প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যৌথ প্রেস বিবৃতির সময়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস বিবৃতির বঙ্গানুবাদ

Posted On: 09 JUL 2025 12:54AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৯ জুলাই, ২০২৫

 

মাননীয়, আমার প্রিয় বন্ধু প্রেসিডেন্ট লুলা, 

দুই দেশের প্রতিনিধিরা, 

সংবাদমাধ্যমের বন্ধুরা

নমস্কার

“বোয়া টারডে”!

রিও এবং ব্রাসিলিয়ায় উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য আমি আমার বন্ধু, প্রেসিডেন্ট লুলাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আপনার সহৃদয়তা এবং আমাজনের সৌন্দর্য সত্যিই আমাদের মন ছুঁয়ে গেছে। 

আজ ব্রাজিলের প্রসিডেন্টের কাছ থেকে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ জাতীয় সম্মানলাভ শুধু আমার কাছেই নয়, ১৪০ কোটি ভারতবাসীর কাছেই অত্যন্ত গর্ব ও আবেগের মুহূর্ত। এই সম্মানের জন্য আমি আন্তরিকভাবে প্রেসিডেন্ট, ব্রাজিল সরকার এবং ব্রাজিলের মানুষকে ধন্যবাদ জানাই। 

বন্ধুরা,

আমার বন্ধু প্রেসিডেন্ট লুলা হলেন ভারত ও ব্রাজিলের কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রধান স্থপতি। আমাদের সম্পর্ক গভীর হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। 

তাঁর সঙ্গে প্রতিটি বৈঠকই আমাকে দুই দেশের অগ্রগতি ও কল্যাণের জন্য আরও কঠোর পরিশ্রম করার প্রেরণা জুগিয়েছে। ভারতের প্রতি তাঁর সুদৃঢ় অঙ্গীকার এবং আমাদের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের প্রতি আমি এই সম্মান উৎসর্গ করছি। 

বন্ধুরা,

আজকের আলোচনায় আমরা সমস্ত ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে সহমত হয়েছি। আগামী ৫ বছরের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে ২০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছি আমরা।

ভারতের মানুষ যেমন ক্রিকেট ভালোবাসেন, তেমনি ফুটবল হল ব্রাজিলের আবেগ। বল বাউন্ডারির ওপারে পাঠানো হোক অথবা গোলের মধ্যে, আমরা যখন একই টিমে রয়েছি তখন ২০ বিলিয়ন ডলারের অংশীদারিত্ব অর্জন করা কঠিন হবে না। ভারত-মারকোসার অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সম্প্রসারণের লক্ষ্যেও আমরা একযোগে কাজ করবো। 

বন্ধুরা,

শক্তি ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুই দেশই পরিবেশ ও দূষণমুক্ত জ্বালানীকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। এই ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য আজ যে চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে, তা দূষণমুক্ত জ্বালানীর ক্ষেত্রে আমাদের নতুন দিশা ও গতি দেবে। এই বছরের শেষের দিকে ব্রাজিল কপ-৩০ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করতে চলেছে, আমি এজন্য প্রেসিডেন্ট লুলাকে শুভেচ্ছা জানাই। 

বন্ধুরা,

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা দুই দেশের সুগভীর পারস্পরিক আস্থার প্রতিফলন। প্রতিরক্ষা শিল্পগুলিকে সংযুক্ত করতে এবং এই অংশীদারিত্ব আরও মজবুত করতে আমরা আমাদের প্রয়াস অব্যাহত রাখবো। 

কৃত্রিম মেধা ও সুপার কম্পিউটারের ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও মানবকেন্দ্রিক উদ্ভাবনের যে অভিন্ন ভাবনা আমাদের হাতে রয়েছে, এ তারই প্রতিফলন।

ব্রাজিলে ইউপিআই চালু করার বিষয়ে দুই দেশ একযোগে কাজ করছে। ডিজিটাল জনপরিকাঠামো ও মহাকাশের মতো ক্ষেত্রগুলিতে আমাদের সফল অভিজ্ঞতা আমরা সানন্দে ব্রাজিলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই।

কৃষি ও পশুপালন ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা কয়েক দশক ধরে চলে আসছে। আমরা এখন কৃষি গবেষণা ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো ক্ষেত্রেও একসঙ্গে কাজ করছি। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও আমাদের সহযোগিতা ক্রমশ বাড়ছে। ব্রাজিলে আয়ুর্বেদ এবং প্রথাগত ওষুধের প্রসারের ওপরেও আমরা জোর দিয়েছি। 

বন্ধুরা,

মানুষের সঙ্গে মানুষের সংযোগ আমাদের সম্পর্কের এক গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। দুই দেশেই খেলাধূলার প্রতি যে আবেগ রয়েছে, তা আমাদের একই যোগসূত্রে বেঁধেছে। 

আমরা চাই ভারত-ব্রাজিল সম্পর্ক কার্নিভালের মতো প্রাণবন্ত, ফুটবলের মতো আবেগপূর্ণ এবং সাম্বার মতো হৃদয়ছোঁয়া হয়ে উঠুক- কিন্তু এজন্য ভিসা কাউন্টারে লম্বা লাইন যেন না থাকে। এই ভাবনা থেকে আমরা দুই দেশের মানুষের মধ্যে, বিশেষ করে পর্যটক, পড়ুয়া, ক্রীড়াবিদ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আদান-প্রদান সহজ করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করবো। 

বন্ধুরা,

বিশ্বমঞ্চে ভারত ও ব্রাজিল বরাবরই ঘনিষ্ঠ সমন্বয় বজায় রেখে কাজ করেছে। দুটি প্রধান গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের সহযোগিতা শুধু উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্যই নয়, সমগ্র মানবিকতার ক্ষেত্রেই প্রাসঙ্গিক। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, উন্নয়নশীল দেশগুলির উদ্বেগ ও অগ্রাধিকারগুলিকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। 

আজ যখন সারা বিশ্ব উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তার এক সময়ের মধ্য দিয়ে চলেছে... আমার বন্ধু এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বলেছেন, আমি তাই এর পুনরাবৃত্তি করব না... ভারত-ব্রাজিল অংশীদারিত্ব, সুস্থিতি ও ভারসাম্যের এক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ সহমত যে, সমস্ত বিরোধের নিষ্পত্তি অবশ্যই সংলাপ ও কূটনীতির মধ্য দিয়েই করতে হবে। 

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী অভিন্ন - শূন্য সহনশীলতা এবং শূন্য দ্বিচারিতা। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে দ্বিচারিতার কোনও জায়গা নেই। সন্ত্রাসবাদ এবং যারা এর মদত যোগায়, আমরা উভয়েরই তীব্র বিরোধিতা করি। 

মাননীয়,

এই সর্বোচ্চ জাতীয় সম্মান এবং আপনাদের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের জন্য আরও একবার ১৪০ কোটি ভারতবাসীর পক্ষ থেকে আমি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি এই সুযোগে আপনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। 

ধন্যবাদ।

“মুইতো অব্রিগাডো”

 


SC/SD/NS…


(Release ID: 2143370)