স্বাস্থ্যওপরিবারকল্যাণমন্ত্রক
মিথ্যা বনাম সত্য মৃতদেরও এবি পিএম-জেএওয়াই – এর আওতায় সুবিধা দেওয়া হচ্ছে – এ সংক্রান্ত সংবাদ ভিত্তিহীন
Posted On:
17 AUG 2023 4:18PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৭ অগাস্ট, ২০২৩
বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে যে, মৃত ব্যক্তিরও চিকিৎসা করা হয়েছে এবি পিএম-জেএওয়াই – এর আওতায়। এমন আপত্তি তুলেছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ক্যাগ)। রিপোর্টে এমনও দাবি করা হয়েছে যে, একই সুবিধাপ্রাপক একই সময় দুটি হাসপাতালেই চিকিৎসার সুবিধা নিয়েছেন। সংবাদ মাধ্যমের এই রিপোর্ট সম্পূর্ণ ভ্রান্তিমূলক এবং ভিত্তিহীন।
২০১৮’র সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ – এর মার্চে আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী – জন আরোগ্য যোজনা (এবি পিএম-জেএওয়াই) – এর পারফরম্যান্স অডিট – এর ফলাফল সম্বলিত কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে ২০২৩ – এর সংসদের বাদল অধিবেশনে।
সেখানে ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে যে, এবি পিএম-জেএওয়াই – এর আওতায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে তিনদিন পর্যন্ত পূর্ব সম্মতির জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া চালু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে হাসপাতালগুলিকে। সীমিত যোগাযোগ, জরুরি পরিস্থিতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে চিকিৎসা না পাওয়ার সমস্যা এড়াতেই এই বিশেষ ব্যবস্থা।
কয়েকটি ক্ষেত্রে রোগীদের ভর্তি করে নেওয়া হয় এবং তাঁদের প্রি-অথরাইজেশনের আগেই চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়। এইসব ক্ষেত্রে মৃত্যুর তারিখ এবং ভর্তির তারিখ এক হয় অথবা আগে হয়। এছাড়াও, যে হাসপাতালগুলি অথরাইজেশনের আবেদন বিবেচনা করে তারাই অনেক সময় মৃত্যুর খবরও জানায়। সেজন্য যদি কোনও হাসপাতালে জালিয়াতি করার ইচ্ছে থাকে, তা হলে তারা আইটি সিস্টেমে থাকা রোগীকে মৃত বলে ঘোষণা করতে আগ্রহ প্রকাশ করবে না।
এটা মনে রাখা দরকার যে, রিপোর্টে প্রকাশিত ৫০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালগুলি জড়িত। জালিয়াতি করে তাদের কোনও লাভ নেই। কারণ, অর্থ জমা পড়বে হাসপাতালের অ্যাকাউন্টেই। এছাড়া, চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যুর ক্ষেত্রে হাসপাতালগুলিকে বাধ্যতামূলকভাবে মৃত্যু সংক্রান্ত রিপোর্ট দাখিল করতে হয়।
এছাড়াও, আরও অনেক ঘটনা আছে, যেখানে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় বেসরকারি রোগী হিসেবে (যেখানে রোগী নিজের খরচ নিজেই বহন করেন)। কিন্তু পরে, এই যোজনার সন্ধান পেয়ে এবং এর আওতায় চিকিৎসা করার যোগ্যতা আছে দেখে রোগী হাসপাতালকে অনুরোধ করেন এই যোজনায় বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য। এর ফলে, অনেক সময় সুবিধা-প্রাপকদের ব্যক্তিগত খরচ সাশ্রয়ের জন্য পূর্বের তারিখে প্রি-অথরাইজেশনের অনুরোধ আসে।
একই রোগী একই সময়ে দুটি হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ নিচ্ছেন – এ ব্যাপারে বলতে হয় যে, এবি পিএম-জেএওয়াই – এর আওতায় ৫ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের চিকিৎসা হয় তাদের বাবা-মার আয়ুষ্মান কার্ডে। সেজন্য অনেক সময় আয়ুষ্মান কার্ড ব্যবহার হতে পারে দুটি হাসপাতালের একটিতে শিশুর চিকিৎসার জন্য এবং একটি বাবা অথবা মায়ের চিকিৎসার জন্য। উদাহরণ-স্বরূপ বলা যেতে পারে, মা-কে ভর্তি করা হয়েছে একটি হাসপাতালে এবং সেখানে তিনি একটি শিশু প্রসব করেছেন। সেই হাসপাতালে শিশুর চিকিৎসার জন্য নবজাত শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা নাও থাকতে পারে, তখন নবজাত শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে, এমন হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি ক্রতে হতে পারে। এই ক্ষেত্রে মায়ের আয়ুষ্মান কার্ডটি একই সঙ্গে ব্যবহার করা হয় শিশু ও মায়ের জন্য। আরও একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, বাবা ও শিশুর চিকিৎসা হতে পারে দুটি ভিন্ন হাসপাতালে বাবার আয়ুষ্মান কার্ড দিয়ে।
সাধারণত, মা ও শিশুর চিকিৎসা হয় মাত্র একটি আয়ুষ্মান কার্ড ব্যবহার করে এবং যদি শিশুটি চিকিৎসাকালীন মারা যায়, সেক্ষেত্রে হাসপাতাল শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করার পর সেটি ভুলক্রমে মায়ের কার্ডে নথিভুক্ত হয়ে যায়। এরপর, যখন মা পরবর্তী চিকিৎসার জন্য আসেন, তখন তাঁকে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করা হয় যেহেতু আয়ুষ্মান কার্ডে মৃত বলে উল্লেখ করা আছে। এই ধরনের ঘটনায় অভিযোগ ওঠে, তখন মায়ের কার্ড থেকে মৃত শব্দটি অপসারিত করা হয়।
এটা মনে রাখা জরুরি যে, এবি পিএম-জেএওয়াই – এর আওতায় দাবি নিষ্পত্তি করতে চার দফা কঠোর ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই হাসপাতালের দাবির যাথার্থ পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া, প্রয়োজনে পুনরায় পরীক্ষা করার বিভিন্ন পদ্ধতির অবলম্বন করা হয়। এই ধরনের ঘটনাগুলিকে সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হয়। যদি দেখা যায় কোনও হাসপাতাল জালিয়াতি বা অপব্যবহার করছে, তা হলে সেই দোষী হাসপাতালের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ক্যাগ দেখেছে যে, একটি মোবাইল নম্বর একাধিক সুবিধা-প্রাপকের সঙ্গে যুক্ত। তবে, এর কোনও প্রভাব পড়ে না। কারণ, আয়ুষ্মান ভারত পিএম-জেএওয়াই সুবিধা-প্রাপকদের চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে মোবাইল নম্বর যুক্ত নয়। মোবাইল নম্বরটি নেওয়া হয় শুধুমাত্র প্রয়োজনের সময় যোগাযোগ করার জন্য এবং অনেক সময় চিকিৎসা কেমন হয়েছে, সে সম্পর্কে জানতে।
আয়ুষ্মান ভারত পিএম-জেএওয়াই সুবিধা-প্রাপকদের চিহ্নিত করে আধার – এর মাধ্যমে। সেজন্য সুবিধা-প্রাপকদের বাধ্যতামূলকভাবে আধার-ভিত্তিক ই-কেওয়াইসি দাখিল করতে হয়। আধার – এর তথ্য ভান্ডার থেকে পাওয়া তথ্য বিবরণের সঙ্গে মূল তথ্য ভান্ডারের বিবরণী মিলিয়ে দেখা হয় এবং সেই মতো আয়ুষ্মান কার্ডের জন্য আবেদন অনুমোদন করা হয় বা নাকচ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় মধ্যে মোবাইল নম্বরের কোনও ভূমিকাই নেই।
এছাড়া, এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে, পিএম-জেএওয়াই যে সকল মানুষের জন্য (প্রান্তিক ৪০ শতাংশ) তাঁদের অনেকেরই মোবাইল নম্বর নেই বা মাঝে মধ্যেই তাঁদের মোবাইল নম্বরের পরিবর্তন হয়। সেই কারণে, সুবিধা-প্রাপকদের চিহ্নিতকরণের জন্য এনএইচএ আরও ৩টি অতিরিক্ত ব্যবস্থা রেখেছে, যেমন আঙুলের ছাপ, চোখের মণির স্ক্যান এবং মুখের মাধ্যমে পরিচিতি, সেইসঙ্গে ওটিপি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় আঙুলের ছাপ।
উপরোক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সুবিধা-প্রাপকের বৈধ মোবাইল নম্বর না থাকলে বা মোবাইল নম্বর পরিবর্তন হলে সেই কারণে তাঁর চিকিৎসা স্থগিত রাখা যায় না। সেজন্য এবি পিএম-জেএওয়াই – এর আওতায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে সুবিধা-প্রাপকদের মোবাইল নম্বরের ভূমিকা খুবই সীমিত। এছাড়া, আরও একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, পিএম-জেএওয়াই যোগ্যতা-ভিত্তিক যোজনা এবং নথি-ভিত্তিক যোজনা নয়। সেজন্য সুবিধা-প্রাপকদের তথ্য ভান্ডার স্থায়ী। সেটিকে সম্পাদনা করে নতুন সুবিধা-প্রাপক যুক্ত করা যায় না। সেজন্য সুবিধা-প্রাপকদের যোগ্যতা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে মোবাইল নম্বরের কোনও ভূমিকা নেই। তাই বলা যেতে পারে, সুবিধা-প্রাপকরা মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে চিকিৎসা পেতে পারেন – এই ধারণা ভ্রান্ত।
একাধিক সুবিধা-প্রাপকদের একই মোবাইল নম্বর ব্যবহারের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, সুবিধা-প্রাপকদের চিহ্নিতকরণের জন্য মোবাইল নম্বর বাধ্যতামূলক নয়। তবে, যেহেতু মোবাইল নম্বর নেওয়ার ব্যবস্থা আছে, তা হলে এটা সম্ভব হতে পারে যে, এই যোজনা রূপায়ণের গোড়ার দিকে অনেক ক্ষেত্রে তৃণমূল স্তরের কর্মীরা যেমন-তেমনভাবে ১০টি সংখ্যা লিখেছিলেন। প্রাথমিকভাবে ওটিপি-র ভিত্তিতে চিহ্নিতকরণ সম্ভব হয়নি, কারণ অনেক সুবিধা-প্রাপকই মোবাইল আনেননি বা তাঁরা আত্মীয় বা প্রতিবেশীর মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেছিলেন। তবে, মোবাইল নম্বরের ফলে সুবিধা-প্রাপকদের চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়া বা যোগ্যতা পরিমাপে কোনও হেরফের ঘটেনি।
পরে, প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা হয়েছে এনএইচএ – এর বর্তমান আইটি পোর্টালে। সেখানে শুধুমাত্র বৈধ মোবাইল নম্বরই নেওয়া হয়েছে, যদি তা সুবিধা-প্রাপকদেরই হয়।
ন্যাশনাল হেলথ অথরিটি এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক ক্যাগের সুপারিশগুলি বিশদভাবে খতিয়ে দেখছে এবং এই ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে এবং চলতি আইটি প্ল্যাটফর্ম ও প্রক্রিয়াকে জোরদার করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
AC/AP/SB
(Release ID: 1949933)
Visitor Counter : 148
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Tamil
,
Telugu
,
Malayalam