প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
নতুন দিল্লির যশোভূমিতে সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫-এ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ
प्रविष्टि तिथि:
02 SEP 2025 12:55PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী রেখা গুপ্তা, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মোহন চরণ মাঝি, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী জিতিন প্রসাদ, সেমি-র প্রেসিডেন্ট শ্রী অজিত মানোচা, দেশ-বিদেশের সেমি-কন্ডাক্টর শিল্পের সিইও-রা এবং তাঁদের সহযোগীরা, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অতিথিরা, স্টার্ট-আপের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তারা, বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা আমার তরুণ ছাত্রছাত্রীরা, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ!
গত রাতেই আমি জাপান ও চিন সফর সেরে ফিরেছি। আপনারা যে জয়ধ্বনি দিচ্ছেন, সে কি আমি সেখানে গিয়েছিলাম বলে, নাকি সেখান থেকে ফিরেছি বলে? আজ আজ আমি এখানে আপনাদের মধ্যে যশোভূমিতে। এই সভাগৃহ উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। আপনারা সকলেই জানেন, প্রযুক্তির প্রতি আমার একটা স্বাভাবিক ঝোঁক রয়েছে। সম্প্রতি আমার জাপান সফরের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা স্যানের সঙ্গে আমার টোকিও ইলেক্ট্রন ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছিল। আর সেখানকার সিইও এইমাত্র আপনাদের বলছিলেন যে মোদী সাহেব এসে গেছেন।
বন্ধুরা,
প্রযুক্তির প্রতি আমার আগ্রহ আপনাদের মাঝে আমাকে বারবার নিয়ে এসেছে। আর সেজন্যই আজ আমি আপনাদের মধ্যে আসতে পেরে খুব খুশি হয়েছি।
বন্ধুরা,
এখানে সারা পৃথিবীর সেমি-কন্ডাক্টর বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত রয়েছেন। ৪০-৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা এসেছেন এবং ভারতের উদ্ভাবনী ও যুবশক্তি এখানে রয়েছে। এই সম্মেলন একটা বার্তাই তুলে ধরে। সারা বিশ্ব ভারতের প্রতি আস্থা রেখেছে, সারা বিশ্ব ভারতকে বিশ্বাস করেছে এবং সারা বিশ্ব ভারতকে সঙ্গে নিয়ে সেমি-কন্ডাক্টর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে প্রস্তুত।
সেমিকন ইন্ডিয়াতে আপনারা যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সবাইকে আমি স্বাগত জানাই। আপনারা সকলেই উন্নত ভারতের, আত্মনির্ভর ভারতের যাত্রার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
বন্ধুরা,
মাত্র কয়েকদিন আগে এই বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের জিডিপি-র পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে। আরও একবার ভারত সমস্ত প্রত্যাশা এবং সমস্ত অনুমানকে ছাপিয়ে গেছে। একদিকে যখন সারা বিশ্বের অর্থনীতি উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে, অর্থনৈতিক স্বার্থপরতার জন্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তখন সেই পরিবেশের মধ্যেই ভারত ৭.৮ শতাংশ বিকাশ হার অর্জন করেছে। এবং এই বিকাশ প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, ম্যানুফ্যাকচারিং, পরিষেবা, কৃষি, নির্মাণ – সবক্ষেত্রেই ব্যাপক উৎসাহ চোখে পড়ছে। যে গতিতে ভারত এগিয়ে চলেছে, তা আমাদের সবার মধ্যে, প্রতিটি শিল্পের মধ্যে, দেশের প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে নতুন শক্তির সঞ্চার করছে। বিকাশের এই অভিমুখ ভারতকে অতি দ্রুত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি করে তুলবে।
বন্ধুরা,
সেমি-কন্ডাক্টরের দুনিয়ায় বলা হয়, তেল ছিল কালো সোনা, আর চিপ হচ্ছে ডিজিটাল হীরে। গত শতাব্দী শাসন করেছে তেল। তেলের মজুতভাণ্ডার দিয়ে বিশ্বের ভাগ্য নির্ধারিত হত। এইসব ভাণ্ডার থেকে কতটা তেল উত্তোলিত হল তার ওপর নির্ভর করত বিশ্ব অর্থনীতির ওঠা-পড়া। কিন্তু আজ একবিংশ শতাব্দীর ক্ষমতা কেন্দ্রিভূত হয়েছে ছোট্ট চিপে। এই চিপগুলি আকারে ক্ষুদ্র হতে পারে, কিন্তু তারা বিশ্বের অগ্রগতির পথে ব্যাপক উৎসাহ যোগানোর ক্ষমতা রাখে। আর সেজন্যই আজ সেমি-কন্ডাক্টরের বিশ্ব বাজার ৬০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গেছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই বাজার ১ ট্রিলিয়ন ডলার ছাপিয়ে যাবে। ভারত সেমি-কন্ডাক্টর ক্ষেত্রে যে গতিতে এগিয়ে চলেছে তাতে আমি বিশ্বাস করি, এই ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারে ভারতেরও উল্লেখযোগ্য অংশ থাকবে।
বন্ধুরা,
ভারত কেমন গতিতে এগিয়ে চলেছে তা আপনাদের বলি। ২০২১ সালে আমরা সেমিকন ইন্ডিয়া কর্মসূচি শুরু করেছিলাম। ২০২৩ সালের মধ্যে ভারতের প্রথম সেমি-কন্ডাক্টর প্ল্যান্ট অনুমোদন পেয়েছিল। ২০২৪ সালে আমরা আরও কিছু প্ল্যান্টের অনুমোদন দিই। ২০২৫ সালে আরও পাঁচটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ১০টি সেমি-কন্ডাক্টর প্রকল্পে মোট ১৮ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ, ১.৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করা হচ্ছে। এর থেকেই ভারতের প্রতি বিশ্বের ক্রমবর্ধমান আস্থার পরিচয় পাওয়া যায়।
বন্ধুরা,
আপনারা জানেন, সেমি-কন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে গতিই হল আসল জিনিস। ফাইল থেকে ফ্যাক্টরির মধ্যে সময় যত কমবে, কাগজে লেখাজোখার কাজ যত হালকা হবে, তত তাড়াতাড়ি আসল কাজ শুরু হতে পারবে। আমাদের সরকারও একই দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে কাজ করছে। আমরা ‘জাতীয় এক জানালা’ পদ্ধতি রূপায়ণ করেছি। এর মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্যের সব অনুমোদন একটিমাত্র প্ল্যাটফর্ম থেকে পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের দিস্তা দিস্তা কাগজের বোঝা হালকা হয়ে গেছে। আজ প্লাগ-অ্যান্ড-প্লে পরিকাঠামো মডেলে দেশজুড়ে সেমি-কন্ডাক্টর পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। এইসব পার্কে জমি, বিদ্যুৎ সরবরাহ, বন্দর ও বিমানবন্দরের সঙ্গে সংযোগ, দক্ষ শ্রমিক সহ সমস্ত ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। আর এর সঙ্গে যখন সরকারি উৎসাহ যুক্ত হয়, তখন তো শিল্পের বিকাশ অবশ্যম্ভাবী। সে উৎপাদন-ভিত্তিক উৎসাহ ভাতা হোক বা ডিজাইনের সঙ্গে সংযুক্ত সহায়তা – ভারত প্রতিটি ক্ষেত্রে সক্ষমতা সৃষ্টিকে উৎসাহ দিচ্ছে। আর সেজন্যই এই ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ এসে চলেছে। ভারত আজ পিছনের সারি থেকে উঠে এসে ফুল স্ট্যাক সেমি-কন্ডাক্টর দেশ হওয়ার দিকে এগিয়ে চলেছে। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যেদিন ভারতের ক্ষুদ্রতম চিপ বিশ্বে বৃহত্তম পরিবর্তন এনে দেবে। আমাদের যাত্রা দেরিতে শুরু হয়েছে বটে, কিন্তু এখন আর আমাদের কেউ রুখতে পারবে না। আমি জেনেছি যে ৪-৫ দিন আগেই অর্থাৎ, ২৮ আগস্ট, সিজি পাওয়ারের পাইলট প্ল্যান্ট চালু হয়ে গেছে। মাইক্রন আর টাটা টেস্ট চিপ উৎপাদন শুরু করেছে। আমি আগেই বলেছি, ভারত এই বছর থেকে বাণিজ্যিক চিপ উৎপাদন শুরু করবে। এইসব কিছু থেকে বোঝা যাচ্ছে যে ভারত কেমন দ্রুতগতিতে সেমি-কন্ডাক্টর ক্ষেত্রে এগিয়ে চলেছে।
বন্ধুরা,
সেমি-কন্ডাক্টর ক্ষেত্রে ভারতের এই সাফল্য কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রযুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমরা এক সম্পূর্ণ পরিমণ্ডল তৈরি করছি। এমন এক পরিমণ্ডল যেখানে ডিজাইন থেকে শুরু করে উৎপাদন, প্যাকেজিং, উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্রাংশ – সমস্ত কিছু ভারতেই পাওয়া যাবে। আমাদের সেমি-কন্ডাক্টর মিশন শুধুমাত্র একটা ফ্যাব বা একটা চিপ তৈরিতে সীমাবদ্ধ থাকবে না। আমরা এমন এক সেমি-কন্ডাক্টর পরিমণ্ডল তৈরি করছি যা ভারতকে আত্মনির্ভর এবং বিশ্বস্তরে প্রতিযোগিতার যোগ্য করে তুলবে।
বন্ধুরা,
ভারতের সেমি-কন্ডাক্টর মিশনের আরও একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে সঙ্গে নিয়ে ভারত এই ক্ষেত্রে এগোচ্ছে। ভারতে তৈরি চিপ যাতে উদীয়মান প্রযুক্তিগুলির নতুন শক্তির উৎস হয়ে ওঠে, আমরা সেদিকে মনোনিবেশ করেছি। নয়ডা এবং ব্যাঙ্গালোরে আমাদের ডিজাইন সেন্টারগুলি বিশ্বের সবথেকে আধুনিক চিপ তৈরির কাজ করছে। এইসব চিপে কোটি কোটি ট্রানজিস্টর মজুত করা যাবে। একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক প্রযুক্তিগুলিকে নতুন শক্তি যোগাবে এইসব চিপ।
বন্ধুরা,
বিশ্বের সেমি-কন্ডাক্টর ক্ষেত্র যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে, তার মোকাবিলা করার পথ ভারত সর্বদা অনুসন্ধান করছে। শহরে আমরা নানা আকাশছোঁয়া বাড়ি আর চোখ ধাঁধানো স্থাপত্য দেখি। কিন্তু, এর মূল ভিত্তি হল ইস্পাত। সেইরকমই আমাদের ডিজিটাল পরিকাঠামোর ভিত্তি হল বিরল খনিজ। সেজন্যই ভারত আজ জাতীয় বিরল খনিজ মিশনের সূচনা করেছে। বিরল খনিজের জন্য আমাদের চাহিদা যাতে দেশের মধ্যেই মেটে, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। গত চার বছরে বিরল খনিজ মিশনগুলিতে আমরা অনেক কাজ করেছি।
বন্ধুরা,
সেমি-কন্ডাক্টর ক্ষেত্রের বিকাশে স্টার্ট-আপ এবং এমএসএমই-গুলির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে আমাদের সরকার মনে করে। আজ বিশ্বের সেমি-কন্ডাক্টর ডিজাইনের ২০ শতাংশ আসে ভারত থেকে। ভারতের যুব সম্প্রদায় সেমি-কন্ডাক্টর শিল্পের বৃহত্তম মানব মূলধন। আমি আমার তরুণ উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক এবং স্টার্ট-আপগুলিকে বলতে চাই, আপনারা এগিয়ে আসুন, সরকার আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে। আপনাদের জন্য ডিজাইন সম্পর্কিত উৎসাহদান প্রকল্প এবং চিপ থেকে স্টার্ট-আপ কর্মসূচি রয়েছে। ডিজাইন সম্পর্কিত উৎসাহদান প্রকল্পকে সরকার ঢেলে সাজাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হল, এই ক্ষেত্রে ভারতীয় মেধাস্বত্ত্ব তৈরি করা। সম্প্রতি সূচনা হওয়া অনুসন্ধান জাতীয় গবেষণা তহবিলের সঙ্গে সংযোগ এক্ষেত্রে আপনাদের সাহায্য করবে।
বন্ধুরা,
এখানে বহু রাজ্যের প্রতিনিধি উপস্থিত রয়েছেন। অনেক রাজ্য সেমি-কন্ডাক্টর ক্ষেত্রের জন্য বিশেষ নীতি তৈরি করেছে। তারা এজন্য বিশেষ পরিকাঠামো গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছে। সেমি-কন্ডাক্টর পরিমণ্ডল গড়ে তুলতে, এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং অন্য রাজ্যের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমি দেশের সব রাজ্যকে অনুরোধ করছি।
বন্ধুরা,
সংস্কার, সম্পাদন ও পরিবর্তনের মন্ত্র নিয়ে ভারত আজ এই জায়গায় এসে পৌঁছেছে। আগামীদিনে আমরা আগামী প্রজন্মের সংস্কারের নতুন পর্যায়ের সূচনা করতে চলেছি। ইন্ডিয়া সেমি-কন্ডাক্টর মিশনের পরবর্তী পর্যায় নিয়েও আমাদের ভাবনা-চিন্তা চলছে। এখানে উপস্থিত সমস্ত বিনিয়োগকারীকে বলি, আমরা খোলা মনে আপনাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। আপনাদের ভাষায় বললে, ডিজাইন তৈরি রয়েছে, মাস্ক নিজের জায়গায় রয়েছে, এখন শুধু নির্ভুলভাবে কার্যসম্পাদনের অপেক্ষা। আমাদের এই সংক্রান্ত নীতি স্বল্পমেয়াদি ইঙ্গিত মাত্র নয়, দীর্ঘমেয়াদি অঙ্গীকার। আপনাদের প্রতিটি চাহিদা আমরা পূরণ করব। সেইদিন আর দূরে নয় যখন গোটা বিশ্ব বলবে – ‘ডিজাইনড ইন ইন্ডিয়া, মেড ইন ইন্ডিয়া, ট্রাস্টেড বাই দ্য ওয়ার্ল্ড’। আমাদের প্রতিটি প্রয়াস সফল হোক, প্রতিটি বাইট উদ্ভাবনে ভরে উঠুক, আমাদের যাত্রা যেন ত্রুটিমুক্ত হয় এবং তা যেন সাফল্য এনে দেয়। এই ভাবনার সঙ্গে আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই।
ধন্যবাদ!
SC/SD/DM..
(रिलीज़ आईडी: 2163134)
आगंतुक पटल : 92
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
हिन्दी
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam