প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
প্রধানমন্ত্রী গোয়ার মোপায় নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্বোধন করেছেন
“এই অত্যাধুনিক বিমানবন্দর গোয়ার মানুষের স্নেহ এবং আশীর্বাদের প্রতিদানের চেষ্টা”
“এর আগে অনেক জায়গা অবহেলিত হত পরিকাঠামোগত উন্নয়নের অভাবে”
“ভারত বিমান পরিবহণ বাণিজ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্থান অধিকার করেছে”
“একবিংশ শতাব্দীর ভারত নতুন ভারত যা বিশ্ব মঞ্চে দাগ কাটছে এবং এর ফলে বিশ্বের প্রেক্ষাপটের দ্রুত বদল ঘটছে”
“দেশে ভ্রমণের সুবিধার উন্নতি করতে এবং পর্যটনের প্রসার ঘটাতে প্রয়াস নেওয়া হয়েছে”
“আজ গোয়া ১০০ শতাংশ লক্ষ্য পূরণের প্রকৃষ্ট উদাহরণ”
Posted On:
11 DEC 2022 7:50PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১১ ডিসেম্বর ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গোয়ায় মোপা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্বোধন করেছেন। এই বিমানবন্দরের শিলান্যাস করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ২০১৬-র নভেম্বরে। প্রায় ২,৮৭০ কোটি টাকায় নির্মিত এই বিমানবন্দরটি তৈরি করা হয়েছে দীর্ঘস্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির লক্ষ্যে। এখানে আছে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, দূষণহীন ভবন, রানওয়েতে এলইডি আলো, বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা, অত্যাধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র এবং অন্যান্য সুবিধা। প্রাথমিকভাবে এই বিমানবন্দর প্রথম পর্যায়ে প্রতি বছর ৪.৪ মিলিয়ন যাত্রী পরিষেবা দেবে। এটি বাড়িয়ে করা হবে বছরে ৩৩ মিলিয়ন যাত্রী।
সমাবেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী গোয়া এবং দেশের নাগরিকদের অভিনন্দন জানান মোপায় এই নতুন বিমানবন্দরটির জন্য। গত আট বছরে তাঁর গোয়া সফরের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁকে গোয়ার মানুষ যেভাবে ভালোবাসা এবং স্নেহ দিয়েছেন, তার প্রতিদান দেওয়া হবে সুদে-আসলে উন্নয়নের মাধ্যমে। তিনি বলেন, “এই অত্যাধুনিক বিমানবন্দর গোয়ার মানুষের স্নেহ ও ভালোবাসার প্রতিদান।” বিমানবন্দরের নাম প্রয়াত মনোহর পররিকরের নামে হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
অতীতে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে সরকারগুলির মনোভাব নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নাগরিকদের প্রয়োজন এবং সুবিধার বদলে ভোটব্যাঙ্কই ছিল প্রথম অগ্রাধিকার। শ্রী মোদী বলেন, অনেক প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে যার প্রয়োজন ছিল না। এর ফলে যেখানে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন ছিল তা অবহেলিতই রয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, “গোয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তার স্পষ্ট নমুনা।” অটল বিহারী বাজপেয়ীর সরকার প্রাথমিকভাবে এই বিমানবন্দরের পরিকল্পনা করেছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে প্রয়াসের অভাবে বহু বছর ধরেই এই প্রকল্পটি পড়ে ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪-য় ডবল ইঞ্জিন সরকার আসার পর বিমানবন্দরের কাজ গতি পেয়েছে। আইনি বাধা এবং অতিমারী সত্ত্বেও তিনি ছ’বছর আগে এর শিলান্যাস করেছিলেন আর আজ এই বিমানবন্দর কার্যোপযোগী হয়ে উঠছে। এই বিমানবন্দরে প্রতি ৪০ লক্ষ যাত্রীর পরিষেবা দেওয়া যাবে যা ভবিষ্যতে ৩.৫ কোটি পর্যন্ত হবে। পর্যটনের সুবিধা ছাড়াও দুটি বিমানবন্দর হওয়ায় গোয়ার কার্গো হাব হিসেবে গড়ে ওঠার নতুন সুযোগ এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে মনোহর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিবর্তিত কর্মশৈলী এবং প্রশাসনিক সদর্থক ভূমিকার একটি প্রমাণ। তিনি বলেন, ২০১৪-র আগে বিমান যাত্রা ছিল ধনীদের জন্য। এর ফলে সাধারণ মানুষের বিমান যাত্রার ইচ্ছা অবহেলিতই থেকে গেছে। ফলে, বিমানবন্দরে এবং অন্যান্য পরিকাঠামোয় লগ্নি হয়নি। তাই, প্রভূত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বিমান যাত্রায় ভারত পিছনে পড়ে রয়েছে। শ্রী মোদী বলেন যে স্বাধীনতার প্রথম ৭০ বছরে বিমানবন্দরের সংখ্যা ছিল মাত্র ৭০ এবং বিমান চলাচল সীমিত ছিল শুধুমাত্র বড় বড় শহরেই। সরকার দুটি স্তরে কাজ করেছে। প্রথমটি হল – বিমানবন্দরের নেটওয়ার্ক বাড়ানো হয়েছে সারা দেশজুড়ে। আর দ্বিতীয় হল, সাধারণ মানুষ ‘উড়ান’ কর্মসূচির মাধ্যমে বিমান পরিষেবা পাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। গত আট বছরে ৭২টি বিমানবন্দর তৈরি করা হয়েছে ঐ ৭০ বছরের ৭০টির তুলনায়। এর অর্থ হল দেশে বিমানবন্দরের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এছাড়াও, বিমান যাত্রীর সংখ্যাও ২০২০-তে (ঠিক অতিমারীর আগে পর্যন্ত) ১৪ কোটির বেশি হয়েছে, যেখানে ২০০০ সালে ঐ সংখ্যা ছিল মাত্র ৬ কোটি। ১ কোটির বেশি যাত্রী বিমান যাত্রা করেছেন ‘উড়ান’ কর্মসূচিতে। তিনি বলেন, “এইসব পদক্ষেপের ফলেই বিমান পরিবহণের বাজারে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম হয়ে উঠেছে।”
‘উড়ান’ যোজনার সাফল্যের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এটা বিশ্বের শিক্ষাবিদদের কাছে একটি গবেষণার বিষয় হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানসিকতা পাল্টাচ্ছে। কম দূরত্বে যেতেও রেলের বদলে বিমানের টিকিটের খোঁজ করছেন। তিনি বলেন, দেশে যেহেতু বিমান যোগাযোগের নেটওয়ার্ক প্রসারিত হয়েছে, বিমান যাত্রার সময়ও কমেছে এবং পরিবহণের একটি অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা ঠিকই যে পর্যটন দেশের ‘সফটপাওয়ার’কে বাড়াতে সাহায্য করে। যখন দেশ শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তখন বিশ্ব সেই দেশ সম্বন্ধে জানতে আগ্রহী হয় এবং তার প্রতি আকৃষ্ট হয়।” শ্রী মোদী আরও বলেন, যদি কেউ একবার ভারতের প্রাচুর্য্যের ইতিহাসের দিকে একবার নজর দেন তাহলে দেখা যাবে যে সারা বিশ্বের কাছেই এটি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল যখন এই ভূমি সম্পর্কে জানতে দেশ-বিদেশের পণ্ডিত, পর্যটক, বণিক, শিল্পপতি এবং ছাত্ররা আসত। তিনি বলেন, পরাধীন থাকাকালীন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এক থাকলেও ভারতের ভাবমূর্তি পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একবিংশ শতাব্দীর ভারত নতুন ভারত যা বিশ্ব মঞ্চে দাগ কাটছে এবং এর ফলে বিশ্বের প্রেক্ষাপটের দ্রুত বদল ঘটছে।” তিনি বলেন, আজকের বিশ্ব ভারতকে জানতে চায়, ভারতকে বুঝতে চায়। তিনি আরও বলেন, বহু বিদেশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ভারতের কথা বিবৃত করছে।
প্রধানমন্ত্রী গত আট বছরে দেশের পর্যটন চিত্রের উন্নতি এবং সহজে ভ্রমণ করা নিশ্চিত করতে যে পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়েছে তার উল্লেখ করেন। তিনি এই প্রসঙ্গে ভিসা প্রক্রিয়ার সরলীকরণ, পৌঁছবার পর ভিসা, অত্যাধুনিক পরিকাঠামো ও দূরতম প্রান্ত পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং তার সঙ্গে ডিজিটাল, মোবাইল এবং রেল সংযোগ সম্পর্কেও উল্লেখ করেন। এই পদক্ষেপগুলি ফলপ্রসূ হয়েছে। ২০১৫-য় ঘরোয়া পর্যটকদের সংখ্যা ছিল ১৪ কোটি। গত বছর ঐ সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭০ কোটি।
শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, পর্যটন হল কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভর হওয়ার একটি বড় মাধ্যম। তিনি গোয়ার পর্যটন পরিকাঠামোর উন্নতি করতে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলির উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “২০১৪ থেকে রাজ্যে মহাসড়ক প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি লগ্নি করা হয়েছে। অঞ্চলের সমস্যার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। কোঙ্কন রেলওয়ের বৈদ্যুতিকীকরণ হওয়ায় এই রাজ্যও সুবিধা পাচ্ছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ বাড়ানো ছাড়াও সরকারের নজর ছিল ঐতিহ্য-কেন্দ্রিক পর্যটনের প্রসারের ওপর। সেজন্য স্মারক স্থলগুলির রক্ষণাবেক্ষণে নজর দেওয়া হচ্ছে এবং সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি করা হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, এর একটি বড় উদাহরণ হল আগোদা জেল কমপ্লেক্স মিউজিয়াম। তিনি আরও বলেন, স্মারক স্থলগুলিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। তীর্থস্থান এবং স্মারক স্থলে যাওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী গোয়া সরকারের প্রয়াসের প্রশংসা করেন পরিকাঠামোর পাশাপাশি সামাজিক কাঠামোয় গুরুত্ব দেওয়ার জন্য। শ্রী মোদী ‘স্বয়ংপূর্ণ গোয়া অভিযান’-এর সাফল্যের প্রশংসা করেন যা নাগরিকদের সহজ জীবনযাপনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি এবং যার দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে যাতে কোনও নাগরিক সরকারি কর্মসূচি থেকে বঞ্চিত না থাকেন। তিনি প্রত্যেককে এই উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করে বলেন, “আজ গোয়া ১০০ শতাংশ লক্ষ্য পূরণের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।”
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ডঃ প্রমোদ সাওয়ান্ত, রাজ্যের রাজ্যপাল শ্রী পি এস শ্রীধরন পিল্লাই, কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ পরিবহণ মন্ত্রী শ্রী শ্রীপদ যশো নায়েক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
PG/AP/DM/
(Release ID: 1883783)
Visitor Counter : 237
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam