মন্ত্রিসভারঅর্থনৈতিকবিষয়সংক্রান্তকমিটি
দেশে ইথানল মিশ্রন ক্ষমতা বাড়াতে সংশোধিত কর্মসূচিতে অনুমোদন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার
Posted On:
30 DEC 2020 3:44PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০
২০১০-১১ চিনি মরশুম থেকেই দেশে চাহিদার তুলনায় বেশি চিনির উৎপাদন হয়ে আসছে। কেবল ২০১৬-১৭ চিনি মরশুমে খরাজনিত পরিস্থিতির জন্য উৎপাদন হ্রাস পায়। উন্নত প্রজাতির আখ চাষের ফলে আগামী বছরগুলিতেও দেশে অতিরিক্ত পরিমাণে চিনির উৎপাদন বজায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। চিনি মরশুমে (অক্টোবর-সেপ্টেম্বর) প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ মেট্রিক টনের মতো চিনি উৎপন্ন হয়। অন্যদিকে, দেশে চিনির চাহিদার পরিমাণ ২ কোটি ৬০ লক্ষ মেট্রিক টন। এর ফলে, চিনি মরশুমে প্রায় ৬০ লক্ষ মেট্রিক টন চিনি বাড়তি থাকে। এর ফলে, চিনি কলগুলির ওপর বকেয়া মেটাতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এমনকি, অতিরিক্ত এই ৬০ লক্ষ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত অবস্থায় থেকে যায়। স্বাভাবিকভাবেই প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকার মতো তহবিল চিনি কলগুলির বকেয়া পড়ে যায়। এর পরিণতি-স্বরূপ আখ চাষীদের বকেয়াও বাড়তি থাকে এবং তাঁরা চিনি কলগুলিতে প্রাপ্য মাশুল মেটাতে পারেন না। অতিরিক্ত এই চিনির সদ্ব্যবহারে চিনি কলগুলি চিনি রপ্তানি করে এবং সরকার রপ্তানিখাতে চিনি কলগুলিকে আর্থিক সাহায্য করে। এদিকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার চুক্তি অনুযায়ী, একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসাবে ভারত ২০২৩ পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে চিনি রপ্তানি করতে পারবে। এই প্রেক্ষিতে সরকার অতিরিক্ত আখ ও চিনির ব্যবহারে বৈচিত্র্যকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে চিনির নির্যাস থেকে প্রাপ্ত ইথানল উৎপাদনের মাধ্যমে অতিরিক্ত চিনির সদ্ব্যবহার ঘটানো যায়। এর ফলে, একদিকে যেমন নগদ প্রবাহ বাড়বে, অন্যদিকে চিনি কলগুলিও অতিরিক্ত মজুত ভান্ডার কমিয়ে ফেলে ইথানল উৎপাদনের মাধ্যমে বকেয়া টাকা কৃষকদের মেটাতে সক্ষম হবে। স্বাভাবিকভাবেই পরের বছরগুলিতে চিনি কলগুলিও চালু থাকবে।
সরকার ২০২২ সালের মধ্যে পেট্রোলে ১০ শতাংশ ইথানল মেশানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। ইথানল মিশ্রণের এই পরিমাণ ২০২৬ সালে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে আরও বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার পরিকল্পনা করেছে। চিনি ক্ষেত্রকে প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং আখ চাষীদের স্বার্থ সুরক্ষায় সরকার বি শ্রেণীর ভারী গুড়, আখের রস, চিনির সিরাপ এবং চিনি থেকে ইথানল উৎপাদনে অনুমতি দিয়েছে। ২০২০-২১ ইথানল সরবরাহ বর্ষে সরকার চিনির কল থেকে উৎপাদিত ইথানলের মূল্য বৃদ্ধি করেছে।
জ্বালানীর উপযোগী ইথানল উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে সরকার চাল ও মেজ থেকে ইথানল উৎপাদনে বিভিন্ন সংস্থাকে উৎসাহিত করছে। এমনকি, চাল ও মেজ থেকে উৎপাদিত ইথানলের লাভজনক দামও সরকার স্থির করেছে।
সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ ইথানল মিশ্রণের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। অবশ্য, বর্তমানে দেশে ইথানল মিশ্রণের ক্ষমতা পর্যাপ্ত নয়। এই প্রেক্ষিতে পেট্রোলে ইথানল মিশ্রণের জন্য তেল বিপণন সংস্থাগুলিকে অতিরিক্ত চিনি থেকে ইথানল উৎপাদনের জন্য সরবরাহ করা হচ্ছে। কেবল চিনি থেকে ইথানল উৎপাদনের মাধ্যমে পেট্রোলে ইথানল মিশ্রণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই, প্রথম প্রজন্মের ইথানল উৎপাদন প্রয়োজন। এ ধরনের ইথানল উৎপাদনে শস্য দানার প্রয়োজন পড়ে। তাই, দেশে প্রথম প্রজন্মের ইথানল উৎপাদনের জন্য জ্বালানীতে মিশ্রণ ক্ষমতা বাড়ানোর পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এই বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখেই সরকার শস্য দানা-ভিত্তিক পাতন প্রক্রিয়া স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাতে ইথানল উৎপাদনের পরিমাণ আরও বাড়ানো যায়। গুড়-ভিত্তিক নতুন পাতন কেন্দ্র স্থাপন অথবা বর্তমানে চালু পাতন কেন্দ্ররগুলি সম্প্রসারণে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নীতি-নির্দেশিকা অনুযায়ী এ ধরনের পাতন কেন্দ্র বা উৎপাদন ইউনিট স্থাপন করা যেতে পারে।
সরকার নতুন পাতন কেন্দ্র স্থাপন বা এ ধরনের উৎপাদন কেন্দ্রের সম্প্রসারণে গৃহীত ঋণের ওপর এক বছর মেয়াদী বন্ধকী ছাড়াই ৫ বছর পর্যন্ত সুদ ছাড়ের সুবিধা বহন করবে। তবে, এ ধরনের প্রকল্প খাতে বার্ষিক ৬ শতাংশ সুদের হারে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ সহায়তা পাওয়া যাবে। যে সমস্ত ইথানল মিশ্রণ উৎপাদক সংস্থা তেল বিপণন সংস্থাগুলিকে পেট্রোলে ইথানল মিশ্রণের জন্য মোট উৎপাদিত পরিমাণের ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত সরবরাহ করবে, কেবল তারাই ঋণ ছাড়ের এই সুবিধা নিতে পারবে।
প্রথম প্রজন্মের ইথানল উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে দেশে একদিকে যেমন জ্বালানী হিসাবে ইথানলের ব্যবহারে প্রসার ঘটবে, অন্যদিকে, দূষণ বিহীন এক জ্বালানী হিসাবে ইথানলের ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হবে এবং তেল আমদানি খাতে বিপুল অর্থ ব্যয় অনেকখানি সাশ্রয় হবে। সর্বোপরি, কৃষকদের বকেয়াও সময় মতো মেটানো যাবে।
মিশ্রণ ক্ষমতা ও মিশনের পরিমাণ বাড়াতে গত ৬ বছরে সরকারের সাফল্য :
সরকার ২০২২ সালের মধ্যে মোটরগাড়ির জ্বালানি হিসাবে ১০ শতাংশ ইথানল মিশ্রণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। ২০৩০ সালে জ্বালানীতে ইথানল মিশ্রণের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১৪ পর্যন্ত ইথানল মিশ্রণের ক্ষমতা ছিল ২০০ কোটি লিটারের কম। অবশ্য, গত ৬ বছরে গুড়-ভিত্তিক মিশ্রণাগারগুলিতে ইথানল মিশ্রণের পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়ে ৪২৬ কোটি লিটার হয়েছে। তাই, মিশ্রণের ধার্য লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকার ২০২৪ সালের মধ্যে দেশে ইথানল মিশ্রণ ক্ষমতা দ্বিগুণ করার যাবতীয় প্রয়াস গ্রহণ করছে।
মোটর গাড়ির জ্বালানীতে ইথানলের মিশ্রণ বৃদ্ধি পেলে আমদানিকৃত জীবাশ্ম জ্বালানীর ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। পক্ষান্তরে, বায়ু দূষণ হ্রাস পাবে। এছাড়াও, পাতন ক্ষমতা বৃদ্ধি অথবা নতুন পাতন কেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ফলে গ্রামাঞ্চলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সেই সঙ্গে, আত্মনির্ভর ভারতের উদ্দেশ্যগুলি পূরণ করা যাবে।
***
CG/BD/SB
(Release ID: 1684832)
Visitor Counter : 479
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam