প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

ভিডিও কনফারেন্সিং - এর মাধ্যমে গুজরাটের লোথালে ন্যাশনাল মেরিটাইম হেরিটেজ কমপ্লেক্স সাইটের কাজ পর্যালোচনা উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 18 OCT 2022 7:49PM by PIB Kolkata

 

নয়াদিল্লি, ১৮ অক্টোবর, ২০২২

 

নমস্কার,

আপনারা সবাই এই ঐতিহাসিক ও বিশ্ব ঐতিহ্য লোথালে সশরীরে উপস্থিত হয়েছেন। আমি প্রযুক্তির মাধ্যমে সুদূর দিল্লি থেকে আপনাদের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছি। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, আমি যেন আপনাদের সকলের মধ্যেই রয়েছি। সম্প্রতি, আমি ন্যাশনাল মেরিটাইম হেরিটেজ কমপ্লেক্স সম্পর্কিত ড্রোনের কাজ দেখেছি, তার অগ্রগতিও পর্যালোচনা করেছি। আমি খুব খুশি যে এই প্রকল্পের কাজ খুব দ্রুত এগিয়ে চলেছে।

বন্ধুগণ,

এ বছর লালকেল্লা থেকে পঞ্চপ্রাণ নিয়ে আলোচনার সময় আমি আমাদের ঐতিহ্য ও গর্বের কথা বলেছিলাম। আর একটু আগে আমাদের গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্রভাইও তা উল্লেখ করলেন। আমাদের সামুদ্রিক ঐতিহ্য, আমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়ে যাওয়া তেমনি একটি মহান ঐতিহ্য। যে কোনও স্থান বা সময়ের ইতিহাস আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে, আর ভবিষ্যতের জন্য আমাদের সচেতনও করে। আমাদের ইতিহাসের এমন অনেক গল্প আছে, যেগুলি আমাদের ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেগুলো সংরক্ষণ করে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উপায় অনুসন্ধান করা হয়নি। ইতিহাসের সেই ঘটনাগুলো থেকে আমরা কত কিছু যে শিখতে পারি!

ভারতের সামুদ্রিক ঐতিহ্যও এমন একটি বিষয়, যা নিয়ে খুব কম কথা বলা হয়েছে। বহু শতাব্দী আগে দীর্ঘকাল ধরে ভারত ব্যবসা-বাণিজ্য করতো। বিশ্বের প্রতিটি সভ্যতার সঙ্গে যে আমাদের সম্পর্ক ছিল, তার পিছনে ভারতের সামুদ্রিক শক্তির বড় ভূমিকা ছিল। কিন্তু দীর্ঘকালের দাসত্ব ভারতের এই সামর্থ্যই শুধু ভেঙে দেয়নি, সময়ের সাথে সাথে আমরা ভারতীয়রাও আমাদের এই সামর্থ্যের প্রতি উদাসীনও হয়ে পড়েছিলাম।

আমরা ভুলে গেছি যে, আমাদের লোথাল এবং ধোলাভিরার মতো মহান ঐতিহ্য রয়েছে, যা হাজার বছর আগেও সমুদ্র বাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত ছিল। আমাদের দক্ষিণ ভারতে চোল সাম্রাজ্য, চের রাজবংশ, পান্ড্য রাজবংশও রাজত্ব করেছে, যাঁরা সমুদ্র সম্পদের শক্তি বুঝতে পেরেছিল এবং তাকে অভূতপূর্ব উচ্চতা দিয়েছিল। তারা শুধু তাদের সামুদ্রিক শক্তিই সম্প্রসারিত করেনি, এর সাহায্যে তারা দূর-দূরান্তের দেশে বাণিজ্য করতেও সফল হয়েছিল। ছত্রপতি শিবাজী মহারাজও একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠন করেছিলেন এবং বিদেশী আক্রমণকারীদের চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।

এ সবই ভারতের ইতিহাসের এমন এক গর্বের অধ্যায়, যাকে দীর্ঘকাল উপেক্ষা করা হয়েছিল। আপনারা কল্পনা করতে পারেন, হাজার হাজার বছর আগে কচ্ছে বড় বড় জাহাজ নির্মাণ হ’ত। ভারতে তৈরি বড় জাহাজ সারা বিশ্বে বিক্রি হতো। ঐতিহ্যের প্রতি এই উদাসীনতা দেশের অনেক ক্ষতি করেছে। এই অবস্থার পরিবর্তন করা দরকার। এই কারণেই আমরা ভারতের গর্বের এই কেন্দ্রগুলিকে, ধোলাভিরা এবং লোথালকে তেমনভাবে পুনর্নির্মানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি – যে জন্য একসময় বিখ্যাত ছিল। আর আজ আমরা সেই মিশনকে অত্যন্ত দ্রুত সম্পন্ন হতে দেখছি।

বন্ধুগণ,

আজ, যখন আমি লোথাল নিয়ে আলোচনা করছি, তখন হাজার বছর ধরে চলে আসা ঐতিহ্যের কথাও মনে পড়ছে। আজ গুজরাটের অনেক এলাকায় সিকোতর মাতার পূজা হয়। তিনি সমুদ্রের দেবী হিসাবে পূজিত হন। হাজার হাজার বছর আগে লোথাল নিয়ে গবেষণা করা বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, সেই সময়েও সিকোতর মাতাকে কোনো না কোনো রূপে পূজা করা হ’ত। কথিত আছে যে, সমুদ্র যাত্রার আগে সিকোতর দেবীকে পূজা করা হ’ত, যাতে তিনি যাত্রাপথের সমস্ত বিপত্তি থেকে রক্ষা করেন। ঐতিহাসিকদের মতে, সিকোতর মাতা্র সঙ্গে সোকোত্রা দ্বীপের সম্পর্ক রয়েছে, যেটি আজ এডেন উপসাগরে অবস্থিত। এ থেকে বোঝা যায় যে, হাজার হাজার বছর আ‍গেও খম্ভাত উপসাগর থেকে বহুদূর পর্যন্ত সমুদ্র বাণিজ্যের পথ খোলা ছিল।

বন্ধুগণ,

সম্প্রতি, ভাদনগরের কাছে খননের সময় সিকোতর মাতার মন্দিরটি পাওয়া গেছে। এমন কিছু প্রমাণও পাওয়া গেছে, যা থেকে প্রাচীনকালে এখান থেকে সমুদ্র বাণিজ্য সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যায়। একইভাবে, সুরেন্দ্রনগরের ঝিঁঝুওয়াদা গ্রামে একটি লাইটহাউস থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আপনারা জানেন যে, রাতে জাহাজকে পথ দেখানোর জন্য লাইট হাউস তৈরি করা হ’ত। আর দেশের মানুষ শুনলে অবাক হবেন যে, ঝিঁঝুওয়াদা গ্রাম থেকে প্রায় একশো কিলোমিটার দূরে সমুদ্র। কিন্তু এই গ্রামে এমন অনেক প্রমাণ রয়েছে, যা থেকে বোঝা যায় যে কয়েক শতাব্দী আগে এই গ্রামে একটি খুব ব্যস্ত বন্দর ছিল। এই প্রমাণগুলি থেকে প্রাচীনকালে এই সমগ্র অঞ্চলে সমুদ্র বাণিজ্যের উন্নতির নানা তথ্য পাওয়া যায়।

বন্ধুগণ,

লোথাল শুধুমাত্র সিন্ধু সভ্যতার একটি প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল না, এটি ভারতের সামুদ্রিক শক্তি এবং সমৃদ্ধির প্রতীকও ছিল। কয়েক হাজার বছর আগে লোথালকে যেভাবে বন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল, তা আজও বড় বড় বিশেষজ্ঞদের অবাক করে তোলে। লোথালে খনন করে পাওয়া শহর, বাজার এবং বন্দরের ধ্বংসাবশেষ সেই সময়ের নগর পরিকল্পনা এবং স্থাপত্যের অদ্ভুত নিদর্শন তুলে ধরে। নানা ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলা করার জন্য এখানে যে ধরনের ব্যবস্থা ছিল, তা থেকে আজকের বন্দর পরিকল্পনাকারীদেরও অনেক কিছু শেখার আছে।

বন্ধুগণ,

বলতে গেলে, এই অঞ্চলটি দেবী লক্ষ্মী এবং দেবী সরস্বতী উভয়েরই আশীর্বাদপুষ্ট ছিল। অনেক দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের কারণে এই অঞ্চলটি সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিল। কথিত আছে, সেই সময় লোথাল বন্দরে ৮৪টি দেশের পতাকা উত্তোলন করা হতো। একইভাবে, বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশের শিক্ষার্থীরা নিকটবর্তী বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভের জন্য আসতেন। সপ্তম শতাব্দীতে এই অঞ্চলে আসা চীনা দার্শনিকরাও লিখেছেন যে, বল্লভী বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন ৬ হাজারেরও বেশি ছাত্র ছিল। অর্থা্‌ৎ, দেবী সরস্বতীর কৃপাও এই অঞ্চলের উপরেই ছিল।

বন্ধুগণ,

লোথালে এই হেরিটেজ কমপ্লেক্স এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে, যাতে ভারতের সাধারণ মানুষও এই ইতিহাস সহজেই বুঝতে ও পড়তে পারেন। এখানে অতি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেই যুগকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। হাজার বছর আগের সেই একই জাঁকজমক, সেই একই সামর্থ এখন এই ভূমিতে পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে।

আমি দৃঢ় বিশ্বাস, এটি সারা বিশ্বের পর্যটকদের জন্য একটি বিশাল আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠবে। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকদের স্বাগত জানাতে কমপ্লেক্সটি তৈরি করা হচ্ছে। একতা নগরের স্ট্যাচু অফ ইউনিটি যেমন প্রতিদিন পর্যটকদের ভিড়ের রেকর্ড তৈরি করছে, তেমনি সেই দিন বেশি দূরে নেই, যখন মানুষ দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে লোথালে এই ঐতিহ্য কমপ্লেক্স দেখতে আসবেন। এতে এখানে হাজার হাজার নতুন কর্মসংস্থান ও ব্যবসার সুযোগ তৈরি হবে। এই এলাকাটিও উন্নত হবে। কারণ, এটি আহমেদাবাদ থেকে খুব বেশি দূরে নয়। ভবিষ্যতে নানা শহর থেকে আরও বেশি মানুষ এখানে আসবেন, এখানে পর্যটন বাড়বে।

বন্ধুগণ,

আমি এই অঞ্চলের যে সমস্যা সঙ্কুল দিনগুলি দেখেছি, তা কখনো ভুলব না। আগে সমুদ্রের বিস্তার এই অঞ্চল পর্যন্ত ছিল, তাই খুব বড় এলাকায় যে কোনও ফসল উৎপাদন করা কঠিন ছিল। ২০-২৫ বছর আগেও মানুষ দেখেছেন যে, এখানে শত শত একর জমি বন্দক রেখেও প্রয়োজনের সময় কেউ ঋণ দিত না। ঋণদাতারাও বলতেন যে জমি দিয়ে কী করব, এই জমি থেকে কোনও লাভ হবে না। আমরা আজ লোথাল এবং এই সমগ্র অঞ্চলকে সেই কঠিন সময় থেকে বের করে এনেছি।

বন্ধুগণ,

লোথাল এবং এই অঞ্চলকে তার অতীত গৌরব ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র ঐতিহ্য কমপ্লেক্সগুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আজ গুজরাটের উপকূল অঞ্চলে আধুনিক পরিকাঠামোর এত কাজ হচ্ছে, উপকূল অঞ্চলে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এসব প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে।

এখন সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্টও এখানকার গৌরব বৃদ্ধি করবে। এই এলাকা কয়েক হাজার বছর আগে যেভাবে গড়ে উঠেছিল একে তেমনই গুরুত্বপূর্ণভাবে আবারও বিকশিত করতে আমাদের সরকার পূর্ণ শক্তি দিয়ে কাজ করছে। যে লোথাল তার ইতিহাসের কারণে আমাদের গর্বিত করে, সেই লোথালই এখন আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ গঠন করবে।

বন্ধুগণ,

একটি জাদুঘর, শুধুমাত্র পুরনো জিনিস বা নথি সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের একটি মাধ্যম নয়। আমরা যখন আমাদের ঐতিহ্যকে লালন করি, তখন আমরা এর সাথে সংযুক্ত অনুভূতিগুলিকে সংরক্ষণ করি। সারা দেশে গড়ে তোলা জনজাতি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতি বিজড়িত জাদুঘরগুলির দিকে তাকালেই বোঝা যায়, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের বীর জনজাতি নায়ক-নায়িকারা কতটা অবদান রেখেছিলেন। আমরা যখন জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতিসৌধ এবং জাতীয় পুলিশ স্মৃতিসৌধ দেখি, তখন আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের সাহসী ছেলে-মেয়েরা কীভাবে দেশকে রক্ষা করতে, দেশকে সুরক্ষিত রাখতে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী জাদুঘরে গেলে আমরা গণতন্ত্রের শক্তি, আমাদের দেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ৭৫ বছরের উন্নয়ন যাত্রার কথা জানতে পারি। কেভা্ডিয়ায় একতা নগরের স্ট্যাচু অফ ইউনিটি আমাদের ভারতের একতা ও অখণ্ডতা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য নানা প্রচেষ্টা, দৃঢ়তা এবং তপস্যার কথা মনে করিয়ে দেয়।

আপনারা সবাই জানেন যে, একটি বিশাল গবেষণার কাজ চলছে। এখন কেভাডিয়াতে সর্দার প্যাটেল জাদুঘর তৈরি হচ্ছে। কারণ, সর্দার সাহেব সমস্ত দেশীয় রাজা-রাজপুত্রদের ভারতে যোগদান সুনিশ্চিত করেছিলেন। তারপর সেই রাজা-রাজপুত্ররা ভারতের একতা ও অখণ্ডতা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য যে অবদান রেখেছিলেন, তাঁদের স্মৃতিতে আমরা একটি জাদুঘর তৈরি করছি। এই মুহূর্তে এর নক্‌শা প্রস্তুত করা হচ্ছে ও গবেষণার কাজ চলছে। সেজন্য নানা দেশীয় রাজা-রাজপুত্ররা কেমন থাকতেন, তাঁরা কী করতেন, দেশ ও সমাজের মঙ্গলের জন্য কতটা কাজ করেছেন এবং সর্দার সাহেবের নেতৃত্বে দেশের ঐক্যের জন্য কতটা কাজ করেছেন - তার সম্পূর্ণ তথ্য ও উপাদান এখানে একত্রে রাখা হবে। এই দেশীয় রাজা-রাজপুত্রদের সঙ্গে সর্দার সাহেবের সমন্বয়ে ভারতের ঐক্য ও সংহতি কতটা প্রভাবিত হয়েছিল, এখানে সেই গবেষণার কাজ চলছে। সেই অনুযায়ী অদূর ভবিষ্যতেই জাদুঘরটি গড়ে তোলা হবে।

গত ৮ বছরে আমরা দেশে যে ঐতিহ্যের পুনরুদ্ধার করেছি, তাতেও বোঝা যায়, আমাদের ঐতিহ্যের ব্যাপ্তি কত বড়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, লোথালে নির্মীয়মান জাতীয় সামুদ্রিক যাদুঘরও সমস্ত ভারতীবাসীকে তাঁদের সামুদ্রিক ঐতিহ্য সম্বন্ধে গর্বিত করে তুলবে। লোথাল তার পুরোনো জাঁকজমক নিয়ে আবার পৃথিবীর সামনে আসবে। এই বিশ্বাস নিয়ে, আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ! আপনাদের সকলের জন্য শুভ কামনা।

আজ এখানে এই লোথালে যে ভাই ও বোনেরা বসে আছেন, তাঁদের সকলকে আমি দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাই এবং এই দিনে গুজরাটের নতুন বছরের সূত্রপাত হবে, সেজন্য আপনাদের সকলকে শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।

প্রধানমন্ত্রী ভাষণের বেশ কিছু অংশ গুজরাটি ভাষায় ছিল, যা ভাবানুবাদ করা হয়েছে

PG/SB/SB



(Release ID: 1869643) Visitor Counter : 156