প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
শ্রী রামানুজাচার্যের স্মৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ২১৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট স্ট্যাচু অফ ইক্যুয়ালিটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন
জগৎ গুরু শ্রী রামানুজাচার্যের এই অতিকায় মূর্তির মাধ্যমে ভারত তাঁর মানবিক শক্তি ও অনুপ্রেরণাকে এক মূর্ত রূপ দিচ্ছে
আমরা যখন রামানুজাচার্যকে দেখি তখন এটা উপলব্ধি করি যে, প্রগতিশীলতা ও প্রাচীনতার মধ্যে কোন বিরোধ নেই
সংস্কারের জন্য শেকড় থেকে দূরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই; বরং প্রয়োজন প্রকৃত শেকড়ের সাথে আমাদের যুক্ত হওয়া, আমাদের প্রকৃত শক্তি সম্পর্কে সচেতন হওয়া
শ্রী রামানুজাচার্যের আদর্শের সঙ্গে অগ্রসর হয়ে আজ দেশ সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও সবকা প্রয়াস - এই মন্ত্রে নতুন ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করছে
সাধু-সন্তদের কাছ থেকে পাওয়া সাম্য, মানবতা ও আধ্যাত্মিকতার শক্তিতে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ধন্য হয়েছিল
সর্দার সাহেবের স্ট্যাচু অফ ইউনিটি যদি দেশের ঐক্যের শপথের পুনরাবৃত্তি হয়, তবে রামানুজাচার্যের স্ট্যাচু অফ ইক্যুয়ালিটি সমতার বার্তা দেয়; আর এটিই একটি জাতি হিসেবে ভারতের বিশেষত্ব
তেলেগু সংস্কৃতি ভারতের বৈচিত্রকে সমৃদ্ধ করেছে
তেলেগু চলচ্চিত্র জগৎ তেলেগু সংস্কৃতির গৌরবময় ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে
Posted On:
05 FEB 2022 8:50PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ 'হায়দ্রাবাদে স্ট্যাচু অফ ইক্যুয়ালিটি' জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। একাদশ শতাব্দীর ভক্তিসাধক শ্রী রামানুজাচার্যের স্মৃতিতে ২১৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট অতিকায় এই মূর্তিটি গড়ে তোলা হয়েছে। শ্রী রামানুজাচার্য ধর্ম বিশ্বাস, জাতি ও বর্ণ নির্বিশেষে জীবনের সব ক্ষেত্রে সমতার আদর্শ প্রচার করেছিলেন। এই অনুষ্ঠানে তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল তামিলিসাই সুন্দররাজন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী জি কিষাণ রেড্ডি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পবিত্র বসন্ত পঞ্চমীতে প্রত্যেককে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শুভ মুহূর্তে শ্রী রামানুজাচার্যের অতিকায় এই মূর্তি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জগৎ গুরু শ্রী রামানুজাচার্যের এই অতীকায় মূর্তির মাধ্যমে ভারত তাঁর মানবিক শক্তি ও অনুপ্রেরণাকে এক মূর্ত রূপ দিচ্ছে। শ্রী রামানুজাচার্যের এই মূর্তি তাঁর জ্ঞান, ধর্ম বিশ্বাসের প্রতি তাঁর উদাসীনতা ও আদর্শের প্রতীক।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বক্ষেণ ষষ্ঠী যজ্ঞের পুণ্যাহতিতে অংশ নেন। দৃঢ় সংকল্প ও উদ্দেশ্য পূরণ করার লক্ষ্যে এই যজ্ঞ করা হয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী দেশের অমৃত সংকল্পের জন্য এই যজ্ঞে সংকল্প অর্পন করেন এবং ১৩০ কোটি ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে এই যজ্ঞ উৎসর্গ করেন।
প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় পন্ডিতদের ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে বলেন, এই ঐতিহ্য জ্ঞানকে খন্ডন এবং গ্রহণ বা প্রত্যাখানের ঊর্ধ্বে বিবেচনা করে। তিনি বলেন, আমাদের যদি 'অদ্বৈত' থাকেন, তাহলে আমাদের দ্বৈতও আছেন। এমনকি, আমাদের কাছে শ্রী রামানুজাচার্যের 'বিশেষ দ্বৈত'ও আছে, যা দ্বৈত-অদ্বৈত উভয়কেই সামিল করে। তিনি আরও বলেন, শ্রী রামানুজাচার্য জ্ঞানের চূড়ার পাশাপাশি ভক্তিমার্গেরও প্রতিষ্ঠাতা। একদিকে তিনি যেমন সমৃদ্ধ 'সন্ন্যাস' ঐতিহ্যের সাধক, অন্যদিকে তেমনই গীতার ভাষায় কৃতকর্মের গুরুত্বও উপস্থাপন করেছেন। এপ্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আজকের বিশ্বে যখন সামাজিক সংস্কার ও প্রগতিবাদের কথা বলা হয়, তখন এটা বিশ্বাস করা হয় যে, সংস্কার তার শেকড় থেকে দূরে কোথাও সঞ্চারিত হবে। কিন্তু আমরা যখন রামানুজাচার্যকে দেখি, তখন আমরা এটা উপলব্ধি করি যে, প্রগতিবাদ ও প্রাচীনতার মধ্যে কোন বিরোধ নেই। তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য শেকড় থেকে দূরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং প্রয়োজন প্রকৃত শেকড়ের সাথে আমাদের যুক্ত হওয়া, আমাদের প্রকৃত শক্তি সম্পর্কে সচেতন হওয়া।
প্রধানমন্ত্রী বর্তমান ব্যবস্থা এবং আমাদের সাধু-সন্তদের জ্ঞানের মধ্যে যোগসূত্রের কথা বিশদে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, শ্রী রামানুজাচার্য সামাজিক সংস্কারের প্রকৃত ধারণা সম্পর্কে সমগ্র দেশকে পরিচিত করেছিলেন। সেই সঙ্গে দলিত ও পিছিয়েপড়া শ্রেণীর মানুষের জন্য নিরলস কাজ করেছেন। তিনি আরও বলেন, আজ শ্রী রামানুজাচার্য অতিকায় স্ট্যাচু অফ ইক্যুয়ালিটির মাধ্যমে সমতার বার্তা দিচ্ছেন। এই বার্তাকে সঙ্গে নিয়ে আজ দেশ শ্রী রামানুজাচার্যের আদর্শের সঙ্গে অগ্রসর হয়ে সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও সবকা প্রয়াস - এই মন্ত্রে নতুন ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করছে। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, আজ ভারত কোনরকম বৈষম্য ছাড়াই সকলের সার্বিক কল্যাণে সমবেত ভাবে কাজ করছে। সকলের জন্য সামাজিক ন্যায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে, যাতে কয়েক শতক ধরে যারা বঞ্চিত হয়েছিলেন তারা যেন আজ দেশের উন্নয়নে মর্যাদার সঙ্গে অংশীদার হয়ে উঠতে পারেন। এই লক্ষ্যে পাকাবাড়ি, উজ্জ্বলা গ্যাস সংযোগ, পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিখরচায় চিকিৎসা পরিষেবা, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ, জনধন অ্যাকাউন্ট, স্বচ্ছ ভারত অভিযানের মত কর্মসূচিগুলি দলিত, পিছিয়েপড়া ও বঞ্চিত শ্রেণীর মানুষের ক্ষমতায়ণ ঘটিয়েছে।
শ্রী রামানুজাচার্যকে ভারতের একতা ও অখন্ডতার এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা বলে প্রধানমন্ত্রী অভিহিত করেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ ভারতে জন্ম হলেও শ্রী রামানুজাচার্যের প্রভাব উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম - সারা ভারতেই ছড়িয়ে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম কেবল তার সত্তা এবং অধিকারের জন্যই লড়াই ছিল না, এই লড়াইয়ে একদিকে যেমন উপনিবেশিক মানসিকতা ছিল, তেমনই অন্যদিকে ছিল নিজেকে বাঁচার ও অন্যকে বাঁচার সুযোগ করে দেওয়ার ভাবনাও। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে একদিকে ছিল জাতিগত শ্রেষ্ঠত্ব ও বস্তুবাদের উন্মাদনা, তেমনই অন্যদিকে ছিল মানবতা ও আধ্যাত্মিকতার প্রতি বিশ্বাস। কিন্তু এই লড়াইয়ে ভারত ও তার ঐতিহ্যগুলি জয়ী হয়েছিল। তিনি বলেন, সাধু সন্তদের কাছ থেকে পাওয়া সাম্য, মানবতা ও আধ্যাত্মিকতার শক্তিতে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ধন্য হয়েছিল।
সর্দার প্যাটেলের সঙ্গে হায়দ্রাবাদের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্দার সাহেবের স্ট্যাচু অফ ইউনিটি যদি দেশের ঐক্যের শপথের পুনরাবৃত্তি হয়, তবে রামানুজাচার্যের স্ট্যাচু অফ ইক্যুয়ালিটি সমতার বার্তা দেয়। আর এটিই একটি জাতি হিসেবে ভারতের বিশেষত্ব।
তেলেগু সংস্কৃতির সমৃদ্ধের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের বৈচিত্রকে সমৃদ্ধ করতে এই সংস্কৃতির বড় অবদান রয়েছে। এই তেলেগু সংস্কৃতির মশাল বাহক রাজা-রানীদের সুদীর্ঘ ঐতিহ্যের কথা প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন। ভারতের আস্থার সঙ্গে জড়িত স্থানগুলির পুনরুজ্জীবন ও স্বীকৃতি দান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যমন্ডিত নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া ত্রয়োদশ শতাব্দীর কাকাতিয়া রুদেশ্বর রামাপ্পা মন্দিরের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, বিশ্ব পর্যটন সংগঠন পোচামপল্লিকে ভারতের শ্রেষ্ঠ পর্যটন গ্রামের স্বীকৃতি দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তেলেগু চলচ্চিত্র জগতের গৌরবময় অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্বেই তেলেগু চলচ্চিত্রের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। এমনকি, তেলেগুভাষী এলাকা ছাড়াও তেলেগু সিনেমার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তেলেগু চলচ্চিত্র জগতের এই সৃজনশীলতা রুপোলী পর্দা এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলিতে কতৃত্ব স্থাপন করেছে। ভারতের বাইরেও এই সৃজনশীলতার প্রশংসা করা হচ্ছে। তেলেগুভাষী মানুষের শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা অন্যদের কাছে প্রেরণার উৎস বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
স্ট্যাচু অফ ইক্যুয়ালিটি বা সমতার মূর্তিটি পঞ্চলোহা দিয়ে নির্মিত। এরমধ্যে রয়েছে সোনা, রুপো, তামা, পিতল ও জিঙ্ক। এই মূর্তিটি বসে থাকা অবস্থায় বিশ্বের উচ্চতম প্রতিমাগুলির মধ্যে একটি। ৫৪ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ভবনের ওপর এই মূর্তিটি বসানো হয়েছে। এই ভবনের নামকরণ হয়েছে ভদ্রবেদী। যেখানে বেশ কয়েকটি ফ্লোর রয়েছে। প্রতিটি ফ্লোরের কোনটিতে বৈদিক ডিজিটাল গ্রন্থাগার বা গবেষণা কেন্দ্র, কোনটিতে প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থ, আবার কোনটিতে থিয়েটার বা রঙ্গমঞ্চ ছাড়াও শ্রীরামানুজাচার্যের কর্মময় জীবন নিয়ে শিক্ষামূলক গ্যালারি রয়েছে। শ্রী রামানুজাচার্য আশ্রমের শ্রী চিন্না জিয়ার স্বামী এই মূর্তির পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিলেন।
অনুষ্ঠানে শ্রী রামানুজাচার্যের বর্ণময় জীবন ও শিক্ষা নিয়ে একটি থ্রি-ডি অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী স্ট্যাচু অফ ইক্যুয়ালিটির পাশেই অলঙ্কার খোচিত ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে গড়ে তোলা ১০৮টি মন্দির প্রত্যক্ষ করেন।
শ্রী রামানুজাচার্য জাতি, লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষের সমানাধিকারের লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে গেছেন। শ্রী রামানুজাচার্যের ১০০০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ১২ দিন ব্যাপী যে শ্রী রামানুজ সহস্রাব্দ সমারোহের আয়োজন করা হয়েছে তার অঙ্গ হিসেবেই এই মূর্তিটির উদ্বোধন করা হল।
CG/BD/AS/
(Release ID: 1795908)
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam