স্বাস্থ্যওপরিবারকল্যাণমন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

কোভিড-১৯ : অসত্য এবং প্রকৃত তথ্য


সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছে কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানের তুলনায় বেশি, যা বিভ্রান্তিকর ও অনুমানমূলক

কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্তিকরণে ভারতের এক সুসংবদ্ধ কাঠামো-ভিত্তিক মজবুত ব্যবস্থা রয়েছে

কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর খতিয়ান প্রকাশে সর্বদাই স্বচ্ছতা মেনে চলা হয়েছে

Posted On: 17 FEB 2022 3:02PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

 

একটি প্রকাশিত সমীক্ষার ভিত্তিতে এক শ্রেণীর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, ভারতে কোভিড-১৯ জনিত মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানের তুলনায় বেশি এবং মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা লুকনো হয়েছে। ওই সমীক্ষায় এটাও অনুমান করা হয়েছে যে, ভারতে গত নভেম্বরের গোড়ার দিক পর্যন্ত কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর সংখ্যা ৩২ লক্ষ থেকে ৩৭ লক্ষ। কিন্তু, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী নভেম্বর পর্যন্ত দেশে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ৪ লক্ষ ৬০ হাজার।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একই ধরনের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এটা আগেও বলা হয়েছে এবং আরও একবার সুস্পষ্ট করে জানানো হচ্ছে যে, প্রকাশিত এই ধরনের প্রতিবেদনে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর এবং অসঙ্গতিপূর্ণ। এই ধরনের প্রকাশিত খবর সঠিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নয়, বরং সম্পূর্ণ অনুমান-নির্ভর।

ভারতে কোভিড-১৯-এ মৃত্যু সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা নথিভুক্তিকরণের এক মজবুত ব্যবস্থা রয়েছে। এই ব্যবস্থা গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর থেকে জেলা পর্যায়, এমনকি রাজ্যস্তরে নিয়মিতভাবে নজরদারি করা হয়। মৃত্যুর পরিসংখ্যান লিপিবদ্ধকরণে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা মেনে চলা হয়। প্রতিটি রাজ্যের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত মৃত্যুর পরিসংখ্যান একত্রিত করে। আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত পদ্ধতির ভিত্তিতে ভারত সরকার কোভিড-১৯ জনিত মৃত্যুর ঘটনাকে পৃথকভাবে বিবেচনা করে এবং স্বীকৃত এই পদ্ধতি রাজ্যগুলিকেও মেনে চলার জন্য দেওয়া হয়েছে। ভারত সরকার রাজ্যগুলিকে মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্তিকরণে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আসছে। সেইসঙ্গে রাজ্যগুলিকে এটাও বলা হয়েছে যে, যদি কোনও ক্ষেত্রে মৃত্যুর পরিসংখ্যান সঠিকভাবে নথিভুক্ত করা না হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে পুনরায় বিষয়টি খতিয়ে দেখে সর্বশেষ তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাতে। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে মহামারীজনিত মৃত্যুর প্রকৃত চিত্র যথাসময়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়। ভারত সরকার রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান জানাতে এবং স্বীকৃত নীতি-নির্দেশিকা মেনে প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করতে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে। এই প্রেক্ষিতে প্রথাগত চিঠিপত্র দেওয়ার পাশাপাশি একাধিক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেও রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক দৈনিক ভিত্তিতে জেলাস্তরে প্রতিটি আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনায় নজর রাখার জন্য এক মজবুত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে আসছে। তাই, কোভিডজনিত মৃত্যুর প্রকৃত পরিসংখ্যান গোপন করা হয়েছে একথা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অযৌক্তিক।

প্রকাশিত সমীক্ষার ভিত্তিতে সংবাদমাধ্যমে যে খবর প্রচারিত হয়েছে তা চারটি পৃথক শ্রেণীর মানুষের ওপর নির্ভর করে। এই পৃথক চারটি শ্রেণীর মধ্যে কেরলের জনসংখ্যা, ভারতীয় রেলের কর্মী, বিধায়ক ও সাংসদ এবং কর্ণাটকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা রয়েছেন। প্রকৃত তথ্যে মৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশে একটি ত্রিভূজাকৃতি প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়েছে। এই পদ্ধতি অনুযায়ী সারা দেশে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা অনুমান করা হয়েছে। তবে, সীমিত তথ্য ও নির্দিষ্ট কিছু ধারণার ভিত্তিতে মৃত্যুর মোট সংখ্যা অনুমান করা হয়েছে। তবে, এ ধরনের অনুমান-ভিত্তিক পরিসংখ্যান প্রকাশের সময় আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন রয়েছে। ভারতের মতো বৃহৎ দেশে সমস্ত রাজ্যের পরিসংখ্যানকে কেবল অনুমানের ভিত্তিতে সীমিত রাখা যায় না। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে যে, ভারতে মৃত্যুর পরিসংখ্যান ব্যবস্থায় বিশেষজ্ঞরা দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছেন। এতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান এই ব্যবস্থা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য ব্যবস্থার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ নয় এবং মৃত্যুর প্রকৃত পরিসংখ্যান নথিভুক্তিকরণে ফারাক থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পুনরায় সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, কোভিড সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য এবং কোভিড-১৯ জনিত মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনা নথিভুক্তিকরণে ভারতে এক মজবুত কাঠামো রয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা নথিভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে অসঙ্গতি এড়াতে ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পর্ষদ কোভিড-১৯ সম্পর্কিত প্রতিটি মৃত্যুর যথাযথ নথিভুক্তিকরণে সুনির্দিষ্ট নীতি-নির্দেশিকা জারি করেছে। এই নীতি-নির্দেশিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বীকৃত আইসিডি-১০ অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে মহামারী শুরুর সময় থেকেই দৈনিক ভিত্তিতে কোভিডে মৃত্যুর পরিসংখ্যান জনসমক্ষে প্রকাশ করে আসা হচ্ছে। একইভাবে, সমস্ত রাজ্যই জেলা-ভিত্তিক কোভিড বুলেটিন দৈনিক ভিত্তিতে প্রকাশ করছে।

এটা প্রমাণিত বিষয় যে, কোভিড-১৯ মহামারীর মতো জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দীর্ঘস্থায়ী সঙ্কটজনিত পরিস্থিতিতে মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে সর্বদাই কিছু তারতম্য থেকে থাকে। সেই অনুসারে, মৃত্যুর প্রকৃত পরিসংখ্যান সম্পর্কিত সব ধরনের সমীক্ষা নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন। নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত সমীক্ষা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সঠিক পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণ-ভিত্তিক হয়ে থাকে। এর ফলে, মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান নির্ধারণ সহজ হয়।

ভারতে কোভিড-১৯ জনিত মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্লেষণে এটা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে যে, ভারতে কোভিড-১৯-এ মৃত ব্যক্তির নিকট আত্মীয়দের আর্থিক ক্ষতিপূরণের দিক থেকে প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত করা এবং তা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপ থাকে। মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর ক্ষেত্রে নিকটাত্মীয়দের ক্ষতিপূরণের বিষয়টিতে নিয়মিত নজর রাখছে। তাই, কোভিডে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা গোপন করার অবকাশ অত্যন্ত কম। তাই, পরিবার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনিচ্ছা বা অক্ষমতার কারণে মৃত্যুর পরিসংখ্যান সঠিক দেওয়া হয়নি বলে যে অভিযোগ তা সম্পূর্ণ ভুল এবং প্রকৃত সত্যের পরিপন্থী।

 

CG/BD/DM/


(Release ID: 1799080) Visitor Counter : 338