প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

‘সুরাট তিরঙ্গা যাত্রা’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 10 AUG 2022 7:23PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১০ আগস্ট ২০২২

 

আপনাদের সবাইকে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব উপলক্ষে হৃদয় থেকে শুভকামনা জানাই।

আজ থেকে কিছুদিন পর দেশ তার স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করতে চলেছে আর আমরা সবাই এই ঐতিহাসিক স্বাধীনতা দিবসের প্রস্তুতি নিচ্ছি সম্পূর্ণ উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে। ভারতের প্রত্যেক কোণায়, বাড়িতে বাড়িতে এখন শুধু ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা দেখা যাচ্ছে। গুজরাটেরও এমন কোনো প্রান্ত বাকি নেই যেখানকার মানুষ উৎসাহ ও উদ্দীপনায় মথিত হননি। সুরাট তো এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। আজ গোটা দেশের নজর সুরাটের দিকে। এখানে আয়োজিত এই ‘সুরাট তিরঙ্গা যাত্রা’র মাধ্যমে একভাবে ক্ষুদ্র ভারতের দর্শন আমরা করতে পারছি। ভারতের এমন কোনো প্রান্ত বাকি নেই, যেখানকার মানুষ আজ সুরাটে এসে বসবাস করছেন না। তাই, একভাবে আজ গোটা ভারত এই ‘সুরাট তিরঙ্গা যাত্রা’য় সামিল হয়েছে। এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে এখানে সমাজের প্রত্যেক শ্রেণীর মানুষ সামিল হয়েছেন। এই ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকায় জনগণকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করার শক্তি কতটা রয়েছে তা আজ আমরা সুরাটের মাটিতে দেখতে পাচ্ছি। সুরাট তার ব্যবসা-বাণিজ্য, নিজস্ব শিল্পোদ্যোগগুলির কারণে বিশ্বে আজ একটি নিজস্ব ও স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে তুলেছে। সুরাটে আয়োজিত এই ‘তিরঙ্গা যাত্রা’ সারা পৃথিবীতে আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠবে।

বন্ধুগণ,

আপনারা এই ‘সুরাট তিরঙ্গা যাত্রা’য় ভারতমাতার ট্যাবলোর পাশাপাশি দেশের বিবিধ সংস্কৃতি এবং পরিচয় সমন্বিত ট্যাবলোগুলিকেও সামিল করেছেন বিশেষ করে, দেশের মেয়েদের দ্বারা শৌর্য প্রদর্শন এবং যুবশক্তির যে অংশীদারিত্ব তা প্রকৃতই অদ্ভুত। সুরাটের জনগণ আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের ভাবনাকে এই ‘সুরাট তিরঙ্গা যাত্রা’য় জীবন্ত করে তুলেছেন। আপনাদের মধ্যে কেউ বস্ত্র বিক্রেতা, কেউ দোকানদার, কেউ হস্ততাঁতের কারিগর, কেউ সূচিশিল্প বা এমব্রয়ডারির কারিগর, কেউ যানবাহন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আছেন, আবার কেউ বা হীরে-জহরত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। সুরাটের সকল বস্ত্র শিল্পোদ্যোগীরা এখানকার জনগণের এই আয়োজনকে অনিন্দ্যসুন্দর করে তুলেছেন। ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানের এই গণ-অংশীদারিত্বের জন্য, আর এই বিশেষ ‘সুরাট তিরঙ্গা যাত্রা’র জন্য আমি আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আমি বিশেষ করে সাঁওয়র প্রসাদ বুধিয়াজি, আর ‘সাকেত – সেবা হী লক্ষ্য’ গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশংসা করছি যাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। সংসদে আমার সহকর্মী ও গুজরাটে ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি শ্রী সি আর পাটিলজির সহযোগিতা এই উদ্যোগকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে।

বন্ধুগণ,

আমাদের জাতীয় পতাকা নিজেই, শুরু থেকেই, দেশের বস্ত্র শিল্পোদ্যোগের, দেশের খাদি এবং আমাদের আত্মনির্ভরতার একটি প্রতীক। এক্ষেত্রে সুরাট সর্বদাই আত্মনির্ভর ভারতের জন্য একটি স্বতন্ত্র ভিত্তি তৈরি করেছে। সুরাটের বস্ত্র শিল্পোদ্যোগ ভারতের শিল্প ভাবনার, ভারতের দক্ষতা এবং ভারতের সমৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করেছে। সেজন্য এই ‘সুরাট তিরঙ্গা যাত্রা’ নিজের মধ্যে সেই গৌরব আর প্রেরণাকেও আত্মস্থ করে নিয়েছে।

বন্ধুগণ,

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে গুজরাটের গৌরবময় অবদানের একটা নিজস্ব ও স্বতন্ত্র সোনালী অধ্যায় রয়েছে। গুজরাট ‘বাপু’ রূপে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামকে নেতৃত্ব দিয়েছে। গুজরাট ভারতকে লৌহ পুরুষ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলজির মতো মহানায়ক দিয়েছে, যিনি স্বাধীনতার পর ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর ভিত্তি রচনা করেছেন। বারদৌলি আন্দোলন এবং ডান্ডি যাত্রার বার্তা গোটা দেশকে একজোট করে তুলেছিল। গুজরাটের এই গৌরবময় অতীতের একটি অভিন্ন অঙ্গ আমাদের এই সুরাট এবং তার এই ঐতিহ্য।

বন্ধুগণ,

ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা নিজের মধ্যে শুধু যে তিনটি রং ধারণ করেছে তা নয়, আমাদের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা দেশের অতীত গৌরবের পাশাপাশি আমাদের বর্তমানে কর্তব্য নিষ্ঠা এবং ভবিষ্যতের স্বপ্নগুলিরও একটি অনুপম প্রতিবিম্ব। আমাদের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা ভারতের একতা, ভারতের অখণ্ডতা এবং ভারতের বিবিধতারও একটি প্রতীক। আমাদের স্বাধীনতা সেনানীরা এই ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকায় দেশের ভবিষ্যতকে দেখেছেন, দেশের স্বপ্নগুলিকে দেখেছেন আর একে কখনও নত হতে দেননি। আজ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর যখন আমরা নতুন ভারতের যাত্রা শুরু করছি, তখন এই ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা আরও একবার ভারতের একতা এবং জাতীয় চেতনার প্রতিনিধিত্ব করছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে সারা দেশে আয়োজিত এই ‘তিরঙ্গা যাত্রা’য়, ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানে দেশের সেই শক্তি এবং ভক্তির সম্মিলিত ঝলক দেখা যাচ্ছে। ১৩ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ভারতের প্রত্যেক বাড়িতে এই ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলিত হবে, ভারতের প্রত্যেক বাড়িতে ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলিত হবে। সমাজের প্রত্যেক শ্রেণীর মানুষ জাতি, ধর্ম, বর্ণ, পন্থা নির্বিশেষে দেশের আপামর জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে একতার পরিচয় নিয়ে নতুন নতুন স্বপ্ন এবং নতুন নতুন সঙ্কল্প নিয়ে গোটা দেশকে সম্মিলিত করছেন। এটি ভারতের কর্তব্যনিষ্ঠ নাগরিকদের পরিচয়ের প্রতীক, এটি ভারতমাতার সন্তানদের পরিচয়ের প্রতীক। মহিলা, পুরুষ, নব যুবক-যুবতী, প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা – যাঁরা যে ভূমিকায় রয়েছেন, এই অভিযানে অংশগ্রহণ করছেন, সহযোগিতা করছেন, নিজেদের কর্তব্য পালন করছেন। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এই ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানের কারণে অনেক গরীবদের, তাঁতিদের ও হস্ততাঁতে কর্মরত মানুষদের অতিরিক্ত আয়ও হচ্ছে। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে এ ধরনের আয়োজন আমাদের সঙ্কল্পগুলিকে একটি নতুন প্রাণশক্তি যোগাবে। গণ-অংশীদারিত্বের এই অভিযান নতুন ভারতের বুনিয়াদকে মজবুত করবে এই বিশ্বাস নিয়ে আপনাদের সবাইকে, গুজরাটকে, গোটা দেশকে আর বিশেষ করে আমার সুরাটের জনগণকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই। আমি জানি, সুরাট একবার যে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয় তা থেকে কখনও পিছিয়ে আসে না। এটাই সুরাটের বৈশিষ্ট্য। সুরাট আজ যেভাবে এগিয়ে চলেছে, সুরাট আজ যে ধরনের উন্নয়নের নতুন নতুন উচ্চতা অতিক্রম করছে তার ভিত্তি আমার সুরাটের জনগণ, আমার সুরাটের ভাই ও বোনেরা। আজ এই ‘সুরাট তিরঙ্গা যাত্রা’র অপূর্ব দৃশ্য দেশের জন্য অত্যন্ত প্রেরণার বিষয় হয়ে উঠবে।

আপনাদের সবাইকে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভকামনা।

ধন্যবাদ!

প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণের কিছুটা অংশ গুজরাটি ভাষায় ছিল, সেই অংশটির ভাবানুবাদ করা হয়েছে। বাকি অংশটি মূল হিন্দি থেকে অনুবাদ করা হয়েছে।

 

PG/SB/DM/


(Release ID: 1851002) Visitor Counter : 266