প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
                
                
                
                
                
                    
                    
                        রাইজিং নর্থ ইস্ট ইনভেস্টরস সামিটে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ
                    
                    
                        
                    
                
                
                    Posted On:
                23 MAY 2025 2:03PM by PIB Kolkata
                
                
                
                
                
                
                নয়াদিল্লি: ২৩ মে ২০২৫ 
 
আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহকর্মী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া জি এবং সুকান্ত মজুমদার জি, মণিপুরের গভর্নর অজয় ভাল্লা জি, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জি, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু জি, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা জি, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সিংমা সিংহ, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাঙ জি, নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও জি, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা জি, উপস্থিত সমস্ত শিল্পোদ্যোগের নেতাগণ, বিনিয়োগকারী, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ!
আজ, যখন আমি রাইজিং নর্থইস্টের এই বিশাল মঞ্চে রয়েছি, তখন আমার হৃদয়ে গর্ব, আত্মীয়তা, আপনত্বেরর অনুভূতি জাগছে, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ভবিষ্যতের প্রতি দৃঢ় হচ্ছে অগাধ বিশ্বাস। মাত্র কয়েক মাস আগে, আমরা ভারত মণ্ডপে অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসব উদযাপন করেছি, আজ আমরা উত্তর-পূর্বে বিনিয়োগ উদযাপন করছি। এত বিপুল সংখ্যক শিল্পোদ্যোগের নেতা এখানে এসেছেন। এর থেকে বোঝা যায় যে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য সকলেই উৎসাহী, উত্তেজিত এবং নতুন স্বপ্ন দেখছে। এই কাজের জন্য আমি সমস্ত মন্ত্রক এবং সমস্ত রাজ্য সরকারকে অভিনন্দন জানাই। আপনাদের প্রচেষ্টার ফলে এই এলাকায় বিনিয়োগের জন্য একটি চমৎকার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আমার পক্ষ থেকে, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে, আমি আপনাদের সকলকে নর্থ ইস্ট রাইজিং সামিটের সাফল্যের জন্য শুভকামনা জানাই।
বন্ধুগণ,
ভারতকে বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় জাতি বলা হয়, এবং আমাদের উত্তর-পূর্ব এই বৈচিত্র্যময় জাতিটির সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় অংশ। বাণিজ্য থেকে ঐতিহ্য, বস্ত্র থেকে পর্যটন, উত্তর-পূর্বের বৈচিত্র্যই এর সবচেয়ে বড় শক্তি। উত্তর-পূর্ব মানে জৈব অর্থনীতি এবং বাঁশ, উত্তর-পূর্ব মানে চা উৎপাদন এবং পেট্রোলিয়াম, উত্তর-পূর্ব মানে খেলাধুলা এবং দক্ষতা, উত্তর-পূর্ব মানে পরিবেশ-পর্যটনের উদীয়মান কেন্দ্র, উত্তর-পূর্ব মানে জৈব পণ্যের নতুন বিশ্ব, উত্তর-পূর্ব মানে শক্তির বিদ্যুৎ কেন্দ্র, তাই উত্তর-পূর্ব আমাদের কাছে 'অষ্টলক্ষ্মী'। 'অষ্টলক্ষ্মীর' এই আশীর্বাদে, উত্তর-পূর্বের প্রতিটি রাজ্য বলছে, আমরা বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত, আমরা নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত।
বন্ধুগণ,
উন্নত ভারত গড়তে হলে পূর্ব ভারতের উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর উত্তর-পূর্ব হল পূর্ব ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের কাছে, পূর্ব মানে শুধুই একটি দিকনির্দেশ নয়, আমাদের কাছে EAST মানে – এম্পাওয়ার বা ক্ষমতায়ন, অ্যাক্ট বা কাজ করা, স্ট্রেন্দেন বা শক্তিশালী করা এবং ট্রান্সফর্ম বা রূপান্তর করা। পূর্ব ভারতের জন্য এটি আমাদের সরকারের নীতি। এই নীতি, এই অগ্রাধিকার আজ পূর্ব ভারতকে, আমাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে।
বন্ধুগণ,
গত ১১ বছরে, উত্তর-পূর্বে যে পরিবর্তন এসেছে তা শুধুই পরিসংখ্যান নয়, এটি বাস্তবে অনুভূত হওয়া পরিবর্তন। আমরা কেবল পরিকল্পনার মাধ্যমে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলিনি, আমরা আমাদের হৃদয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছি। আমি আপনাদের যে পরিসংখ্যানটি বলছি, তা শুনে আপনারা অবাক হবেন, গত ১১ বছরে সাতশ বারেরও বেশি আমাদের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীরা উত্তর-পূর্বাঞ্চল সফর করেছেন। আর আমাদের এই নিয়ম ছিল না যে আমরা যাব এবং ফিরে আসব, রাত কাটানো বাধ্যতামূলক ছিল। এভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এই অঞ্চলের মাটিকে অনুভব করেছেন, মানুষের চোখে আশা দেখেছেন এবং সেই আস্থাকে একটি উন্নয়ন নীতিতে রূপান্তরিত করেছেন। আমরা পরিকাঠামো উন্নয়নকে কেবল ইট এবং সিমেন্টের নিরিখে দেখিনি; আমরা এটিকে আবেগযুক্ত সংযোগের মাধ্যম করে তুলেছি। আমরা "লুক ইস্ট"-এর বাইরে গিয়ে "অ্যাক্ট ইস্ট"-এর মন্ত্র অনুসরণ করেছি এবং আজ আমরা এর ফলাফল দেখতে পাচ্ছি। একটা সময় ছিল যখন উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে কেবল সীমান্ত অঞ্চল বলা হত। আজ এটি প্রবৃদ্ধির অগ্রদূত হয়ে উঠছে।
বন্ধুগণ,
ভালো পরিকাঠামো পর্যটনকে আকর্ষণীয় করে তোলে। যেখানে পরিকাঠামো ভালো, সেখানে বিনিয়োগকারীরাও আলাদা আস্থা পান। উন্নত রাস্তাঘাট, উন্নত বিদ্যুৎ পরিকাঠামো এবং লজিস্টিক নেটওয়ার্ক যেকোনও শিল্পের মেরুদণ্ড। বাণিজ্য তখনই বৃদ্ধি পায় যেখানে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ থাকে, অর্থাৎ উন্নত পরিকাঠামো প্রতিটি উন্নয়নের প্রথম শর্ত, এর ভিত্তি। এই কারণেই আমরা উত্তর-পূর্বে পরিকাঠামো বিপ্লব শুরু করেছি। উত্তর-পূর্বাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে দারিদ্র্যের মধ্যে ছিল। কিন্তু এখন, উত্তর-পূর্ব সুযোগের ভূমিতে পরিণত হচ্ছে। আমরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যোগাযোগ পরিকাঠামোর জন্য লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করেছি। আপনি যদি অরুণাচল যান, তাহলে সেলা টানেলের মতো পরিকাঠামো পাবেন। আপনি যদি আসামে যান, তাহলে ভূপেন হাজারিকা সেতুর মতো অনেক মেগা প্রকল্প দেখতে পাবেন। মাত্র এক দশকে, উত্তর-পূর্বে ১১ হাজার কিলোমিটার নতুন মহাসড়ক নির্মিত হয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শত শত কিলোমিটার নতুন রেলপথ স্থাপন করা হয়েছে, বিমানবন্দরের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও বরাক নদীর উপর জলপথ তৈরি করা হচ্ছে। শত শত মোবাইল টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে, এবং শুধু তাই নয়, ১৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ উত্তর-পূর্ব গ্যাস গ্রিড পাইপলাইনও নির্মিত হয়েছে। এটি শিল্পকে প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে। অর্থাৎ, মহাসড়ক, রেলপথ, জলপথ, আইওয়ের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বের যোগাযোগ ব্যবস্থা সব দিক থেকেই শক্তিশালী হচ্ছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভূমি প্রস্তুত করা হয়েছে, আমাদের শিল্পগুলির এগিয়ে আসা উচিত এবং এই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করা উচিত। আপনাদের ‘ফার্স্ট মুভার অ্যাডভান্টেজ’ হাতছাড়া করা উচিত না।
বন্ধুগণ,
আগামী দশকে উত্তর-পূর্বের বাণিজ্য সম্ভাবনা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে ভারত এবং আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১২৫ বিলিয়ন ডলার। আগামী বছরগুলিতে তা ২০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। উত্তর-পূর্ব এই বাণিজ্যের জন্য একটি শক্তিশালী সেতু হয়ে উঠবে এবং আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির জন্য বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে। আর সেজন্যই আমরা প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ দ্রুত শেষ করছি। ভারত-মায়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিদেশীয় মহাসড়ক মায়ানমার হয়ে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে। এর ফলে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, লাওসের মতো দেশের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ আরও সহজ হবে। আমাদের সরকার কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট প্রকল্প দ্রুত সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রকল্পটি কলকাতা বন্দরকে মায়ানমারের সিত্তে বন্দরের সঙ্গে এবং মিজোরামের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বের বাকি অংশের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গ এবং মিজোরামের মধ্যে দূরত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। এটি শিল্প ও বাণিজ্যের জন্যও এক বিরাট আশীর্বাদ হিসেবে প্রমাণিত হবে।
বন্ধুগণ,
আজ, গুয়াহাটি, ইম্ফল, আগরতলার মতো শহরগুলিকেও মাল্টি-মোডাল লজিস্টিক হাব হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। মেঘালয় এবং মিজোরামের ল্যান্ড কাস্টম স্টেশনগুলি এখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নতুন সম্প্রসারণ ঘটাচ্ছে। এই সমস্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে, উত্তর-পূর্ব ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলিতে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন নাম হয়ে উঠতে চলেছে। এর অর্থ হল উত্তর-পূর্বে আপনার জন্য সম্ভাবনার এক নতুন আকাশ উন্মোচিত হতে চলেছে।
বন্ধুগণ,
আজ আমরা ভারতকে একটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা সমাধান প্রদানকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করছি। আমরা "হিল ইন ইন্ডিয়া, ভারতে সুস্থ হও" মন্ত্রটিকে একটি আন্তর্জাতিক মন্ত্রে পরিণত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রকৃতি জৈব বৈচিত্রে সমৃদ্ধ এবং জৈব জীবনযাত্রার জন্য একটি নিখুঁত গন্তব্য। এখানকার জীববৈচিত্র্য, এখানকার জলবায়ু, সুস্থতার জন্য ওষুধের মতো চমৎকার। তাই, হিল ইন ইন্ডিয়ার মিশনে বিনিয়োগ করতে, আমার মনে হয় আপনাদের গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চল ঘুরে দেখতে হবে।
বন্ধুগণ,
উত্তর-পূর্বের সংস্কৃতি নিজেই সঙ্গীত, নৃত্য এবং উদযাপনে পরিপূর্ণ। অতএব, নানা আন্তর্জাতিক সম্মেলন, কনসার্ট, অথবা ‘ডেসটিনেশন ওয়েডিংস’ যে অনুষ্ঠানই হোক না কেন, উত্তর-পূর্ব এগুলির জন্যও সেরা জায়গা। এক অর্থে, উত্তর-পূর্ব পর্যটনের জন্য একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ। এখন উন্নয়নের সুফল উত্তর-পূর্বের প্রতিটি কোণে পৌঁছে যাচ্ছে এবং পর্যটনের উপরও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই অঞ্চলে পর্যটকের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। আর এগুলো শুধুই পরিসংখ্যান নয়, এর ফলে, প্রতিটি গ্রামে হোমস্টে তৈরি হচ্ছে, এবং তরুণরা গাইড হিসেবে নতুন সুযোগ পাচ্ছে। ভ্রমণ এবং ভ্রমণের সমগ্র বাস্তুতন্ত্র বিকশিত হচ্ছে। এখন আমাদের এটিকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। ইকো-ট্যুরিজম, সাংস্কৃতিক-ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে আপনাদের সকলের জন্য অনেক নতুন নতুন বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
বন্ধুরা,
যে কোনও এলাকার উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শান্তি, আইন-শৃঙ্খলা। সন্ত্রাসবাদী বা মাওবাদীরা যেখানেই অশান্তি ছড়াচ্ছে, আমাদের সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করচে। একটা সময় ছিল যখন উত্তর-পূর্বাঞ্চল বোমা, বন্দুক এবং অবরোধের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত ছিল; যে মুহূর্তে আমরা উত্তর-পূর্বের কথা ভাবতাম, বোমা, বন্দুক এবং অবরোধের কথাই আমাদের মনে আসতো। এর ফলে এখানকার যুবকদের বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল। তাঁরা অসংখ্য সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। আমাদের লক্ষ্য উত্তর-পূর্বের যুবসমাজের ভবিষ্যত উন্নত করা। সেজন্যেই আমরা একের পর এক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি, যার ফলে যুবসমাজ উন্নয়নের মূলধারায় আসার সুযোগ পেয়েছে। গত ১০-১১ বছরে ১০ হাজারেরও বেশি যুবক অস্ত্র ত্যাগ করে শান্তির পথ বেছে নিয়েছে, ১০ হাজার যুবক। আজ, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যুবসমাজ তাদের নিজস্ব অঞ্চলে কর্মসংস্থান এবং স্ব-কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ পাচ্ছে। মুদ্রা যোজনা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীকে হাজার হাজার কোটি টাকা সাহায্য করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা উত্তর-পূর্বের যুবকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। আজ, আমাদের উত্তর-পূর্বের যুবসমাজ শুধুই ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নয়, বরং ডিজিটাল উদ্ভাবক হয়ে উঠছে। ১৩ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি অপটিক্যাল ফাইবার, ৪জি, ৫জি কভারেজ, প্রযুক্তিতে উদীয়মান সম্ভাবনার কারণে উত্তর-পূর্বের যুবসমাজ এখন তাদের নিজস্ব শহরে বড় বড় স্টার্টআপ শুরু করছে। উত্তর-পূর্ব ভারত আজ দেশের ডিজিটাল প্রবেশদ্বার হয়ে উঠছে।
বন্ধুগণ,
আমরা সকলেই জানি যে প্রবৃদ্ধি এবং উন্নত ভবিষ্যতের জন্য দক্ষতার প্রয়োজনীয়তা কত বেশি। উত্তর-পূর্ব ভারত আপনাদের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশও প্রদান করছে। কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। গত দশকে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিক্ষা খাতে একুশ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে। প্রায় ৮৫০টি নতুন স্কুল নির্মিত হয়েছে। উত্তর-পূর্বের প্রথম ‘এইমস’ নির্মিত হয়েছে। ৯টি নতুন মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উত্তর-পূর্বে দুটি নতুন ট্রিপল আইটি নির্মিত হয়েছে। মিজোরামে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মাস কমিউনিকেশনের ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে প্রায় ২০০টি নতুন দক্ষতা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের প্রথম ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়ও উত্তর-পূর্বে নির্মিত হচ্ছে। ‘খেলো ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আওতায়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শত শত কোটি টাকার কাজ চলছে। শুধুমাত্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলেই ৮টি ‘খেলো ইন্ডিয়া সেন্টার অফ এক্সিলেন্স’ এবং ২৫০টিরও বেশি ‘খেলো ইন্ডিয়া সেন্টার’ নির্মিত হয়েছে। এর অর্থ হল এখন উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রের সেরা প্রতিভা উঠে আসবে। আপনাদের এর সদ্ব্যবহার করতে হবে।
বন্ধুগণ,
আজ, বিশ্বে জৈব খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে, সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রতি আগ্রহও বাড়ছে; আর আমার স্বপ্ন হল বিশ্বের প্রত্যেক খাবারের টেবিলে কোনও না কোনও ভারতীয় খাদ্যের ব্র্যান্ড যেন থাকে! এই স্বপ্নপূরণে উত্তর-পূর্বের ভূমিকা হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত দশকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জৈব চাষের পরিধি দ্বিগুণ হয়েছে। আমাদের এখানকার চা, পাইন আপেল, কমলা, লেবু, হলুদ, আদা এবং এরকম আরও অনেক কিছু, এর স্বাদ এবং গুণমান সত্যিই অসাধারণ। বিশ্বে এগুলির চাহিদা বাড়ছে। এই চাহিদার বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও আপনাদের জন্য সম্ভাবনা রয়েছে।
বন্ধুগণ,
সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিভিন্ন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট স্থাপন সহজতর করার চেষ্টা করছে। উন্নত সংযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠায় নিশ্চিতভাবেই এক্ষেত্রে সুবিধা হচ্ছে, এর পাশাপাশি আমরা মেগা ফুড পার্ক তৈরি করছি, কোল্ড স্টোরেজ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করছি, পরীক্ষাগারের জন্য সুবিধা তৈরি করছি। সরকার অয়েল পাম মিশনও শুরু করেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মাটি এবং জলবায়ু পাম তেলের জন্য খুবই ভালো। এটি কৃষকদের জন্য আয়ের একটি খুব ভালো উৎস। এর ফলে ভারতের ভোজ্যতেল আমদানির উপর নির্ভরতাও কমে যাবে। পাম তেল চাষ আমাদের শিল্পোদ্যোগগুলির জন্যও একটি বড় সুযোগ।
বন্ধুগণ,
আমাদের উত্তর-পূর্ব আরও দুটি ক্ষেত্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হয়ে উঠছে। এই ক্ষেত্রগুলি হল - শক্তি এবং সেমিকন্ডাক্টর। জলবিদ্যুৎ হোক বা সৌরবিদ্যুৎ, সরকার উত্তর-পূর্বের প্রতিটি রাজ্যে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে। হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। আপনাদের কাছে শুধুই কারখানা এবং পরিকাঠামো ক্ষেতরে বিনিয়োগের সুযোগ নয়, বরং উৎপাদনের জন্যও অনেক সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। সৌর মডিউল, সৌরকোষ, স্টোরেজ বা গবেষণা যাই হোক না কেন, এসব ক্ষেত্রে সর্বাধিক বিনিয়োগ প্রয়োজন। এগুলি আমাদের ভবিষ্যৎ, আজ আমরা যত বেশি ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করব, বিদেশী দেশগুলির উপর আমাদের নির্ভরতা তত কমবে। আজ, দেশের সেমিকন্ডাক্টর ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্ব এবং আসামের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। খুব শীঘ্রই দেশ উত্তর-পূর্বের সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট থেকে তার প্রথম ‘মেড ইন ইন্ডিয়া চিপ’ পেতে চলেছে। এই প্ল্যান্টটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্র এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য সুযোগের দ্বার খুলে দিয়েছে।
বন্ধুগণ,
‘রাইজিং নর্থ ইস্ট’ শুধুই একটি বিনিয়োগকারী শীর্ষ সম্মেলন নয়, এটি একটি আন্দোলন। এটি কর্মের জন্য একটি আহ্বান; উত্তর-পূর্বের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সঙ্গেই ভারতের ভবিষ্যৎ নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। আপনাদের সকল ব্যবসায়ী নেতাদের উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আসুন আমরা একত্রিত হই এবং ভারতের অষ্টলক্ষ্মীকে উন্নত ভারতের অনুপ্রেরণা হিসেবে গড়ে তুলি। আর আমার পূর্ণ বিশ্বাস যে আজকের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং আপনাদের সকলের যোগদান, আপনাদের উৎসাহ, আপনাদের অঙ্গীকার, আশাকে আত্মবিশ্বাসে রূপান্তরিত করছে, এবং আমি নিশ্চিত যে যখন আমরা দ্বিতীয় রাইজিং সামিট আয়োজন করব, তখন আমরা অনেক এগিয়ে যাব। আপনাদেরকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
অনেক অনেক ধন্যবাদ !
 
SC/SB
                
                
                
                
                
                (Release ID: 2130992)
                Visitor Counter : 2
                
                
                
                    
                
                
                    
                
                Read this release in: 
                
                        
                        
                            Odia 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            Tamil 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            English 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            Urdu 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            हिन्दी 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            Marathi 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            Manipuri 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            Assamese 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            Punjabi 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            Gujarati 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            Telugu 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            Kannada 
                    
                        ,
                    
                        
                        
                            Malayalam