প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরে গীতা প্রেসের শতবর্ষ উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
Posted On:
07 JUL 2023 6:27PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ৭ জুলাই, ২০২৩
श्री हरिः। वसुदेव सुतं देवं, कंस चाणूर-मर्दनम्।
देवकी परमानन्दं, कृष्णं वंदे जगद्गुरुम्॥
উত্তরপ্রদেশের মাননীয় রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ, গীতা প্রেসের শ্রী কেশোরাম আগরওয়াল, শ্রী বিষ্ণু প্রসাদ, সাংসদ রবি কিষাণ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ!
পরিত্র শ্রাবণ মাস, ভগবান ইন্দ্রের আশীর্বাদ, ভগবান শিবের অবতার গুরু গোরখনাথের আবাস এবং অসংখ্য মহাত্মার বাসভূমি – এই হল গীতা প্রেস, গোরখপুর! মহাত্মাদের আশীর্বাদ যখন আকার ধারণ করে, তখন আমরা এমন আনন্দ অনুষ্ঠানের সাক্ষী হই। আমার এবারের গোরখপুর সফর ‘বিকাশ ভি, বিরাসাত ভি’ নীতির এক অসাধারণ নিদর্শন। সচিত্র শিব পুরাণ এবং নেপালি ভাষায় শিব পুরাণ প্রকাশের সৌভাগ্য আমার হয়েছে। গীতা প্রেসের এই অনুষ্ঠানের পরে আমি গোরখপুর রেল স্টেশনে যাবো।
গোরখপুর রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণের কাজ আজ শুরু হচ্ছে। যবে থেকে আমি এর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছি, তখন থেকে বহু মানুষ তা দেখে চমৎকৃত হয়েছেন। রেল স্টেশনের যে এমন রূপান্তর হতে পারে, লোকে তা কখনো কল্পনাও করেনি। একই অনুষ্ঠানে আমি গোরখপুর থেকে লক্ষ্ণৌ বন্দে ভারত এবং যোধপুর ও আমেদাবাদের মধ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করব। বন্দে ভারত দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের কাছে আরাম ও সুবিধার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। একটা সময় ছিল যখন রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের কেন্দ্রে কোনো ট্রেনের স্টপেজ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখতেন। আজ সারা দেশের নেতারা তাঁদের কেন্দ্র থেকে বন্দে ভারত চালু করার জন্য আমাকে চিঠি লেখেন। বন্দে ভারত আজ এক উন্মাদনায় পরিণত হয়েছে। এই সবকিছুর জন্য আমি গোরখপুরের মানুষ এবং আমাদের দেশের জনসাধারণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুরা,
গীতা প্রেস বিশ্বের একমাত্র প্রিন্টিং প্রেস, যা শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এক জীবন্ত বিশ্বাস। লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে গীতা প্রেসের কার্যালয় মন্দিরের থেকে কম নয়। নামে যেমন, কাজেও তেমনি এটি ভাগবত গীতার সারমর্মকে বহন করে চলেছে। গীতা যেখানে আছে, সেখানে কৃষ্ণও তো থাকবেন। আর কৃষ্ণ যেখানে সেখানেই করুণা ও কর্ম। সেখানে জ্ঞানের জাগরণ ও বিজ্ঞানের গবেষণা। গীতার শ্লোক বলছে, ‘বাসুদেবঃ সর্বম্’ – সবকিছুই বাসুদেব। বাসুদেবের থেকেই সব কিছু, বাসুদেবের মধ্যেই সবকিছু।
ভাই ও বোনেরা,
১৯২৩ সালে গীতা প্রেসের মাধ্যমে এখানে যে আধ্যাত্মিক আলো জ্বলেছিল, আজও তা সমগ্র মানব সভ্যতাকে পথ দেখাচ্ছে। আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা এই মানবিক মিশনের শতবর্ষ উদযাপনের সাক্ষী হতে পারছি। এই ঐতিহাসিক উপলক্ষ্যে আমাদের সরকার গীতা প্রেসকে গান্ধী শান্তি পুরস্কারে সম্মানিত করেছে। গীতা প্রেসের সঙ্গে গান্ধীজির গভীর মানসিক সংযোগ ছিল। একসময় গান্ধীজি কল্যাণ পত্রিকার মাধ্যমে গীতা প্রেসের জন্য লিখতেন। আমি জেনেছি যে গান্ধীজি কল্যাণ পত্রিকায় কোনো বিজ্ঞাপন নিতে নিষেধ করেছিলেন। আজও কল্যাণ পত্রিকা গান্ধীজির উপদেশ মেনে চলে। গীতা প্রেস এই পুরস্কার পাওয়ায় আমি খুব খুশী। এটা জাতির পক্ষ থেকে গীতা প্রেসকে সম্মান জ্ঞাপন, তার অবদানের স্বীকৃতি এবং তার ১০০ বছরের উত্তরাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা। এই ১০০ বছরে গীতা প্রেস কোটি কোটি বই ছেপেছে। কেউ বলেন ৭০ কোটি, কেউ ৮০ কোটি, কেউ বা ৯০ কোটি! এই সংখ্যাটা চমকে দেওয়ার মতন। এই বইগুলি তাদের খরচের চেয়েও কম দামে বিক্রি করা হয়, ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। জ্ঞানের এই আধ্যাত্মিক ও বৌদ্ধিক প্রবাহ থেকে কত মানুষ যে নিজেদের গড়ে তুলেছেন তা বলাই বাহুল্য। কোনো প্রচার ছাড়া নিঃস্বার্থভাবে যাঁরা এই প্রয়াসকে সমর্থন জুগিয়ে গেছেন, আমি তাঁদের অভিনন্দন জানাই। শ্রদ্ধা জানাই শেঠ জয়দয়াল গোয়েঙ্কা এবং ভাইজি হনুমান প্রসাদ পোদ্দারের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের।
বন্ধুরা,
গীতা প্রেসের মতো একটি প্রতিষ্ঠান শুধু ধর্ম ও কর্মের সঙ্গেই যুক্ত নয়, এর একটি জাতীয় চরিত্রও রয়েছে। গীতা প্রেস ভারতকে সংযুক্ত করে, ভারতের ঐক্যকে শক্তিশালী করে। সারা দেশে এর ২০টি শাখা রয়েছে। দেশের প্রতিটি কোণে রেল স্টেশনে আমরা গীতা প্রেসের স্টল দেখতে পাই। ১৫টি বিভিন্ন ভাষায় গীতা প্রেসের প্রকাশনার সংখ্যা ১ হাজার ৬০০। গীতা প্রেস ভারতের মূল্যবোধকে বিভিন্ন ভাষায় সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। একদিক থেকে দেখলে, গীতা প্রেস ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর চেতনার প্রতিনিধিত্ব করে।
বন্ধুরা,
গীতা প্রেস এমন এক সময়ে তার শতবর্ষ পূর্ণ করেছে, যখন দেশ তার স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করছে। এমন সমন্বয় নিছক কাকতালীয় নয়। ১৯৪৭ সালের আগে, ভারত নবজাগরণের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবিরাম প্রয়াস চালিয়েছে। সেই সময় ভারতের আত্মাকে জাগ্রত করতে বহু প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়। এর ফলে ১৯৪৭ সালে ভারত তার মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক দাসত্বের শৃঙ্খল ভাঙতে পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে গীতা প্রেসের প্রতিষ্ঠা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। ১০০ বছর আগে, বহু শতাব্দীর পরাধীনতা ভারতের চেতনাকে আবৃত করে রেখেছিল। আপনারা জানেন, শত শত বছর আগে বিদেশী হানাদাররা আমাদের পাঠাগার পুড়িয়ে দিয়েছিল। ব্রিটিশ আমলে গুরুকুল ও গুরু ঐতিহ্য প্রায় ধ্বংস হতে বসেছিল। এমন পরিস্থিতিতে জ্ঞান ও ঐতিহ্য প্রায় বিলুপ্ত হওয়াই স্বাভাবিক ছিল। আমাদের ধর্মগ্রন্থগুলি বিলুপ্ত হতে শুরু করেছিল। সেই সময় ভারতের প্রিন্টিং প্রেসগুলির খরচ এত বেশি ছিল যে সেগুলি ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। একবার ভাবুন গীতা ও রামায়ণ ছাড়া আমাদের সমাজ কীকরে চলবে? মূল্যবোধ ও আদর্শের উৎস শুকিয়ে গেলে, সমাজের প্রবাহও স্তব্ধ হয়ে যায়। তবে বন্ধুরা, আমাদের একটি বিষয় মনে রাখতে হবে। ভারতবর্ষের নিরবধি যাত্রায়, এমন অনেক পর্যায় এসেছে যেখানে আমরা পরিমার্জিত ও উন্নত হয়েছি। অধার্মিকতা ও সন্ত্রাস অনেক সময় শক্তিশালী হয়েছে, সত্যকে ঢেকে দিয়েছে সঙ্কটের মেঘ। কিন্তু সেই সবসময় শ্রীমদ ভগবত গীতা আমাদের সব থেকে বড় বিশ্বাস জুগিয়েছে: यदा यदा हि धर्मस्य ग्लानिर्भवति भारत। अभ्युत्थानमधर्मस्य तदाऽत्मानं सृजाम् यहम् ॥ অর্থাৎ যখনই ধর্মের কর্তৃত্বে, সত্যের কর্তৃত্বে সঙ্কট দেখা দেয়, তখনই ভগবান তা রক্ষা করতে আবির্ভূত হন। গীতার দশম অধ্যায়ে বলা হয়েছে ঈশ্বর নানা রূপ ধারণ করতে পারেন। কখনো সমাজকে নতুন দিশা দেখাতে মহাত্মারা আসেন, আবার কখনো মানবিক মূল্যবোধ ও আদর্শ পুনরুজ্জীবিত করতে গীতা প্রেসের মতো প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়। সেই জন্যই ১৯২৩ সালে গীতা প্রেস যখন তার কাজ শুরু করেছিল, তখন তার মাধ্যমে ভারতে চেতনা ও মননের প্রবাহ গতি পেয়েছিল। গীতা সহ আমাদের ধর্মগ্রন্থগুলি আবার ঘরে ঘরে অনুরণিত হতে শুরু করে। ভারতের মন আবারও আলোড়িত হয়। এই ধর্মগ্রন্থগুলি পারিবারিক ঐতিহ্য হয়ে ওঠে। নতুন প্রজন্ম এর সঙ্গে সংযুক্ত হয়।
বন্ধুরা,
আপনার উদ্দেশ্য যদি পবিত্র ও মূল্যবোধ শুদ্ধ হয়, তাহলে আপনার সাফল্য সুনিশ্চিত। গীতা প্রেস এমন এক প্রতিষ্ঠান যা ধারাবাহিকভাবে সমাজের মূল্যবোধকে সমৃদ্ধ করেছে, মানুষকে তার কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করেছে। গঙ্গার পরিচ্ছন্নতা, যোগের নেপথ্যে থাকা বিজ্ঞান, পতঞ্জলির যোগসূত্র প্রকাশ, আয়ুর্বেদ সম্পর্কিত ‘আরোগ্য অঙ্ক’, ভারতীয় জীবনধারার সঙ্গে মানুষকে পরিচিত করাতে ‘জীবনাচর্য অঙ্ক’, সমাজ সেবার মন্ত্রে দীক্ষিত করতে ‘সেবা অঙ্ক’ এবং ‘দান মহিমা’ – এমন নানা প্রয়াসের মাধ্যমে জাতি গঠনের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে গেছে এই প্রতিষ্ঠান।
বন্ধুরা,
সাধুদের তপস্যা কখনো বৃথা যায় না, তাঁদের সংকল্প ব্যর্থ হয় না। সেই সংকল্পের জোরেই ভারত আজ প্রতিদিন সাফল্যের নতুন শিখর স্পর্শ করছে। আপনাদের মনে থাকবে, লাল কেল্লার প্রাকার থেকে আমি বলেছিলাম, দাসত্বের মানসিকতা থেকে নিজেকে মুক্ত করার এবং আমাদের ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করার সময় এসেছে। আমি তাই শুরুতেই বলেছি, আজ দেশ উন্নয়ন এবং ঐতিহ্য দুটি নিয়েই এগিয়ে চলেছে। আজ একদিকে ভারত ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নতুন রেকর্ড গড়ছে, অন্যদিকে কয়েক শতাব্দী পর কাশীর বিশ্বনাথ ধামের ঐশ্বরিক রূপ জাতির সামনে উদ্ভাসিত হচ্ছে। আমরা বিশ্বমানের পরিকাঠামো গড়ে তুলছি, আবার একই সঙ্গে কেদারনাথ ও মহাকাল মহালোকের মতো তীর্থস্থানগুলির মহিমা প্রত্যক্ষ করছি। বহু শতাব্দী পর অযোধ্যায় রাম মন্দিরের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও আমরা আমাদের নৌবাহিনীর প্রতীকে দাসত্বের চিহ্ন বহন করতাম। রাজধানী দিল্লিতে আমরা ইংরেজের ঐতিহ্য অনুসরণ করছিলাম। পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগুলি আমরা পাল্টে দিয়েছি। আমাদের ঐতিহ্য ও ধারণাকে আমরা প্রাপ্য মর্যাদা দিতে পেরেছি। সেই জন্যই এখন ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রতীকে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের চিহ্ন জ্বল জ্বল করে। রাজপথ এখন দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলে কর্তব্য পথ হয়েছে। দেশের আদিবাসী ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে উঠেছে আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সংগ্রহালয়। যেসব পুরনো মূর্তিগুলি আমাদের মন্দির থেকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেগুলি আবার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। আমাদের ঋষি ও দ্রষ্টারা যে উন্নত ও আধ্যাত্মিক ভারতের ধারণা আমাদের দিয়েছিলেন, আজ তা অর্থবহ হচ্ছে। আমাদের সাধু, ঋষি, মুনিদের আধ্যাত্মিক অনুশীলনগুলি ভারতের সার্বিক উন্নয়নে শক্তি যোগাবে বলে আমার বিশ্বাস। আমরা এক নতুন ভারত গড়ে তুলবো। বিশ্ব কল্যাণের যে ধারণা আমাদের রয়েছে, তা সফল করব। এই পবিত্র অনুষ্ঠানে আমাকে আপনাদের মাঝে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমি আবারও আপনাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই।
CG/SD/SKD/ ReleaseID: 1937998/ 08 July, 2023/ W 1253
(Release ID: 1938346)
Visitor Counter : 168
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Hindi
,
Marathi
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Kannada
,
Malayalam