝামেলা থেকে রক্ষা পাবেন। অন্য কথায়, প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা মোবাইল ফোন থাকবে, কিন্তু যদি এর পাসওয়ার্ড সকলের জানা থাকবে, তাহলে ভালো হবে।
এছাড়াও, আপনি এমন অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারেন যা আপনার স্ক্রিন টাইম নিরীক্ষণ করে। তারা আপনাকে জানাবে যে আপনি আজ কতটা স্ক্রিন টাইম কাটিয়েছেন, এখানে কতটা সময় কাটিয়েছেন। আপনি এতটা সময় কাটিয়েছেন... এটি আপনাকে সরাসরি স্ক্রিনে বার্তা পাঠায়। এটি আপনাকে সতর্ক করে। এই ধরণের সতর্কতা সরঞ্জাম যত বেশি থাকবে, আমাদের গ্যাজেটগুলির সঙ্গে তত বেশি সংহত করা উচিত যাতে আমরা জানতে পারি... হ্যাঁ বন্ধু, এখন অনেক বেশি হয়ে গেছে, আমার থামানো উচিত... অন্তত এটি আমাদের সতর্ক করে। একই সঙ্গে, আমরা কিভাবে এটি ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করতে পারি? উদাহরণস্বরূপ, যখন তুমি কিছু লিখছ, কিন্তু...তুমি একটি ভাল শব্দ খুঁজে পাচ্ছ না, তাই তোমার একটি অভিধানের প্রয়োজন। তখন তুমি ডিজিটাল সিস্টেমের সুবিধা নিতে পারো। ধরো আমি কিছু করছি এবং আমার কোনও গাণিতিক সূত্র মনে নেই। ধরো আমি একটি ডিজিটাল টুলের সাহায্য নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছি।তা উপকারে লাগবে, কিন্তু যদি আমি জানি না আমার মোবাইল ফোনে কি কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তাহলে আমি কী ব্যবহার করব? আর সেজন্যে আমার মনে হয় যে মাঝে মাঝে আমাদের ক্লাসরুমেও মোবাইল ফোনের ইতিবাচক দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করা উচিত। কোন জিনিসগুলো ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে? মাঝে মাঝে আমাদের শ্রেণীকক্ষে এই বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য ১০-১৫ মিনিট সময় ব্যয় করা উচিত। একজন শিক্ষার্থী তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবে, বলবে যে আমি সেই ওয়েবসাইটটি খুঁজে পেয়েছি এবং এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ভালো ওয়েবসাইট। আমি সেই ওয়েবসাইটটি দেখেছি, এটি সেই বিষয়ের জন্য ভাল শিক্ষা প্রদান করে এবং সেখানে ভালো পাঠ পাওয়া যায়। ধরুন একটি ট্যুর পরিকল্পনা করা হয়েছে, আমাদের একটি ট্যুর প্রোগ্রাম আছে এবং শিশুরা জয়সলমীরে যাচ্ছে। সবাইকে অনলাইনে যেতে বলা উচিত, জয়সলমীরের উপর একটি সম্পূর্ণ প্রকল্প প্রতিবেদন তৈরি করতে। তাই এটিকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। শিক্ষার্থীদের বুঝতে হবে যে তাদের সাহায্য করার জন্য মোবাইল ফোনে অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তুমি যত বেশি ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করবে, তত বেশি সুবিধা তুমি পাবে। আর আমি তোমাদেরকে অনুরোধ করছি যে তোমরা এটি থেকে পালিয়ে যেওনা। তবে, আমাদের পুরো পরিবারের সদস্যদের সবকিছু জানিয়ে বুদ্ধিমত্তা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে। যদি আমাদের লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে হয়, তাহলে কিছু ভুল হচ্ছে। যত বেশি স্বচ্ছতা থাকবে, তত বেশি সুবিধা হবে। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।
উপস্থাপক: ধন্যবাদ, প্রধানমন্ত্রী স্যার। জীবনে সাফল্যের জন্য ভারসাম্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মন্ত্রটি আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করবে। ধন্যবাদ। মহাকবি সুব্রহ্মণ্য ভারতীর জন্মস্থান তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই থেকে আসা, মডেল সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্র এম. ভাগেশ, অনলাইনে আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে, আর সে প্রধানমন্ত্রীকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চায়। এম. ভাগেশ, দয়া করে তোমার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো।
এম. ভাগেশ – মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্যার নমস্তে, আমার নাম এম. ভাগেশ, আমি চেন্নাইয়ের নাঙ্গানাল্লুরের মডার্ন সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্র। আমার প্রশ্ন হল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনি কীভাবে মানসিক চাপ মোকাবিলা করেন, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের আপনার মূল উপায় কী? ধন্যবাদ।
প্রধানমন্ত্রী: তুমি কি এমন হতে চাও? তুমি কি এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছ?
উপস্থাপক: ধন্যবাদ, এম. ভাগেশ, তোমার প্রশ্নের জন্য। এখন আজকের আলোচনার শেষ প্রশ্নটি শুনবো। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত উত্তরাখণ্ডের উধম সিং নগরের ডাইনেস্টি মডার্ন গুরুকুল একাডেমির ছাত্রী স্নেহা ত্যাগী, অনলাইনে আমাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চান। স্নেহা, দয়া করে তোমার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো।
স্নেহা ত্যাগী: ঐশ্বরিক, অতুলনীয়, অতুলনীয় সাহস নিয়ে, আপনি, অতুলনীয় ভারতের বহু যুগের অপূর্ব ভবিষ্যতের স্রষ্টা। শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী মোদীজী, দেবভূমি উত্তরাখণ্ড থেকে আপনাকে আমার বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমার নাম স্নেহা ত্যাগী। আমি ডাইনেস্টি মডার্ন গুরুকুল অ্যাকাডেমি, ছিঙ্কি ফার্ম, খাতিমা, উধম সিং নগরের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার প্রশ্ন, আমরা কীভাবে আপনার মতো ইতিবাচক হতে পারি? ধন্যবাদ, স্যার।
উপস্থাপক: ধন্যবাদ, নেহা। প্রধানমন্ত্রী জী, আপনার ব্যস্ত জীবনে আপনি কীভাবে চাপ সামলান, এবং এত চাপের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও, আপনি কীভাবে সর্বদা ইতিবাচক থাকেন? আপনি কীভাবে এই সব করতে পারেন? দয়া করে আপনার ইতিবাচক শক্তির রহস্য আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন, প্রধানমন্ত্রী জি।
প্রধানমন্ত্রী - এর অনেক উত্তর থাকতে পারে। প্রথমত, আমি আনন্দিত যে প্রধানমন্ত্রীকে যে চাপ সহ্য করতে হয় তোমরা তা বুঝতে পেরেছ। অন্যথায়, অনেকে ভাবেন এনার কাজ শুধু বিমানে বা হেলিকপ্টারে উড়ে যাওয়া, আর কী করার আছে, কেবল এখান থেকে সেখানে যান, কিন্তু আসলে তা এর থেকে অনেক বেশি। আসলে, প্রত্যেকের জীবনে, তাদের পরিস্থিতির বাইরেও অনেক অতিরিক্ত জিনিস থাকে যা তাঁদের পরিচালনা করতে হয়।এমন জিনিস যা তাঁরা আশা করেননি, কিন্তু তা ব্যক্তিগত জীবনে, পারিবারিক জীবনে আসে এবং তারপর সেগুলির মোকাবিলা করতে হয়। এখন, এটি মানুষের স্বভাব যে যখন একটি বড় ঝড় আসে, তখন কেউ কেউ বলতে পারে যে আসুন কিছুক্ষণ বসে থাকি এবং তারপর যখন এটি শেষ হয়ে যায় বা যদি কোনও সংকট আসে, তখন আমরা এটি কেটে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করি। সম্ভবত, এই ধরণের লোকেরা জীবনে খুব বেশি কিছু অর্জন করতে পারে না। আমার স্বভাব এমন যে আমি প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করি। আমি এটিকে খুবই কার্যকর বলে মনে করি। আমি প্রতিটি সংকটকে চ্যালেঞ্জ করি। চ্যালেঞ্জ আসবে এবং পরিস্থিতির উন্নতি হবে এই আশায় আমি ঘুমিয়ে পড়ি না।আর সেজন্য, আমি নতুন জিনিস শেখার সুযোগ পাই। প্রতিটি পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য নতুন উপায়, নতুন পরীক্ষা এবং নতুন কৌশল ... এটি আমার পথ এবং এটি আমার উন্নতির অংশ হিসাবে স্বাভাবিকভাবেই বিকশিত হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, আমার মধ্যে অপরিসীম আত্মবিশ্বাস রয়েছে। আমি সর্বদা বিশ্বাস করি যে, যাই হোক না কেন, আমার সঙ্গে ১৪০ কোটি সহ-নাগরিক রয়েছেন। যদি ১০ কোটি চ্যালেঞ্জ থাকে, তবে কোটি কোটি সমাধান রয়েছে। আমি কখনই একা বোধ করি না, আমি কখনই মনে করি না যে এটি আমার উপর নির্ভর করে। আমি সর্বদা জানি যে আমার দেশ শক্তিশালী, এর মানুষ শক্তিশালী, আমার দেশের মানুষের মন শক্তিশালী, এবং আমরা প্রতিটি চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠব। এই মৌলিক বিশ্বাস আমার চিন্তাভাবনার ভিত্তি। আর সেজন্য, আমি কখনও মনে করি না, "ওহ, এই সংকট আমার উপর পড়েছে, আমি কী করব?" আমি মনে করি, "না, না, ১৪০ কোটি মানুষ আছে, তাঁরা এটি মোকাবিলা করবেন।" ঠিক আছে, যদি আমাকে নেতৃত্ব দিতে হয়, এবং যদি কিছু ভুল হয়, তাহলে আমাকেই দোষ নিতে হবে। কিন্তু আমি আমার দেশের শক্তি বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি, এবং তাই, আমি আমার সহ-নাগরিকদের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে আমার শক্তি বিনিয়োগ করছি। এবং আমি যত বেশি আমার সহ-নাগরিকদের ক্ষমতায়িত করব, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার আমাদের ক্ষমতা ততই শক্তিশালী হবে।
দেশের প্রত্যেক সরকারকেই দারিদ্র্য সংকট মোকাবিলায় সংগ্রাম করতে হয়েছে। এই সংকট আমাদের দেশেও রয়েছে। কিন্তু আমি ভয়ে বসে থাকিনি। আমি এর সমাধান খুঁজছিলাম, আর ভাবছিলাম, দারিদ্র্য দূর করার ক্ষেত্রে সরকার কে? দারিদ্র্য তখনই দূর হবে যখন প্রত্যেক দরিদ্র ব্যক্তি নিজেরাই দারিদ্র্যকে পরাজিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। যদি সে কেবল স্বপ্ন দেখে তবে সে তা বাস্তবায়িত নাও করতে পারে। তাই, আমার দায়িত্ব হল তাঁকে সেই স্বপ্নপূরণে সক্ষম করে তোলা, তাঁকে একটি পাকা বাড়ি করে দেওয়া, তাঁর পরিবারের জন্য শৌচাগারের ব্যবস্থা করা, শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা, আয়ুষ্মান যোজনার সুবিধা নিশ্চিত করা, তাঁর বাড়িতে জল সরবরাহ করা। যদি আমি তাঁকে তাঁর জীবনের প্রতিদিনের সংগ্রাম থেকে মুক্ত করি, যদি আমি তাঁকে ক্ষমতায়িত করি, তাহলে তাঁর এই বিশ্বাসও তৈরি হবে যে সে দারিদ্র্যকে পরাজিত করতে সক্ষম হবে। আর দেখুন, আমার এই দশ বছরের মেয়াদে দেশের ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে। আমি যদি পূর্ববর্তী সরকারগুলির মতো একইভাবে চালিয়ে যেতাম, তাহলে এটা সম্ভব হত না। আর সেই কারণেই আমি দেশের শক্তিতে, দেশের সম্পদের উপর আস্থা রাখার চেষ্টা করি। যখন আমরা এই সমস্ত বিষয়গুলি দেখি, তখন আমরা কখনই একা বোধ করি না। আমার কী করা উচিত? কীভাবে করা উচিত? আমি কেবল একজন চা বিক্রেতা, আমি কী করব? আমি এভাবে ভাবতে পারি না। আমার সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাস থাকা উচিত, এবং তাই প্রথম জিনিস হল যাদের জন্য আপনি কাজ করছেন তাদের উপর অপরিসীম আস্থা রাখা। দ্বিতীয়ত, আপনার সঠিক এবং ভুলের পার্থক্য থাকা দরকার, এখন কী প্রয়োজন, পরে কী মোকাবিলা করা যেতে পারে। আপনার অগ্রাধিকার বেছে নেওয়ার ক্ষমতা থাকা দরকার। এটি অভিজ্ঞতা থেকে আসে, সবকিছু বিশ্লেষণ করে। আমি এই চেষ্টা করি। তৃতীয়ত, আমি ভুল করলেও, আমি এটাকে আমার জন্য একটি শিক্ষা হিসাবে গ্রহণ করি। আমি এটাকে হতাশার কারণ মনে করি না। এখন, আপনি দেখতে পাচ্ছেন কোভিডের সংকট কতটা তীব্র ছিল। এটি কি একটি ছোটখাটো চ্যালেঞ্জ ছিল? পুরো বিশ্ব আটকে ছিল। এখন, আমার জন্যও, এটি এমন ছিল যে আমার কী করা উচিত? আমি বলতে পারতাম, "আমরা এখন কী করতে পারি? এটি একটি বিশ্বব্যাপী রোগ, এটি সারা বিশ্ব থেকে এসেছে এবং প্রত্যেকের নিজের যত্ন নেওয়া উচিত।" কিন্তু আমি তা করিনি। আমি প্রতিদিন টিভিতে আসতাম, প্রতিদিন দেশবাসীর সঙ্গে কথা বলতাম, কখনও তাঁদের হাততালি দিতে বলতাম, কখনও থালি বাজাতে বলতাম, কখনও প্রদীপ জ্বালাতে বলতাম। সেসব কাজ করোনাকে শেষ করে না। কিন্তু সেগুলি করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি সম্মিলিত শক্তির জন্ম দেয়, সম্মিলিত শক্তি বের করে আনে।
এখন দেখুন, আগেও আমাদের খেলোয়াড়রা খেলাধুলার মাঠে যেত, কখনও কেউ জিতত, কখনও কেউ জিতত না। যারা খেলতে যেত এবং টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পরে ফিরে আসত তাঁদের কেউ যত্ন নিত না। যাইহোক, আমি বলেছিলাম যে আমি নিজেই ঢোল বাজাবো, এমনকি যদি তারা তিনটি পদক জিততে পারে। তাই ধীরে ধীরে, একই খেলোয়াড়রা ১০৭টি পদক জেতার ক্ষমতা অর্জন করে। তাঁদের মধ্যে সম্ভাবনা ছিল। যাইহোক, সঠিক পথনির্দেশ, সঠিক কৌশল এবং সঠিক নেতৃত্ব ফলাফলের দিকে নিয়ে যায়। যাদের ক্ষমতা আছে তাদের এটি যথাযথভাবে ব্যবহার করা উচিত। এবং আমার জন্য, শাসনের একটি নীতি হল, একটি ভাল সরকার পরিচালনার জন্য, এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য নিখুঁত তথ্যের প্রয়োজন, নীচ থেকে উপরে আসা এবং উপর থেকে নীচে নিখুঁত পথনির্দেশ। যদি এই দুটি চ্যানেল নিখুঁত হয় এবং তাদের যোগাযোগ, তাদের সিস্টেম, তাদের প্রোটোকল সঠিকভাবে উন্নত করা হয়, তাহলে আপনি জিনিসগুলি পরিচালনা করতে পারবেন।
করোনা একটি প্রধান উদাহরণ। আর সেইজন্যই আমি বিশ্বাস করি যে জীবনে হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই, আর যদি একবার তুমি সিদ্ধান্ত নাও যে হতাশার কোনও জায়গা নেই, তাহলে ইতিবাচকতা ছাড়া আর কিছুই আসে না। আর হতাশার সমস্ত দরজা আমার জন্য বন্ধ। হতাশার জন্য আমি কোনও কোণ বা এমনকি একটি ছোট জানালাও খোলা রাখিনি। আর তুমি নিশ্চয়ই দেখেছ যে আমি কখনও কাঁদি না। আমি জানি না কী হবে, সে আমাদের কাছে আসবে কি আসবে না, সে আমাদের সাথে সংঘর্ষ করবে কিনা, এটা ঘটতেই থাকে। আমরা এখানে কিসের জন্য আছি এবং তাই আমি সবসময় আত্মবিশ্বাসে ভরা জীবনে এবং আমাদের লক্ষ্য সম্পর্কে বিশ্বাস করি। আর দ্বিতীয় কথা হল, যখন কোনও ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকে না, তখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কখনও কোনও সন্দেহ থাকে না। আর এটা আমার জন্য খুব বড় সম্পদ। এটা আমার স্বার্থে নয়, এটা মোটেও আমার স্বার্থে নয়, এটা শুধু এবং শুধুমাত্র দেশের স্বার্থে। আর এটা তোমাদের স্বার্থে, যাতে তোমার বাবা-মা যাঁরা সেই অসুবিধাগুলির মধ্য দিয়ে গেছেন, আমি চাই না তুমিও সেই অসুবিধাগুলির মধ্য দিয়ে যাও। বন্ধুরা, আমাদের এমন একটি দেশ তৈরি করতে হবে যাতে তোমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, তোমাদের সন্তানরাও অনুভব করে যে, এমন একটি দেশের মধ্যে আমরা সম্পূর্ণরূপে উন্নতি করতে পারি, আমাদের সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারি, এবং এটাই আমাদের সম্মিলিত সংকল্প হওয়া উচিত। এটাই আমাদের সম্মিলিত সংকল্প হওয়া উচিত, এবং ফলাফল স্বয়ংক্রিয়ভাবে আসবে।
আর তাই, আমার বন্ধুরা, ইতিবাচক চিন্তাভাবনা জীবনের একটি বড় শক্তি। এমনকি সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতেও, একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা যেতে পারে। আমাদের ইতিবাচক দিকটি দেখার চেষ্টা করা উচিত। ধন্যবাদ।
উপস্থাপক: প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, আপনি আমাদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর অত্যন্ত সরল এবং স্পষ্টভাবে দিয়েছেন। আমরা, আমাদের অভিভাবক এবং শিক্ষকরা, সর্বদা আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব। আমরা সর্বদা সাহসী পরীক্ষাযোদ্ধা থাকব, উদ্বিগ্ন নই। ধন্যবাদ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জী।
প্রধানমন্ত্রী: সব প্রশ্ন কি শেষ হয়ে গেছে?
উপস্থাপক – ঝড়ের মধ্যে কিছু পাখি উড়ছে,
ঝড়ের মধ্যে কিছু পাখি উড়ছে,
তাদের শক্তি আছে, এবং অবশ্যই সাহস থাকবে,
যদি তারা প্রতিদিন এভাবে এগিয়ে যেতে থাকে,
একদিন, সমুদ্র অবশ্যই কাছে আসবে,
সমুদ্র অবশ্যই কাছে আসবে।
প্রধানমন্ত্রী: তোমরা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছ যে এই ছেলেমেয়েরা কীভাবে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করছে। তোমরাও তোমাদের স্কুল বা কলেজে এমন আয়োজন করতে পারো, তাই অবশ্যই এদের কাছ থেকে শেখো।
উপস্থাপক – ‘পরীক্ষা পে চর্চা ২০২৪’-এর বিশেষ সকালের সমাপ্তি ঘটছে, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজীর প্রতি তাঁর বিজ্ঞ পরামর্শ এবং অনুপ্রেরণামূলক স্পর্শের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আজ, প্রধানমন্ত্রী মহাশয় নান্নুল বইয়ে চিহ্নিত শিক্ষাদানের বৈশিষ্ট্যগুলিকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন। তাঁর পরামর্শগুলি আমাদের দেশের অসংখ্য ছাত্র, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের চেতনাকে অনুরণিত করেছে এবং প্রজ্বলিত করেছে। আবারও ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী মহাশয়।
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক আছে, বন্ধুরা। আপনাদের সকলকে অনেক ধন্যবাদ। এবং আমি আশা করি যে এই একই উৎসাহের সঙ্গে, আপনারাও আপনাদের পরিবারগুলিতে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলবেন, আত্মবিশ্বাসে ভরে উঠবেন, ভালো ফলাফল অর্জন করবেন এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে জীবনযাপন করার অভ্যাস গড়ে তুলবেন। এবং আপনারা যা চান, সেই ফলাফলগুলিই অর্জন করবেন। আপনাদের সকলের প্রতি আমার শুভেচ্ছা। ধন্যবাদ।
(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে)
SSS/SB/AS/NS…….
(Release ID: 2180939)
Visitor Counter : 5
Read this release in:
Punjabi
,
Gujarati
,
Tamil
,
Urdu
,
हिन्दी
,
Marathi
,
Assamese
,
Odia
,
Kannada
,
English
,
Manipuri
,
Telugu
,
Malayalam