প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী মহারাষ্ট্রের শিরডিতে প্রায় ৭,৫০০ কোটি টাকার একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন

Posted On: 26 OCT 2023 5:23PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৬ অক্টোবর, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরের শিরডিতে স্বাস্থ্য, রেল, সড়ক, তেল ও গ্যাসের মতো ক্ষেত্রগুলির জন্য প্রায় ৭,৫০০ কোটি টাকা মূল্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে - আহমেদনগর সিভিল হাসপাতালের আয়ুষ হাসপাতাল; কুড্ডুওয়াডি-লাটুর রোড শাখায় বৈদ্যুতিকীকরণ (১৮৬ কিমি); জলগাঁও থেকে ভুসাওয়াল (২৪.৪৬ কিমি) সংযোগকারী তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন; সাংলি থেকে বরগাঁও শাখার ১৬৬ নং জাতীয় সড়কের ফোর লেনিং এবং ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেডের মানমাদ টার্মিনালে অতিরিক্ত সুবিধা।তিনি আহমেদনগর সিভিল হাসপাতালে প্রসূতি ও শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের শিলান্যাসও করেছেন। শ্রী মোদী আয়ুষ্মান কার্ড এবং স্বামীত্ব কার্ড বিতরণ করেছেন।

অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে শ্রী মোদী শিরডিতে নতুন দর্শন পংক্তি প্রাঙ্গণের উদ্বোধন করেছেন, নীলওয়ান্দে বাঁধের বামতীরের (৮৫ কিলোমিটার) দীর্ঘ ক্যানেল নেটওয়ার্ক জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন এবং ৮৬ লক্ষের বেশি কৃষকদের উপকারের জন্য ‘নমো সেতকারী মহাসন্মান নিধি যোজনা’র সূচনা করেছেন।

এর আগে শ্রী মোদী শিরডিতে শ্রী সাইঁবাবা সমাধি মন্দিরে পূজা এবং দর্শন করেন। নীলওয়ান্দে বাঁধের জল পুজো করেন।

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭,৫০০ কোটি টাকার প্রকল্পের আজ উদ্বোধন করা হচ্ছে এবং শিলান্যাস করা হচ্ছে সাইঁবাবার আশীর্বাদ নিয়ে। নীলওয়ান্দে বাঁধের উল্লেখ করেন তিনি যা গত পাঁচ দশক ধরে বকেয়া ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কাজের আজ উদ্বোধন হল। তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জল পূজনের সুযোগ লাভ করে। শ্রী সাইঁবাবা সমাধি মন্দিরে দর্শন পংক্তি প্রাঙ্গণ বিষয়ে শ্রী মোদী জানান, ২০১৮-র অক্টোবরে এর শিলান্যাস করা হয়েছিল। এর ফলে, ভারত এবং বিদেশ থেকে আগত তীর্থযাত্রীদের সুবিধা আরও বৃদ্ধি পাবে।

প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে লালকারি সম্প্রদায়ের বাবা মহারাজ সাতারকারের প্রয়াণের উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বাবা মহারাজের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন ও কীর্তন এবং প্রবচনের মাধ্যমে তাঁর সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়াসের কথা বলেন যা আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

প্রধানমন্ত্রী সরকারের ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর উল্লেখ করে বলেন, সামাজিক ন্যায়ের প্রকৃত অর্থ হল দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা এবং যেখানে দরিদ্র মানুষ প্রভূত সুযোগপ্রাপ্ত হবেন। তিনি বলেন যে দরিদ্রদের কল্যাণ ডবল ইঞ্জিন সরকারের কাছে সর্বাধিক গুরুত্ব পায়। তিনি জানান, এর জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে যেহেতু দেশের অর্থনীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহারাষ্ট্রে ১ কোটি ১০ লক্ষ আয়ুষ্মান কার্ড বিতরণের তিনি উল্লেখ করেন যেখানে মানুষ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা পাবেন। এর জন্য সরকার ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ করছেন। তিনি আরও জানান, দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার জন্য সরকার ৪ লক্ষ কোটি টাকার বেশি খরচ করছে। দরিদ্র মানুষের জন্য পাকা বাড়ি তৈরি করছে। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, ২০১৪-র আগে যত খরচ করা হয়েছিল, তার থেকে এই খরচের পরিমাণ ছ’গুণ বেশি। দরিদ্র মানুষের বাড়িতে কলের জল সরবরাহ করতে সরকার ২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে। ‘পিএম-স্বনিধি’ কর্মসূচির অধীনে স্ট্রিট ভেন্ডাররা কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত সাহায্যপ্রাপ্ত হচ্ছেন বলে তিনি জানান। শ্রী মোদী নতুন উদ্বোধিত ‘পিএম বিশ্বকর্মা কর্মসূচি’র উল্লেখ করেন যেখানে লক্ষ লক্ষ সূত্রধর, স্বর্ণকার, কুম্ভকার এবং ভাস্করদের পরিবার সাহায্যপ্রাপ্ত হচ্ছে। এর জন্য সরকার খরচ করছে ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।

ক্ষুদ্র কৃষকদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পিএম কিষাণ সম্মান নিধি’র কথা যার অধীনে ক্ষুদ্র কৃষকরা ২ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা পেয়েছেন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রের ক্ষুদ্র কৃষকরা পেয়েছেন ২৬ হাজার কোটি টাকা। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, মহারাষ্ট্র সরকার ‘নমো সেতকারী মহাসম্মান নিধি যোজনা’ শুরু করেছে যার অধীনে মহারাষ্ট্র সেতকারী পরিবারগুলি অতিরিক্ত ৬ হাজার টাকা করে পাচ্ছে, যার অর্থ স্থানীয় ক্ষুদ্র কৃষকরা সম্মান নিধির ১২ হাজার টাকা পাবে। 

নীলওয়ান্দে প্রকল্পের ওপর আলোকপাত করেছেন তিনি যা অনুমোদিত হয়েছিল ১৯৭০-এ। বকেয়া ছিল পাঁচ দশক ধরে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই এর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, “যাঁরা কৃষকদের নামে ভোটের রাজনীতি করে, তাঁরা আপনাদের একফোঁটা জলের জন্য অপেক্ষা করিয়েছে। আর আজ জল পূজন করা হল এখানে।” তিনি বলেন, ডানতীরের খালটি খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করবে। তিনি ‘বলিরাজ জল সঞ্জীবনী যোজনা’র উল্লেখ করেছেন যা রাজ্যের খরা প্রবণ এলাকাগুলির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ হয়ে দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার মহারাষ্ট্রে আরও ২৬টি সেচ প্রকল্প সম্পূর্ণ করার কাজ করছে। এগুলি দশকের পর দশক ধরে বকেয়া ছিল। এর ফলে অঞ্চলের কৃষকদের সমহ উপকার হবে। 

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, সরকার কৃষকদের ক্ষমতায়নের জন্য দায়বদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী জানান,  সাত বছরে ১৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা মূল্যের খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হয়েছে এমএসপি-র অধীনে। সেইখানে পূর্বেকার সরকারের বর্ষীয়ান নেতার আমলে মাত্র ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকার খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা মূল্যের তৈলবীজ এবং ডাল সংগ্রহ করা হয়েছে ২০১৪-র পরে, যেখানে তার আগে মাত্র ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা মূল্যের সংগ্রহ করা হয়েছিল। প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের ফলে দুর্নীতি এবং অপচয় বন্ধ হয়েছে বলে তিনি জানান।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সাম্প্রতিক রবি শস্যের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির কথা বলতে গিয়ে শ্রী মোদী জানান, ছোলার এমএসপি ১০৫ টাকা এবং গম ও সূর্যমুখীর দাম ১৫০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আখের এমএসপি ক্যুইন্টালপ্রতি ৩১৫ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত ৯ বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ইথানল কেনা হয়েছে এবং সেই অর্থ ইক্ষু চাষীদের কাছে পৌঁছে গেছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, “ইক্ষু চাষীদের সময়মতো অর্থ প্রদান নিশ্চিত করতে চিনিকল এবং সমবায় সংস্থাগুলিকে হাজার হাজার কোটি টাকার সহায়তা দেওয়া হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সরকার সমবায় আন্দোলনকে শক্তিশালী করার কাজ করছে। ২ লক্ষের বেশি সমবায় সংস্থা স্থাপিত হয়েছে সারা দেশে।” গুদামজাতকরণের সুবিধা বৃদ্ধি করতে সমবায় সংস্থাগুলিকে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ক্ষুদ্র চাষীদের সংগঠিত করা হচ্ছে এফপিও-র মাধ্যমে। এর জন্য ৭,৫০০ এফপিও ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।

ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মহারাষ্ট্রের প্রভূত সম্ভাবনা আছে। যত দ্রুত মহারাষ্ট্র উন্নতি করবে, ভারত তত দ্রুত উন্নতি করবে।” প্রধানমন্ত্রী মোদী মুম্বাই এবং শিরডির মধ্যে বন্দে ভারত ট্রেন যাত্রার সূচনার উল্লেখ করেন এবং বলেন, মহারাষ্ট্রের রেল নেটওয়ার্ক নিয়মিত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, মুম্বাই-হাওড়া রেলপথে চলাচল সহজতর হবে জলগাঁও এবং ভুসাওয়ালের মধ্যে তৃতীয় এবং চতুর্থ লাইনের কাজ শুরু হওয়ায়। একইভাবে, সোলাপুর থেকে বরগাঁও চারলেনের সড়ক নির্মাণ হলে সমগ্র কোঙ্কন অঞ্চলে যোগাযোগ সহজতর হবে, শিল্পের উপকার তো হবেই, সেইসঙ্গে ইক্ষু, আঙুর এবং হলুদ চাষীদের উপকার হবে। সবশেষ তিনি বলেন, “এই যোগাযোগ পরিবহণের নতুন পথ তৈরি করবে তাই নয়, অগ্রগতি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন রাস্তা দেখাবে।”

মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী রমেশ বায়াস, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডে এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং শ্রী অজিত পাওয়ার সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।


PG/AP/DM



(Release ID: 1971720) Visitor Counter : 67