স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ নতুন দিল্লিতে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দিয়েছেন

Posted On: 25 JUN 2025 7:59PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৫ জুন, ২০২৫ 

 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আজ নতুন দিল্লিতে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, দিল্লির উপ-রাজ্যপাল শ্রী বিনয় কুমার সাক্সেনা এবং মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী রেখা গুপ্তা সহ বিশিষ্ট জনেরা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রী শাহ তাঁর ভাষণে বলেন, জীবনে খারাপ অধ্যায়গুলিকে ভুলে যাওয়া উচিৎ। কিন্তু, যখন তার সঙ্গে সামাজিক ও জাতীয় জীবন জড়িয়ে যায়, সেই বিষয়গুলিকে ভুলে যাওয়া উচিৎ নয়। দেশের যুবসম্প্রদায় ও কিশোর-কিশোরীরা এগুলিকে স্মরণে রেখে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব না হয়, তার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। এই ভাবনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতি বছর ২৫ জুন ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই মর্মে প্রয়োজনীয় বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। জরুরি অবস্থার সময়ে গোটা দেশ কারাগারে পরিণত হয়েছিল। দেশের আত্মা বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়ে, আদালত বধির ও লেখকের কলম নিস্তব্ধ হয়ে যায়। এই বিষয়গুলি মনে রেখে আজকের এই দিনটি উদযাপন করা হচ্ছে। জরুরি অবস্থা সম্পর্কে জানার অর্থ ইতিহাসকে জানার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সতর্ক থাকার এক শিক্ষা।
শ্রী শাহ বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৪ জুন রাতে জরুরি অবস্থা জারি হয়। একনায়কতান্ত্রিক মানসিকতায় একটি অধ্যাদেশ কার্যকর করা হয়। ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর সহ অন্যান্য প্রণেতারা ২ লক্ষ ৬৬ হাজার শব্দের যে সংবিধান রচনা করেছিলেন, তা একটি মাত্র বাক্যের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করা হয়। তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের ভাবনাকে ধ্বংস করার উদ্দেশে বলেন – রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। এর আগে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল। ১৯৭৫ সালের ১২ জুন এলাহাবাদ হাইকোর্ট প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনকে বাতিল ঘোষণা করে এবং পরবর্তী ছয় বছরের জন্য তিনি কোনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না বলে রায় দেওয়া হয়। গোটা দেশ স্তম্ভিত হয়ে যায়। পরে অবশ্য, সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। ঐ একই দিনে গুজরাটে জনতা মোর্চা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও সফল হয়। এই দুটি ঘটনার কারণে ২৫ জুন জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হয়। এর কারণ হিসেবে জাতীয় নিরাপত্তা বলা হলেও সারা পৃথিবী জানত যে, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ে টানাপোড়েনই এই সঙ্কটের মূল কারণ। 
শ্রী শাহ বলেন, জয়প্রকাশ নারায়ণের স্লোগান “সম্পূর্ণ ক্রান্তি” সারা দেশকে উদ্বেলিত করে তুলেছিল। গুজরাটে যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল, তা বিহার পর্যন্ত পৌঁছয়। গুজরাটে সরকারের পতন হয়। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল পরাজিত হয়। সকল বিরোধী দল একত্রিত হয়ে জনতা পার্টির সরকার গঠন করে। তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী এর ফলে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। 
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, জরুরি অবস্থা জারি করে যে আদালতগুলি স্থগিতাদেশ দিয়েছিল, সেগুলি স্তব্ধ হয়ে যায়। সংবাদপত্র, এমনকি আকাশবাণীকেও নীরব করে দেওয়া হয়। প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার সমাজকর্মী ও রাজনৈতিক কর্মীকে কারারুদ্ধ করা হয়। কোনও এজেন্ডা ছাড়াই ভোর ৪টের সময় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয় এবং জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। পরবর্তীতে, শাহ কমিশন জরুরি অবস্থার বিষয়ে তদন্ত করার সময় জানায়, যেভাবে সকলকে আটকে রাখা হয় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়, তার মধ্য দিয়ে দেশ জুড়ে অভূতপূর্ব এক ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সংবাদপত্রের দপ্তরগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২৫০ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৯ জন বিদেশি সাংবাদিককে দেশ থেকে বহিষ্কৃত করা হয়। বিভিন্ন সংবাদপত্র জরুরি অবস্থা জারির প্রতিবাদে তাঁদের সম্পাদকীয় ফাঁকা রেখে দেয়। এর মধ্যে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এবং জনসত্ত্বা উল্লেখযোগ্য। এই সংবাদপত্রগুলির বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়, সংসদীয় কাজকর্মের উপর সেন্সর জারি করা হয়, বিচার ব্যবস্থাকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয় এবং দেশ জুড়ে গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করা হয়। 
শ্রী শাহ বলেন, যেসব বিচারপতি সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিলেন, তাঁরা যাতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি না হতে পারেন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। গায়ক কিশোর কুমার এবং অভিনেতা মনোজ কুমারের চলচ্চিত্রগুলিকে নিষিদ্ধ করা হয়। দূরদর্শনে অভিনেতা দেব আনন্দের সিনেমা দেখানো বন্ধ করা হয়। আঁধি এবং কিসসা কুরশি কা চলচ্চিত্র দুটি নিষিদ্ধ করা হয়। শ্রী শাহ বলেন, জরুরি অবস্থার পর, যখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তখন প্রথমবারের মতো দেশে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে একটি অ-কংগ্রেসী সরকার গঠিত হয়। জরুরি অবস্থার সময় এমন একটি আবহ তৈরি করা হয়, যেখানে দেশের থেকে দল বড় হয়ে ওঠে, দলের থেকে পরিবার বড় হয়ে ওঠে, পরিবারের থেকে ব্যক্তি বড় হয়ে ওঠেন এবং সর্বোপরি জাতীয় স্বার্থের থেকে ক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সেদিনের সেই পরিস্থিতির ঠিক বিপরীতে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর “দেশ প্রথম” ভাবনায় অনুরণিত হয়েছেন দেশবাসী। এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে, গণতন্ত্রের সেইসব সৈনিকদের কারণে, যাঁরা ১৯ মাস কারাবন্দী ছিলেন। আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ১৪০ কোটি ভারতবাসী ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশকে প্রথম স্থানে উন্নীত করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন এবং সেই লক্ষ্যপূরণে এগিয়ে চলেছেন। 

 

SC/CB/SB…


(Release ID: 2139816)