প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী সুরাটে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকারও বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করেছেন

“সুরাট পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীলতা এবং জন-অংশীদারিত্বের এক আদর্শ উদাহরণ হয়ে উঠেছে”


“ফোর পি অর্থাৎ পিপল, পাবলিক, প্রাইভেট পার্টনারশিপ (জনগণ, সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব)। এই মডেল সুরাটকে বিশেষ জায়গায় নিয়ে গেছে”

“ডাবল ইঞ্জিন সরকার ছাড়পত্র এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ায় উন্নয়নমূলক কাজে অভূতপূর্ব গতি এসেছে”

“নতুন লজিস্টিক নীতি সুরাটকে সাহায্য করবে”

“সুরাট খুব শীঘ্রই বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য পরিচিতি লাভ করবে”

“যখন আস্থা বাড়ে, তখন উদ্যোগও বাড়ে আর সবকা প্রয়াসে গতির সঞ্চার হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়”

Posted On: 29 SEP 2022 1:09PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি,  ২৯  সেপ্টেম্বর, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সুরাটে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকারও বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করেছেন। তিনি ডায়মন্ড রিসার্চ অ্যান্ড মার্কেন্টাইল (ড্রিম) সিটির সড়ক পরিকাঠামো নির্মাণে প্রথম পর্যায়ের এবং মূল ফটক নির্মাণ কাজের সূচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের শিলান্যাস করেছেন। এছাড়াও তিনি জীববৈচিত্র্য উদ্যানের শিলান্যাস করেছেন। ডঃ হেগড়েওয়ার সেতু থেকে ভিমরাড়-বামরোলি সেতু পর্যন্ত ৮৭ হেক্টর জমির ওপর এই উদ্যান গড়ে তোলা হবে। এর পাশাপাশি শ্রী মোদী সুরাটে বিজ্ঞান কেন্দ্রে খোঁজ সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন।

এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবরাত্রির এই পুন্যলগ্নে সুরাটে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করার সুযোগ পেয়ে তিনি আনন্দিত। হাল্কা মেজাজে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুরাটে দারুন সব খাবার পাওয়া যায়। তাই নবরাত্রি উদযাপনে এই শহরে আসার জন্য তিনি উদগ্রীব ছিলেন। ৭৫টি অমৃত সরোবরের কাজ যথাযথভাবে এগিয়ে চলায় শ্রী মোদী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, সুরাট পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীলতা এবং জন-অংশীদারিত্বের এক আদর্শ উদাহরণ হয়ে উঠেছে। এই শহর শ্রমিকদের সম্মান করে যা এর এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। সুরাটে ভারতের সব জায়গার মানুষ আসেন, তাই একে ছোটোখাটো এক হিন্দুস্থান বলে বর্ণনা করা যায়।

এই শতকের গোড়ায় যখন সারা বিশ্বে তিনটি পি- পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ অর্থা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা হত তখন সুরাট চারটি পির চর্চা করেছে। ফোর পি অর্থা পিপল, পাবলিক, প্রাইভেট পার্টনারশিপ (জনগণ, সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব)। এই মডেল সুরাটকে বিশেষ জায়গায় নিয়ে গেছে। শ্রী মোদী বলেন, আজ বিশ্বের দ্রুত বিকাশশীল শহরগুলির তালিকায় সুরাট জায়গা করে নিয়েছে। অথচ একটা সময় এ শহরকে মহামারী এবং বন্যার জন্য অবহেলা করা হত। তিনি সুরাটের নগর জীবনে জীববৈচিত্র্য পার্কের উপযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানান।

ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ইতিবাচক দিকের প্রসঙ্গে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুরাটের দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য আজ আরও দ্রুত হারে গৃহ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সুবিধার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন,  বলেন, এ পর্যন্ত দেশে ৪ কোটি দরিদ্র রোগী এই প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে চিকিসা পেয়েছেন। গুজরাটের ৩২ লক্ষ রোগী এবং সুরাটের ১ লক্ষ ২৫ হাজার মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন।

সুরাটের বস্ত্রশিল্প এবং হীরের ব্যবসার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, আজ এই শিল্পগুলির জন্য দেশের বহু পরিবার নির্ভরশীল। ড্রিম সিটি প্রকল্পের কাজ যখন শেষ হবে তখন এই শহর বিশ্বের সব থেকে নিরাপদ ও সুবিধাজনক হীরে সংক্রান্ত ব্যবসা কেন্দ্র হয়ে উঠবে। শহরের পরিকাঠামোগত প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুরাটের মূল কেন্দ্র থেকে বিমান বন্দর যাওয়ার রাস্তাটি এই শহরের সংস্কৃতি, সমৃদ্ধি ও আধুনিকতার পরিচয় বহন করছে। একটা সময় ছিল যখন দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকার সুরাটের জন্য বিমান বন্দরের দাবিকে অগ্রাহ্য করতো। আর আজ দেখুন, এখান থেকে কতোগুলো বিমান ওঠা-নামা করে, প্রতিদিন কতো মানুষ এই বিমান বন্দর ব্যবহার করেন। সুরাটে মেট্রো রেল প্রকল্পের অনুমোদনের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি উদ্ভব হয়েছিল বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

লজিস্টিক অর্থা পণ্য পরিবহণের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, সুরাটের মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্যের মর্ম বোঝেন। আজ জাতীয় লজিস্টিক নীতির মাধ্যমে বহুস্তরীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ হচ্ছে। বর্তমানে হাজিরা-ঘোঘা রোপ্যাক্স ফেরি পরিষেবা সময় এবং অর্থ উভয়েরই সাশ্রয় করছে। আগে যেখানে ৪০০ কিলোমিটর পথ অতিক্রম করে গন্তব্যে পৌঁছাতে হত, যার জন্য ১০-১২ ঘণ্টা সময় ব্যয় হত আজ রোপ্যাক্সের মাধ্যমে মাত্র ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যেই গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে। সুরাটের সঙ্গে পূর্ব উত্তরপ্রদেশ ও কাশীর যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে শুধু ট্রাকে করে পণ্য পরিবহণ করা হত। বর্তমানে রেল এবং সমুদ্র উপকূলের উন্নয়ন ঘটিয়ে জাহাজ পরিবহণের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। রেলের কামরাগুলির নকশা বদল করা হয়েছে। ফলে আরও বেশি পণ্য পরিবহণ করা সম্ভব হচ্ছে। এখন এক টন কন্টেনার সহজেই রেলের বগিতে নামানো-ওঠানো সম্ভব। এই সাফল্য অর্জনের পর সুরাট থেকে কাশি পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেই ট্রেনটি পণ্য পরিবহন করবে।

এক সময়ে হীরের শহর বলে সুরাটের যে পরিচিতি ছিল তা সেতুর শহর বলে পরবর্তীকালে পরিচিতি লাভ করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ এই শহর বৈদ্যুতিক যানবাহনের শহর বলে পরিচিত হতে চলেছে। তিনি সুরাটে বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেন। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার বৈদ্যুতিক যানবাহন ব্যবহারের জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে সাহায্য করছে। দেশের অন্যান্য শহরের নিরিখে সুরাট এক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে গেছে। আজ সুরাটে ২৫টি চার্জিং স্টেশনের উদ্বোধন করা হয়েছে এবং আরও ২৫টি চার্জিং স্টেশনের শিলান্যাস হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে এই শহরে ৫০০টি চার্জিং স্টেশন গড়ে তোলার যে বৃহ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এটি তারই অঙ্গ।

তাঁর ভাষণের শেষে গত দুই দশকে দ্রুত গতিতে সুরাটের উন্নয়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীদিনে এই মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে। এই উন্নয়ন আসলে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের প্রতি আস্থার প্রতিফলন। যখন আস্থা বাড়ে তখন উদ্যোগও বাড়ে, আর সবকা প্রয়াসে গতির সঞ্চার হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।

অনুষ্ঠানে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, সাংসদ শ্রী সি আর পাটিল এবং শ্রী প্রভুভাই বাসবম, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতী দর্শনা বিক্রম জার্দোশ, গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী হর্ষ সাংভি সহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

পটভূমিকা

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সুরাটে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকারও বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করেছেন। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে জল সরবরাহ, পয়ঃনিকাশী ব্যবস্থাপনা, ডায়মন্ড রিসার্চ অ্যান্ড মার্কেন্টাইল (ড্রিম) সিটি, জীববৈচিত্র্য উদ্যান এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্প। উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এগুলির মধ্যে বিভিন্ন ঐতিহ্যের সংরক্ষণ, শহরে বাস পরিষেবা এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহারের পরিকাঠামো নির্মাণ রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ড্রিম সিটি প্রকল্পের সড়ক পরিকাঠামো নির্মাণে প্রথম পর্যায়ের এবং মূল ফটক নির্মাণ কাজের সূচনা করেছেন। সুরাটে হীরে ব্যবসার দ্রুত বিকাশের কারনে বাণিজ্যিক এবং বসবাসের জন্য আরও জায়গার প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের শিলান্যাসও করেছেন।

তিনি জীববৈচিত্র্য উদ্যানের শিলান্যাস করেছেন। ডঃ হেগড়েওয়ার সেতু থেকে ভিমরাড়-বামরোলি সেতু পর্যন্ত ৮৭ হেক্টর জমির ওপর এই উদ্যান গড়ে তোলা হবে। এর পাশাপাশি শ্রী মোদী সুরাটে বিজ্ঞান কেন্দ্রে খোঁজ সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন। এই সংগ্রহশালায় শিশুদের জন্য বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শিত হবে। শিশুরা তাদের ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে নানা কর্মকান্ডে যুক্ত হতে পারবে এবং বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সম্মক ধারনা পাবে।

এই উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির উদ্বোধন ও শিলান্যাসের মাধ্যমে শহরাঞ্চলে আন্তর্জাতিক মানের পরিকাঠামো গড়ে তোলা, যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়ন এবং বিভিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের সহজ জীবনযাত্রার জন্য সরকারের উদ্যোগও এর মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।

PG/CB/NS


(Release ID: 1863736) Visitor Counter : 141