প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
ভারত ও ফিলিপিন্সের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ঘোষণা
Posted On:
05 AUG 2025 5:23PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ০৫ অগাস্ট, ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে ফিলিপিন্সের রাষ্ট্রপতি শ্রী ফার্দিনান্দ আর মার্কোস জুনিয়র ৪ থেকে ৮ অগাস্ট ভারতে রাষ্ট্রীয় সফর করছেন। ফার্স্ট লেডি শ্রীমতী লুইস অ্যারেনেটা মার্কোস, ফিলিপিন্সের মন্ত্রিসভার কয়েকজন মন্ত্রী, বাণিজ্য মহলের প্রথম সারির নেতৃবৃন্দ সহ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল তাঁর সফরসঙ্গী ।
রাষ্ট্রপতি ভবনে ফিলিপিন্সের রাষ্ট্রপতিকে ৫ অগাস্ট আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানানো হয়। তিনি রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীকে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। এর পর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মার্কোস দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন তিনি। রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মুও শ্রী মার্কোসের সম্মানে একটি ভোজ সভার আয়োজন করেন। বিদেশমন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। শ্রী মার্কোস বেঙ্গালুরুও সফর করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি শ্রী মার্কোস :
ভারত ও ফিলিপিন্সের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠার ৭৫তম বার্ষিকীতে তাঁরা দুটি দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের প্রশংসা করেন। এই সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান, আস্থা, অভিন্ন মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির উপর গড়ে উঠেছে। ১৯৫২ সালের ১১ জুলাই, সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার চুক্তি, ২০০০ সালের ২৮ নভেম্বর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা সংক্রান্ত সমঝোতাপত্র, ২০০৭ সালের ৫ অক্টোবর দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি যৌথ কমিশন গঠন এবং এসংক্রান্ত ঘোষণাপত্র দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করেছে। দুই দেশের মধ্যে গড়ে ওঠা ঐতিহাসিক সম্পর্ক এক সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নের পক্ষে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে রাজনীতি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, সামুদ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন, মহাকাশ সংক্রান্ত সহযোগিতা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য, ওষুধ শিল্প, কৃষি, ডিজিটাল প্রযুক্তি, সৃজনশীল শিল্প, পর্যটন এবং জনসাধারণের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে গড়ে ওঠা এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। আসিয়ান জোটকে সমর্থন এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে সমৃদ্ধ করে তোলার জন্য একটি মুক্তি, স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনার প্রতি তাঁরা উৎসাহ দেখিয়েছেন।
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ভারত ও ফিলিপিন্সের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা হবে। এর মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃ্দ্ধি পাবে। শান্তি, স্থিতাবস্থা ও সমৃদ্ধি বজায় রাখার লক্ষ্যে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে এই কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে উঠবে।
গত ৫ অগাস্ট, ২০২৫ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে এই অংশীদারিত্ব পরিচালিত হবে। উভয় নেতা এই অংশীদারিত্বের মূল বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন –
উচ্চ পর্যায়ে নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে দুটি দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করা হবে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য গঠিত যৌথ কমিশন এ কাজে সহায়ক হবে। কৌশলগত বিভিন্ন আলোচনা সংগঠিত করতে যে নীতি গ্রহণ করা হয়েছে তার মধ্য দিয়ে এই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করা হবে।
বর্তমান চুক্তি ও সমঝোতাপত্রগুলির মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানো হবে। সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা, পর্যটন ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের মানোন্নয়ন, কৃষি ও আর্থিক ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য গঠিত যৌথ কর্মীগোষ্ঠী এবিষয়ে সহায়ক হবে।
দুই দেশের আইনসভার প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা এবং যুব সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের মধ্যে মত বিনিময়কে উৎসাহিত করা হবে, ফলে উভয় দেশের সম্পর্ক নিবিড় হবে।
ভারত ও ফিলিপিন্স ২০০৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত যে চুক্তি সাক্ষর করেছে সেই চুক্তির অগ্রগতির পর্যালোচনা করা হয়। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য যৌথ কমিটি, প্রতিরক্ষা শিল্পসংক্রান্ত যৌথ কমিটির মতো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে গবেষণা, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বিনিময় ও নির্মাণের জন্য নিয়মিত মত বিনিময় করা হবে। দুটি দেশের তিন বাহিনীর সহযোগিতার জন্য প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
উভয় দেশের উন্নয়নে সমুদ্র ও মহাসাগরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির স্বাধীনতা ও অধিকারকে অক্ষুণ্ণ রাখতে প্রতি বছর দুই দেশের মধ্যে সামুদ্রিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। এসংক্রান্ত প্রথম বৈঠক ২০২৪-এর ১১ থেকে ১৩ ডিসেম্বর, ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তী বৈঠক ভারতে হবে। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য দুই দেশের সরকারি পর্যায়ের সংস্থাগুলি প্রয়োজনীয় তথ্যের আদানপ্রদান করবে। জাহাজ নির্মাণ, সমুদ্র পথে যোগাযোগ বৃদ্ধি, উপকূলবর্তী অঞ্চলে নজরদারি, মানবিক সহায়তা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং দুই দেশের নৌ-বাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ চালানোর উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে দুটি দেশের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তুলে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই লক্ষ্যপূরণে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগ ও বিনিয়োগের পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহাসাগরের বিভিন্ন বিষয়ের উপর নানা ধরণের গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা এবং নৌ চলাচলে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দুটি দেশের মধ্যে সহযোগিতার প্রসার ঘটানো হবে। আসিয়ান-ভারত এবং ‘মিলন’ সামুদ্রিক মহড়াগুলির মাধ্যমে ফিলিপিন্সের সঙ্গে সমুদ্র পথে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা হবে।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর অভিযান, সরবরাহশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ওষুধের ব্যবহার, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা, নৌ চলাচলের সময়ে বিভিন্ন ধরণের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যার মোকাবিলা করা, সাইবার নিরাপত্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তির নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলিকে দুটি দেশ একযোগে কাজ করবে।
মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় যৌথ কর্মীগোষ্ঠী নিয়মিত মিলিত হবে। এর জন্য সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করা হবে। মাদক ও মানব পাচার প্রতিরোধ, সাইবার অপরাধদমন, জঙ্গী কার্যকলাপের ইন্টারনেটের অপব্যবহার আটকানোর মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিবিড় সমন্বয় গড়ে তোলা হবে। জঙ্গী কার্যকলাপ প্রতিরোধে আপোষহীন নীতি গ্রহণ, তথ্যের আদানপ্রদান এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। সর্বসাধারণের জন্য ডিজিটাল পরিকাঠামো নির্মাণ, আর্থিক প্রযুক্তি, কৃত্রিম মেধা, ডিজিটাল পদ্ধতির সাহায্যে বিভিন্ন ফরেন্সিক কার্যকলাপ এবং কম্পিউটার ইমারজেন্সি রেসপন্স টিমের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে হবে।
অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা :
ভারত ও ফিলিপিন্সের মধ্যে অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রয়োজনীয় পরিবেশ গড়ে তোলা হবে। এই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এর পরিমাণ ৩৩০ কোটি মার্কিন ডলার। উভয় দেশের মধ্যে প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্টের জন্য আলাপ আলোচনা দ্রুত শেষ করতে হবে। দুই দেশের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা নিয়মিত বৈঠক করবেন, যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বৃ্দ্ধি পায়। পাশাপাশি নতুন নতুন ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করতে হবে। পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ, বৈদ্যুতিক যানবাহন, ডিজিটাল প্রযুক্তি, কৃত্রিম মেধা, রোবটিক্স, জৈব প্রযুক্তি, জাহাজ নির্মাণ এবং জাহাজ রক্ষণাবেক্ষণ ও পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে হবে।
সীমাশুল্কের বিভিন্ন নিয়মকানুনের জটিলতা দূর করতে জয়েন্ট কাস্টমস কো-অপারেশন কমিটি নানাধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আসিয়ান-ভারত পণ্য সংক্রান্ত ব্যবসা-বাণিজ্যের চুক্তি প্রসার ঘটানো হবে। স্বাস্থ্য ও ওষুধ শিল্পে সহযোগিতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আয়ুর্বেদিক এবং চিরায়ত পদ্ধতিতে চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফিলিপিন্সের স্থানীয় উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য ভারত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আর্থিক অনুদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা :
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য যৌথভাবে গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্মতিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রকে শনাক্ত করে গবেষণামূলক প্রকল্প পরিচালিত হবে। এই মর্মে ভারত ও ফিলিপিন্সের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর ২০২৫ থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে। মহাকাশকে শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষাজগৎ, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, শিল্প সংস্থাগুলির ভূমিকাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য গবেষণার কাজে অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করা হবে। চালের উৎপাদন বৃদ্ধি, মৎস্য চাষ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণাকে উৎসাহিত করা হবে।
ভারত ও ফিলিপিন্সের মধ্যে আর্থিক, ডিজিটাল সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ই-গভর্ন্যান্স, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মতো ক্ষেত্রগুলিকে শক্তিশালী করা হবে। এছাড়াও সাইবার নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল ক্ষেত্রে পরিকাঠামো বৃদ্ধিকেও নিশ্চিত করা হয়েছে। বিভিন্ন বন্দরের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। উভয় নেতা ভবিষ্যতে দুদেশের রাজধানী শহরের মধ্যে সরাসরি উড়ান পরিষেবা চালু করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
দূতাবাসের মাধ্যমে সহযোগিতা :
দুদেশের জনসাধারণের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগের জন্য ফিলিপিন্সে ভারতীয় পর্যটকরা ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন। ভারতে ফিলিপিনোরা ই-টুরিস্ট ভিসায় আসতে পারবেন। উভয় নেতা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই মর্মে দুদেশের দূতাবাসগুলির মধ্যে নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
দুদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা গড়ে তুলতে ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আইনী সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তির জন্য আলোচনা শেষ হয়েছে। এছাড়াও দোষী সাব্যস্ত হওয়া অপরাধীদের বিনিময়ের জন্য দুটি দেশের মধ্যে চুক্তি সাক্ষরিত হবে।
সংস্কৃতি, পর্যটন এবং মানুষের মধ্যে যোগাযোগ :
সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির আওতায় দুদেশের নাগরিকদের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তোলা হবে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ কালচারাল রিলেশনস বিভিন্ন পাঠক্রমে বৃত্তি দেবে। পর্যটন সংস্থাগুলির মধ্যে সংলাপ গড়ে তুলতে পর্যটন সংক্রান্ত যৌথ কর্মীগোষ্ঠীর নিয়মিত বৈঠক হবে। এর ফলে, পর্যটন ও আতিথেয়তার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।
দুটি দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চিন্তন গোষ্ঠীর মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য ছাত্রছাত্রী ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা একে অন্যের দেশে যাওয়া আসা করবেন। ইন্ডিয়ান টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনোমিক কোঅপারেশন কর্মসূচীর আওতায় দুদেশের ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ও বহুপাক্ষিক সহয়োগিতা :
রাষ্ট্রসঙ্ঘ সহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক সংগঠনে দুটি দেশ একযোগে কাজ করবে। পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতাকে বৃদ্ধি করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে জঙ্গীবাদ মোকাবিলা, জলবায়ু পরিবর্তন, সুস্থায়ী উন্নয়নের মতো বিভিন্ন বিষয়। রাষ্ট্রসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের সম্প্রসারণ ও সংস্কারের মতো বিভিন্ন বিষয়ে দুটি দেশ একে অপরকে সহায়তা করবে।
সরবরাহশৃঙ্খলকে শক্তিশালী করা এবং নিজ নিজ দেশের আর্থিক উন্নয়নকে নিশ্চিত করার জন্য দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিভিন্ন মঞ্চে উভয় দেশ একযোগে কাজ করবে। এর মধ্য দিয়ে একটি অবাধ, স্বচ্ছ ও নিয়মভিত্তিক বাণিজ্যিক পরিবেশ গড়ে উঠবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সমস্যা সমাধানে সব থেকে ভালো প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য বিশ্বজুড়ে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেই ব্যবস্থাপনা দুটি দেশ একযোগে কাজ করবে। আন্তর্জাতিক সৌর জোট, কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার, গ্লোবাল-বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্স এবং লাইফ মিশনে উভয় দেশ একসঙ্গে কাজ করবে।
বোর্ড অফ ফান্ড ফর রেসপন্ডিং টু লস অ্যান্ড ড্যামেজ সংস্থাটির সদর দপ্তর ফিলিপিন্সে। এই পর্ষদের অধীনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে প্রসারিত করা হবে।
ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্সের মতো বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
১৯৮২ সালের রাষ্ট্রসঙ্ঘের সমুদ্রের আইনসংক্রান্ত কনভেনশন ইউএনসিএলওএস মেনে চলার ক্ষেত্রে দুটি রাষ্ট্রই তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। সমুদ্র পথের পরিবেশকে যথাযথ রাখার ক্ষেত্রে ইউএনসিএলওএস-কে মেনে চলা হবে।
দক্ষিণ চীন সাগরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে দুটি দেশ যে কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপের বিরোধীতা করেছে। কোনো বিবাদের নিষ্পত্তির জন্য শান্তিপূর্ণভাবে গঠনমূলক আলোচনার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত আলাপ আলোচনা চালাতে হবে। এক্ষেত্রে আসিয়ান-ভারত সর্বাঙ্গীন কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করা হবে। আসিয়ান জোটকে বিভিন্ন নীতি প্রণয়নের সময়ে অগ্রাধিকার দেওয়ায় এবং আসিয়ানের নেতৃত্বে বিভিন্ন সহযোগিতামূলক ব্যবস্থাপনাতে সক্রিয় অংশগ্রহণের বিষয়ে ভারতের ভূমিকার প্রশংসা করেছে ফিলিপিন্স।
আসিয়ান আউটলুক অন দ্য ইন্দো প্যাসিফিক (এওআইপি)-তে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য ভারত ও আসিয়ানের যৌথ বিবৃতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখা ও সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গড়ে তুলতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ভয়েজ অফ দ্য গ্লোবাল সাউথ সামিট (ভিওজিএসএস) সহ দক্ষিণী বিশ্বের বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ফোরামে দুটি দেশ সহযোগিতা বজায় রাখবে। ভিওজিএসএস-এর তিনটি বৈঠকে ফিলিপিন্সের সক্রিয় অংশগ্রহণকে ভারত স্বাগত জানিয়েছে।
১৯৫২ সালের ১১ জুলাই, ভারত ও ফিলিপিন্স সরকারের মধ্যে সৌহার্দ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির মূল বিষয়টিকে অবলম্বন করে দুটি দেশ কৌশলগত অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
SC/CB/SKD
(Release ID: 2153039)
Read this release in:
Malayalam
,
English
,
Urdu
,
Hindi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada