প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
বিহারের গয়াজিতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
22 AUG 2025 3:20PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২২ অগাস্ট, ২০২৫
জ্ঞান ও মোক্ষলাভের বিশ্ববিখ্যাত পবিত্র নগরী গয়া'জিকে প্রণাম জানাই।
বিষ্ণুপদ মন্দিরের এই গৌরবময় ভূমিতে আমি সকলকে স্বাগত জানাই।
বিহারের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান জী, এখানকার জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার জী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী জিতন রাম মাঝি জী, রাজীব রঞ্জন সিং জী, চিরাগ পাসওয়ান জী, রামনাথ ঠাকুর জী, নিত্যানন্দ রায় জী, সতীশ চন্দ্র দুবে জী, রাজভূষণ কুমার চৌধুরী জী, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী কুমার সিনহা জী, বিহার সরকারের মন্ত্রীগণ, সংসদে আমার সহকর্মী উপেন্দ্র কুশওয়াহা জী, অন্যান্য সাংসদগণ এবং আমার প্রিয় বিহারের ভাই ও বোনরা !
এই গয়া'জী ভূমি আধ্যাত্মিকতা এবং শান্তির ভূমি। এই পবিত্র ভূমিতে ভগবান বুদ্ধ বোধিলাভ করেছিলেন। গয়া'জীর আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অত্যন্ত প্রাচীন এবং সমৃদ্ধ। এখানকার মানুষ চেয়েছিলেন এই শহরটিকে যেন গয়া নয়, গয়া'জী বলা হয়। এই সিদ্ধান্তের জন্য আমি বিহার সরকারকে অভিনন্দন জানাই। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে বিহারের ডাবল ইঞ্জিন সরকার গয়া'জীর দ্রুত উন্নয়নের জন্য নিরন্তর অবিরাম কাজ করে চলেছে।
ভাই ও বোনেরা,
গয়া'জীর পবিত্র ভূমি থেকে আজ একদিনে ১২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে শক্তি, স্বাস্থ্য এবং নগর উন্নয়ন বিষয়ক কয়েকটি বড় প্রকল্প রয়েছে। এই প্রকল্পগুলি বিহারের শিল্পক্ষেত্রকে শক্তিশালী করবে এবং যুবসমাজের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। আমি বিহারের জনগণকে এই প্রকল্পগুলির জন্য অভিনন্দন জানাই। বিহারে উন্নত স্বাস্থ্য পরিসেবার জন্য আজ এখান থেকে একটি হাসপাতাল এবং গবেষণা কেন্দ্রেরও উদ্বোধন করা হয়েছে। বিহারের জনগণ এর ফলে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য বিশেষ সুবিধা পাবেন।
বন্ধুগণ,
জনগণের সেবক হিসেবে আমি দরিদ্রদের জীবন থেকে অসুবিধা দূর করা ও মহিলাদের জীবনযাপন সহজ করার কাজে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাই।
বন্ধুগণ,
আমার একটা বড় সংকল্প রয়েছে। প্রত্যেক দরিদ্র মানুষকে একটি করে পাকা বাড়ির বন্দোবস্ত করে না দেওয়া পর্যন্ত মোদী বিশ্রাম নেবে না। আর এই চিন্তাভাবনা থেকেই গত ১১ বছরে ৪ কোটিরও বেশি দরিদ্র মানুষকে পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কেবলমাত্র আমাদের এই বিহারেই ৩৮ লক্ষেরও বেশি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। গয়া জেলাতেও ২ লক্ষেরও বেশি পরিবার তাদের স্থায়ী পাকা বাড়ি পেয়েছেন। আমরা কেবলমাত্র বাড়ি মানে চার দেয়ালের ব্যবস্থা করে দিইনি, আমরা দরিদ্রদের আত্মসম্মানও দিয়েছি। এই বাড়িগুলিতে বিদ্যুৎ, জল, শৌচাগার এবং গ্যাস সংযোগের সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। অর্থাৎ, দরিদ্র পরিবারগুলিও সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সঙ্গে বসবাসের নিশ্চয়তা পেয়েছে।
বন্ধুগণ,
আজ, এই প্রক্রিয়াটিকে আরও এগিয়ে নিয়ে বিহারের মগধ অঞ্চলের ১৬ হাজারেরও বেশি পরিবারকে তাদের নিজস্ব পাকাবাড়ি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এবার দীপাবলি এবং ছট পূজা এই পরিবারগুলিতে আরও উৎসাহের সাথে উদযাপন করা হবে। আমি সমস্ত সুবিধাভোগী পরিবারকে অভিনন্দন জানাই। যারা এখনও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা থেকে বঞ্চিত, আমি তাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে, প্রত্যেক দরিদ্র ব্যক্তি তাদের নিজস্ব পাকাবাড়ি না পাওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বন্ধুগণ,
বিহার হল চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এবং চাণক্যের ভূমি। যখনই কোনও শত্রু ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে, বিহার দেশের ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিহারের ভূমিতে নেওয়া প্রতিটি সংকল্প এখানকার শক্তি। এখানে নেওয়া সংকল্প কখনও বৃথা হয়না।
আর তাই, ভাই ও বোনেরা,
যখন কাশ্মীরের পহলগামে জঙ্গি হামলা হয়েছিল, আমাদের নিরীহ নাগরিকদের তাদের ধর্ম জিজ্ঞাসা করে হত্যা করা হয়েছিল, তখন আমি বিহারের এই ভূমি থেকেই বলেছিলাম যে জঙ্গিদের নিশ্চিহ্ন করা হবে। সমগ্র বিশ্ব এখন দেখছে যে বিহারের এই ভূমি থেকে গৃহীত সংকল্প কীভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, পাকিস্তান আমাদের ওপর যখন ড্রোন হামলা চালাচ্ছিল, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছিল, তখন ভারত সেগুলি খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিচ্ছিল। পাকিস্তানের একটিও ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের ক্ষতি করতে পারেনি।
বন্ধুগণ,
অপারেশন সিঁদুর ভারতের প্রতিরক্ষা নীতিতে একটি নতুন রূপরেখা তৈরি করেছে। এখন ভারতে জঙ্গি পাঠিয়ে এবং আক্রমণ চালিয়ে কেউ পালাতে পারবে না। জঙ্গিরা যদি আন্ডারওয়ার্ল্ডে লুকিয়ে থাকে, তবুও ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র তাদের হত্যা করবে।
বন্ধুগণ,
বিহারের দ্রুত উন্নয়ন কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার। সেই কারণেই আজ বিহার সর্বাত্মক উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। বিগত বছরগুলিতে, পুরানো সমস্যার সমাধান খুঁজে পাওয়া গেছে, এবং অগ্রগতির নতুন পথও তৈরি হয়েছে। মনে করুন, লাল্টিন ক্ষমতার সময় রাজ্যের পরিস্থিতি কতটা দুর্দশাগ্রস্ত ছিল। সেই সময় কতো অঞ্চল লাল সন্ত্রাসের আতঙ্কে ছিল। মাওবাদীদের জন্য সন্ধ্যার পরে কোথাও যাতায়াত করা কঠিন ছিল। সেইসময় গয়া'জীর মতো শহরগুলি অন্ধকারে ডুবে থাকত। এমন হাজার হাজার গ্রাম ছিল যেখানে বিদ্যুতের খুঁটিও পৌঁছায়নি। তাঁরা বিহারের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছিল। শিক্ষা ছিল না, কর্মসংস্থান ছিল না। বিহারের মানুষকে বিহার থেকে দেশান্তরিত হতে বাধ্য করেছিল।
বন্ধুগণ,
আরজেডি এবং তার বন্ধুরা বিহারের জনগণকে কেবল তাদের ভোট ব্যাঙ্ক মনে করে। তারা দরিদ্রদের সুখ-দুঃখ, তাদের সম্মান নিয়ে চিন্তিত নয়। আপনাদের মনে আছে, কংগ্রেসের একজন মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চ থেকে বলেছিলেন যে তিনি বিহারের জনগণকে তাঁর রাজ্যে প্রবেশ করতে দেবেন না। বিহারের জনগণের প্রতি কংগ্রেসের এত ঘৃণা, কখনই কেউ ভুলতে পারবে না। বিহারের জনগণের প্রতি কংগ্রেসের দুর্ব্যবহার দেখার পরেও, এখানকার আরজেডি সদস্যরা উদাসীন ছিল।
ভাই ও বোনেরা,
বিহারের এনডিএ সরকার কংগ্রেস এবং ইনডিয়া জোটের এই ঘৃণামূলক প্রচারের জবাব দিচ্ছে। বিহারের ছেলেমেয়েরা যেন এখানে কর্মসংস্থান পায়, সম্মানের সাথে জীবনযাপন করে এবং তাদের বাবা-মায়ের দেখভাল করতে পারে, সেই চিন্তাভাবনা নিয়েই আমরা কাজ করছি। এখন বিহারে বড় বড় প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। গয়া'জী জেলার দোবিতে বিহারের বৃহত্তম শিল্প এলাকা গড়ে উঠছে। গয়া'জীতে একটি প্রযুক্তি কেন্দ্রও স্থাপন করা হচ্ছে। আজ এখানে বক্সার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেরও উদ্বোধন করা হয়েছে। মাত্র কয়েক মাস আগে, আমি ঔরঙ্গাবাদে নবীনগর সুপার তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। ভাগলপুরের পীরপৈন্তিতে একটি নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রও নির্মিত হবে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিহারে বিদ্যুতের সরবরাহ বৃদ্ধি করবে। আর আপনারা সবাই জানেন বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে কী হয়? বাড়িতে বিদ্যুতের সরবরাহ বৃদ্ধি পায়, এবং শিল্পগুলিও আরও বেশি বিদ্যুৎ পায়। এবং এর ফলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হয়।
বন্ধুগণ,
নীতিশজী বিহারের যুবকদের স্থায়ী সরকারি চাকরি প্রদানের জন্য একটি বড় অভিযান শুরু করেছেন। নীতিশজীর কারণেই এখানে শিক্ষক নিয়োগও সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে।
বন্ধুগণ,,
বিহারে বেশি সংখ্যক যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে ও চাকরির জন্য তাঁদের যেন দেশান্তরী না হতে হয় সেজন্য কেন্দ্রীয় সরকারের একটি নতুন প্রকল্প বিশেষভাবে সহায়ক হবে। গত সপ্তাহে, ১৫ই অগাস্ট, সারা দেশে প্রধানমন্ত্রী বিকশিত ভারত রোজগার যোজনা বাস্তবায়িত হয়েছে। এর আওতায়, যখন আমাদের যুবক-যুবতীরা বেসরকারি ক্ষেত্রে তাদের প্রথম চাকরি পাবে, তখন কেন্দ্রীয় সরকার তাদের ১৫,০০০ টাকা দেবে। যেসব বেসরকারি সংস্থা যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান দেবে, তাদেরও সরকার আলাদাভাবে অর্থ দেবে। বিহারের যুবক-যুবতীরাও এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবেন।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশে, কংগ্রেস হোক বা আরজেডি, তাদের সরকার কখনোই জনসাধারণের টাকার মূল্য বোঝেনি। তাদের কাছে জনসাধারণের টাকা মানে নিজেদের কোষাগার ভরানো। সেই কারণেই কংগ্রেস-আরজেডি সরকারের আমলে বছরের পর বছর ধরে প্রকল্পগুলি সম্পন্ন হয়নি। কোনও প্রকল্প যত বিলম্বিত হত, তত বেশি অর্থ তারা তা থেকে আয় করত। এখন এই ধারণাটিও এনডিএ সরকার পরিবর্তন করেছে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর এখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করা হয়। আজকের অনুষ্ঠানটিও এর একটি দুর্দান্ত উদাহরণ। বিহারের জনগণ আমাকে আঁথা-সিমারিয়া অংশের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সুযোগ দিয়েছিলেন। আপনারা যে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে বলেছিলেন, আজ আমাকে তা উদ্বোধন করার সুযোগও দিয়েছেন। এই সেতুটি কেবল রাস্তাগুলিকেই সংযুক্ত করবে তা নয়, বরং সমগ্র উত্তর ও দক্ষিণ বিহারকে সংযুক্ত করবে। এর ফলে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে, শিল্পের প্রসার ঘটবে এবং তীর্থযাত্রীদের এখানে পৌঁছানো সহজ হবে। এনডিএ সরকারের আমলে যেসব উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ হবেই, এটা নিশ্চিত।
বন্ধুগণ,
এনডিএ-র ডাবল ইঞ্জিন সরকারও এখানে রেলওয়ের উন্নয়নের জন্য দ্রুত কাজ করছে। অমৃত ভারত স্টেশন যোজনার আওতায় গয়া'জী রেলওয়ে স্টেশনের আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। এর ফলে গয়া'জী রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের বিমানবন্দরের মতো সুবিধা প্রদান করা হবে। আজ, গয়া হল সেই শহর যেখানে রাজধানী, জনশতাব্দী এবং মেড ইন ইন্ডিয়া বন্দে ভারত ট্রেন পাওয়া যায়। গয়া'জী, সাসারাম, প্রয়াগরাজ, কানপুর হয়ে দিল্লীর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের ফলে বিহারের যুবক, কৃষক এবং ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
আপনাদের আশীর্বাদে ও দেশের জনগণের অটুট আস্থার ফলে, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার কার্যকালের যে মেয়াদ শুরু হয়েছিল তা আজও নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত রয়েছে। এই সময়কালে আমাদের সরকারের উপর দুর্নীতির একটিও দাগ লাগেনি। যেখানে স্বাধীনতার পর ৬০-৬৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস সরকারগুলির দুর্নীতির দীর্ঘ তালিকা রয়েছে। বিহারের প্রতিটি শিশু আরজেডি-র দুর্নীতি সম্পর্কে জানে। আমি স্পষ্টভাবে বিশ্বাস করি যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে যদি তার শেষ পর্যায়ে নিয়ে যেতে হয়, তাহলে কাউকে না কাউকে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একবার ভাবুন, আজ যে আইন রয়েছে তাতে যদি একজন ছোট সরকারি কর্মচারীকে ৫০ ঘন্টা ধরে আটক রাখা হয়, তাহলে তিনি নিজে থেকেই বরখাস্ত হয়ে যাবেন। গাড়ির চালক, ছোট কেরানি বা পিয়ন যেই হোক না কেন, তার জীবন চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু কেউ যদি মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী হয়, তাহলে তাঁরা জেলে থাকা অবস্থায়ও ক্ষমতার আনন্দ উপভোগ করতে পারেন। এটা কীভাবে সম্ভব? আমরা কয়েকদিন আগে দেখেছি কিভাবে জেল থেকে ফাইলে স্বাক্ষর করা হচ্ছিল ও জেল থেকেই সরকারি আদেশ জারি করা হচ্ছিল। যদি নেতাদের এই মনোভাব অব্যাহত থাকে, তাহলে এই ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই কীভাবে করা যাবে?
বন্ধুগণ,
সংবিধান প্রত্যেক জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে সততা এবং স্বচ্ছতা আশা করে। আমরা সংবিধানের মর্যাদা লঙ্ঘিত হতে দেখতে পারি না। সেই কারণেই এনডিএ সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে এমন একটি আইন এনেছে, যার মধ্যে দেশের প্রধানমন্ত্রীও রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রীদেরও এই আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যখন এই আইন তৈরি হবে, তখন প্রধানমন্ত্রী হোক বা মুখ্যমন্ত্রী, অথবা যে কোনও মন্ত্রী, গ্রেপ্তারের ৩০ দিনের মধ্যে তাঁকে জামিন পেতে হবে। আর যদি জামিন না দেওয়া হয়, তাহলে ৩১তম দিনে তাঁকে চেয়ার ছাড়তে হবে। আপনারা বলুন, যে ব্যক্তি জেলে যায় তার কী চেয়ার ছাড়া উচিত নয়? তিনি কী চেয়ারে বসতে পারেন? তিনি কী সরকারি ফাইলে স্বাক্ষর করতে পারেন? কেউ কি জেল থেকে সরকার চালাতে পারেন? আর সেই কারণেই আমরা এমন কঠোর আইন তৈরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
কিন্তু বন্ধুগণ,
আরজেডি, কংগ্রেস এবং বামপন্থীরা এই আইনের বিরোধিতা করছে। তারা খুবই ক্ষুব্ধ। তাঁরা কীসে ভয় পাচ্ছেন, তা কে না জানে? যে পাপ করেছে সে অন্যদের কাছ থেকে তার পাপ লুকিয়ে রাখে কিন্তু সে নিজেই জানে যে সে কী করেছে। আরজেডি এবং কংগ্রেসের সদস্যরা, কেউ জামিনে আছে, কেউ আদালতের দরজায় দরজায় ঘুরছে। আর যারা জামিনে রয়েছে তাঁরা আজ এই আইনের বিরোধিতা করছে। তাঁরা মনে করে যে যদি তাঁরা জেলে যায়, তাহলে তাঁদের সমস্ত স্বপ্ন ভেঙে যাবে। আর সেই কারণেই সকাল-সন্ধ্যা তাঁরা মোদীকে বিভিন্নভাবে গালিগালাজ করছে। জনস্বার্থে আনা এই আইনের বিরোধিতা করছে। আমাদের রাজেন্দ্র বাবু, বাবা সাহেব আম্বেদকর কখনও কল্পনাও করেননি যে ক্ষমতার লোভে লোকে দুর্নীতি করবে এবং জেলে যাওয়ার পরেও তারা ক্ষমতায় থাকবে। কিন্তু এখন দুর্নীতিগ্রস্তরা জেলে যাওয়ার পাশাপাশি তাদের চেয়ারও যাবে। দেশের কোটি কোটি মানুষ দুর্নীতিমুক্ত ভারত গড়ার সংকল্প নিয়েছে। এই সংকল্প পূরণ হবে।
বন্ধুগণ,
লালকেল্লা থেকে আমি আরেকটি বিপদের কথা বলেছি। আর এই বিপদ বিহারের উপরও রয়েছে। দেশে অনুপ্রবেশকারীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা উদ্বেগের বিষয়। বিহারের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে জনসংখ্যার চিত্র দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। তাই, এনডিএ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে দেশের ভবিষ্যৎ অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা নির্ধারিত হবে না। অনুপ্রবেশকারীদের বিহারের যুবকদের চাকরি ছিনিয়ে নিতে দেওয়া হবে না। ভারতীয় জনগণের অধিকার, অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা লুট করতে দেওয়া হবে না। এই বিপদ মোকাবিলা করার জন্য, আমি একটি জনসংখ্যা মিশন শুরু করার কথা বলেছি। খুব শীঘ্রই এই মিশন তার কাজ শুরু করবে। আমরা যতক্ষণ না প্রতিটি অনুপ্রবেশকারীকে দেশ থেকে বের করে দেব ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষান্ত হব না। আপনারাই বলুন, এই অনুপ্রবেশকারীদের বের করে দেওয়া উচিত কি না? এই অনুপ্রবেশকারীরা যদি আপনার কর্মসংস্থান ছিনিয়ে নেয়, তাহলে আপনি কি তা মেনে নেবেন? যদি কোনও অনুপ্রবেশকারী আপনার জমি দখল করে, তাহলে আপনি কি তা মেনে নেবেন? যদি কোনও অনুপ্রবেশকারী আপনার অধিকার ছিনিয়ে নেয়, তাহলে আপনি কি তা মেনে নেন? বিহারের সকল মানুষকে দেশের ভেতরে বসে থাকা অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থকদের থেকেও সাবধান থাকতে হবে। কারা অনুপ্রবেশকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে তা জানতে হবে। কংগ্রেস এবং আরজেডির মতো দলগুলি বিহারের জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের হাতে তুলে দিতে চায়। তুষ্টির জন্য, তাদের ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানোর জন্য, কংগ্রেস-আরজেডির লোকেরা যেকোনো কিছু করতে পারে, যেকোনো স্তরে নেমে যেতে পারে। তাই বিহারের জনগণকে খুব সতর্ক থাকতে হবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের বিহারকে কংগ্রেস-আরজেডির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। এই সময়টি বিহারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিহারের কল্যাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নীতিশ'জির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। বিহারের যুবকদের স্বপ্ন পূরণ করতে ও বিহারের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়িত করতে অবিরাম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিহারে উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে ডাবল ইঞ্জিন সরকার নিরন্তর কঠোর পরিশ্রম করছে। আজকের উন্নয়ন প্রকল্পগুলি সেই লক্ষ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমি আবারও এই প্রকল্পগুলির জন্য বিহারকে অভিনন্দন জানাই। আমার সঙ্গে বলুন-
ভারত মাতা কি জয় !
ভারত মাতা কি জয় !
ভারত মাতা কি জয় !
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
SC/PM/NS
(Release ID: 2159851)