প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
ইকনোমিক টাইমস্ ওয়ার্ল্ড লিডার্স ফোরামে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
23 AUG 2025 9:44PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৩ অগাস্ট, ২০২৫
অনুষ্ঠানে সমবেত সকলকে স্বাগত জানাই। এই সম্মেলনের আয়োজন হয়েছে উপযুক্ত সময়ে, যা আমাদের কাছে খুবই আনন্দের। গত সপ্তাহেই লালকেল্লা থেকে আমি পরবর্তী স্তরের সংস্কারের কথা বলেছি এবং এখন এই মঞ্চ সেই ভাবধারাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছে।
বন্ধুগণ,
বিশ্ব পরস্থিতি এবং ভূ-অর্থনৈতিক পরিমণ্ডল নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়ে চলেছে। আন্তর্জাতিক আঙিনার দিকে তাকালে আপনি ভারতের অর্থনীতির ক্ষমতা উপলব্ধি করবেন। আজ ভারত বিশ্বের বড় অর্থনীতিগুলির মধ্যে দ্রুততম বিকাশশীল। খুব শীঘ্রই আমরা তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের মোট রপ্তানীতে প্রায় ২০ শতাংশ অবদান রাখতে চলেছে ভারত। এই ধারাবাহিক বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে বিগত দশকে দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক সুস্থিতির সুবাদে। আজ আমাদের আর্থিক ঘাটতি ৪.৪ শতাংশে নেমে যেতে চলেছে বলে অনুমান। কোভিডের মতো সঙ্কটময় পরিস্থিতি সত্ত্বেও এটা সম্ভব হয়েছে। মূলধনী বাজার থেকে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করছে আমাদের সংস্থাগুলি। এই দেশের ব্যাঙ্কগুলির অবস্থা এখন যতটা ভালো, তেমনটা আগে ছিল না। মুদ্রাস্ফীতি এবং সুদের হার বেশ কম। চলতি খাতে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতি মাসে দেশে লক্ষ লক্ষ বিনিয়োগকারী সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানস (এসআইপি)- এর মাধ্যমে বাজারে হাজার হাজার কোটি টাকা লগ্নি করছেন।
বন্ধুগণ,
আপনারা এটাও জানেন যে, অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত হলে তার প্রভাব প্রতিফলিত হয় সর্বক্ষেত্রে। এই বিষয়টি নিয়ে ১৫ অগাস্ট আমি বিশদে আলোচনা করেছি। আর পুনরাবৃত্তির দরকার নেই। কিন্তু, ১৫ অগাস্ট এবং তার পরের সপ্তাহে যা ঘটেছে, সেই বিষয়টি ভারতের উন্নয়নের আখ্যানে বড় এক উদাহরণ।
বন্ধুগণ,
সাম্প্রতিক তথ্যানুযায়ী দেখা যাচ্ছে যে, জুন মাসে – হ্যাঁ, আমি মাত্র একটি মাসের কথাই বলছি – সংগঠিত ক্ষেত্রে ২২ লক্ষ কর্মপ্রার্থী চাকরি পেয়েছেন। ইপিএফও-র পরিসংখ্যান তাই বলছে। এক মাসের বিচারে এই সংখ্যাটি এ যাবৎ সর্বোচ্চ। ভারতের খুচরো পণ্যের মুদ্রাস্ফীতির হার ২০১৭’র পর সর্বনিম্ন। বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় রেকর্ড পরিমাণের কাছাকাছি পৌঁছেছে। ২০১৪ সালে সৌর পিভি মডিউল – এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ছিল ২.৫ গিগাওয়াট। বর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তা ১০০ গিগাওয়াটের ঐতিহাসিক মাইলফলক ছুঁয়েছে। আমাদের দিল্লি বিমানবন্দর বিশ্বের অভিজাত ১০০ মিলিয়ন প্লাস ক্লাবে জায়গা করে নিয়েছে। এই বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি বছর ১০ কোটি মানুষের যাতায়াত সম্ভব। বিশ্বের মাত্র ৬টি বিমানবন্দর এই তালিকায় রয়েছে।
বন্ধুগণ,
সম্প্রতি আরও একটি খবর নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল রেটিংস ভারতে ক্রেডিট রেটিং বাড়িয়েছে। প্রায় দু’দশক পর ঐ তালিকায় ভারতের ক্রেডিট রেটিং বাড়ল। এর অর্থ সারা বিশ্বের কাছে ভারত আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
বন্ধুগণ,
সাধারণ আলাপচারিতায় “মিসিং দ্য বাস” শব্দবন্ধটি বারবার ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ – সুযোগ আসে এবং চলেও যায়। আমাদের দেশের আগের সরকার প্রযুক্তি এবং শিল্প সংক্রান্ত বিষয়ে এরকম অনেক ‘বাস’ মিস করেছে। এখানে কারও সমালোচনা করতে আমি আসিনি। কিন্তু, গণতন্ত্রে তুলনামুলক আলোচনা বহু ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি বুঝতে সাহায্য করে।
বন্ধুগণ,
আগের সরকার দেশকে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির মধ্যেই আটকে রেখেছিল। নির্বাচনের বাইরে চিন্তাভাবনা হয়নি। তাঁরা বিশ্বাস করতেন যে, উন্নত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি শুধুমাত্র উন্নত দেশগুলিরই বিষয়। আমাদের তা প্রয়োজন হলে আমদানী করলেই হবে। সেজন্য বছরের পর বছর আমাদের দেশ পিছিয়ে ছিল। একের পর এক বাস মিস করেছি আমরা। একটা উদাহরণ দিচ্ছি। যোগাযোগ ক্ষেত্রের কথা ভাবা যাক। সারা বিশ্বে যখন ইন্টারনেটের জমানা শুরু হ’ল, তখন আমাদের সরকার বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিল। এরপর, এল ২জি জমানা এবং কি হ’ল তা আমরা দেখেছি। আমরা ঐ বাস মিস করলাম। ২জি, ৩জি এবং ৪জি-র জন্য নির্ভরশীল থাকলাম অন্য দেশের উপর। কিন্তু, কত দিন এমনটা চলতে পারে? সেজন্য ২০১৪’র পর ভারত নীতি পাল্টালো। সিদ্ধান্ত নেওয়া হ’ল যে, আমরা আর বাস মিস করব না, বরং বসবো চালকের আসনে। সেই অনুযায়ী, ৫জি স্ট্যাক তৈরি হ’ল সম্পূর্ণভাবে দেশীয় পদ্ধতিতে। শুধু তাই নয়, ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ৫জি অন্য বহু দেশে চালু হয়ে গেল দ্রুত। এখন আমরা ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ৬জি নিয়ে দ্রুত কাজ করছি।
বন্ধুগণ,
আমরা সকলেই জানি, ভারতে সেমিকন্ডাক্টর তৈরির কাজ শুরু হতে পারত ৫০-৬০ বছর আগেই। কিন্তু, সেই বাসও আমরা মিস করেছি। এরপর কেটে গেছে বহু বছর। এখন আমরা অবস্থাটা বদলে দিয়েছি। ভারতে সেমিকন্ডাক্টর কারখানা তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। এ বছরের শেষ নাগাদ ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ চিপ বাজারে এসে যাবে।
বন্ধুগণ,
আজ জাতীয় মাহাকাশ দিবস। এই উপলক্ষ্যে আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই। মহাকাশ ক্ষেত্র নিয়ে একটু পর্যালোচনা করা যাক। ২০১৪’র আগে আমাদের মহাকাশ অভিযানের সংখ্যা ও লক্ষ্য ছিল সীমিত। কিন্তু, একবিংশ শতকে যখন বড় বড় দেশগুলি মহাকাশে বিভিন্ন সম্ভাবনার সন্ধান করছে, তখন ভারত কিভাবে পিছিয়ে থাকে। সেজন্যই আমরা মহাকাশ ক্ষেত্রের সংস্কার করেছি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলির সামনে তা খুলে দিয়েছে। কিছু পরিসংখ্যান দিই। ১৯৮৯ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এই ৩৫ বছরে ভারতের মহাকাশ অভিযানের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪২। বিগত ১১ বছরে ৬০ – এরও বেশি মহাকাশ অভিযান চালিয়েছি আমরা। আরও অনেক অভিযান হতে চলেছে আগামী দিনে। স্পেস ডকিং – এর সক্ষমতা অর্জন করেছি আমরা। এই বিষয়টি ভবিষ্যতের অভিযানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন ভারত গগনযান অভিযানের মাধ্যমে মহাকাশে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এক্ষেত্রে গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লার অভিজ্ঞতা খুবই কাজে লাগবে।
বন্ধুগণ,
মহাকাশ ক্ষেত্রে গতি সঞ্চার করতে যে কোনও ধরনের নেতিবাচক নিয়ম-কানুন সরিয়ে দেওয়া দরকার ছিল। সেজন্যই বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণ সংক্রান্ত নির্দিষ্ট বিধি তৈরি হয়েছে, স্পেকট্রাম বন্টনে স্বচ্ছতা আনা হয়েছে এবং বিদেশি বিনিয়োগের দরজা আরও খুলে দেওয়া হয়েছে। এ বছরের বাজেটে স্পেস স্টার্টআপ ক্ষেত্রে ১ হাজার কোটি টাকার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
বন্ধুগণ,
এইসব সংস্কারের সুফল প্রত্যক্ষ করছে ভারতের মহাকাশ ক্ষেত্র। ২০১৪’য় এই ক্ষেত্রটিতে স্টার্টআপ – এর সংখ্যা ছিল ১, আর এখন ৩০০। আমাদের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরি হতে খুব দেরী নেই।
বন্ধুগণ,
সাময়িক পরিবর্তন নয়, আমরা এক লাফে অনেক দূর এগোতে চাই। সংস্কার কোনও বাধ্যবাধকতা নয় বা সঙ্কট মোকাবিলার পদক্ষেপও নয়। এটা আমাদের দায়বদ্ধতা। সার্বিক একটি দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে আমরা একের পর এক সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিচ্ছি।
বন্ধুগণ,
মাত্র কয়েক দিন আগে সংসদে বর্ষাকালীন অধিবেশন সমাপ্ত হয়েছে। এই অধিবেশনেও আপনারা সংস্কার উদ্যোগের ধারাবাহিকতা প্রত্যক্ষ করেছেন। বিরোধীদের হৈ হট্টগোল সত্ত্বেও আমরা সংস্কারের প্রতি দায়বদ্ধ থেকেছি। পেশ হয়েছে জনবিশ্বাস ২.০, যা আস্থা-ভিত্তিক ও নাগরিক-কেন্দ্রিক প্রশাসনের লক্ষ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সংস্কারমূলক পদক্ষেপ। জনবিশ্বাসের প্রথম সংস্করণে আমরা ছোটখাটো ২০০ ধরনের বিচ্যুতিকে অপরাধের তকমা-মুক্ত করেছি। আইনটির দ্বিতীয় পর্বে এ ধরনের আরও ৩০ বিচ্যুতিকে অপরাধের তকমা-মুক্ত করা হয়েছে। এই অধিবেশনেই আয়কর সংক্রান্ত আইনের সংস্কারও হয়েছে। ৬০ বছরের পুরনো আইনটিকে আরও সরল করা হয়েছে। আরও একটি বিষয় হ’ল – আগে এই আইনের ভাষা এমন ছিল, যা শুধুমাত্র আইনজীবী এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট-রাই বুঝতে পারতেন। এখন আয়কর আইনের ভাষা এমন করে তোলা হয়েছে, যাতে বিষয়টি সাধারণ করদাতাদের বোধগম্য হয়। নাগরিকদের স্বার্থের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতার এ এক প্রমাণ।
বন্ধুগণ,
বর্ষাকালীন অধিবেশনে খনি ক্ষেত্রের আইনগুলিতেও তাৎপর্যপূর্ণ সংশোধনী আনা হয়েছে। জাহাজ চলাচল ও বন্দর সংক্রান্ত আইনও পরিবর্তিত হয়েছে। এই আইনগুলি ব্রিটিশ আমল থেকেই একইরকম ছিল। বর্তমানের সংস্কারমূলক পদক্ষেপ ভারতের নীল অর্থনীতি এবং বন্দর-কেন্দ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে। একইভাবে, ক্রীড়া ক্ষেত্রেই নতুন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভারতে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন হবে এবং সর্বাত্মক ক্রীড়া অর্থনীতি পরিমণ্ডল গড়ে উঠবে। সেই লক্ষ্যেই সরকার জাতীয় ক্রীড়া নীতি - ‘খেলো ভারত নীতি’ প্রণয়ন করেছে।
বন্ধুগণ,
লক্ষ্যে পৌঁছে সন্তুষ্ট হয়ে বসে থাকা আমার প্রকৃতি নয়। সংস্কারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এগিয়ে যেতে হবে আরও। বিভিন্ন দিকে কাজ চলছে। অপ্রয়োজনীয় আইন বাতিল হচ্ছে এবং নিয়ম বিধি সরল করা হচ্ছে। চলছে ডিজিটাইজেশনের কাজ। জিএসটি ক্ষেত্রেও বড় ধরনের সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ বছর দীপাবলির পর এই কাজ সম্পন্ন হবে। এরফলে, জিএসটি আরও সরলীকৃত হবে এবং জিনিসপত্রের দাম কমবে।
বন্ধুগণ,
পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কারের ফলে ভারতে উৎপাদন ও চাহিদা বাড়বে। নতুন প্রাণ সঞ্চার হবে শিল্প ক্ষেত্রে। কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ তৈরি হবে। জীবনযাপন সহজতর হওয়ার পাশাপাশি জোরদার হবে ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’।
বন্ধুগণ,
২০৪৭ সাল নাগাদ উন্নত দেশ হয়ে ওঠায় আমরা দায়বদ্ধ। এই বিকশিত ভারতের ভিত্তি হ’ল – আত্মনির্ভর ভারত। দ্রুতি, ব্যাপকতা এবং সম্ভাবনা ও সুযোগ হ’ল – বিকশিত ভারত – এর তিনটি মূল ভিত্তি। সারা বিশ্বে অতিমারীর সময়ে এক্ষেত্রে ভারতের ক্ষমতা প্রতিফলিত হয়েছে। আপনারা নিশ্চয় মনে আছে ঐ সময়ে বহু জিনিসেরই বিপুল চাহিদা ছিল। কিন্তু, বিশ্বে সরবরাহ-শৃঙ্খল বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল একেবারে। তখন আমরা দেশেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের উৎপাদন সম্ভব করে তুলতে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়েছি। খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হয়েছে প্রচুর পরিমাণে কিট, ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন প্ল্যান্ট। ভারতে তৈরি ২২০ কোটি প্রতিষেধকের ডোজ নিখরচায় পেয়েছেন ভারতের মানুষ। আমরা গড়ে তুলেছি কো-উইন মঞ্চ, যাতে দ্রুত প্রতিষেধক প্রদান সম্ভব হয়। সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে এই মঞ্চ।
বন্ধুগণ,
ভারতে দ্রুতি, উদ্যোগের ব্যাপকতা এবং সম্ভাবনার অন্বেষণে সক্ষমতা বিদ্যুৎ ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত ২০৩০ সাল নাগাদ মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৫০ শতাংশ অজীবাশ্ম উৎস থেকে তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিলাম আমরা। কাজ সম্পন্ন হয়েছে অনেক আগেই।
বন্ধুগণ,
আগে যাবতীয় নীতি আমদানী-ভিত্তিক ছিল। বহু মানুষের কায়েমী স্বার্থ জড়িত ছিল এক্ষেত্রে। কিন্তু, আজ আত্মনির্ভর ভারত রপ্তানী ক্ষেত্রেও একের পর এক রেকর্ড গড়ে চলেছে। বিগত এক বছরে ৪ লক্ষ কোটি টাকা মূল্যের কৃষিজ পণ্য রপ্তানী করেছে ভারত। গত বছর সারা বিশ্বে তৈরি ৮০০ কোটি প্রতিষেধকের ডোজের মধ্যে ৪০০ কোটি তৈরি হয়েছে ভারতে। স্বাধীনতার ৬৫ বছর পরে ভারতের বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম রপ্তানী ছিল মাত্র ৩৫ হাজার কোটি টাকা। খুব শীঘ্রই এই পরিমাণ ৩.২৫ লক্ষ কোটি টাকা হতে চলেছে।
বন্ধুগণ,
২০১৪ সালের আগে অটোমোবাইল ক্ষেত্রে ভারতের রপ্তানীর মূল্যমান ছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা। আজ ভারত প্রতি বছর ১.২ লক্ষ কোটি টাকার যানবাহন ও যন্ত্রাংশ রপ্তানী করছে। মেট্রো কামরা, রেল কামরা থেকে রেল ইঞ্জিন – সবই রপ্তানী করছি আমরা। খুব শীঘ্রই ভারত বিশ্বের ১০০টি দেশে বৈদ্যুতিক যান রপ্তানী শুরু করবে। আগামী ২৬ অগাস্ট এ সম্পর্কিত একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আপনারা জানেন যে, একটি দেশের অগ্রগতিতে গবেষণামূলক উদ্যোগের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। গবেষণার ফলে পাওয়া বিষয়গুলি আমদানী করে কাজ চলতে পারে। কিন্তু, স্বপ্ন পূরণ সম্ভব নয়। সেজন্যই আমরা গবেষণা ক্ষেত্রের প্রসারে উপযুক্ত নীতি এবং মঞ্চ তৈরি করায় উদ্যোগী হয়েছি। গবেষণা খাতে ব্যয় বরাদ্দ ২০১৪’র তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। বিগত এক বছরে মেধাসত্ত্বের আবেদন বেড়েছে ১৭ গুণ। ৬০ হাজার উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে উঠেছে গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র। আপনারা “এক দেশ, এক সদস্যতা” কর্মসূচির কথাও শুনে থাকবেন। এর সুবাদে আমাদের শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের গবেষণামূলক নানা পত্র-পত্রিকার নাগাল পাচ্ছেন। ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে উঠেছে জাতীয় গবেষণা ফাউন্ডেশন। গবেষণা, উন্নয়ন ও উদ্ভাবনা কর্মসূচি বাবদ ১ লক্ষ কোটি টাকা মঞ্জুর হয়েছে। এর লক্ষ্য – বেসরকারি ক্ষেত্রেও গবেষণার প্রসার।
বন্ধুগণ,
এই সম্মেলনে শিল্প ক্ষেত্রের নানা কুশিলব-ও উপস্থিত রয়েছেন। পরিবেশ-বান্ধব শক্তি, কোয়ান্টাম প্রযুক্তি, ব্যাটারি স্টোরেজ, জৈব প্রযুক্তির মতো বিষয়ে গবেষণা খাতে বেসরকারি মহল আরও বিনিয়োগ করুক – এমনটাই আমরা চাই। বিকশিত ভারত – এর লক্ষ্য অর্জনে এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
বন্ধুগণ,
সংস্কার, সম্পাদন, পরিবর্তনের মন্ত্রে ভারত এখন সারা বিশ্বকে শ্লথ গতির উন্নয়নের যাতাকল থেকে মুক্ত করতে প্রস্তুত। কূলের কাছে বদ্ধজলে আটকে থেকে খেলাচ্ছলে নুড়িপাথর ছোঁড়ার মানুষ আমরা নই। আমরা চাই, বেগবতী নদীর গতিপথ পরিবর্তন করতে। লালকেল্লা থেকে আমি বলেছি, আজকের ভারত, এমনকি সময়ের অভিমুখ পরিবর্তনের ক্ষমতাও ধরে।
বন্ধুগণ,
আপনাদের সকলের সঙ্গে আবার মিলিত হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি ইকনোমিক টাইমস্ - এর প্রতি কৃতজ্ঞ। আপনাদের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
ধন্যবাদ!
SC/AC/SB
(Release ID: 2161148)
Visitor Counter : 23
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
हिन्दी
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam